এক মৌসুম আগেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পেতে ইউরোপের শীর্ষ দলগুলো তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষায় থাকত। গতবারই রোনালদোকে পেতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার সিটির মতো দুই পরাশক্তি একসঙ্গে মাঠে নেমেছিল। তবে সেই রোনালদোই মাত্র এক মৌসুমের ব্যবধানে ‘অপ্রয়োজনীয়’ হয়ে গেলেন। ম্যানইউ ছাড়তে চাওয়ার ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত কোনো ক্লাব থেকে সাড়া পাননি রোনালদো। উল্টো যেসব ক্লাবের দৌড়ে থাকার কথা শোনা যাচ্ছিল, তারা সবাই একে একে সরে দাঁড়িয়েছে। ক্লাবগুলোর আগ্রহ এখন মূলত তরুণ তারকাদের ঘিরেই।

এবারের দলবদলের শুরুর আগেই তরুণ তুর্কিদের দিকে হাত বাড়ায় ইউরোপের শীর্ষ দলগুলো। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৩০-এর নিচে, তাঁদেরই দলে ভেড়াতে চাইছে তারা। আর্লিং হালান্ডকে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেনাকাটা শুরু করে ম্যানসিটি। একাধিক ক্লাবের আগ্রহ থাকলেও শেষ পর্যন্ত সবাইকে টেক্কা দিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। খেলোয়াড় কেনার দৌড়ে পিছিয়ে নেই সিটির নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানইউও। ইতিমধ্যে বার্সা থেকে তরুণ তারকা ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে আনার ব্যাপারে সবকিছু নিশ্চিত করেছে তারা। লিভারপুল কিনেছে উরুগুইয়ান তরুণ ডারউইন নুনেজকে। আর্সেনালে গেছেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ গ্যাব্রিয়েল জেসুস। আর রাহিম স্টার্লিংয়ের ঠিকানা হয়েছে চেলসিতে। রিয়াল মাদ্রিদ ইতিমধ্যে চুক্তি নবায়ন করেছে ব্রাজিলিয়ান তরুণ রদ্রিগোর সঙ্গে। পাশাপাশি ভিনিসিয়াস জুনিয়রকেও ধরে রাখার পথে হাঁটছে তারা।

একইভাবে কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো তরুণকে দলে নিতে রীতিমতো ইঁদুর-বিড়াল লড়াইয়ে নেমেছিল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ও রিয়াল। শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে হতাশ করে এমাবপ্পে থেকে যান পিএসজিতে।

তবে তরুণদের নিয়ে দলগুলোর যে আগ্রহ, অপেক্ষাকৃত অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে তার দেখা মিলছে সামান্যই। যেখানে সবচেয়ে বড় উদাহরণ রোনালদোই। ‘সিআর সেভেন’কে কেনার দৌড় থেকে ইতিমধ্যে সরে দাঁড়িয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ, চেলসি ও পিএসজি। শুরুতে বায়ার্নকে সম্ভাব্য গন্তব্য বিবেচনা করা হলেও তারা ঘোষণা দিয়েই রোনালদোকে নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। চেলসি কোচ থমাস টুখেলও পর্তুগিজ মহাতারকাকে নিতে আগ্রহী নন। পিএসজিও নিশ্চিত করেছে, ৩৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে তাদের দরকার নেই। উল্টো সৌদি আরবের এক ক্লাব রোনালদোকে নিতে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছে; যা ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বড় কোনো ক্লাব থেকে প্রস্তাব না পেলে ম্যানইউতেই আরেক মৌসুম কাটাতে হবে রোনালদোকে। তবে সেটি তাঁর ভবিষ্যতের জন্য মোটেও ভালো কোনো বার্তা নয়।

একইভাবে এমবাপ্পেকে নিয়ে বাজার যতটা উত্তপ্ত ছিল, সেটা দেখা যায়নি তাঁরই সতীর্থ নেইমারের ক্ষেত্রে। ৩০-এ পা দেওয়া নেইমারের দলবদলের গুঞ্জন শোনা গেলেও তাঁকে নেওয়ার ব্যাপারে শীর্ষ দলগুলোর খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এদিক থেকে নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন রবার্ট লেভানডফস্কি। বায়ার্ন ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর তাঁকে নেওয়ার জন্য উতলা হয়ে আছে বার্সেলোনা। তবে বায়ার্ন এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছে লেভাকে ধরে রাখতে।