মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
২৩ জুন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ৭৪ বছর পূর্ণ করে ৭৫ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে দলটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম পুরোনো এই রাজনৈতিক দল লক্ষ্য নির্ধারণ, কর্ম বাস্তবায়ন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং ইতিহাসের বিশাল কিছু অর্জন সংগঠিত করার মাধ্যমে এর অস্তিত্ব শুধু টিকিয়ে রাখাই নয়, দিনে দিনে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলে এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য করতে পেরেছে বলেই দলটি দীর্ঘ এই সময় ধরে মানুষের মধ্যে অবস্থান করছে। এই অঞ্চলে আরও অনেক রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে, বুদ্বুদের মতো উবেও গেছে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতা, জটিলতা, প্রতিবন্ধকতা এবং ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতার শিকারে পরিণত হওয়া সত্ত্বেও দলটি বারবার পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। এখানেই আওয়ামী লীগের অদ্বিতীয়তা।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর কেউ ভাবতে পারেনি পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের প্রতি মোহ ত্যাগের বাস্তবতা এত দ্রুত তৈরি হতে পারে। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের স্বতঃস্ফূর্ততায় পূর্ব বাংলার মানুষ একসময় গা ভাসিয়ে দিলেও দেশভাগের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব বাংলায় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ঔপনিবেশিক ধাঁচের শাসন-শোষণ ও উপেক্ষার যে নজিরবিহীন আচরণ শুরু করেছিল, তাতে বছর না ঘুরতেই অর্থনৈতিক সংকট তীব্রতর হয়ে উঠতে থাকে। পূর্ব বাংলায় অবাঙালিরা পাটশিল্পের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করলে এখানকার ব্যবসায়ী ও পাটচাষিরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। এই সময়ে পূর্ব বাংলার জনগণ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষাবস্থার সম্মুখীন হয়। ফলে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও উঠতি বাঙালি তরুণেরা পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। মুসলিম লীগ এই চরম সংকটকালে পাশে দাঁড়ায়নি। অধিকন্তু উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পাকিস্তানিদের চাপ মানুষের মনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের সম্পর্কে মস্ত বড় অনাস্থা তৈরি করতে থাকে।
রাজনীতিতে সরকার ও মুসলিম লীগের অত্যাচার বাড়তেই থাকে। এ অবস্থায় পাকিস্তান আন্দোলনে যেসব উদারবাদী, প্রগতিশীল ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মী সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা দ্রুত সাংগঠনিকভাবে একত্রিত হওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে থাকেন। ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শামসুল হককে সভাপতি নির্বাচিত করে গণতান্ত্রিক যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি ঢাকাস্থ মুসলিম লীগ অফিসের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগ। ভাষা আন্দোলন জোরদার করার ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ছাত্রলীগসহ প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরা সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। শেখ মুজিব স্বাধীন পাকিস্তানে প্রথম গ্রেপ্তারও হন। এরপর পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ায় মুসলিম লীগের বিকল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তুতি চলতে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে শেখ মুজিব অংশগ্রহণ করায় জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে কারারুদ্ধ হন ১৯৪৯ সালের ১৯ মার্চ। মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে তখন সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হতে থাকে। এর প্রভাব প্রথম পড়ে ২৬ এপ্রিলের টাঙ্গাইল উপনির্বাচনে। মুসলিম লীগের প্রার্থী পন্নী খানকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন যুবলীগের সভাপতি শামসুল হক। এরপর মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তার ধস পূর্ব বাংলার সর্বত্রই নামতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সম্মেলন ১৮, ১৯ ও ২০ জুন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পূর্ব পাকিস্তানের ক্রমাবনতিশীল অবস্থার কথা স্বীকার করা হয়। এর জন্য তারা মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়ী করেন।
এর দুই দিন পরেই ২৩ ও ২৪ তারিখে ঢাকার কে এম দাশ লেনের কে এম বশির হুমায়ূনের বাসভবন রোজ গার্ডেনে মুসলিম লীগের খাজাপন্থীদের বিরোধী প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরা দুই দিনব্যাপী গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে প্রথম দিন সভাপতিত্ব করেন আতাউর রহমান খান, বক্তৃতা করেন মওলানা ভাসানী। ২৩ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৪ তারিখ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামক একটি সংগঠন গঠিত হয়। ৪০ সদস্যসবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদের নামও ঘোষণা করা হয়। মওলানা ভাসানীকে সভাপতি, আতাউর রহমান খানসহ পাঁচজন সহসভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক, জেলে বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক, সহসম্পাদক দুজন এবং ইয়ার মোহাম্মদ খান কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে সংগঠনের নতুন ম্যানিফেস্টো তৈরির দায়িত্ব পান শামসুল হক। ম্যানিফেস্টোতে ১২টি দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পাকিস্তানকে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র, দুটি আঞ্চলিক ইউনিট, লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, সব নাগরিকের সমান অধিকার, নারী-পুরুষনির্বিশেষে শিক্ষালাভ, প্রতিরক্ষা বাহিনীতে সব নাগরিকের যোগদানের সুযোগ সৃষ্টি, মৌলিক মানবাধিকার প্রদান, জমিদারি ও মধ্যস্বত্ব প্রথা বিলোপ ইত্যাদি। মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ২৪ তারিখ সম্মেলন শেষে আরমানিটোলা মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী মুসলিম লীগের আত্মপ্রকাশই বলে দেয় এর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে প্রথমে পূর্ব বাংলার জনগণের স্বায়ত্তশাসনসহ অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং পাকিস্তানকে একটি ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিণত করা।
২৬ জুন শেখ মুজিব কারাগার থেকে মুক্তি পান। আওয়ামী লীগ নতুন উদ্দীপনায় যাত্রা শুরু করলেও পদে পদে ছিল তাঁর সরকারি রোষানলে পড়ার বাধা। ২০ অক্টোবর আরমানিটোলা মাঠে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত জনসভার পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে থাকে। সোহরাওয়ার্দীকে পাকিস্তান সরকার ঢাকায় আসার ব্যাপারে বাধা প্রদান করে। পরে সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে ১৯৫০ সালে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ স্বতন্ত্র মর্যাদা রক্ষার মাধ্যমে জনগণের দাবিদাওয়ার পক্ষে কর্মসূচি প্রদান করতে থাকে।
১৯৫৩ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সম্মেলনের আগে থেকেই শামসুল হক জটিল রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়। তিনি এর আগ থেকেই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্ট ২১ দফা প্রণয়ন করে। ’৫৪-এর প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ভূমিধস বিজয় লাভ করে। মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি আসন, আওয়ামী লীগ এককভাবে ১৪৩টি আসন, অন্যান্য দলও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসন পায়। আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের রাজনীতির চরিত্র ভালোভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে কাজ করতে সুযোগ দেয়নি। ৯২ (ক) ধারা জারি করে শেরেবাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বাতিল করে দেওয়া হয়। শেরেবাংলা গৃহবন্দী এবং শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাকিস্তানের রাজনীতির ইতিহাসে আওয়ামী লীগকে ঘরে ও বাইরে চরম বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়।
১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ ভেঙে ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠিত হয়। ’৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করা হয় এবং শেখ মুজিবকে কারাগারে পাঠানো হয়। ষাটের দশকে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান গণতন্ত্রবিরোধী নানা কালাকানুন প্রবর্তন করে। এরই মধ্যে সোহরাওয়ার্দী মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে পূর্ব বাংলা অবহেলিত থাকে। এই প্রেক্ষাপটে শেখ মুজিব ৬ দফা প্রদান করেন। ১৯৬৬ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি সভাপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব ৬ দফাকে স্বায়ত্তশাসন ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের বিষয়ে পরিণত করে। পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবসহ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কারারুদ্ধ করে।
তাতেও আন্দোলন দমন করতে না পেরে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুজু করা হয়। প্রহসনের এই মামলার বিচার পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি করে। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয় এবং ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিব কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নিরঙ্কুশ বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরাজয় এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ঘটে। এর পরও ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রেক্ষাপটে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং ২৫ মার্চের রাতের গণহত্যার বিপরীতে স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাস যুদ্ধ করেই সেই বিজয় ছিনিয়ে আনা হয়। আওয়ামী লীগ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সফল হয়।
’৭২ সালে আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু হয়। সংবিধান, অর্থনৈতিক পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং জাতিরাষ্ট্র গঠনে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নসহ নানাবিধ বৈপ্লবিক পরিবর্তন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী শক্তি তাঁকে ও তাঁর দলের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেয়। আওয়ামী লীগকে তছনছ করা হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে বিপথগামী করা হয়।
১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি হিসেবে দেশে পদার্পণ করেন। রাজনীতিতে দলটি পুনরুজ্জীবিত হওয়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর্ব ১৯৯০-৯১তে নতুন স্তরে উন্নীত হয়। এরপর ৩০ বছরের বেশি সময় আওয়ামী লীগ আন্দোলন ও ক্ষমতায় থেকে দেশকে অসাম্প্রদায়িক চরিত্র এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার লড়াইয়ে রয়েছে। গত ১৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের অভ্যন্তরে সুবিধাবাদী, দোদুল্যমান আদর্শধারী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্থান করে নিয়েছে। দেশকে শেখ হাসিনা নতুন উচ্চতায় তুলে আনতে সক্ষম হলেও দলের অভ্যন্তরেই যত সব বাধাবিপত্তি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদেশিদের নানা হস্তক্ষেপ।
এসব বাধাবিপত্তি ও হস্তক্ষেপ অতিক্রম করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে টিকে থাকতে হবে। এর জন্য জনগণের কাতারে আওয়ামী লীগকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যেতে হবে। আওয়ামী লীগ সফল হলে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক, রাজনৈতিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বহাল থাকবে, এর ব্যত্যয় ঘটলে স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িকতা বিপন্ন হবে। সুতরাং ৭৪ বছর পূর্তিতে আওয়ামী লীগের শপথ হোক আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ের ধারায় রাখার।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
২৩ জুন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ৭৪ বছর পূর্ণ করে ৭৫ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে দলটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম পুরোনো এই রাজনৈতিক দল লক্ষ্য নির্ধারণ, কর্ম বাস্তবায়ন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং ইতিহাসের বিশাল কিছু অর্জন সংগঠিত করার মাধ্যমে এর অস্তিত্ব শুধু টিকিয়ে রাখাই নয়, দিনে দিনে জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলে এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য করতে পেরেছে বলেই দলটি দীর্ঘ এই সময় ধরে মানুষের মধ্যে অবস্থান করছে। এই অঞ্চলে আরও অনেক রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে, বুদ্বুদের মতো উবেও গেছে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতা, জটিলতা, প্রতিবন্ধকতা এবং ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতার শিকারে পরিণত হওয়া সত্ত্বেও দলটি বারবার পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। এখানেই আওয়ামী লীগের অদ্বিতীয়তা।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর কেউ ভাবতে পারেনি পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের প্রতি মোহ ত্যাগের বাস্তবতা এত দ্রুত তৈরি হতে পারে। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের স্বতঃস্ফূর্ততায় পূর্ব বাংলার মানুষ একসময় গা ভাসিয়ে দিলেও দেশভাগের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব বাংলায় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ঔপনিবেশিক ধাঁচের শাসন-শোষণ ও উপেক্ষার যে নজিরবিহীন আচরণ শুরু করেছিল, তাতে বছর না ঘুরতেই অর্থনৈতিক সংকট তীব্রতর হয়ে উঠতে থাকে। পূর্ব বাংলায় অবাঙালিরা পাটশিল্পের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করলে এখানকার ব্যবসায়ী ও পাটচাষিরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। এই সময়ে পূর্ব বাংলার জনগণ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষাবস্থার সম্মুখীন হয়। ফলে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও উঠতি বাঙালি তরুণেরা পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। মুসলিম লীগ এই চরম সংকটকালে পাশে দাঁড়ায়নি। অধিকন্তু উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পাকিস্তানিদের চাপ মানুষের মনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের সম্পর্কে মস্ত বড় অনাস্থা তৈরি করতে থাকে।
রাজনীতিতে সরকার ও মুসলিম লীগের অত্যাচার বাড়তেই থাকে। এ অবস্থায় পাকিস্তান আন্দোলনে যেসব উদারবাদী, প্রগতিশীল ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মী সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা দ্রুত সাংগঠনিকভাবে একত্রিত হওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে থাকেন। ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শামসুল হককে সভাপতি নির্বাচিত করে গণতান্ত্রিক যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি ঢাকাস্থ মুসলিম লীগ অফিসের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগ। ভাষা আন্দোলন জোরদার করার ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ছাত্রলীগসহ প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরা সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। শেখ মুজিব স্বাধীন পাকিস্তানে প্রথম গ্রেপ্তারও হন। এরপর পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ায় মুসলিম লীগের বিকল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তুতি চলতে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে শেখ মুজিব অংশগ্রহণ করায় জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে কারারুদ্ধ হন ১৯৪৯ সালের ১৯ মার্চ। মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে তখন সাধারণ মানুষ ক্ষিপ্ত হতে থাকে। এর প্রভাব প্রথম পড়ে ২৬ এপ্রিলের টাঙ্গাইল উপনির্বাচনে। মুসলিম লীগের প্রার্থী পন্নী খানকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন যুবলীগের সভাপতি শামসুল হক। এরপর মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তার ধস পূর্ব বাংলার সর্বত্রই নামতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সম্মেলন ১৮, ১৯ ও ২০ জুন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পূর্ব পাকিস্তানের ক্রমাবনতিশীল অবস্থার কথা স্বীকার করা হয়। এর জন্য তারা মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়ী করেন।
এর দুই দিন পরেই ২৩ ও ২৪ তারিখে ঢাকার কে এম দাশ লেনের কে এম বশির হুমায়ূনের বাসভবন রোজ গার্ডেনে মুসলিম লীগের খাজাপন্থীদের বিরোধী প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরা দুই দিনব্যাপী গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে প্রথম দিন সভাপতিত্ব করেন আতাউর রহমান খান, বক্তৃতা করেন মওলানা ভাসানী। ২৩ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৪ তারিখ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামক একটি সংগঠন গঠিত হয়। ৪০ সদস্যসবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদের নামও ঘোষণা করা হয়। মওলানা ভাসানীকে সভাপতি, আতাউর রহমান খানসহ পাঁচজন সহসভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক, জেলে বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক, সহসম্পাদক দুজন এবং ইয়ার মোহাম্মদ খান কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে সংগঠনের নতুন ম্যানিফেস্টো তৈরির দায়িত্ব পান শামসুল হক। ম্যানিফেস্টোতে ১২টি দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পাকিস্তানকে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র, দুটি আঞ্চলিক ইউনিট, লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, সব নাগরিকের সমান অধিকার, নারী-পুরুষনির্বিশেষে শিক্ষালাভ, প্রতিরক্ষা বাহিনীতে সব নাগরিকের যোগদানের সুযোগ সৃষ্টি, মৌলিক মানবাধিকার প্রদান, জমিদারি ও মধ্যস্বত্ব প্রথা বিলোপ ইত্যাদি। মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ২৪ তারিখ সম্মেলন শেষে আরমানিটোলা মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী মুসলিম লীগের আত্মপ্রকাশই বলে দেয় এর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে প্রথমে পূর্ব বাংলার জনগণের স্বায়ত্তশাসনসহ অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং পাকিস্তানকে একটি ফেডারেল রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিণত করা।
২৬ জুন শেখ মুজিব কারাগার থেকে মুক্তি পান। আওয়ামী লীগ নতুন উদ্দীপনায় যাত্রা শুরু করলেও পদে পদে ছিল তাঁর সরকারি রোষানলে পড়ার বাধা। ২০ অক্টোবর আরমানিটোলা মাঠে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত জনসভার পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হতে থাকে। সোহরাওয়ার্দীকে পাকিস্তান সরকার ঢাকায় আসার ব্যাপারে বাধা প্রদান করে। পরে সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে ১৯৫০ সালে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ স্বতন্ত্র মর্যাদা রক্ষার মাধ্যমে জনগণের দাবিদাওয়ার পক্ষে কর্মসূচি প্রদান করতে থাকে।
১৯৫৩ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সম্মেলনের আগে থেকেই শামসুল হক জটিল রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়। তিনি এর আগ থেকেই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। যুক্তফ্রন্ট ২১ দফা প্রণয়ন করে। ’৫৪-এর প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ভূমিধস বিজয় লাভ করে। মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি আসন, আওয়ামী লীগ এককভাবে ১৪৩টি আসন, অন্যান্য দলও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসন পায়। আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের রাজনীতির চরিত্র ভালোভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে কাজ করতে সুযোগ দেয়নি। ৯২ (ক) ধারা জারি করে শেরেবাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বাতিল করে দেওয়া হয়। শেরেবাংলা গৃহবন্দী এবং শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাকিস্তানের রাজনীতির ইতিহাসে আওয়ামী লীগকে ঘরে ও বাইরে চরম বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়।
১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ ভেঙে ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠিত হয়। ’৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করা হয় এবং শেখ মুজিবকে কারাগারে পাঠানো হয়। ষাটের দশকে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান গণতন্ত্রবিরোধী নানা কালাকানুন প্রবর্তন করে। এরই মধ্যে সোহরাওয়ার্দী মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে পূর্ব বাংলা অবহেলিত থাকে। এই প্রেক্ষাপটে শেখ মুজিব ৬ দফা প্রদান করেন। ১৯৬৬ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি সভাপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব ৬ দফাকে স্বায়ত্তশাসন ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের বিষয়ে পরিণত করে। পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবসহ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কারারুদ্ধ করে।
তাতেও আন্দোলন দমন করতে না পেরে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুজু করা হয়। প্রহসনের এই মামলার বিচার পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি করে। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত হয় এবং ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিব কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নিরঙ্কুশ বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরাজয় এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ঘটে। এর পরও ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রেক্ষাপটে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং ২৫ মার্চের রাতের গণহত্যার বিপরীতে স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাস যুদ্ধ করেই সেই বিজয় ছিনিয়ে আনা হয়। আওয়ামী লীগ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সফল হয়।
’৭২ সালে আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু হয়। সংবিধান, অর্থনৈতিক পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং জাতিরাষ্ট্র গঠনে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নসহ নানাবিধ বৈপ্লবিক পরিবর্তন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী শক্তি তাঁকে ও তাঁর দলের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেয়। আওয়ামী লীগকে তছনছ করা হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে বিপথগামী করা হয়।
১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি হিসেবে দেশে পদার্পণ করেন। রাজনীতিতে দলটি পুনরুজ্জীবিত হওয়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর্ব ১৯৯০-৯১তে নতুন স্তরে উন্নীত হয়। এরপর ৩০ বছরের বেশি সময় আওয়ামী লীগ আন্দোলন ও ক্ষমতায় থেকে দেশকে অসাম্প্রদায়িক চরিত্র এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার লড়াইয়ে রয়েছে। গত ১৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের অভ্যন্তরে সুবিধাবাদী, দোদুল্যমান আদর্শধারী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্থান করে নিয়েছে। দেশকে শেখ হাসিনা নতুন উচ্চতায় তুলে আনতে সক্ষম হলেও দলের অভ্যন্তরেই যত সব বাধাবিপত্তি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদেশিদের নানা হস্তক্ষেপ।
এসব বাধাবিপত্তি ও হস্তক্ষেপ অতিক্রম করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে টিকে থাকতে হবে। এর জন্য জনগণের কাতারে আওয়ামী লীগকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যেতে হবে। আওয়ামী লীগ সফল হলে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক, রাজনৈতিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বহাল থাকবে, এর ব্যত্যয় ঘটলে স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িকতা বিপন্ন হবে। সুতরাং ৭৪ বছর পূর্তিতে আওয়ামী লীগের শপথ হোক আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ের ধারায় রাখার।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে