কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে কার্পাস তুলা। চলতি বছর ১৬৩ হেক্টর জমিতে এই তুলা চাষ হয়েছে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা খুশি।

উপজেলায় অনুকূল আবহাওয়া ও হাইব্রিড জাতের মানসম্মত বীজের কারণে কয়েক বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর তুলার দাম মণ প্রতি তিন গুণ বেড়েছে। সরকারিভাবে সম্প্রসারিত তুলা চাষ প্রকল্পের বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ড জানায়, চলতি বছর ১৬৩ হেক্টর জমিতে কার্পাস জাতের তুলার চাষ করা হয়েছে। উপজেলার কুটিচন্দ্রখানা, রামরামসেন, ধুলারকুটি, কৃষ্ণানন্দবকসী, ফুলমতি, গোড়কমন্ডল ও নওদাবাস এসব তুলার চাষ করা হয়।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, তুলা গ্রীষ্মকালীন ফসল। জুন-জুলাই মাসে বীজ বপন করা উচিত। ভালো ফলনের জন্য তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৬৩৫ থেকে ১ হাজার ১৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি প্রয়োজন। উঁচু থেকে মাঝারি উঁচু জমিতে তুলা চাষ করা যায়। এতে জমির সুষ্ঠু ব্যবহারের পাশাপাশি তুলার ফলন বেশি হয়। এবার তুলার দাম ১ হাজার ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলার রামরামসেন গ্ৰামের তুলা চাষি আব্দুল বাতেন বলেন, ‘এ বছর ১ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। গত কয়েক বছর ধরে সরকারিভাবে তুলার মণ ২ হাজার ৪০০ টাকা ছিল। এ বছর সরকারিভাবে তুলার দাম বাড়ানো হয়েছে।’

উপজেলার নওদাবাস গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে তিনি তিন বিঘা জমিতে কার্পাস তুলার চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর মোট ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। চলতি মৌসুমের ৭০ মণ তুলা বিক্রি করতে পারবেন। যার বাজারমূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা।

ধুলারকুটি এলাকার কৃষক হযরত আলী জানান, এবার তুলা চাষে তিনি উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ড থেকে সার, বীজসহ ঋণ সহায়তা পেয়েছেন। তিনি গত ১৫ বছর ধরে তুলা চাষ করে আসছেন।

উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় তুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা যাতে উৎপাদিত তুলার ন্যায্যমূল্য পান এ জন্য তুলার দাম বাড়িয়েছে সরকার। তুলার দাম নির্ধারণ হয়েছে মণপ্রতি ৩ হাজার ৬০০ টাকা।