পাঁচ সংগ্রামী নারীর গল্প

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ০৭: ১৩

আজ ১৫ অক্টোবর, আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস। পরিবারে অবদান রাখার পাশাপাশি গ্রামীণ নারীরা অর্থ উপার্জনে পিছিয়ে নেই। তাঁরা পারিবারিক কাজ ছাড়াও বিভিন্ন পেষায় যুক্ত হয়ে সমাজ উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। তারপরও অনেক নারী আজ উপেক্ষিত এবং অবহেলিত।

গত সেপ্টেম্বরে জীবনসংগ্রামে সফল চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পাঁচ নারীকে জয়িতা-২০২০ ঘোষণা করেছে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কার্যালয়। মহিলা ও শিশু বিষয়কমন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বীকৃতি পাওয়া জয়িতারা হলেন মোক্তার বেগম, রোকসানা ইয়াসমিন, গোল নাহার বেগম, নাসরিন আকতার ও খাদিজা বেগম।

জানা যায়, পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে এসএসসির পর বাবার বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করতেন মোক্তার বেগম। চালিয়ে যান পড়াশোনা। ১৯৮২ সালে জন্মগ্রহণ করে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে নারীর অধিকার বাস্তবায়ন করে যাওয়া মোক্তার বেগম বর্তমানে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।

চিকনদন্ডী ইউনিয়নে ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করা রোকসান ইয়াসমিন এখন চিকিৎসক। এসএসসি পাশের পরিবার থেকে তাঁকে বিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁর মায়ের কারণে সেটি হয়নি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে সহকারী সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের গোল নাহার বেগমের ১৯৭২ সালে প্রতিবেশী মো. নুরুল হকের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে জন্ম নেয় ৮ সন্তান। স্বামীর সহযোগিতায় ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। যাঁরা প্রত্যেকেই সরকারি-বেসরকারি নানা সংস্থার উচ্চ পদে আছেন। এদের মধ্যে বর্তমানে তিন ছেলে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত আছেন। এক ছেলে বেলাল হোসেন বর্তমানে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপসচিব পদে কর্মরত রয়েছেন।

ছিপাতলী ইউনিয়নের ১৯৭৮ সালে জন্ম নেওয়া নাছরিন আকতারকে এইচএসসি পরীক্ষার ১৯ দিন আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করা হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী আবু তাহের ও শ্বশুরবাড়ির সব নির্যাতন সহ্য করে সংসার চালিয়ে যান। দুই মেয়ে ও ছেলে সন্তানের মা নাছরিনকে ২০০৭ সালে তালাক দেন তাঁর স্বামী। ২০১০ সালে তিনি নিজের চেষ্টায় ডিগ্রি পাস করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করান।

মেখল ইউনিয়নে ১৯৮৬ সালে জন্ম নেওয়া খাদিজা বিয়ের পর স্বামীর গাইনি কোর্স সম্পন্ন করে নিজ পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন। গরিব রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) আকলিমা সুলতানা বলেন, সমাজের কুসংস্কার, যৌতুক, নারী নির্যাতন ও অভাবে দমে না যাওয়াদের সাহস জোগাতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়কমন্ত্রণালয়ের জয়িতা নির্বাচন অন্যতম।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত