শাইখ সিরাজ
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই একটি খবরে চোখ আটকাল। পেঁয়াজের মৌসুমে ছয় মাস আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে কৃষক পক্ষের সচেতন নাগরিক সমাজ। প্রতিবছরই পেঁয়াজের মৌসুমে কৃষকদের এই সংকট মোকাবিলা করতে হয়। আমার ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে কৃষকের জোর দাবি ছিল পেঁয়াজের মৌসুমে যেন পেঁয়াজ আমদানি না করা হয়। ২০২০ সালে গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। সেখানেও পেঁয়াজ আমদানি বিষয়ে কৃষকেরা সরাসরি তাঁর কাছে তাঁদের দাবি তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়টি তিনি দেখবেন। এ কথা সত্য, মৌসুমকালীন পেঁয়াজ আমদানির কারণে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
কৃষিপণ্য হিসেবে পেঁয়াজের গুরুত্ব নতুন করে বলার নেই। গত কয়েক বছরে বহুবার পেঁয়াজ ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়েছে। সে সময় পেঁয়াজের দাম রাতারাতি আকাশ ছুঁয়েছে। মানুষের উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছেছে। পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে মুলার কথা ভাবা হয়েছে। পেঁয়াজের দুর্মূল্য থেকে ক্রেতাসাধারণ কীভাবে রেহাই পেতে পারেন তা নিয়ে বহু কথা ছড়িয়েছে। পেঁয়াজ নিয়ে হয়েছে নানান প্যাঁচ-কথা। কিন্তু যখনই পেঁয়াজের মৌসুমে আমাদের কৃষকেরা পেঁয়াজ উৎপাদন করেন, তখন কোনো কথা হয় না। মৌসুমেও চুপচাপ চলে অসাধু ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ আমদানি। পেঁয়াজ গবেষকেরা জানিয়েছেন, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ফারাক মাত্র ২ লাখ টনের। বছরে দেশে পেঁয়াজ হয় ২৩ লাখ টনের ওপরে। আর চাহিদা রয়েছে ২৪-২৫ লাখ টনের। তারপরও শুধু নষ্ট হওয়ার কারণে বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে উৎপাদিত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য যে আধুনিক তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা থাকা দরকার, তা সরকারি-বেসরকারি কোনো পর্যায়ে নেই।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে গত এক দশকে পেঁয়াজের আবাদি জমি, উৎপাদন ও ফলন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২১ সালে ২ দশমিক ৩৭ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ টন। এ হিসাব অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। আবার কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ ২০২০-এর তথ্যমতে, ২০২০ সালে পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ছিল ১৯ দশমিক ৫৪ লাখ টন। যেহেতু পেঁয়াজ পচনশীল, তাই অপচয় ২৫ শতাংশ ধরে উৎপাদন ধরতে পারি ১৫ লাখ টনের মতো। অপরদিকে বীজ উৎপাদন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও ওষুধশিল্পে পেঁয়াজের ব্যবহার যোগ করলে দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক মোট চাহিদা প্রায় ২২ লাখ টন। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি করা হয় ৬ দশমিক ৪১ লাখ টন।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের আমদানিচিত্র থেকে দেখা যায় যে ২০০৮-০৯ সালে ১ দশমিক ৩৪৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ২২২ দশমিক ৩১ কোটি টাকা, যা ১০ বছরের ব্যবধানে ২০১৭-১৮ সালে ১৫ দশমিক ৩৫ গুণ বেড়ে ৩,৪১২ দশমিক ২৭ কোটি টাকা হয়েছে; অর্থাৎ আমদানির পরিমাণ ৭ দশমিক ৯ গুণ বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৩৫ গুণ।
আরও একটি পরিসংখ্যানের দিকে দৃষ্টি দিতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর হিসাবে, বিশ্বের প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে হেক্টরপ্রতি সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ হয় যুক্তরাষ্ট্রে, প্রায় ৫৭ হাজার টন। চীনে তা ২২ হাজার টন, ভারতে ১৬ হাজার টন এবং মিসরে ৩৬ হাজার টনের ওপরে। আর বিশ্বে গড়ে হেক্টরপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ২০ হাজার টন। কিন্তু বাংলাদেশের পেঁয়াজের গড় উৎপাদন এখনো ৯ হাজার ৭৭৭ টনে রয়ে গেছে। তবে আশার কথা, বাংলাদেশে পেঁয়াজের উৎপাদন প্রতিবছর ২ শতাংশ হারে বাড়ছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদন বাড়ায় মোট উৎপাদন খরচ কমছে ৮ শতাংশ হারে। তার মানে আমরা যদি পেঁয়াজের উন্নত জাত ব্যবহার করতে পারি এবং উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারি, তাহলে অনায়াসেই দেশের চাহিদা মিটতে পারে।
স্থানীয়ভাবে আমরা সমস্যা সমাধানের কথা না ভেবে বছর বছর পেঁয়াজ আমদানির কথা চিন্তা করছি। দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে পারলেই পেঁয়াজ উৎপাদনে আমরা সহজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব। এক. উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা। দুই. পেঁয়াজের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন।
দেশের এক-তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ আবাদ হয় পাবনা জেলায়। তার মধ্যে গজনার বিলই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের খেত। সেখানে সাধারণত দুই জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। চারা পেঁয়াজ ও মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ। প্রতিবছর পাবনায় চারা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে, মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ১০ হাজার হেক্টরে। চারা পেঁয়াজের ফলন হয় বছরে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। বছর পাঁচেক আগে গজনার বিলের পেঁয়াজচাষিদের কথা তুলে ধরেছিলাম চ্যানেল আইয়ের ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানে। তখনো অভিযোগ ছিল মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানির কারণে কৃষক তাঁর উৎপাদিত পণ্যের দাম পান না। তাঁদের দাবি, মৌসুমে বাজারে যেন কোনো বিদেশি পেঁয়াজ না ঢোকে। স্বভাবতই বাজারে বিদেশি পেঁয়াজ প্রবেশের কারণে জোগান বেড়ে যাওয়ায় দাম পড়ে যায়। এতে ক্ষতির শিকার হন পেঁয়াজচাষিরা। মৌসুমে ৬০০ টাকা মণে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন অথচ তাঁদের খরচ পড়ছে প্রায় ১ হাজার টাকা। ফলে সরকারের উচিত ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে আমাদের কৃষকদের সহায়তা করা।
বিজয়ের ৫০ বছর পার করেছি আমরা। আমাদের কৃষি নানাভাবে অগ্রসর হয়েছে। ধানসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে আশাতীত। এর পেছনে আমাদের গবেষণা ও সম্প্রসারণের যেমন অবদান আছে, অবদান আছে বীজ আমদানি ও বাণিজ্যের। আমাদের সময় এসেছে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসা। খাদ্য যখন অনেকগুলো পণ্যের সমষ্টি, তখন যেকোনো একটি পণ্যের ঘাটতিই বাজারে যেমন অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে, কৃষক ও সাধারণ মানুষকেও ফেলে সংকটের মুখে। পেঁয়াজের সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টাই যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে বীজ উৎপাদনের প্রতিবন্ধকতাগুলো যেমন দূর করতে হবে। একইভাবে এমন ঝুঁকিপূর্ণ চাষের সঙ্গে বিমাব্যবস্থাকেও যুক্ত করতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই একটি খবরে চোখ আটকাল। পেঁয়াজের মৌসুমে ছয় মাস আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে কৃষক পক্ষের সচেতন নাগরিক সমাজ। প্রতিবছরই পেঁয়াজের মৌসুমে কৃষকদের এই সংকট মোকাবিলা করতে হয়। আমার ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে কৃষকের জোর দাবি ছিল পেঁয়াজের মৌসুমে যেন পেঁয়াজ আমদানি না করা হয়। ২০২০ সালে গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। সেখানেও পেঁয়াজ আমদানি বিষয়ে কৃষকেরা সরাসরি তাঁর কাছে তাঁদের দাবি তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়টি তিনি দেখবেন। এ কথা সত্য, মৌসুমকালীন পেঁয়াজ আমদানির কারণে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
কৃষিপণ্য হিসেবে পেঁয়াজের গুরুত্ব নতুন করে বলার নেই। গত কয়েক বছরে বহুবার পেঁয়াজ ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়েছে। সে সময় পেঁয়াজের দাম রাতারাতি আকাশ ছুঁয়েছে। মানুষের উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছেছে। পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে মুলার কথা ভাবা হয়েছে। পেঁয়াজের দুর্মূল্য থেকে ক্রেতাসাধারণ কীভাবে রেহাই পেতে পারেন তা নিয়ে বহু কথা ছড়িয়েছে। পেঁয়াজ নিয়ে হয়েছে নানান প্যাঁচ-কথা। কিন্তু যখনই পেঁয়াজের মৌসুমে আমাদের কৃষকেরা পেঁয়াজ উৎপাদন করেন, তখন কোনো কথা হয় না। মৌসুমেও চুপচাপ চলে অসাধু ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ আমদানি। পেঁয়াজ গবেষকেরা জানিয়েছেন, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ফারাক মাত্র ২ লাখ টনের। বছরে দেশে পেঁয়াজ হয় ২৩ লাখ টনের ওপরে। আর চাহিদা রয়েছে ২৪-২৫ লাখ টনের। তারপরও শুধু নষ্ট হওয়ার কারণে বছরে ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে উৎপাদিত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়। পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য যে আধুনিক তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা থাকা দরকার, তা সরকারি-বেসরকারি কোনো পর্যায়ে নেই।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে গত এক দশকে পেঁয়াজের আবাদি জমি, উৎপাদন ও ফলন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২১ সালে ২ দশমিক ৩৭ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ টন। এ হিসাব অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। আবার কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ ২০২০-এর তথ্যমতে, ২০২০ সালে পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ছিল ১৯ দশমিক ৫৪ লাখ টন। যেহেতু পেঁয়াজ পচনশীল, তাই অপচয় ২৫ শতাংশ ধরে উৎপাদন ধরতে পারি ১৫ লাখ টনের মতো। অপরদিকে বীজ উৎপাদন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও ওষুধশিল্পে পেঁয়াজের ব্যবহার যোগ করলে দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক মোট চাহিদা প্রায় ২২ লাখ টন। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি করা হয় ৬ দশমিক ৪১ লাখ টন।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের আমদানিচিত্র থেকে দেখা যায় যে ২০০৮-০৯ সালে ১ দশমিক ৩৪৭ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ২২২ দশমিক ৩১ কোটি টাকা, যা ১০ বছরের ব্যবধানে ২০১৭-১৮ সালে ১৫ দশমিক ৩৫ গুণ বেড়ে ৩,৪১২ দশমিক ২৭ কোটি টাকা হয়েছে; অর্থাৎ আমদানির পরিমাণ ৭ দশমিক ৯ গুণ বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৩৫ গুণ।
আরও একটি পরিসংখ্যানের দিকে দৃষ্টি দিতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর হিসাবে, বিশ্বের প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে হেক্টরপ্রতি সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ হয় যুক্তরাষ্ট্রে, প্রায় ৫৭ হাজার টন। চীনে তা ২২ হাজার টন, ভারতে ১৬ হাজার টন এবং মিসরে ৩৬ হাজার টনের ওপরে। আর বিশ্বে গড়ে হেক্টরপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ২০ হাজার টন। কিন্তু বাংলাদেশের পেঁয়াজের গড় উৎপাদন এখনো ৯ হাজার ৭৭৭ টনে রয়ে গেছে। তবে আশার কথা, বাংলাদেশে পেঁয়াজের উৎপাদন প্রতিবছর ২ শতাংশ হারে বাড়ছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদন বাড়ায় মোট উৎপাদন খরচ কমছে ৮ শতাংশ হারে। তার মানে আমরা যদি পেঁয়াজের উন্নত জাত ব্যবহার করতে পারি এবং উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারি, তাহলে অনায়াসেই দেশের চাহিদা মিটতে পারে।
স্থানীয়ভাবে আমরা সমস্যা সমাধানের কথা না ভেবে বছর বছর পেঁয়াজ আমদানির কথা চিন্তা করছি। দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে পারলেই পেঁয়াজ উৎপাদনে আমরা সহজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব। এক. উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা। দুই. পেঁয়াজের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন।
দেশের এক-তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ আবাদ হয় পাবনা জেলায়। তার মধ্যে গজনার বিলই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের খেত। সেখানে সাধারণত দুই জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। চারা পেঁয়াজ ও মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ। প্রতিবছর পাবনায় চারা পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে, মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ আবাদ হয় প্রায় ১০ হাজার হেক্টরে। চারা পেঁয়াজের ফলন হয় বছরে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। বছর পাঁচেক আগে গজনার বিলের পেঁয়াজচাষিদের কথা তুলে ধরেছিলাম চ্যানেল আইয়ের ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানে। তখনো অভিযোগ ছিল মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানির কারণে কৃষক তাঁর উৎপাদিত পণ্যের দাম পান না। তাঁদের দাবি, মৌসুমে বাজারে যেন কোনো বিদেশি পেঁয়াজ না ঢোকে। স্বভাবতই বাজারে বিদেশি পেঁয়াজ প্রবেশের কারণে জোগান বেড়ে যাওয়ায় দাম পড়ে যায়। এতে ক্ষতির শিকার হন পেঁয়াজচাষিরা। মৌসুমে ৬০০ টাকা মণে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন অথচ তাঁদের খরচ পড়ছে প্রায় ১ হাজার টাকা। ফলে সরকারের উচিত ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে আমাদের কৃষকদের সহায়তা করা।
বিজয়ের ৫০ বছর পার করেছি আমরা। আমাদের কৃষি নানাভাবে অগ্রসর হয়েছে। ধানসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে আশাতীত। এর পেছনে আমাদের গবেষণা ও সম্প্রসারণের যেমন অবদান আছে, অবদান আছে বীজ আমদানি ও বাণিজ্যের। আমাদের সময় এসেছে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসা। খাদ্য যখন অনেকগুলো পণ্যের সমষ্টি, তখন যেকোনো একটি পণ্যের ঘাটতিই বাজারে যেমন অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে, কৃষক ও সাধারণ মানুষকেও ফেলে সংকটের মুখে। পেঁয়াজের সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টাই যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে বীজ উৎপাদনের প্রতিবন্ধকতাগুলো যেমন দূর করতে হবে। একইভাবে এমন ঝুঁকিপূর্ণ চাষের সঙ্গে বিমাব্যবস্থাকেও যুক্ত করতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
১৫ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
১৫ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
১৫ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
১৬ ঘণ্টা আগে