বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
যে শিল্পীরা শুটিংসেটে দিনের পর দিন একসঙ্গে কাটিয়েছেন, তাঁরাই আজ একে অপরের মুখোমুখি। সম্পর্কটা এতটাই নিচে নেমেছে যে একে অপরের নাম নিয়ে ধিক্কার জানাচ্ছেন, বিচারের দাবিও করছেন কেউ কেউ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই অনলাইন কিংবা অফলাইন দুই মাধ্যমেই শিল্পীদের স্পষ্ট বিভক্তি লক্ষ করা গেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে একপক্ষ নেমেছিলেন রাস্তায়, অন্যদিকে আরেক পক্ষ কথা বলেছেন বিগত সরকারের পক্ষ নিয়ে। শিল্পীদের এই বিভক্তির কারণে মিডিয়ায় বিরাজ করছে অস্থিরতা।
শিল্পাঙ্গনের এই অস্থিরতা কাটিয়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনের (এফটিপিও) চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ ও অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম জানিয়েছিলেন দ্রুত নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন তাঁরা। এরই মধ্যে আওয়ামীপন্থী শিল্পীদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে কেন্দ্র করে শিল্পীদের মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়ে গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং অভিনেতা ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যাতে আওয়ামীপন্থী শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন। ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান ছিল তাঁদের। তাঁরা মত দেন, যেভাবেই হোক, আন্দোলন থামাতে হবে। এ নিয়ে শিল্পীদের কার্যক্রম কী হবে তার দিকনির্দেশনা দেওয়া হতো সেখানে। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষার্থীদের হয়ে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন, সেই স্ক্রিনশট গ্রুপে শেয়ার করতে দেখা গেছে তাঁদের। ভবিষ্যতে তাঁদের দেখে নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ। এই গ্রুপে রয়েছেন—সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচীসহ অনেকে। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
আলো আসবেই গ্রুপের চ্যাট ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানাচ্ছেন শোবিজ অঙ্গনের একাধিক ব্যক্তিত্ব। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, ‘এটা নিশ্চয়ই বেদনার যে আমাদের দেশে শিল্পীর সাইনবোর্ড নিয়ে এমন লোকজন ঘুরে বেড়াত, যারা গণহত্যায় প্রত্যক্ষ উসকানিদাতা অথবা কেউ কেউ নীরব সমর্থক ছিল। এরা শুধু শিল্পী হিসেবে না, মানুষ হিসেবেও নিচু প্রকৃতির। একাত্তরে জন্ম নিলে এরা রাজাকারের দায়িত্ব পালন করত। ফলে এদের এ যুগের রাজাকার বলতে পারেন। নিশ্চয়ই এদের বিচার হবে গণহত্যায় সমর্থন এবং উসকানি দেওয়ার অপরাধে।’
আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর গরম জল দিলেই হবে—অরুণা বিশ্বাসের এমন কথার একটি নিউজ কার্ড শেয়ার করে পরীমণি লেখেন, ‘অমানুষ! হিংস্র! লোভী! এত হিংসা নিয়ে কখনোই শিল্পী পরিচয় বহন করতে পারেন না আপনি। ধিক আপনাকে। থু।’ একই কার্ড শেয়ার করে মাহিয়া মাহি লেখেন, ‘অমানুষ’।
অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্যের মন্তব্যের স্ক্রিনশট শেয়ার করে সাদিয়া আয়মান লেখেন, ‘আপনাকে ধন্যবাদ দাদা, মানুষের মতো দেখতে, শিল্পী নামে শয়তান বেশধারীদের কাছে আমার মতো “এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী”কে চিনিয়েছেন, যে ভুলকে ভুল বলতে জানে, সত্যকে সত্য বলতে জানে।’
এদিকে আলো আসবেই গ্রুপের তালিকায় থাকা ফজলুর রহমান বাবু ফেসবুকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে জানিয়েছেন, ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা ঠিক নয়। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপের আলো আসবেই গ্রুপে অ্যাড হওয়া প্রসঙ্গে আমার কিছু কথা, একটা গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে ফোন নম্বর থাকলেই তিনি সেই গ্রুপে যাঁকে খুশি, যতজন খুশি অ্যাড করতে পারেন। অনেক গ্রুপ আছে, সেখান থেকে চাইলেও কেউ বের হতে পারে না। যদি অ্যাডমিন তাঁকে ডিলিট না করে। আলো আসবেই গ্রুপে আমি কখনো প্রবেশ করিনি, কাজেই আমি যদি ওখানে না দেখি, আমি কী করে জানব ওখানে কে কী লিখছে। ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা বা সমালোচনা করা ঠিক না।’
আত্মপক্ষ সমর্থন ও সাদিয়া আয়মানের কাছে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট করেছিলেন মিলন ভট্টাচার্য। অভিনেতা জানান, বিভিন্ন হুমকির কারণেই এই আলো আসবেই গ্রুপে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সাদিয়ার ছবি সেই গ্রুপে দেওয়া ঠিক হয়নি জানিয়ে অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমা চান তিনি। যদিও পরবর্তী সময়ে সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন মিলন।
সেই শিল্পীদের উচিত নিজ দায়িত্বে ক্ষমা চাওয়া —মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
শিল্পীরা সেই গ্রুপে এমনটা করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। তারা এমন সব কমেন্ট করেছে, যেটা ক্ষমার অযোগ্য। এসব উক্তি একজন শিল্পীর কাছ থেকে অনভিপ্রেত বলে মনে করি। গরম পানি ঢেলে দাও—এটা একজন শিল্পী বলতে পারে না। যারা এসব উক্তি করেছে, তাদের দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে। আমি শিল্পীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন লক্ষ করছি, যেটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এটা যে কীভাবে সমাধান হবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয়, সেই শিল্পীদের উচিত হবে নিজ দায়িত্বে ক্ষমা চাওয়া। তবে এত দিন পরে এই কথাগুলো তুলে আরও বিভাজন সৃষ্টি করা উচিত নয়। যে স্ক্রিনশটগুলো ফাঁস হয়েছে, সেখানে অভিনয়শিল্পীদের ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। এর কারণে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এটাও তো ঠিক নয়।
শিল্পীদের মধ্যে বিভাজন দূর করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি —তারিক আনাম খান, নাট্যব্যক্তিত্ব
শিল্পীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু বিভাজন সৃষ্টি হওয়া উচিত নয়। বিভেদ, বিভাজন ও ঘৃণা মানুষকে ভালো জায়গায় নেয় না। শিল্পীদের এই বিভাজন, একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলা—এসব দূর করার উদ্যোগ নেওয়া অনেক জরুরি। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আলোচনায় বসার পরিকল্পনা করছি। আরেকটা বিষয় হলো, শিল্পীদের যোগাযোগটা মানুষের মনের সঙ্গে, বিবেকের সঙ্গে। নাটক, সিনেমা—যা-ই বলেন না কেন, সব কিছুতে কিন্তু একটা কথাই প্রতিষ্ঠিত করা হয়—‘দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন’। মোদ্দাকথা কিন্তু এই। শুধু শিল্পীদের কেন, দেশের মধ্যেই বিভাজন বা বিভক্তি যত কমিয়ে আনা যায়, ততই ভালো। একটা গণ-আন্দোলনের পরে সবার মধ্যে আশা ও স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, এটা তো সত্যি। সে সময় সরকারের পক্ষ সেই শিল্পীরা কেন নিয়েছে, সেটার উত্তর তারাই দিতে পারবে। অনেকে হয়তো না জেনে বা না বুঝেই এমনটা করেছে। তাদের সঙ্গে কথা বললে বিষয়টি আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। আমার নিজেরও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, আন্দোলনের সময় এভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখলাম, একটি ভ্যানে মৃতদেহগুলো যেভাবে ওঠাচ্ছে। এটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
আলোচনার মাধ্যমে করণীয় ঠিক করব—আহসান হাবিব নাসিম, অভিনেতা ও সভাপতি, অভিনয়শিল্পী সংঘ
যে গ্রুপের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা কিন্তু ফেসবুক নয়। এখানে যে কেউ যে কাউকে যুক্ত করতে পারে। এখানে যাদেরকে যুক্ত করা হয়েছে, তারা সবাই ছাত্রদের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বা কুৎসা রটিয়েছে, বিষয়টি তেমন নয়। এখানে কে কী ভূমিকা পালন করেছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেককে গ্রুপে অ্যাড করা হয়েছিল, অথচ তারা কিন্তু অ্যাকটিভ ছিল না। গুটিকয়েকজনের জন্য সবাইকে দায়ী করা ঠিক হবে না। স্ক্রিনশট ফাঁস হওয়ার পর শিল্পীদের মধ্যে বিভাজনটা চরম আকার ধারণ করেছে। এই কারণে অভিনয়শিল্পী সংঘের সুনাম কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন হয়েছে। ব্যক্তিবিশেষের কারণে তো সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। এই বিষয়ে আগামীকাল (আজ) আমরা আলোচনা করব। আলোচনার মধ্যেই সংগঠনের পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। যাঁরা অভিনয়শিল্পী সংঘের রিফর্ম নিয়ে কথা বলছেন, তাঁদের নিয়েও আমরা আলোচনায় বসব।
যে শিল্পীরা শুটিংসেটে দিনের পর দিন একসঙ্গে কাটিয়েছেন, তাঁরাই আজ একে অপরের মুখোমুখি। সম্পর্কটা এতটাই নিচে নেমেছে যে একে অপরের নাম নিয়ে ধিক্কার জানাচ্ছেন, বিচারের দাবিও করছেন কেউ কেউ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই অনলাইন কিংবা অফলাইন দুই মাধ্যমেই শিল্পীদের স্পষ্ট বিভক্তি লক্ষ করা গেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে একপক্ষ নেমেছিলেন রাস্তায়, অন্যদিকে আরেক পক্ষ কথা বলেছেন বিগত সরকারের পক্ষ নিয়ে। শিল্পীদের এই বিভক্তির কারণে মিডিয়ায় বিরাজ করছে অস্থিরতা।
শিল্পাঙ্গনের এই অস্থিরতা কাটিয়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশনের (এফটিপিও) চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ ও অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম জানিয়েছিলেন দ্রুত নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন তাঁরা। এরই মধ্যে আওয়ামীপন্থী শিল্পীদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে কেন্দ্র করে শিল্পীদের মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়ে গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং অভিনেতা ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যাতে আওয়ামীপন্থী শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন। ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান ছিল তাঁদের। তাঁরা মত দেন, যেভাবেই হোক, আন্দোলন থামাতে হবে। এ নিয়ে শিল্পীদের কার্যক্রম কী হবে তার দিকনির্দেশনা দেওয়া হতো সেখানে। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষার্থীদের হয়ে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন, সেই স্ক্রিনশট গ্রুপে শেয়ার করতে দেখা গেছে তাঁদের। ভবিষ্যতে তাঁদের দেখে নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন কেউ কেউ। এই গ্রুপে রয়েছেন—সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচীসহ অনেকে। সেই গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
আলো আসবেই গ্রুপের চ্যাট ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানাচ্ছেন শোবিজ অঙ্গনের একাধিক ব্যক্তিত্ব। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, ‘এটা নিশ্চয়ই বেদনার যে আমাদের দেশে শিল্পীর সাইনবোর্ড নিয়ে এমন লোকজন ঘুরে বেড়াত, যারা গণহত্যায় প্রত্যক্ষ উসকানিদাতা অথবা কেউ কেউ নীরব সমর্থক ছিল। এরা শুধু শিল্পী হিসেবে না, মানুষ হিসেবেও নিচু প্রকৃতির। একাত্তরে জন্ম নিলে এরা রাজাকারের দায়িত্ব পালন করত। ফলে এদের এ যুগের রাজাকার বলতে পারেন। নিশ্চয়ই এদের বিচার হবে গণহত্যায় সমর্থন এবং উসকানি দেওয়ার অপরাধে।’
আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর গরম জল দিলেই হবে—অরুণা বিশ্বাসের এমন কথার একটি নিউজ কার্ড শেয়ার করে পরীমণি লেখেন, ‘অমানুষ! হিংস্র! লোভী! এত হিংসা নিয়ে কখনোই শিল্পী পরিচয় বহন করতে পারেন না আপনি। ধিক আপনাকে। থু।’ একই কার্ড শেয়ার করে মাহিয়া মাহি লেখেন, ‘অমানুষ’।
অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্যের মন্তব্যের স্ক্রিনশট শেয়ার করে সাদিয়া আয়মান লেখেন, ‘আপনাকে ধন্যবাদ দাদা, মানুষের মতো দেখতে, শিল্পী নামে শয়তান বেশধারীদের কাছে আমার মতো “এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী”কে চিনিয়েছেন, যে ভুলকে ভুল বলতে জানে, সত্যকে সত্য বলতে জানে।’
এদিকে আলো আসবেই গ্রুপের তালিকায় থাকা ফজলুর রহমান বাবু ফেসবুকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে জানিয়েছেন, ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা ঠিক নয়। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপের আলো আসবেই গ্রুপে অ্যাড হওয়া প্রসঙ্গে আমার কিছু কথা, একটা গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে ফোন নম্বর থাকলেই তিনি সেই গ্রুপে যাঁকে খুশি, যতজন খুশি অ্যাড করতে পারেন। অনেক গ্রুপ আছে, সেখান থেকে চাইলেও কেউ বের হতে পারে না। যদি অ্যাডমিন তাঁকে ডিলিট না করে। আলো আসবেই গ্রুপে আমি কখনো প্রবেশ করিনি, কাজেই আমি যদি ওখানে না দেখি, আমি কী করে জানব ওখানে কে কী লিখছে। ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা বা সমালোচনা করা ঠিক না।’
আত্মপক্ষ সমর্থন ও সাদিয়া আয়মানের কাছে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট করেছিলেন মিলন ভট্টাচার্য। অভিনেতা জানান, বিভিন্ন হুমকির কারণেই এই আলো আসবেই গ্রুপে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সাদিয়ার ছবি সেই গ্রুপে দেওয়া ঠিক হয়নি জানিয়ে অভিনেত্রীর কাছে ক্ষমা চান তিনি। যদিও পরবর্তী সময়ে সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন মিলন।
সেই শিল্পীদের উচিত নিজ দায়িত্বে ক্ষমা চাওয়া —মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
শিল্পীরা সেই গ্রুপে এমনটা করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। তারা এমন সব কমেন্ট করেছে, যেটা ক্ষমার অযোগ্য। এসব উক্তি একজন শিল্পীর কাছ থেকে অনভিপ্রেত বলে মনে করি। গরম পানি ঢেলে দাও—এটা একজন শিল্পী বলতে পারে না। যারা এসব উক্তি করেছে, তাদের দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে। আমি শিল্পীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন লক্ষ করছি, যেটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এটা যে কীভাবে সমাধান হবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয়, সেই শিল্পীদের উচিত হবে নিজ দায়িত্বে ক্ষমা চাওয়া। তবে এত দিন পরে এই কথাগুলো তুলে আরও বিভাজন সৃষ্টি করা উচিত নয়। যে স্ক্রিনশটগুলো ফাঁস হয়েছে, সেখানে অভিনয়শিল্পীদের ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। এর কারণে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এটাও তো ঠিক নয়।
শিল্পীদের মধ্যে বিভাজন দূর করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি —তারিক আনাম খান, নাট্যব্যক্তিত্ব
শিল্পীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু বিভাজন সৃষ্টি হওয়া উচিত নয়। বিভেদ, বিভাজন ও ঘৃণা মানুষকে ভালো জায়গায় নেয় না। শিল্পীদের এই বিভাজন, একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলা—এসব দূর করার উদ্যোগ নেওয়া অনেক জরুরি। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আলোচনায় বসার পরিকল্পনা করছি। আরেকটা বিষয় হলো, শিল্পীদের যোগাযোগটা মানুষের মনের সঙ্গে, বিবেকের সঙ্গে। নাটক, সিনেমা—যা-ই বলেন না কেন, সব কিছুতে কিন্তু একটা কথাই প্রতিষ্ঠিত করা হয়—‘দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন’। মোদ্দাকথা কিন্তু এই। শুধু শিল্পীদের কেন, দেশের মধ্যেই বিভাজন বা বিভক্তি যত কমিয়ে আনা যায়, ততই ভালো। একটা গণ-আন্দোলনের পরে সবার মধ্যে আশা ও স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, এটা তো সত্যি। সে সময় সরকারের পক্ষ সেই শিল্পীরা কেন নিয়েছে, সেটার উত্তর তারাই দিতে পারবে। অনেকে হয়তো না জেনে বা না বুঝেই এমনটা করেছে। তাদের সঙ্গে কথা বললে বিষয়টি আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। আমার নিজেরও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, আন্দোলনের সময় এভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখলাম, একটি ভ্যানে মৃতদেহগুলো যেভাবে ওঠাচ্ছে। এটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
আলোচনার মাধ্যমে করণীয় ঠিক করব—আহসান হাবিব নাসিম, অভিনেতা ও সভাপতি, অভিনয়শিল্পী সংঘ
যে গ্রুপের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা কিন্তু ফেসবুক নয়। এখানে যে কেউ যে কাউকে যুক্ত করতে পারে। এখানে যাদেরকে যুক্ত করা হয়েছে, তারা সবাই ছাত্রদের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে বা কুৎসা রটিয়েছে, বিষয়টি তেমন নয়। এখানে কে কী ভূমিকা পালন করেছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেককে গ্রুপে অ্যাড করা হয়েছিল, অথচ তারা কিন্তু অ্যাকটিভ ছিল না। গুটিকয়েকজনের জন্য সবাইকে দায়ী করা ঠিক হবে না। স্ক্রিনশট ফাঁস হওয়ার পর শিল্পীদের মধ্যে বিভাজনটা চরম আকার ধারণ করেছে। এই কারণে অভিনয়শিল্পী সংঘের সুনাম কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন হয়েছে। ব্যক্তিবিশেষের কারণে তো সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। এই বিষয়ে আগামীকাল (আজ) আমরা আলোচনা করব। আলোচনার মধ্যেই সংগঠনের পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। যাঁরা অভিনয়শিল্পী সংঘের রিফর্ম নিয়ে কথা বলছেন, তাঁদের নিয়েও আমরা আলোচনায় বসব।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে