সেলিম জাহান
আজ বাংলাদেশের স্বপ্ন একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার। দেশের জনগণের এই প্রত্যাশা নতুন নয়। নানা মাত্রিকতায় বৈষম্যের শিকার হয়েই বাঙালি জনগোষ্ঠী পাকিস্তান আমলে সংগ্রাম করেছে, আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছে এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে সামাজিক ন্যায্যতার প্রশ্ন, সমতার বিষয়, সাম্যের কথা বারবার উঠে এসেছে।
অসমতা ও বৈষম্যের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক ন্যায্যতার দলন ও অন্যায্য পক্ষপাত। অসমতা প্রতিফলিত হতে পারে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানসিক অঙ্গনে। বৈষম্য ঘটে ঘরে-বাইরে, দেশজ, আঞ্চলিক কিংবা বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে। অসমতা নিরীক্ষণ করতে কিংবা বৈষম্য নিরূপণে আমরা প্রায়ই ফলাফলের দিকে তাকাই যেমন—আয়বৈষম্য কিংবা সম্পদের অসমতা। কিন্তু আজকের পৃথিবীতে যে বৈষম্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হয়ে উঠেছে, সেটা হচ্ছে ‘সুযোগের বৈষম্য’ যেমন—শিক্ষায় কিংবা স্বাস্থ্যসেবায় অথবা তথ্যপ্রযুক্তিতে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঙ্গনে আয় ও সম্পদের অসমতা সর্বজনবিদিত। সত্যিকার অর্থে, এই অসমতা বোঝার জন্য উপাত্তের প্রয়োজন হয় না, ঢাকা শহরের পথে-ঘাটে বেরোলেই তা চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ কিংবা অর্থ পাচারের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে অর্থ ও বিত্ত সামান্য কিছু মানুষ ও পরিবারে কুক্ষিগত। মোটাদাগের উপাত্তের দিকে যদি তাকাই, তাহলে আয়ের মাপকাঠিতে বাংলাদেশের মোট আয়ের মাত্র ১৩ শতাংশ যেখানে দেশের নিম্নতম ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর যায়, সেখানে সমাজের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মানুষ ভোগ করে দেশজ আয়ের ৩৮ শতাংশ। ভোগের ক্ষেত্রে যেখানে নিম্নতম ১০ শতাংশ গৃহস্থালিতে মাসিক মাথাপিছু ব্যয় ২ হাজার ১২২ টাকা, সেখানে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ গৃহস্থালিতে সে সংখ্যাটি হচ্ছে ৯ হাজার ১৩৭ টাকা।
মানব উন্নয়নের নানা সূচকেও এমন বৈষম্য বিদ্যমান। অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশু মৃত্যুর হার সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেখানে প্রতি হাজারে ৪৯, সেখানে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তা প্রতি হাজারে ২৫। তেমনিভাবে, দেশের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ গৃহস্থালির ৮৫ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় প্রশিক্ষিত নার্সের হাতে। অন্যদিকে, নিম্নতম ২০ শতাংশ গৃহস্থালির মাত্র ৩২ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সের দ্বারা। আঞ্চলিক বৈষম্যের দিকে যদি তাকাই, তাহলে দেখা যায়, বরিশালে সাক্ষরতার হার যেখানে ৭৫ শতাংশ, সিলেটে সেটা ৬০ শতাংশ। তেমনিভাবে পরিবেশ নাজুক জেলাগুলোতে বিভিন্ন পীড়ার প্রাদুর্ভাব অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি। এসব অঞ্চলে মোট গৃহস্থালির ৪৫ শতাংশই নানা পীড়ার শিকার।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুযোগে বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। শিক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি ধারা, বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম, বিত্তবান ও বিত্তহীনদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি প্রবণতার মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগে একটি বিশাল বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে। দিনের পর দিন কোনো কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোটা-ব্যবস্থা বজায় রেখে শিক্ষার সুযোগের ক্ষেত্রে অসমতা আরও বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। এসবের প্রতিফলন ঘটেছে শিক্ষা অর্জনের ফলাফলে এবং তারপরে কর্ম নিয়োজনে। একইভাবে স্বাস্থ্য খাতে ত্রিধারা ব্যবস্থা বজায় রেখে স্বাস্থ্য সুযোগের ক্ষেত্রেও একটি বিশাল বৈষম্যের দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।
ফলে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সেবার পরিমাণ যেমন অপ্রতুল, তেমনি তার মানও খুব নিচু। সাধারণ মানুষই সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থায় যায় এবং স্বাভাবিকভাবেই তারা ন্যূনতম স্বাস্থ্যসুবিধা পায় না। অন্যদিকে বিত্তবানেরা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়।
তথ্যপ্রযুক্তি সেবায় সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ গৃহস্থালির তিন-চতুর্থাংশের যেখানে আন্তর্যোগ সেবায় লভ্যতা আছে, সেখানে নিম্নতম ২০ শতাংশ গৃহস্থালির ক্ষেত্রে তুলনামূলক সংখ্যাটি হচ্ছে মাত্র ৯ শতাংশ। শহরাঞ্চলের ৫৫ শতাংশ মানুষ আন্তর্যোগ ব্যবহার করে, গ্রামাঞ্চলের তেমন মানুষের অনুপাত হচ্ছে ৩৫ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলের মাত্র ৩ শতাংশ ঘরে কম্পিউটার আছে এবং ৭৮ শতাংশ গ্রামীণ মানুষ যন্ত্রটি ব্যবহার করতে জানে না।
বাংলাদেশে নারী-পুরুষের মধ্যেও ফলাফল ও সুযোগের মধ্যে অসমতা রয়েছে। যেমন—উচ্চতম শিক্ষা স্তরে নারীর অন্তর্ভুক্তির হার যেখানে ১৭ শতাংশ, সেখানে পুরুষদের মধ্যে সেই সংখ্যা হচ্ছে ২৪ শতাংশ। দেশের শ্রমশক্তিতে পুরুষের অংশগ্রহণের হার যেখানে ৮১ শতাংশ, নারীর মধ্যে সেই সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ৩৬ শতাংশ। জ্যেষ্ঠ ও মধ্যম স্তরের নির্বাহীদের মধ্যে নারীর অনুপাত হচ্ছে মাত্র ১২ শতাংশ। বাংলাদেশে মুঠোফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরুষ-নারীর মধ্যে ফারাক হচ্ছে ২৯ শতাংশ। আন্তর্যোগ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশের ৩৩ শতাংশ পুরুষ আন্তর্যোগ ব্যবহার করে, নারীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংখ্যা হচ্ছে ১৭ শতাংশ।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও বৈষম্য অত্যন্ত গভীর—এই সত্য অতীত ও নিকট অতীতে বারবারই পরিলক্ষিত হয়েছে। যেকোনো রাজনৈতিক আলোচনা বা বিতর্কের জায়গাটি সরকারি দল কর্তৃক সম্পূর্ণভাবে দখল করে রাখে এবং বিরোধী দলের সব কর্মকাণ্ড নিষ্পেষিত হয়। প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে বিরোধীদলীয় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দেওয়া হয় না এবং সেই জায়গায় সরকারি দল একচ্ছত্রভাবে বিরাজ করে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা যদি বলি, তাহলে সেখানে যেকোনো রকমের বিকল্প মতকে শায়েস্তা করেছে ক্ষমতাসীন দল। জ্ঞান ও শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ, অন্যান্য পেশাজীবী, সংবাদমাধ্যম, সুশীল সমাজের টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে।
দেশের নীতিমালা নির্ধারণে সাধারণ মানুষের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। সেখানে বিত্ত ও ক্ষমতার পক্ষপাত ছিল সুস্পষ্ট। দরিদ্র, প্রান্তিক গোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রত্যাশা ও চাওয়া-পাওয়া কখনো ধর্তব্যের মধ্যে আনা হয়নি। নানা সময়ে লোকদেখানো অংশগ্রহণমূলক আলাপ-আলোচনার একটা ভাব তৈরি করা হয়েছে বটে, কিন্তু সেগুলো কার্যকর কোনো জন অংশগ্রহণ ছিল না। নারী জনগোষ্ঠী নানা সময়ে কথা বলেছে বটে, কিন্তু কখনোই তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
দেশের যে জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক অঙ্গনের কণ্ঠস্বরের ক্ষেত্রে প্রান্তিক সীমায় রেখে দেওয়া হয়েছিল, তারা হচ্ছে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ। তাদের আমরা সর্বদা দেশের ভবিষ্যৎ করে রেখে দিয়েছি, তাদের আমরা দেশের বর্তমান হয়ে উঠতে দিইনি। তরুণ সমাজের প্রতি এই বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে তাদের সৃষ্টিশীলতা ও সৃজনশীলতাকে আমাদের সমাজ বিবর্তন ও সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারিনি। তরুণ শক্তির এই অপচয় বৈষম্যের এক বিশাল নেতিবাচক ফলাফল।
সামাজিক দিক থেকে ধনী-দরিদ্র, উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণ, আশরাফ-আতরাফের বৈষম্য আমাদের সমাজে আজও বিদ্যমান। দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসুবিধায় বঞ্চিত। তারা বঞ্চিত সম্পদে, ঋণসুবিধায়, তথ্য ও প্রযুক্তিসেবায়। ফলে কর্মনিয়োজন এবং আয়ের দিক থেকেও তারা বঞ্চনার শিকার হয়। পরিবেশ-নাজুক অঞ্চলে যেসব প্রান্তিক মানুষের বাস, তারাও ক্রমবর্ধমান অসমতার শিকার হয়। হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যকার নিম্নবর্ণের মানুষ এবং আশরাফ-আতরাফদের মধ্যে আতরাফেরা সামাজিক বৈষম্যমূলক একটি স্থানে অবস্থান করে। সামাজিক দিক থেকে বাংলাদেশে নগর ও পল্লির মধ্যকার বৈষম্যের কথা সুবিদিত।
সমাজ অঙ্গনে ধর্মীয় বৈষম্যের কথা বারবার নানা আলোচনায় উঠে এসেছে। নানা সময়ে নানা ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের নিরাপত্তার অভাবের কথা উল্লেখ করেছে, তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ব্যাহত করার অভিযোগও উঠেছে। এ সবই বৈষম্যমূলক আচরণ। কারণ ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে রাষ্ট্রের সব নাগরিকেরই সমান অধিকার।
সামাজিক অঙ্গনে অসমতা শুধু সামষ্টিক পর্যায়েই বিরাজ করে না, একধরনের বৈষম্য ব্যষ্টিক ক্ষেত্রেও লক্ষ করা যায়। যেমন—পরিবারের মধ্যে মেয়েদের অধিকার, সুযোগ-সুবিধা, খাদ্য গ্রহণ, মত প্রকাশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আর্থিক স্বাবলম্বনের ক্ষেত্রে একটি লক্ষণীয় বৈষম্য দেখতে পাওয়া যায়। বয়োকনিষ্ঠদের মতামতও পরিবারের মধ্যে উপেক্ষিত হয়। কর্মক্ষেত্রেও ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনের মধ্যে নানা মাত্রিকতার বৈষম্য দেখতে পাওয়া যায়।
সাংস্কৃতিক দিক থেকেও বহু বৈষম্য লক্ষণীয়। নগর সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্র ও সরকার যতটা উদ্গ্রীব থাকে, গ্রামীণ সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাদের উৎসাহ অনেক সময় ততটা পরিলক্ষিত হয় না। বহু ক্ষেত্রেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিল্প ও সংস্কৃতিকে মূলধারায় প্রবিষ্ট করার জন্য একটি অনধিকার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। তেমনিভাবে যেসব অঞ্চলে এসব গোষ্ঠী বসবাস করে থাকে, সেখানকার শিক্ষালয়ে শিক্ষা প্রদান সেসব গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় না হয়ে বাংলা মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এ-ও লক্ষ করা গেছে যে, ওই সব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা ও সাহিত্য রাষ্ট্রীয় সাহায্য, সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা পায় না। এসব মিলিয়েই একটি সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে তাদের পরিপ্রেক্ষিতে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য একটি সমাজে সমৃদ্ধ ও বেগবান করে।
বাংলাদেশের সমাজে মানসিক বৈষম্যের কথাও বহুজন বলেছেন। আমাদের সমাজে বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধী গোষ্ঠীকে হীন বলে মনে করা হয় এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তাদের অবস্থাকে আমরা সহানুভূতিশীল দৃষ্টি দিয়ে দেখি না, তাদের বিষয়গুলো আমরা সঠিকভাবে বিবেচনা করি না। তেমনিভাবে মানুষের প্রতি আমরা বৈষম্যমূলক আচরণ করি। আমরা বহু সময়ে মানুষের ন্যূনতম সম্মানটুকু দিই না, যদি সে হয় দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কেউ।
শেষ কথা হচ্ছে, বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়ে তুলতে হলে তার একটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিপ্রেক্ষিত থাকতে হবে সন্দেহ নেই, কিন্তু সেই সঙ্গে ব্যক্তি-মানুষের একটা দায়িত্ব থাকা প্রয়োজন। আমাদের চেতনায় ও দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমাদের আচার-আচরণে, আমাদের কর্মকাণ্ডে প্রত্যেকে যদি সমতার প্রতি শ্রদ্ধাবান হই, তাহলে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে সেটা একটি বিরাট শক্তি হিসেবে কাজ করবে। সেই সঙ্গে যুক্ত হতে হবে সমাজের কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রের কার্যক্রম।
লেখক: সেলিম জাহান
অর্থনীতিবিদ
আজ বাংলাদেশের স্বপ্ন একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার। দেশের জনগণের এই প্রত্যাশা নতুন নয়। নানা মাত্রিকতায় বৈষম্যের শিকার হয়েই বাঙালি জনগোষ্ঠী পাকিস্তান আমলে সংগ্রাম করেছে, আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছে এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে সামাজিক ন্যায্যতার প্রশ্ন, সমতার বিষয়, সাম্যের কথা বারবার উঠে এসেছে।
অসমতা ও বৈষম্যের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক ন্যায্যতার দলন ও অন্যায্য পক্ষপাত। অসমতা প্রতিফলিত হতে পারে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মানসিক অঙ্গনে। বৈষম্য ঘটে ঘরে-বাইরে, দেশজ, আঞ্চলিক কিংবা বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে। অসমতা নিরীক্ষণ করতে কিংবা বৈষম্য নিরূপণে আমরা প্রায়ই ফলাফলের দিকে তাকাই যেমন—আয়বৈষম্য কিংবা সম্পদের অসমতা। কিন্তু আজকের পৃথিবীতে যে বৈষম্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হয়ে উঠেছে, সেটা হচ্ছে ‘সুযোগের বৈষম্য’ যেমন—শিক্ষায় কিংবা স্বাস্থ্যসেবায় অথবা তথ্যপ্রযুক্তিতে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঙ্গনে আয় ও সম্পদের অসমতা সর্বজনবিদিত। সত্যিকার অর্থে, এই অসমতা বোঝার জন্য উপাত্তের প্রয়োজন হয় না, ঢাকা শহরের পথে-ঘাটে বেরোলেই তা চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ কিংবা অর্থ পাচারের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে অর্থ ও বিত্ত সামান্য কিছু মানুষ ও পরিবারে কুক্ষিগত। মোটাদাগের উপাত্তের দিকে যদি তাকাই, তাহলে আয়ের মাপকাঠিতে বাংলাদেশের মোট আয়ের মাত্র ১৩ শতাংশ যেখানে দেশের নিম্নতম ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর যায়, সেখানে সমাজের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মানুষ ভোগ করে দেশজ আয়ের ৩৮ শতাংশ। ভোগের ক্ষেত্রে যেখানে নিম্নতম ১০ শতাংশ গৃহস্থালিতে মাসিক মাথাপিছু ব্যয় ২ হাজার ১২২ টাকা, সেখানে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ গৃহস্থালিতে সে সংখ্যাটি হচ্ছে ৯ হাজার ১৩৭ টাকা।
মানব উন্নয়নের নানা সূচকেও এমন বৈষম্য বিদ্যমান। অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশু মৃত্যুর হার সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেখানে প্রতি হাজারে ৪৯, সেখানে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তা প্রতি হাজারে ২৫। তেমনিভাবে, দেশের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ গৃহস্থালির ৮৫ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় প্রশিক্ষিত নার্সের হাতে। অন্যদিকে, নিম্নতম ২০ শতাংশ গৃহস্থালির মাত্র ৩২ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সের দ্বারা। আঞ্চলিক বৈষম্যের দিকে যদি তাকাই, তাহলে দেখা যায়, বরিশালে সাক্ষরতার হার যেখানে ৭৫ শতাংশ, সিলেটে সেটা ৬০ শতাংশ। তেমনিভাবে পরিবেশ নাজুক জেলাগুলোতে বিভিন্ন পীড়ার প্রাদুর্ভাব অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি। এসব অঞ্চলে মোট গৃহস্থালির ৪৫ শতাংশই নানা পীড়ার শিকার।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুযোগে বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। শিক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি ধারা, বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম, বিত্তবান ও বিত্তহীনদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি প্রবণতার মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগে একটি বিশাল বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে। দিনের পর দিন কোনো কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোটা-ব্যবস্থা বজায় রেখে শিক্ষার সুযোগের ক্ষেত্রে অসমতা আরও বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। এসবের প্রতিফলন ঘটেছে শিক্ষা অর্জনের ফলাফলে এবং তারপরে কর্ম নিয়োজনে। একইভাবে স্বাস্থ্য খাতে ত্রিধারা ব্যবস্থা বজায় রেখে স্বাস্থ্য সুযোগের ক্ষেত্রেও একটি বিশাল বৈষম্যের দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।
ফলে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সেবার পরিমাণ যেমন অপ্রতুল, তেমনি তার মানও খুব নিচু। সাধারণ মানুষই সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থায় যায় এবং স্বাভাবিকভাবেই তারা ন্যূনতম স্বাস্থ্যসুবিধা পায় না। অন্যদিকে বিত্তবানেরা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়।
তথ্যপ্রযুক্তি সেবায় সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ গৃহস্থালির তিন-চতুর্থাংশের যেখানে আন্তর্যোগ সেবায় লভ্যতা আছে, সেখানে নিম্নতম ২০ শতাংশ গৃহস্থালির ক্ষেত্রে তুলনামূলক সংখ্যাটি হচ্ছে মাত্র ৯ শতাংশ। শহরাঞ্চলের ৫৫ শতাংশ মানুষ আন্তর্যোগ ব্যবহার করে, গ্রামাঞ্চলের তেমন মানুষের অনুপাত হচ্ছে ৩৫ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলের মাত্র ৩ শতাংশ ঘরে কম্পিউটার আছে এবং ৭৮ শতাংশ গ্রামীণ মানুষ যন্ত্রটি ব্যবহার করতে জানে না।
বাংলাদেশে নারী-পুরুষের মধ্যেও ফলাফল ও সুযোগের মধ্যে অসমতা রয়েছে। যেমন—উচ্চতম শিক্ষা স্তরে নারীর অন্তর্ভুক্তির হার যেখানে ১৭ শতাংশ, সেখানে পুরুষদের মধ্যে সেই সংখ্যা হচ্ছে ২৪ শতাংশ। দেশের শ্রমশক্তিতে পুরুষের অংশগ্রহণের হার যেখানে ৮১ শতাংশ, নারীর মধ্যে সেই সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ৩৬ শতাংশ। জ্যেষ্ঠ ও মধ্যম স্তরের নির্বাহীদের মধ্যে নারীর অনুপাত হচ্ছে মাত্র ১২ শতাংশ। বাংলাদেশে মুঠোফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরুষ-নারীর মধ্যে ফারাক হচ্ছে ২৯ শতাংশ। আন্তর্যোগ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশের ৩৩ শতাংশ পুরুষ আন্তর্যোগ ব্যবহার করে, নারীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংখ্যা হচ্ছে ১৭ শতাংশ।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও বৈষম্য অত্যন্ত গভীর—এই সত্য অতীত ও নিকট অতীতে বারবারই পরিলক্ষিত হয়েছে। যেকোনো রাজনৈতিক আলোচনা বা বিতর্কের জায়গাটি সরকারি দল কর্তৃক সম্পূর্ণভাবে দখল করে রাখে এবং বিরোধী দলের সব কর্মকাণ্ড নিষ্পেষিত হয়। প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে বিরোধীদলীয় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দেওয়া হয় না এবং সেই জায়গায় সরকারি দল একচ্ছত্রভাবে বিরাজ করে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা যদি বলি, তাহলে সেখানে যেকোনো রকমের বিকল্প মতকে শায়েস্তা করেছে ক্ষমতাসীন দল। জ্ঞান ও শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ, অন্যান্য পেশাজীবী, সংবাদমাধ্যম, সুশীল সমাজের টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে।
দেশের নীতিমালা নির্ধারণে সাধারণ মানুষের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। সেখানে বিত্ত ও ক্ষমতার পক্ষপাত ছিল সুস্পষ্ট। দরিদ্র, প্রান্তিক গোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রত্যাশা ও চাওয়া-পাওয়া কখনো ধর্তব্যের মধ্যে আনা হয়নি। নানা সময়ে লোকদেখানো অংশগ্রহণমূলক আলাপ-আলোচনার একটা ভাব তৈরি করা হয়েছে বটে, কিন্তু সেগুলো কার্যকর কোনো জন অংশগ্রহণ ছিল না। নারী জনগোষ্ঠী নানা সময়ে কথা বলেছে বটে, কিন্তু কখনোই তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
দেশের যে জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক অঙ্গনের কণ্ঠস্বরের ক্ষেত্রে প্রান্তিক সীমায় রেখে দেওয়া হয়েছিল, তারা হচ্ছে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ। তাদের আমরা সর্বদা দেশের ভবিষ্যৎ করে রেখে দিয়েছি, তাদের আমরা দেশের বর্তমান হয়ে উঠতে দিইনি। তরুণ সমাজের প্রতি এই বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে তাদের সৃষ্টিশীলতা ও সৃজনশীলতাকে আমাদের সমাজ বিবর্তন ও সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারিনি। তরুণ শক্তির এই অপচয় বৈষম্যের এক বিশাল নেতিবাচক ফলাফল।
সামাজিক দিক থেকে ধনী-দরিদ্র, উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণ, আশরাফ-আতরাফের বৈষম্য আমাদের সমাজে আজও বিদ্যমান। দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসুবিধায় বঞ্চিত। তারা বঞ্চিত সম্পদে, ঋণসুবিধায়, তথ্য ও প্রযুক্তিসেবায়। ফলে কর্মনিয়োজন এবং আয়ের দিক থেকেও তারা বঞ্চনার শিকার হয়। পরিবেশ-নাজুক অঞ্চলে যেসব প্রান্তিক মানুষের বাস, তারাও ক্রমবর্ধমান অসমতার শিকার হয়। হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যকার নিম্নবর্ণের মানুষ এবং আশরাফ-আতরাফদের মধ্যে আতরাফেরা সামাজিক বৈষম্যমূলক একটি স্থানে অবস্থান করে। সামাজিক দিক থেকে বাংলাদেশে নগর ও পল্লির মধ্যকার বৈষম্যের কথা সুবিদিত।
সমাজ অঙ্গনে ধর্মীয় বৈষম্যের কথা বারবার নানা আলোচনায় উঠে এসেছে। নানা সময়ে নানা ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের নিরাপত্তার অভাবের কথা উল্লেখ করেছে, তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ব্যাহত করার অভিযোগও উঠেছে। এ সবই বৈষম্যমূলক আচরণ। কারণ ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে রাষ্ট্রের সব নাগরিকেরই সমান অধিকার।
সামাজিক অঙ্গনে অসমতা শুধু সামষ্টিক পর্যায়েই বিরাজ করে না, একধরনের বৈষম্য ব্যষ্টিক ক্ষেত্রেও লক্ষ করা যায়। যেমন—পরিবারের মধ্যে মেয়েদের অধিকার, সুযোগ-সুবিধা, খাদ্য গ্রহণ, মত প্রকাশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আর্থিক স্বাবলম্বনের ক্ষেত্রে একটি লক্ষণীয় বৈষম্য দেখতে পাওয়া যায়। বয়োকনিষ্ঠদের মতামতও পরিবারের মধ্যে উপেক্ষিত হয়। কর্মক্ষেত্রেও ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনের মধ্যে নানা মাত্রিকতার বৈষম্য দেখতে পাওয়া যায়।
সাংস্কৃতিক দিক থেকেও বহু বৈষম্য লক্ষণীয়। নগর সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্র ও সরকার যতটা উদ্গ্রীব থাকে, গ্রামীণ সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাদের উৎসাহ অনেক সময় ততটা পরিলক্ষিত হয় না। বহু ক্ষেত্রেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিল্প ও সংস্কৃতিকে মূলধারায় প্রবিষ্ট করার জন্য একটি অনধিকার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। তেমনিভাবে যেসব অঞ্চলে এসব গোষ্ঠী বসবাস করে থাকে, সেখানকার শিক্ষালয়ে শিক্ষা প্রদান সেসব গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় না হয়ে বাংলা মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এ-ও লক্ষ করা গেছে যে, ওই সব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা ও সাহিত্য রাষ্ট্রীয় সাহায্য, সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা পায় না। এসব মিলিয়েই একটি সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে তাদের পরিপ্রেক্ষিতে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য একটি সমাজে সমৃদ্ধ ও বেগবান করে।
বাংলাদেশের সমাজে মানসিক বৈষম্যের কথাও বহুজন বলেছেন। আমাদের সমাজে বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধী গোষ্ঠীকে হীন বলে মনে করা হয় এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তাদের অবস্থাকে আমরা সহানুভূতিশীল দৃষ্টি দিয়ে দেখি না, তাদের বিষয়গুলো আমরা সঠিকভাবে বিবেচনা করি না। তেমনিভাবে মানুষের প্রতি আমরা বৈষম্যমূলক আচরণ করি। আমরা বহু সময়ে মানুষের ন্যূনতম সম্মানটুকু দিই না, যদি সে হয় দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কেউ।
শেষ কথা হচ্ছে, বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়ে তুলতে হলে তার একটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিপ্রেক্ষিত থাকতে হবে সন্দেহ নেই, কিন্তু সেই সঙ্গে ব্যক্তি-মানুষের একটা দায়িত্ব থাকা প্রয়োজন। আমাদের চেতনায় ও দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমাদের আচার-আচরণে, আমাদের কর্মকাণ্ডে প্রত্যেকে যদি সমতার প্রতি শ্রদ্ধাবান হই, তাহলে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে সেটা একটি বিরাট শক্তি হিসেবে কাজ করবে। সেই সঙ্গে যুক্ত হতে হবে সমাজের কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রের কার্যক্রম।
লেখক: সেলিম জাহান
অর্থনীতিবিদ
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২১ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে