স্বপ্না রেজা
রাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠানের নাম সরকার। এই প্রতিষ্ঠানই মূলত রাষ্ট্রের জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন বা নিয়ন্ত্রণ যাই-ই বলি না কেন, সে কাজটি করার কথা। কাজটি হয় দেশ পরিচালনার মাধ্যমে। সরকার রাজনৈতিক সরকার হলে তা জনগণ তার ভোটাধিকারে নির্বাচন করে থাকে।
করার কথা সেটাই। যদিও বাংলাদেশের দৃশ্য ভিন্ন। গণতন্ত্র কাগজ, কলম ও মুখে মুখে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকার চেষ্টা করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আয়ত্তে রেখে পুনরায় ক্ষমতায় আসীন হতে। এর জন্য যা প্রয়োজন, যাদের প্রয়োজন এবং যে কৌশল ও পন্থা প্রয়োজন, রাজনৈতিক সরকার সেই কাজগুলোই মনোযোগ দিয়ে করে থাকে, যেকোনো মূল্যে তা করে থাকে। অর্থাৎ দলের স্বার্থ ও ক্ষমতায় বসা ছাড়া অন্যকিছু মূলত প্রাধান্য পায় না, পায়নি।
প্রাধান্য দিতে দেখা যায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো লাভবান হলেও তাতে জনগণের জীবনের লক্ষণীয় কোনো পরিবর্তন আসে না, আসেনি। বরং বিড়ম্বনা, বঞ্চনা আসে ঘুরেফিরে। কখনোবা তা মাত্রা ছাড়ায়। আর সরকার, হোক তা রাজনৈতিক কিংবা তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন অথবা সামরিক সরকার—জনগণকে কিন্তু তার আদেশ, নিষেধ এককথায় নির্দেশনা মেনে চলতে হয়।
সরকারের সঙ্গে সমন্বয়, সম্পর্ক রেখে সব প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে চলতে হয়। এর ব্যত্যয় হয় না। ব্যত্যয় হলে সরকার কর্তৃক নানান দুর্যোগ, পীড়ন নেমে আসতে দেখা যায়। সাধারণত নেমে আসে। যেকোনো সরকারের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কোনো যুক্তিযুক্ত কথা কেউ উত্থাপন করে সেই সরকারের কাছ থেকে রেহাই পেয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত কিন্তু বাংলাদেশে নেই। অন্য কোনো দেশে আছে কি না জানা নেই। তবে খুব কাছের দেশগুলোতে এমন নজির আছে যে প্রবল সমালোচনার মুখে ও জনস্বার্থে কেউ কেউ ক্ষমতার চেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন।
পদত্যাগ করতে কুণ্ঠিত হননি। বলা যায়, তাঁদের চক্ষুলজ্জা নামের বোধটা প্রবল। জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহি থাকে, আর কিছু না থাক। কিন্তু বাংলাদেশে দায়িত্বহীনতা বা দায়বদ্ধতার প্রশ্নে কেউ কখনো পদত্যাগ করেছেন, এমন নজির নেই। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির কোনো বালাই নেই, ছিল না। অপরদিকে সরকারের সঙ্গে অতি সখ্য রাখার শ্রেণিও গজিয়ে ওঠে, জন্ম নেয়।
যাঁরা অতি লাভবান হওয়ার কথা ভাবেন, তাঁরা লাভবান হন। সরকারও এদেরকে ব্যবহার করে প্রয়োজনমতো। আবার প্রয়োজন শেষ হলে কিংবা নতুন কোনো প্রয়োজন হলে নতুন ব্যক্তি, গোষ্ঠী সেই জায়গায় স্থান পায়। রাষ্ট্রের সরকার নামক বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটি সব সময়ই সুবিধাবাদী থেকেছে এবং সেটা রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির কারণেই নিঃসন্দেহে।
সরকার নামক বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের আবার অনেক বিভাগ থাকে। সব বিভাগে কিন্তু জনগণের সেবাই নিশ্চিত করবার বিষয়টি মুখ্য থাকে। যাঁরা এসব বিভাগে জনগণকে সেবা দিতে কাজ করেন, তাঁদের বলা হয় সরকারি চাকরিজীবী। এসব প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার, লাখ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন। নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং নিয়োগপ্রাপ্তরা বিশেষ ধরনের সুবিধাপ্রাপ্ত হন। অফিশিয়ালি সুবিধার বাইরেও সরকারি চাকরিতে রয়েছে বিশেষ কমিশন, ঘুষ গ্রহণের সংস্কৃতি। লাল ফিতা ও হলুদ খাম বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণের উত্তম কৌশল বলে সরকারি চাকরিতে একটা রেওয়াজ চালু রয়েছে। এটা অবশ্য কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণেই হয়। সরকারি চাকরির বিধিতে কমিশন নেই, আছে কর্মকতা-কর্মচারীদের আচরণে।
আবার সরকারের অনুমোদন নিয়ে যারা সরকারের পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জনগণের জন্য কাজ করে, তাদের বলা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি হলেও সেখানে সরকার কর্তৃক বিধি মেনে চলতে হয়। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের কৌশলগত ভিন্নতা থাকলেও জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থের বাইরে যায়, এমন কাজ কেউই করতে পারে না এবং সব কাজই হয় সরকারের অভিভাবকত্বে।
এখন প্রশ্ন, সরকার কেমন, কতটা দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত, জনবান্ধব, স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ইত্যাদি ইতিবাচক দিকগুলোর জবাব কিন্তু তার কর্মকৌশলে মিলে যায় তথা দৃশ্যমান হয়। সরকারকে এড়িয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকে না, টিকে থাকার কথা নয়। অন্তত এই দেশে।সরকার হোক গণতান্ত্রিক অথবা স্বৈরাচারী, তার সঙ্গে সমন্বয় সাধন ও সম্পর্ক রক্ষা করেই দেশের সব প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়।
সমস্যা দেখা দেয় যখন সরকার পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন যদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হয়, তাহলে পরিবেশ তৈরি হয় এক রকম। আবার পরিবর্তনটা যদি হয় গণ-অভ্যুত্থানে কিংবা সরকারকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করায়, তাহলে পরিবর্তন হয় আরেক রকম। রাজনৈতিক সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।
সদ্যবিদায়ী সরকারের লোকজনের প্রতি প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসা প্রকাশে মরিয়া হয়ে ওঠে। ধরপাকড় চলে। মামলা-মোকদ্দমা চলে। পরিবর্তন যদি কোনো বিশেষ কৌশলে হয়, যেমন আন্দোলন বা অভ্যুত্থান, তাহলে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে বেশ সময় নেয়। এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করে বেশ অনেক দিন ধরে। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে অপরাধী চক্রও এই সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
যখন কোনো সরকার আর ক্ষমতায় থাকে না, তখন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের লোকজন বিগত সময়ের মতো প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার সম্মুখীন হন। এটা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, ঘটতে দেখা গেছে। অথচ পরিবর্তনের কথা শুনে সাধারণ মানুষ ভেবে নেয় যে অতীতে যে অনিয়ম ও নিপীড়ন হয়েছে, আর সেসব হওয়ার আশঙ্কা নেই, দেখতে হবে না নিশ্চিত। বরং বিচক্ষণতার ঘটনা ঘটবে যা দেখে সাধারণ মানুষের ভেতর স্বস্তি যেমন জাগবে, তেমনই অনিয়মের পথে পা ফেলার সম্ভাবনা কমে যাবে। কিন্তু এটা সত্যি যে সাধারণ মানুষের সাধারণ ভাবনার মতো ঘটনা আর কোনোভাবেই যেন ঘটছে না।
সবাইকে কোনো না কোনোভাবে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও সমন্বয় করে চলতে হয়, তা যেই সরকারই হোক। তার মানে এই নয় যে যারা কাজ করছে তারা সবাই স্বৈরাচার বা অপরাধী। যে অপরাধ করেছে তার বিচার আইন মোতাবেক হতে হবে, হওয়া উচিত। সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা মোটেও সমীচীন নয়। সরকারের মধ্যে মন্দলোক যেমন থাকে, ভালো লোকও থাকে।
কখনো কখনো কাউকে সর্বময় ক্ষমতাধরের নির্দেশনায় কাজ করতে হয়, তার সম্মতি না থাকা সত্ত্বেও। বিবেক কাজ করতে বাধা দিলেও পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করে। বিষয়গুলো খতিয়ে না দেখলে সংশোধন কিংবা সংস্কার কোনোটাই সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
রাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠানের নাম সরকার। এই প্রতিষ্ঠানই মূলত রাষ্ট্রের জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন বা নিয়ন্ত্রণ যাই-ই বলি না কেন, সে কাজটি করার কথা। কাজটি হয় দেশ পরিচালনার মাধ্যমে। সরকার রাজনৈতিক সরকার হলে তা জনগণ তার ভোটাধিকারে নির্বাচন করে থাকে।
করার কথা সেটাই। যদিও বাংলাদেশের দৃশ্য ভিন্ন। গণতন্ত্র কাগজ, কলম ও মুখে মুখে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকার চেষ্টা করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আয়ত্তে রেখে পুনরায় ক্ষমতায় আসীন হতে। এর জন্য যা প্রয়োজন, যাদের প্রয়োজন এবং যে কৌশল ও পন্থা প্রয়োজন, রাজনৈতিক সরকার সেই কাজগুলোই মনোযোগ দিয়ে করে থাকে, যেকোনো মূল্যে তা করে থাকে। অর্থাৎ দলের স্বার্থ ও ক্ষমতায় বসা ছাড়া অন্যকিছু মূলত প্রাধান্য পায় না, পায়নি।
প্রাধান্য দিতে দেখা যায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো লাভবান হলেও তাতে জনগণের জীবনের লক্ষণীয় কোনো পরিবর্তন আসে না, আসেনি। বরং বিড়ম্বনা, বঞ্চনা আসে ঘুরেফিরে। কখনোবা তা মাত্রা ছাড়ায়। আর সরকার, হোক তা রাজনৈতিক কিংবা তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন অথবা সামরিক সরকার—জনগণকে কিন্তু তার আদেশ, নিষেধ এককথায় নির্দেশনা মেনে চলতে হয়।
সরকারের সঙ্গে সমন্বয়, সম্পর্ক রেখে সব প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে চলতে হয়। এর ব্যত্যয় হয় না। ব্যত্যয় হলে সরকার কর্তৃক নানান দুর্যোগ, পীড়ন নেমে আসতে দেখা যায়। সাধারণত নেমে আসে। যেকোনো সরকারের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কোনো যুক্তিযুক্ত কথা কেউ উত্থাপন করে সেই সরকারের কাছ থেকে রেহাই পেয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত কিন্তু বাংলাদেশে নেই। অন্য কোনো দেশে আছে কি না জানা নেই। তবে খুব কাছের দেশগুলোতে এমন নজির আছে যে প্রবল সমালোচনার মুখে ও জনস্বার্থে কেউ কেউ ক্ষমতার চেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন।
পদত্যাগ করতে কুণ্ঠিত হননি। বলা যায়, তাঁদের চক্ষুলজ্জা নামের বোধটা প্রবল। জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহি থাকে, আর কিছু না থাক। কিন্তু বাংলাদেশে দায়িত্বহীনতা বা দায়বদ্ধতার প্রশ্নে কেউ কখনো পদত্যাগ করেছেন, এমন নজির নেই। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির কোনো বালাই নেই, ছিল না। অপরদিকে সরকারের সঙ্গে অতি সখ্য রাখার শ্রেণিও গজিয়ে ওঠে, জন্ম নেয়।
যাঁরা অতি লাভবান হওয়ার কথা ভাবেন, তাঁরা লাভবান হন। সরকারও এদেরকে ব্যবহার করে প্রয়োজনমতো। আবার প্রয়োজন শেষ হলে কিংবা নতুন কোনো প্রয়োজন হলে নতুন ব্যক্তি, গোষ্ঠী সেই জায়গায় স্থান পায়। রাষ্ট্রের সরকার নামক বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটি সব সময়ই সুবিধাবাদী থেকেছে এবং সেটা রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির কারণেই নিঃসন্দেহে।
সরকার নামক বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের আবার অনেক বিভাগ থাকে। সব বিভাগে কিন্তু জনগণের সেবাই নিশ্চিত করবার বিষয়টি মুখ্য থাকে। যাঁরা এসব বিভাগে জনগণকে সেবা দিতে কাজ করেন, তাঁদের বলা হয় সরকারি চাকরিজীবী। এসব প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার, লাখ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন। নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং নিয়োগপ্রাপ্তরা বিশেষ ধরনের সুবিধাপ্রাপ্ত হন। অফিশিয়ালি সুবিধার বাইরেও সরকারি চাকরিতে রয়েছে বিশেষ কমিশন, ঘুষ গ্রহণের সংস্কৃতি। লাল ফিতা ও হলুদ খাম বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণের উত্তম কৌশল বলে সরকারি চাকরিতে একটা রেওয়াজ চালু রয়েছে। এটা অবশ্য কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণেই হয়। সরকারি চাকরির বিধিতে কমিশন নেই, আছে কর্মকতা-কর্মচারীদের আচরণে।
আবার সরকারের অনুমোদন নিয়ে যারা সরকারের পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জনগণের জন্য কাজ করে, তাদের বলা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি হলেও সেখানে সরকার কর্তৃক বিধি মেনে চলতে হয়। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের কৌশলগত ভিন্নতা থাকলেও জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থের বাইরে যায়, এমন কাজ কেউই করতে পারে না এবং সব কাজই হয় সরকারের অভিভাবকত্বে।
এখন প্রশ্ন, সরকার কেমন, কতটা দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত, জনবান্ধব, স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ইত্যাদি ইতিবাচক দিকগুলোর জবাব কিন্তু তার কর্মকৌশলে মিলে যায় তথা দৃশ্যমান হয়। সরকারকে এড়িয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকে না, টিকে থাকার কথা নয়। অন্তত এই দেশে।সরকার হোক গণতান্ত্রিক অথবা স্বৈরাচারী, তার সঙ্গে সমন্বয় সাধন ও সম্পর্ক রক্ষা করেই দেশের সব প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়।
সমস্যা দেখা দেয় যখন সরকার পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন যদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হয়, তাহলে পরিবেশ তৈরি হয় এক রকম। আবার পরিবর্তনটা যদি হয় গণ-অভ্যুত্থানে কিংবা সরকারকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করায়, তাহলে পরিবর্তন হয় আরেক রকম। রাজনৈতিক সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।
সদ্যবিদায়ী সরকারের লোকজনের প্রতি প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসা প্রকাশে মরিয়া হয়ে ওঠে। ধরপাকড় চলে। মামলা-মোকদ্দমা চলে। পরিবর্তন যদি কোনো বিশেষ কৌশলে হয়, যেমন আন্দোলন বা অভ্যুত্থান, তাহলে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে বেশ সময় নেয়। এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করে বেশ অনেক দিন ধরে। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে অপরাধী চক্রও এই সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
যখন কোনো সরকার আর ক্ষমতায় থাকে না, তখন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের লোকজন বিগত সময়ের মতো প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার সম্মুখীন হন। এটা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, ঘটতে দেখা গেছে। অথচ পরিবর্তনের কথা শুনে সাধারণ মানুষ ভেবে নেয় যে অতীতে যে অনিয়ম ও নিপীড়ন হয়েছে, আর সেসব হওয়ার আশঙ্কা নেই, দেখতে হবে না নিশ্চিত। বরং বিচক্ষণতার ঘটনা ঘটবে যা দেখে সাধারণ মানুষের ভেতর স্বস্তি যেমন জাগবে, তেমনই অনিয়মের পথে পা ফেলার সম্ভাবনা কমে যাবে। কিন্তু এটা সত্যি যে সাধারণ মানুষের সাধারণ ভাবনার মতো ঘটনা আর কোনোভাবেই যেন ঘটছে না।
সবাইকে কোনো না কোনোভাবে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও সমন্বয় করে চলতে হয়, তা যেই সরকারই হোক। তার মানে এই নয় যে যারা কাজ করছে তারা সবাই স্বৈরাচার বা অপরাধী। যে অপরাধ করেছে তার বিচার আইন মোতাবেক হতে হবে, হওয়া উচিত। সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা মোটেও সমীচীন নয়। সরকারের মধ্যে মন্দলোক যেমন থাকে, ভালো লোকও থাকে।
কখনো কখনো কাউকে সর্বময় ক্ষমতাধরের নির্দেশনায় কাজ করতে হয়, তার সম্মতি না থাকা সত্ত্বেও। বিবেক কাজ করতে বাধা দিলেও পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করে। বিষয়গুলো খতিয়ে না দেখলে সংশোধন কিংবা সংস্কার কোনোটাই সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে