রাশেদ নিজাম ও আজিজুল হক, বেনাপোল (যশোর) থেকে
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে আবার কেউ অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্টেশনের সামনে চায়ের দোকান, হোটেল দেখে বোঝার উপায় নেই, প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে মফস্বলের ছাপ স্পষ্ট।
২০১৩ সালের আগস্টে উদ্বোধন করা হয় বেনাপোল আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ব্যবহার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ জুন। যাত্রীদের বসার জায়গা, টয়লেট, ক্যানটিন, বাসের টিকিট সুবিধা একসঙ্গে থাকার কথা। টার্মিনালে পৌঁছার আগে দেখা যায়, কড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে ভারতগামী বাংলাদেশিরা। টার্মিনাল থেকে মানুষের সারি পৌঁছেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী গ্রাম সাদিপুর রোডে।
এখানে ইমিগ্রেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। তাই ট্রেন-বাসে যে যেভাবেই আসেন, সকাল সকাল লাইনে দাঁড়ান দ্রুত ওপারে যাওয়ার আশায়। জানা যায়, আগের দিনও এ পথ দিয়ে ভারতে গেছেন ৩ হাজার ৪৯৮ জন, আর ফিরেছেন ৩ হাজার ১৮৬ জন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষ ভারতে যান বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ফেরতও আসেন প্রায় সমসংখ্যক। সব মিলিয়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের যাতায়াত। অথচ টার্মিনালে মাত্র ৩৯টি চেয়ার যাত্রীদের বসার জন্য। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নেই ক্যানটিন সুবিধা।
ভারতে ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা যাত্রী সুবিধা ফি। সে হিসাবে বেনাপোলে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা শুধু সুবিধা ফি দেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মিলেছে সুবিধা ফি বাবদ।
যাত্রীদের সুবিধা যেমনই হোক, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য টার্মিনালে কনফারেন্স কক্ষ, প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন করে জায়গা দখল করে রেখেছে।
যাত্রীদের সুবিধা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্রাম নেওয়ার স্থানসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। টার্মিনালের পেছনের দিকে আরও বড় জায়গা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের এত কক্ষ কেন জানতে চাইলে বন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালককে কয়েক দফা ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
ভোগান্তি ওপারে, এপারে হয়রানি
খুলনার হাজী মুহসীন রোডের বাসিন্দা ডা. কেপি রায় ৮ ডিসেম্বর সীমান্ত পার হন। কিন্তু ভারতের অংশে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। গত শনিবার তিনি বেনাপোলে ফিরেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যাওয়ার সময় এখানে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু পার হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন শূন্য রেখায়। ওপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতের ইমিগ্রেশনে অন্তত ২০টা বুথ থাকলেও কাজ হয় মাত্র ৪টায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
যশোরের বেসপাড়ার সমর চ্যাটার্জি এগিয়ে এসে বললেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে এলাম। শুরুতেই ব্যাগ স্ক্যান করল বিজিবি, তারপর ইমিগ্রেশন করে কাস্টমসের স্ক্যানিং। বেরোনোর পথেই আবার ব্যাগ খুলে সব ওলটপালট করে চেক করল বিজিবি। দুবার স্ক্যান করার পরে টার্মিনালের গেটেই আবার চেক কেন?’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল টার্মিনালের গেটে। বিজিবির সদস্যরা ব্যাগ খুলে সবার জিনিসপত্র উল্টেপাল্টে দেখছিলেন। কিছু না পেয়ে ওভাবেই ব্যাগ ছেড়ে দেওয়ার পর তর্কও হয় অনেকের সঙ্গে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে তাঁদের মতে, গায়ের জোরে এভাবে তল্লাশি করে বিজিবি। নিয়মানুযায়ী বন্ড এলাকার মধ্যে বিজিবির তল্লাশি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু অনেক সময় কাস্টমসের আগেই জোর করে অনেককে তল্লাশি করতে নিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দফা অভিযোগ চালাচালিও হয়েছে।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, এ বিষয়ে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি, তাই মন্তব্য দেবেন না। বিজিবি যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শূন্য রেখা পার হওয়ার পর স্ক্যানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক আছে কি না সেটা চেক করা হয়। ভেতরে অন্য কিছু আছে কি না, তা দেখা যায় না। ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস আছে কি না, তা বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে টার্মিনালের গেটে চেক করা হয়।’
যে টাকার হিসাব নেই
ছয় বছরের নাতি শিহাব আল অনিক ও মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন যশোরের রেজাউল ইসলাম। শনিবার বিকেলে ভ্রমণ কর দিতে দাঁড়ান বেনাপোল টার্মিনালে সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো কর লাগে না। ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ২৫০ টাকা। এর বেশি বয়সী প্রতি জনের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর লাগে। কিন্তু কাউন্টার থেকে রেজাউলকে বলা হয়, ছোটদের ভ্রমণ করের রসিদ নেই, তাই শিশু অনিকের জন্য ৫০০ টাকাই দিতে হবে। আবার পরামর্শ দেওয়া হয় পাশ থেকে অনলাইনে দিয়ে আসতে। অসুস্থ নাতি ও মেয়েকে রেখে রেজাউল দৌড়ে এক দোকানে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে পরিশোধ করলেন। অভিযোগের সুরে বললেন, ‘এখানে দিতে হলে দ্বিগুণ দিতে হবে। আবার ওনারাই বলে দিচ্ছেন দোকান থেকে করে আনতে।’ সোনালী ব্যাংকের সামনে লাগানো নোটিশে লেখা, ২০২০ সালের ৭ মার্চ থেকে এই রসিদ-সংকটের শুরু। অর্থাৎ আড়াই বছর ধরে অপ্রাপ্ত বয়সীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে।
কাউন্টারে বসা সিনিয়র অফিসার সোহবার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রসিদ আসে না, তাই ২৫০ টাকার ভ্রমণ কর নিতে পারি না।’ ইমিগ্রেশনের হিসাবে, প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে ৬-১২ বছরের ১৫ শতাংশ। সে হিসাবে প্রতিদিন শুধু ভ্রমণ করই বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সোয়া লাখ টাকা। অবশ্য যাঁরা অনলাইনে দেন, তাঁরা নিস্তার পান।
সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহসীন আলী বলেন, ‘মূল কার্যালয় থেকে রসিদ দেওয়া হয় না; তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা রাখতে হচ্ছে।’
বেনাপোল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সুবিধা বাড়াতে নানা দাবি জানিয়েছি। তবে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত।’
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে আবার কেউ অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্টেশনের সামনে চায়ের দোকান, হোটেল দেখে বোঝার উপায় নেই, প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে মফস্বলের ছাপ স্পষ্ট।
২০১৩ সালের আগস্টে উদ্বোধন করা হয় বেনাপোল আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ব্যবহার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ জুন। যাত্রীদের বসার জায়গা, টয়লেট, ক্যানটিন, বাসের টিকিট সুবিধা একসঙ্গে থাকার কথা। টার্মিনালে পৌঁছার আগে দেখা যায়, কড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে ভারতগামী বাংলাদেশিরা। টার্মিনাল থেকে মানুষের সারি পৌঁছেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী গ্রাম সাদিপুর রোডে।
এখানে ইমিগ্রেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। তাই ট্রেন-বাসে যে যেভাবেই আসেন, সকাল সকাল লাইনে দাঁড়ান দ্রুত ওপারে যাওয়ার আশায়। জানা যায়, আগের দিনও এ পথ দিয়ে ভারতে গেছেন ৩ হাজার ৪৯৮ জন, আর ফিরেছেন ৩ হাজার ১৮৬ জন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষ ভারতে যান বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ফেরতও আসেন প্রায় সমসংখ্যক। সব মিলিয়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের যাতায়াত। অথচ টার্মিনালে মাত্র ৩৯টি চেয়ার যাত্রীদের বসার জন্য। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নেই ক্যানটিন সুবিধা।
ভারতে ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা যাত্রী সুবিধা ফি। সে হিসাবে বেনাপোলে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা শুধু সুবিধা ফি দেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মিলেছে সুবিধা ফি বাবদ।
যাত্রীদের সুবিধা যেমনই হোক, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য টার্মিনালে কনফারেন্স কক্ষ, প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন করে জায়গা দখল করে রেখেছে।
যাত্রীদের সুবিধা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্রাম নেওয়ার স্থানসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। টার্মিনালের পেছনের দিকে আরও বড় জায়গা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের এত কক্ষ কেন জানতে চাইলে বন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালককে কয়েক দফা ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
ভোগান্তি ওপারে, এপারে হয়রানি
খুলনার হাজী মুহসীন রোডের বাসিন্দা ডা. কেপি রায় ৮ ডিসেম্বর সীমান্ত পার হন। কিন্তু ভারতের অংশে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। গত শনিবার তিনি বেনাপোলে ফিরেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যাওয়ার সময় এখানে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু পার হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন শূন্য রেখায়। ওপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতের ইমিগ্রেশনে অন্তত ২০টা বুথ থাকলেও কাজ হয় মাত্র ৪টায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
যশোরের বেসপাড়ার সমর চ্যাটার্জি এগিয়ে এসে বললেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে এলাম। শুরুতেই ব্যাগ স্ক্যান করল বিজিবি, তারপর ইমিগ্রেশন করে কাস্টমসের স্ক্যানিং। বেরোনোর পথেই আবার ব্যাগ খুলে সব ওলটপালট করে চেক করল বিজিবি। দুবার স্ক্যান করার পরে টার্মিনালের গেটেই আবার চেক কেন?’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল টার্মিনালের গেটে। বিজিবির সদস্যরা ব্যাগ খুলে সবার জিনিসপত্র উল্টেপাল্টে দেখছিলেন। কিছু না পেয়ে ওভাবেই ব্যাগ ছেড়ে দেওয়ার পর তর্কও হয় অনেকের সঙ্গে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে তাঁদের মতে, গায়ের জোরে এভাবে তল্লাশি করে বিজিবি। নিয়মানুযায়ী বন্ড এলাকার মধ্যে বিজিবির তল্লাশি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু অনেক সময় কাস্টমসের আগেই জোর করে অনেককে তল্লাশি করতে নিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দফা অভিযোগ চালাচালিও হয়েছে।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, এ বিষয়ে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি, তাই মন্তব্য দেবেন না। বিজিবি যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শূন্য রেখা পার হওয়ার পর স্ক্যানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক আছে কি না সেটা চেক করা হয়। ভেতরে অন্য কিছু আছে কি না, তা দেখা যায় না। ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস আছে কি না, তা বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে টার্মিনালের গেটে চেক করা হয়।’
যে টাকার হিসাব নেই
ছয় বছরের নাতি শিহাব আল অনিক ও মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন যশোরের রেজাউল ইসলাম। শনিবার বিকেলে ভ্রমণ কর দিতে দাঁড়ান বেনাপোল টার্মিনালে সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো কর লাগে না। ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ২৫০ টাকা। এর বেশি বয়সী প্রতি জনের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর লাগে। কিন্তু কাউন্টার থেকে রেজাউলকে বলা হয়, ছোটদের ভ্রমণ করের রসিদ নেই, তাই শিশু অনিকের জন্য ৫০০ টাকাই দিতে হবে। আবার পরামর্শ দেওয়া হয় পাশ থেকে অনলাইনে দিয়ে আসতে। অসুস্থ নাতি ও মেয়েকে রেখে রেজাউল দৌড়ে এক দোকানে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে পরিশোধ করলেন। অভিযোগের সুরে বললেন, ‘এখানে দিতে হলে দ্বিগুণ দিতে হবে। আবার ওনারাই বলে দিচ্ছেন দোকান থেকে করে আনতে।’ সোনালী ব্যাংকের সামনে লাগানো নোটিশে লেখা, ২০২০ সালের ৭ মার্চ থেকে এই রসিদ-সংকটের শুরু। অর্থাৎ আড়াই বছর ধরে অপ্রাপ্ত বয়সীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে।
কাউন্টারে বসা সিনিয়র অফিসার সোহবার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রসিদ আসে না, তাই ২৫০ টাকার ভ্রমণ কর নিতে পারি না।’ ইমিগ্রেশনের হিসাবে, প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে ৬-১২ বছরের ১৫ শতাংশ। সে হিসাবে প্রতিদিন শুধু ভ্রমণ করই বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সোয়া লাখ টাকা। অবশ্য যাঁরা অনলাইনে দেন, তাঁরা নিস্তার পান।
সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহসীন আলী বলেন, ‘মূল কার্যালয় থেকে রসিদ দেওয়া হয় না; তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা রাখতে হচ্ছে।’
বেনাপোল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সুবিধা বাড়াতে নানা দাবি জানিয়েছি। তবে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে