মেঘনায় ইলিশ শিকার শুরু

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ মে ২০২২, ১৩: ৫৭

নিষেধাজ্ঞার দুই মাস পর লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে নামছেন জেলেরা। কয়েক দিন ধরে জাল ও নৌকা মেরামতসহ সব কাজ সেরে নিতে মাছঘাটগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তাঁরা। এদিকে নিষেধাজ্ঞার সময় জাটকা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ছিল তৎপর। ফলে গত বছরের চেয়ে এবার মাছের উৎপাদন বাড়বে বলে দাবি করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা।

এবারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন বেশি। জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানা গেছে, জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মৎস্য বিভাগ। এ সময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত ও মজুতকরণের ওপর ছিল নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার দুই মাস মার্চ-এপ্রিল এবং পরের মে-জুনসহ চার মাস প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি হারে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

ইতিমধ্যে দুই মাসের ভিজিএফের চাল পেলেও অন্য দুই মাসের চাল এখনো পাননি বলে অভিযোগ করেন জেলেরা। এ ছাড়া অনেক জেলে বরাদ্দকৃত চাল এখনো পাইনি বলে অভিযোগ করেন। গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। এই জেলায় প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। সবাই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

মতিরহাট ঘাটের লিটন ও মজুচৌধুরীর হাটে মিন্টু বলেন, প্রতিবছর নদীতে অভিযান চলে। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে এবারের অভিযান সফল হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় ও পরের মে-জুনসহ ৪ মাস প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি হারে ভিজিএফের চাল দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক জেলে বরাদ্দের চাল পাননি বলে অভিযোগ করেন জেলেরা।

এদিকে বরাদ্দের চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে গতকাল মধ্য রাতে। পুরোদমে মাছ ধরা শুরু হবে এখন। তাই নৌকা ও জালসহ অন্যান্য কাজ সেরে নিয়ে নদীতে মাছ ধরার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এবারের অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, গতবারের চেয়ে এবার মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া দুই মাসের অভিযানে বেশ কয়েকজন জেলেকে জেল-জরিমানা ও মামলা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তিনি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের সমন্বয় করে টাস্কফোর্স গঠন করে নদীতে অভিযান অব্যাহত ছিল। অভিযান সফল হওয়ায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া প্রতি জেলের জন্য সরকারিভাবে ভিজিএফের যে চাল বরাদ্দ ছিল, সেটি সঠিকভাবে যেন জেলেরা পান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেটা নিশ্চিত করা হয়। এরপর কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম হলে সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত