মাসুমা হক প্রিয়াংকা
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এই ক্ষমতা গ্রহণের পেছনে সেনা সমর্থনও রয়েছে। ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে এই সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারের বাইরেও বিভিন্ন মহল থেকে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ, রাজনীতি—সব ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। গোলাম আযমের পুত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী জাতীয় সংগীত পরিবর্তনবিষয়ক প্রস্তাব দিয়ে এক নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের সরকারি উদ্যোগ, বাংলাদেশ বেতারে উর্দু সম্প্রচার চালু করার জন্য সভা ইত্যাদি নিয়েও কথা হচ্ছে।
অথচ সাধারণ মানুষের প্রধান উদ্বেগ নিরাপত্তা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। আওয়ামী লীগ নেই কিন্তু সিন্ডিকেট আছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা দেখা যাচ্ছে না। শুরু হয়েছে নতুন উৎপাত—মব জাস্টিস। দেশের বিভিন্ন স্থানে মব জাস্টিসের নামে মানুষ হত্যার মিছিল চলছে। দেশ যেন ‘মবের মুল্লুকে’ পরিণত হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার নামে ৫ আগস্টের পর থেকে কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দেশদ্রোহী দাগি অপরাধীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, যা জনসাধারণের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এর মধ্যেই সম্প্রতি ছেড়ে দেওয়া অপরাধীদের হাতে একজন তরুণ সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
সরকার শিক্ষার্থীদের দেশ পরিচালনায় যুক্ত করার যে প্রয়াস নিয়েছে, তাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনাবিমুখতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্বাধীনতার নামে একধরনের লাগামছাড়া মনোভাবের পরিণতিস্বরূপ অদূর ভবিষ্যতে দেশ কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানায় পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বেকার তরুণদের সমবেত করে আন্দোলন বেগবান করা হয়েছিল, কিন্তু বেকারবান্ধব কোনো পদক্ষেপ নতুন সরকার গ্রহণ করছে না। উল্টো সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতন নেমে এসেছে। ৪৩ বিসিএসের গেজেট, ৪৪ বিসিএসের ভাইভা দোদুল্যমান। চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থবির হয়ে আছে।
এহেন পরিস্থিতিতে অরাজকতা বিবেচনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করাই ইউনূস সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও উপদেষ্টাদের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হতে বিরত রাখার যে মনোভাব দেখা যাচ্ছে, তা গণতন্ত্র পরিপন্থী। আওয়ামী লীগকে গ্রহণ-বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেশের মানুষের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। দেশের অন্যতম বড় এই দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে বৈ কমবে বলে মনে হয় না। স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে ও গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণ যে দলকে গ্রহণ করবে, সেই দলই দেশ পরিচালনা ও সংস্কারকাজ সমাপ্ত করার দাবিদার। আওয়ামী লীগকে যে কার্যকারণের ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বিরত রাখার প্রচেষ্টা চলছে, সে পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণও প্রশ্নবিদ্ধ। জামায়াত তার অতীত কার্যকলাপের জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে কখনোই ক্ষমা চায়নি, অতএব তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ভাবা উচিত।
আওয়ামী লীগের যেসব নেতা ক্লিন ইমেজের তাঁদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা না করে গণতন্ত্রের স্বার্থে তাঁদের রাজনীতি করার সুযোগ দিলে দেশ উগ্র ধর্মান্ধতা, অরাজকতা থেকে মুক্ত হবে। ধর্ম নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চান, তা কি তাঁদের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ থেকে বোঝা যাচ্ছে না? স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের নামে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলুপ্তির পথে ঠেলে দেওয়া কাম্য হতে পারে না। ধর্মনিরপেক্ষ, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগ্রহী সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তির জন্য পথের বাধা দূর না করে অন্তরায় সৃষ্টি করলে জবাবদিহি করতে হবে বর্তমান ক্ষমতাসীনদেরই। সংকীর্ণতা ও সন্ত্রাসমুক্ত উদার রাজনৈতিক পরিবেশই আমাদের কাম্য।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এই ক্ষমতা গ্রহণের পেছনে সেনা সমর্থনও রয়েছে। ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে এই সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারের বাইরেও বিভিন্ন মহল থেকে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ, রাজনীতি—সব ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। গোলাম আযমের পুত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী জাতীয় সংগীত পরিবর্তনবিষয়ক প্রস্তাব দিয়ে এক নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের সরকারি উদ্যোগ, বাংলাদেশ বেতারে উর্দু সম্প্রচার চালু করার জন্য সভা ইত্যাদি নিয়েও কথা হচ্ছে।
অথচ সাধারণ মানুষের প্রধান উদ্বেগ নিরাপত্তা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। আওয়ামী লীগ নেই কিন্তু সিন্ডিকেট আছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা দেখা যাচ্ছে না। শুরু হয়েছে নতুন উৎপাত—মব জাস্টিস। দেশের বিভিন্ন স্থানে মব জাস্টিসের নামে মানুষ হত্যার মিছিল চলছে। দেশ যেন ‘মবের মুল্লুকে’ পরিণত হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার নামে ৫ আগস্টের পর থেকে কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দেশদ্রোহী দাগি অপরাধীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, যা জনসাধারণের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এর মধ্যেই সম্প্রতি ছেড়ে দেওয়া অপরাধীদের হাতে একজন তরুণ সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
সরকার শিক্ষার্থীদের দেশ পরিচালনায় যুক্ত করার যে প্রয়াস নিয়েছে, তাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনাবিমুখতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্বাধীনতার নামে একধরনের লাগামছাড়া মনোভাবের পরিণতিস্বরূপ অদূর ভবিষ্যতে দেশ কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানায় পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বেকার তরুণদের সমবেত করে আন্দোলন বেগবান করা হয়েছিল, কিন্তু বেকারবান্ধব কোনো পদক্ষেপ নতুন সরকার গ্রহণ করছে না। উল্টো সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতন নেমে এসেছে। ৪৩ বিসিএসের গেজেট, ৪৪ বিসিএসের ভাইভা দোদুল্যমান। চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থবির হয়ে আছে।
এহেন পরিস্থিতিতে অরাজকতা বিবেচনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করাই ইউনূস সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও উপদেষ্টাদের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হতে বিরত রাখার যে মনোভাব দেখা যাচ্ছে, তা গণতন্ত্র পরিপন্থী। আওয়ামী লীগকে গ্রহণ-বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেশের মানুষের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। দেশের অন্যতম বড় এই দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে বৈ কমবে বলে মনে হয় না। স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে ও গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণ যে দলকে গ্রহণ করবে, সেই দলই দেশ পরিচালনা ও সংস্কারকাজ সমাপ্ত করার দাবিদার। আওয়ামী লীগকে যে কার্যকারণের ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বিরত রাখার প্রচেষ্টা চলছে, সে পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণও প্রশ্নবিদ্ধ। জামায়াত তার অতীত কার্যকলাপের জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে কখনোই ক্ষমা চায়নি, অতএব তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ভাবা উচিত।
আওয়ামী লীগের যেসব নেতা ক্লিন ইমেজের তাঁদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা না করে গণতন্ত্রের স্বার্থে তাঁদের রাজনীতি করার সুযোগ দিলে দেশ উগ্র ধর্মান্ধতা, অরাজকতা থেকে মুক্ত হবে। ধর্ম নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চান, তা কি তাঁদের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ থেকে বোঝা যাচ্ছে না? স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের নামে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলুপ্তির পথে ঠেলে দেওয়া কাম্য হতে পারে না। ধর্মনিরপেক্ষ, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগ্রহী সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তির জন্য পথের বাধা দূর না করে অন্তরায় সৃষ্টি করলে জবাবদিহি করতে হবে বর্তমান ক্ষমতাসীনদেরই। সংকীর্ণতা ও সন্ত্রাসমুক্ত উদার রাজনৈতিক পরিবেশই আমাদের কাম্য।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে