নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কোরবানির পশুর চামড়া এখন মূল্যহীন পণ্য। ভেড়া-ছাগলের চামড়া কেনার ক্রেতাই মেলেনি। বাধ্য হয়ে কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন, কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছেন। গরুর চামড়াও বিক্রি হয়েছে পানির দামে। চামড়া কেনাবেচার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে দাম বেঁধে দিয়েছিল, তা কেউ মানেনি।
পশু কোরবানির পর সারা দেশে চামড়া কেনাবেচার এই ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে। দেখা গেছে, গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকায়। আর খাসির চামড়া সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ১০ টাকা পর্যন্ত।
অভিযোগ রয়েছে, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে চামড়ার দামের এই বেহাল অবস্থা তৈরি করেছেন। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চামড়ার দর নির্ধারণ করলেও মাঠপর্যায়ে তদারকির কোনো উদ্যোগ ছিল। এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না।
দোহার উপজেলার পুষ্পখালী গ্রামের মনির হোসেন জানান, ৫১ হাজার ৫০০ টাকার দুটি বড় আকারের খাসি কিনেছিলেন। দুটি চামড়া ২০ টাকা দাম হাঁকান একজন ক্রেতা। সারা দিনে কেউ কিনতে না আসায় পরে তা বিনা পয়সায় ওই ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। একই গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান, ১ লাখ ১০ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি করতে না পারায় পরে তা এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার নাগেরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন লস্কর এ বছর ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি গরু কোরবানি দেন। সারা দিনে চামড়া কিনতে কেউ না আসায় তিনি তা এতিমখানায় পরিবহন ভাড়া দিয়ে পাঠিয়ে দেন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় প্রতিটি গরুর চামড়া ১৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছাগল বা ভেড়ার চামড়া বিনা মূল্যে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের বাদশা মিয়া বলেন, কয়েকটি ছাগলের চামড়া সদরে নিয়ে যান। বিক্রি করতে না পেরে বিনা মূল্যে দিয়ে আসেন। একই গ্রামের ভুট্টো মিয়া জানান, ঈদের পরদিন আকিকা দিতে কয়েকটি খাসি জবাই দেন। চামড়ার দাম না থাকায় তা যমুনা নদীতে ফেলে দেন।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, বিক্রি না হওয়ায় আমতলীতে ছাগলের ৬০টি চামড়া মাটিচাপা এবং গরুর চামড়া পানির দামে বিক্রি হয়েছে।
বিক্রি করতে না পারায় মাদ্রাসায় দানের পাওয়া ৬০টি চামড়া মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা ওমর ফারুক।
চামড়ার দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে। এতে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা ও বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তার মানে চলতি বছর প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৭ টাকা এবং খাসির চামড়ায় ৩ টাকা বাড়তি দাম নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়।
যশোর প্রতিনিধি জানান, যশোরের রাজারহাট দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার। গতকাল মঙ্গলবার সেই হাটে ৫-৭ হাজার চামড়া ওঠে। কিন্তু কেউই আশানুরূপ দাম পাননি। ছাগলের চামড়া বিনা মূল্যে দিয়ে মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছেন ক্ষুদ্র ও মৌসুমি এসব ব্যবসায়ী।
গতকাল সকালে যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা ও মাগুরার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে রাজারহাটে আসেন। বাইরের কোনো ক্রেতা না আসায় তাঁরা হতাশ। যশোরের অভয়নগরের মহাদেব বিশ্বাস বলেন, ৪০০টি গরুর চামড়া কেনেন। গরু ৭০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি করেন। গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তাঁর।
নড়াইল থেকে ১০০টি গরুর চামড়া ও ১৩টি খাসির চামড়া নিয়ে আসা হীরামন বিশ্বাস বলেন, সরকার-নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। খাসির চামড়া পাঁচ টাকায় বিক্রি করেছেন।
নড়াইলের কাজল বিশ্বাস বলেন, ৫০০ গরুর চামড়া আনেন। প্রতিটি চামড়া ৩০০-৭০০ টাকায় কেনেন। লবণ, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ মিলিয়ে প্রতি চামড়ায় আরও ২০০ টাকা করে খরচ হয়েছে।
যশোর চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মমিনুল মজিদ পলাশ বলেন, ‘সরকার-নির্ধারিত দামেই আমরা চামড়া কিনছি। ক্ষুদ্র ও মৌসুমি বিক্রেতারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।’
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চামড়া নিয়ে বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। চামড়া কিনতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। চামড়া বিক্রি করতে না পেরে কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছেন, কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন কিংবা কেউ এতিমখানায় দান করেছেন।
কমলগঞ্জের পতনঊষার ইউনিয়নের আব্দুল আহাদ বলেন, এলাকার চামড়াগুলো কেউ বিনা মূল্যে নিতে আসেনি। সারা দিন অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে কেউ বিকেলে লাঘাটা নদীতে চামড়া ফেলে দিয়েছেন, কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন।
খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনায় বড় গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়, ছোট ৩০০ টাকা দরে। ছাগলের চামড়া বিনা মূল্যে দিচ্ছেন ব্যাপারীরা।
খুলনা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অব্দুস সালাম ঢালী বলেন, অর্থসংকটের কারণে তাঁরা এবারও চামড়া কিনতে পারেননি।
বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এ বছর গরু-মহিষ কোরবানি হয়েছে ৫৫-৬০ লাখ এবং ছাগল-ভেড়া ৩৫-৪০ লাখ। এদের মধ্যে বিক্রি করতে না পারায় ৫ শতাংশ খাসির চামড়া নষ্ট হয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি পশু কোরবানি হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব আহমেদ দাবি করেন, এ বছর সরকার-নির্ধারিত দামেই তাঁরা চামড়া কিনেছেন। তবে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে চামড়ার দাম কমে গেলেও কোনো চামড়া নষ্ট হয়নি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, এ বছর তাঁরা সরকার-নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনেছেন। বাড়তি খরচের ভয়ে মাদ্রাসা-এতিমখানার লোকজন চামড়ায় লবণ দেয়নি, এতে তাদের চামড়ার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আগে হাজারীবাগে ২০-২২টি প্রতিষ্ঠান ছিল, যারা শুধু খাসি-বকরির চামড়া সংগ্রহ করত। সাভারে স্থানান্তরের সময় অনেকেই সে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে খাসি-বকরির চামড়ার কোনো ক্রেতা ছিল না বাজারে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেছেন, চামড়ার দর নির্ধারণ করেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ করা উচিত হয়নি। নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে কি না, সেটাও দেখার দরকার ছিল। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
কোরবানির পশুর চামড়া এখন মূল্যহীন পণ্য। ভেড়া-ছাগলের চামড়া কেনার ক্রেতাই মেলেনি। বাধ্য হয়ে কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন, কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছেন। গরুর চামড়াও বিক্রি হয়েছে পানির দামে। চামড়া কেনাবেচার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে দাম বেঁধে দিয়েছিল, তা কেউ মানেনি।
পশু কোরবানির পর সারা দেশে চামড়া কেনাবেচার এই ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে। দেখা গেছে, গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকায়। আর খাসির চামড়া সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ১০ টাকা পর্যন্ত।
অভিযোগ রয়েছে, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে চামড়ার দামের এই বেহাল অবস্থা তৈরি করেছেন। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চামড়ার দর নির্ধারণ করলেও মাঠপর্যায়ে তদারকির কোনো উদ্যোগ ছিল। এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না।
দোহার উপজেলার পুষ্পখালী গ্রামের মনির হোসেন জানান, ৫১ হাজার ৫০০ টাকার দুটি বড় আকারের খাসি কিনেছিলেন। দুটি চামড়া ২০ টাকা দাম হাঁকান একজন ক্রেতা। সারা দিনে কেউ কিনতে না আসায় পরে তা বিনা পয়সায় ওই ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। একই গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান, ১ লাখ ১০ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি করতে না পারায় পরে তা এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার নাগেরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন লস্কর এ বছর ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি গরু কোরবানি দেন। সারা দিনে চামড়া কিনতে কেউ না আসায় তিনি তা এতিমখানায় পরিবহন ভাড়া দিয়ে পাঠিয়ে দেন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় প্রতিটি গরুর চামড়া ১৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছাগল বা ভেড়ার চামড়া বিনা মূল্যে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের বাদশা মিয়া বলেন, কয়েকটি ছাগলের চামড়া সদরে নিয়ে যান। বিক্রি করতে না পেরে বিনা মূল্যে দিয়ে আসেন। একই গ্রামের ভুট্টো মিয়া জানান, ঈদের পরদিন আকিকা দিতে কয়েকটি খাসি জবাই দেন। চামড়ার দাম না থাকায় তা যমুনা নদীতে ফেলে দেন।
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, বিক্রি না হওয়ায় আমতলীতে ছাগলের ৬০টি চামড়া মাটিচাপা এবং গরুর চামড়া পানির দামে বিক্রি হয়েছে।
বিক্রি করতে না পারায় মাদ্রাসায় দানের পাওয়া ৬০টি চামড়া মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা ওমর ফারুক।
চামড়ার দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে। এতে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা ও বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তার মানে চলতি বছর প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৭ টাকা এবং খাসির চামড়ায় ৩ টাকা বাড়তি দাম নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়।
যশোর প্রতিনিধি জানান, যশোরের রাজারহাট দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার। গতকাল মঙ্গলবার সেই হাটে ৫-৭ হাজার চামড়া ওঠে। কিন্তু কেউই আশানুরূপ দাম পাননি। ছাগলের চামড়া বিনা মূল্যে দিয়ে মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছেন ক্ষুদ্র ও মৌসুমি এসব ব্যবসায়ী।
গতকাল সকালে যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা ও মাগুরার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে রাজারহাটে আসেন। বাইরের কোনো ক্রেতা না আসায় তাঁরা হতাশ। যশোরের অভয়নগরের মহাদেব বিশ্বাস বলেন, ৪০০টি গরুর চামড়া কেনেন। গরু ৭০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি করেন। গড়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তাঁর।
নড়াইল থেকে ১০০টি গরুর চামড়া ও ১৩টি খাসির চামড়া নিয়ে আসা হীরামন বিশ্বাস বলেন, সরকার-নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। খাসির চামড়া পাঁচ টাকায় বিক্রি করেছেন।
নড়াইলের কাজল বিশ্বাস বলেন, ৫০০ গরুর চামড়া আনেন। প্রতিটি চামড়া ৩০০-৭০০ টাকায় কেনেন। লবণ, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ মিলিয়ে প্রতি চামড়ায় আরও ২০০ টাকা করে খরচ হয়েছে।
যশোর চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মমিনুল মজিদ পলাশ বলেন, ‘সরকার-নির্ধারিত দামেই আমরা চামড়া কিনছি। ক্ষুদ্র ও মৌসুমি বিক্রেতারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।’
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চামড়া নিয়ে বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। চামড়া কিনতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। চামড়া বিক্রি করতে না পেরে কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছেন, কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন কিংবা কেউ এতিমখানায় দান করেছেন।
কমলগঞ্জের পতনঊষার ইউনিয়নের আব্দুল আহাদ বলেন, এলাকার চামড়াগুলো কেউ বিনা মূল্যে নিতে আসেনি। সারা দিন অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে কেউ বিকেলে লাঘাটা নদীতে চামড়া ফেলে দিয়েছেন, কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন।
খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনায় বড় গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়, ছোট ৩০০ টাকা দরে। ছাগলের চামড়া বিনা মূল্যে দিচ্ছেন ব্যাপারীরা।
খুলনা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অব্দুস সালাম ঢালী বলেন, অর্থসংকটের কারণে তাঁরা এবারও চামড়া কিনতে পারেননি।
বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এ বছর গরু-মহিষ কোরবানি হয়েছে ৫৫-৬০ লাখ এবং ছাগল-ভেড়া ৩৫-৪০ লাখ। এদের মধ্যে বিক্রি করতে না পারায় ৫ শতাংশ খাসির চামড়া নষ্ট হয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি পশু কোরবানি হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব আহমেদ দাবি করেন, এ বছর সরকার-নির্ধারিত দামেই তাঁরা চামড়া কিনেছেন। তবে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে চামড়ার দাম কমে গেলেও কোনো চামড়া নষ্ট হয়নি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, এ বছর তাঁরা সরকার-নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনেছেন। বাড়তি খরচের ভয়ে মাদ্রাসা-এতিমখানার লোকজন চামড়ায় লবণ দেয়নি, এতে তাদের চামড়ার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আগে হাজারীবাগে ২০-২২টি প্রতিষ্ঠান ছিল, যারা শুধু খাসি-বকরির চামড়া সংগ্রহ করত। সাভারে স্থানান্তরের সময় অনেকেই সে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে খাসি-বকরির চামড়ার কোনো ক্রেতা ছিল না বাজারে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেছেন, চামড়ার দর নির্ধারণ করেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ করা উচিত হয়নি। নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে কি না, সেটাও দেখার দরকার ছিল। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে