১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এরপর ৫৫ বছর পার হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সাইকিয়াট্রিস্ট (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ) নিয়োগ দেওয়া হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে মানসিক স্বাস্থ্যের উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে প্রায়ই জটিল সমস্যায় ভোগেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বিপ্লব কুমার দে বলেন, করোনার কারণে সবার জীবনযাত্রা পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা হতাশায় ভুগছেন। এ কারণে অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এসব হতাশা দূর করতে প্রতি মাসে অন্তত একবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা কাউন্সেলিং করানো উচিত।

বিপ্লব কুমার দে আরও বলেন, প্রতিটি আবাসিক হলে অন্তত একজন করে প্রফেশনাল কাউন্সেলিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া দরকার। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে অন্তত দুজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকা উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় কাউন্সেলিং সেবা চালু করা হয়। সেখানে শতাধিক শিক্ষার্থী মনোরোগের চিকিৎসা নিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে সিংহভাগই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। তবে করোনার শুরু থেকে এই সেবা বন্ধ রয়েছে।

এক যুগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি পারিবারিক কারণ, পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়া, সম্পর্কের টানাপোড়েনসহ নানা কারণে আরও কয়েকজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনো সাইকোলজিস্ট নেই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তত একজন হলেও সাইকোলজিস্টের প্রয়োজন। আমাদের এখানে চিকিৎসকেরও বেশ সংকট আছে। আমরা অনেক আগেই এসবের চাহিদা দিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাউন্সেলিং সেবার বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে এই সেবা বন্ধ রয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের খুব কাজে এসেছিল। আমরা এটি আবার চালু করার চিন্তাভাবনা করছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান বাস্তবতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন আছে। এর জন্য পদ সৃষ্টির একটা বিষয় আছে। আমরা সেটি নিয়ে আলোচনা করব।’