জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
ব্যাংকিং নীতিমালার অনেক কিছুই মানছে না এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক লিমিটেড। দরপত্র ছাড়াই কেনাকাটা, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কর্মকর্তা পদে অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগসহ নিয়মবহির্ভূতভাবে আলাদা কোম্পানি বানিয়ে নিজ ব্যাংকের সঙ্গেই ব্যবসা করছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৯ পরিচালক। ক্রয়, সেবা ও নিয়োগ-বাণিজ্যের হোতা এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও গোলাম আউলিয়া। এনআরবিসি ব্যাংকের আদলে ‘এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড’ নামে আলাদা কোম্পানি গড়ে নিজেদের ব্যাংকের সঙ্গে নিয়োগসহ ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত থাকার ঘটনাকে ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক, অনৈতিক এবং ব্যাংকিং সুশাসনের পরিপন্থী হিসেবে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে এমন বর্ণনা উঠে এসেছে।
একাধিক উদ্যোক্তা-পরিচালকের দাখিল করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল ১৫ কর্মদিবস পরিদর্শন কার্যক্রম চালিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এনআরবিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের একটি অফিস আছে; তা সত্ত্বেও তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যাংকের গুলশান শাখায় তাঁর আরেকটি অফিস কক্ষ ব্যবহার করছেন। এর জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দায়ী করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, চেয়ারম্যানকে এ ধরনের সুবিধা দেওয়া ব্যাংকের সুশাসনের পরিপন্থী।
এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংকিং বিধি অনুযায়ী কোনো পর্ষদ চেয়ারম্যান দুটি অফিস ব্যবহার করতে পারেন না।
এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে কোম্পানি খুলে ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা করার বিষয়ে জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল গত বৃহস্পতিবার বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকের ১৭ জন শেয়ারহোল্ডারের উদ্যোগে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামের কোম্পানিটি তৈরি করা হয়েছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই কোম্পানিটি পরিচালনা করছেন। ব্যাংকের নিম্নপদগুলোর জনবল নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোম্পানিটি ভূমিকা রাখছে।
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ার কারসাজিতেও এনআরবিসি ব্যাংক এবং এর চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের নাম এসেছে। তবে এ ঘটনায় পারভেজ তমাল বা এনআরবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আগেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার তথ্য মেলে। রূপপুর শাখা থেকে পাপা রোমা নামের কনসালট্যান্সি ফার্মের মালিককে ৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। যে জমি বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়ার কথা, উল্টো সেই জমি কেনার জন্য আগে ঋণ দিয়ে পরে জমি বন্ধক রাখা হয়। ওই ঘটনাকে বাংলাদেশ ব্যাংক তখন সুস্পষ্ট জালিয়াতি হিসেবে উল্লেখ করেছিল। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এমন এক গ্রাহকের নামে ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়, যিনি ঋণের জন্য আবেদনই করেননি। ভুক্তভোগী গ্রাহক খুলনার দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
প্রবাসীদের বিনিয়োগে চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে ২০১৩ সালে যাত্রা করে এনআরবিসি ব্যাংক।
ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মার্চে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গোলাম আউলিয়া ব্যাংকটির পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে কর্মকর্তা-কর্মী নিয়োগ ও ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড দুই বছর এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে গার্ড, পিয়নসহ চুক্তিভিত্তিক লোক নেবে। কিন্তু এ ধরনের নিয়োগ এবং ক্রয়ের জন্য কোনো বিজ্ঞপ্তি ও দরপত্র প্রকাশ করা হয়নি। যদিও এনআরবিসি ব্যাংকের ক্রয় ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বান করার বাধ্যবাধকতা আছে। এ ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নীতিমালা লঙ্ঘন করে পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সেবা নেওয়া ব্যাংকের সুশাসনের পরিপন্থী। এর দায় এড়াতে পারেন না ব্যাংকটির সিইও গোলাম আউলিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ১৬ উদ্যোক্তা-পরিচালকের মধ্যে ৯ জনই এনআরবিসি ব্যাংকের। কিন্তু এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে এনআরবিসি ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবেও দেখানো হয়নি।
জানা গেছে, এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে আছেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল। আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হলেন মেজর (অব.) এ এইচ এম শফিউল্লাহ। প্রতিষ্ঠানটি সিকিউরিটি সার্ভিস, গাড়ি সার্ভিস, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, ক্যাশ ব্যবস্থাপনা সেবা, কেনাকাটা, ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সেবা দিয়ে থাকে। দিলকুশার ২ নম্বর হোল্ডিংয়ে হাদি ম্যানশনের আটতলায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়।
কোম্পানি গঠন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় কৌশলে এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালকদের আধিপত্য রাখা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) ২০১৫ সালের এক পরিপত্র অনুযায়ী, সহযোগী প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত কমিটিতে কোনো ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের থাকার সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একই বিভাগের ২০১৩ সালের ১১ নম্বর সার্কুলার অনুসারে, অনুমোদিত চাকরিবিধির আওতায় নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাংক পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট থাকার সুযোগ নেই। কিন্তু এসব জানা সত্ত্বেও এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৯ পরিচালক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট নামে কোম্পানি গঠন করেন এবং তাঁরা সবাই প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগসহ যাবতীয় কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত। এটি বিআরপিডির উল্লিখিত নির্দেশনার লঙ্ঘন।
অভিজ্ঞতা ছাড়াই নিয়োগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এনআরবিসি ব্যাংকের ৬৩তম ও ৬৬তম পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) ফরহাদ সরকার, মেজর (অব.) মো. পারভেজ হোসেনসহ অপর এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাকে ব্যাংকটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ব্যাংকের নীতিমালায় এ ধরনের পদে নিয়োগের জন্য ১৩ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতার শর্ত থাকলেও তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। অবৈধভাবে নিয়োগের বিষয়টি ব্যাংকের এমডির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানোর বিধান থাকলেও গোলাম আউলিয়া তা গোপন করেছেন। ফরহাদ সরকার ও পারভেজ হোসেন বর্তমানে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) পদে কর্মরত।
ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে, যোগ্যতা ছাড়া কোনো নিয়োগ রীতিমতো অন্যায়। যাঁরা এটা করবেন, তাঁদের বিচারের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।
সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধির মাধ্যমে আয় সংকোচন
প্রতিবেদনমতে, এনআরবিসির চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল নতুন প্রতিষ্ঠান এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্বে থাকাসহ ব্যাংকের বর্ণিত অবস্থাটি এনআরবিসি ব্যাংকের শৃঙ্খলার জন্য উদ্বেগজনক, অনৈতিক এবং সুশাসনের পরিপন্থী। এ ছাড়া চলতি বছরের মে পর্যন্ত ব্যাংকটি ৯৩টি শাখা, ২২০টি উপশাখা, ২৯২টি ভূমি নিবন্ধন উপশাখা, ১৩১টি অংশীদারত্ব উপশাখা, ১১৬টি বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ বুথ এবং ২৫টি বিআরটিএ বুথ স্থাপন করেছে। একদিকে ব্যাংকের উপশাখা ও বুথ স্থাপনের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের মাধ্যমে ব্যাংকটিতে নিয়োগের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে দেওয়া সার্ভিস চার্জের পরিমাণও বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। এতে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যয় বাড়ানোর মাধ্যমে আয় সংকুচিত করা হয়েছে।
পর্ষদ সভায় বাড়তি ব্যয়
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বিদ্যমান নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। এটি অনভিপ্রেত। একইভাবে পরিচালকদের সভায় অংশগ্রহণের সম্মানীর সর্বোচ্চ সীমা ৮ হাজার টাকা হলেও ১৩টি সভায় পরিচালকদের ভ্যাটসহ ৯ হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, চেয়ারম্যান, এমডি কিংবা কোনো পরিচালক নিজ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারেন না। এটি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের সংঘাতের মধ্যে পড়ে। ব্যাংকের নামের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যক্তিগত কোনো কোম্পানি গঠনেরও বিধান নেই। যেকোনো ব্যাংকে জনবল নিয়োগ, কেনাকাটা থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয়ে নিজস্ব নীতিমালা থাকে। এ নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে যদি কিছু হয়, সেটি অবশ্যই অপরাধ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
সাড়া নেই সিইওর
অভিযোগের বিষয়ে জানতে এনআরবিসি ব্যাংকের এমডি এবং সিইও গোলাম আউলিয়াকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১১ মিনিট পর্যন্ত কয়েকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পাশাপাশি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিষয়বস্তু জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে তাঁকে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
একইভাবে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের আরও বক্তব্য জানতে গতকাল বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১০ মিনিট পর্যন্ত কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে এবং জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। যদিও আগে তিনি কিছু বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু সেদিন অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
দায় এড়াতে পারেন না সিইও
আহসান এইচ মনসুর বলেন, কোনো ব্যাংক নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাজারদর অনুযায়ী পণ্য সেবা নিতে পারে। এর জন্য ক্রয় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। সেটি না করে নিজের মতো স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু পণ্য ও সেবা কিনলে তাতে গ্রাহকের অর্থের অপব্যবহার হবে। এ ছাড়া গোপনে চুক্তি করলে এবং তাতে স্বাক্ষর করলে তার দায় ব্যাংকটির সিইও এড়াতে পারেন না।
ব্যাংকিং নীতিমালার অনেক কিছুই মানছে না এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক লিমিটেড। দরপত্র ছাড়াই কেনাকাটা, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কর্মকর্তা পদে অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগসহ নিয়মবহির্ভূতভাবে আলাদা কোম্পানি বানিয়ে নিজ ব্যাংকের সঙ্গেই ব্যবসা করছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৯ পরিচালক। ক্রয়, সেবা ও নিয়োগ-বাণিজ্যের হোতা এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও গোলাম আউলিয়া। এনআরবিসি ব্যাংকের আদলে ‘এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড’ নামে আলাদা কোম্পানি গড়ে নিজেদের ব্যাংকের সঙ্গে নিয়োগসহ ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত থাকার ঘটনাকে ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক, অনৈতিক এবং ব্যাংকিং সুশাসনের পরিপন্থী হিসেবে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে এমন বর্ণনা উঠে এসেছে।
একাধিক উদ্যোক্তা-পরিচালকের দাখিল করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল ১৫ কর্মদিবস পরিদর্শন কার্যক্রম চালিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এনআরবিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের একটি অফিস আছে; তা সত্ত্বেও তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যাংকের গুলশান শাখায় তাঁর আরেকটি অফিস কক্ষ ব্যবহার করছেন। এর জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দায়ী করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, চেয়ারম্যানকে এ ধরনের সুবিধা দেওয়া ব্যাংকের সুশাসনের পরিপন্থী।
এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংকিং বিধি অনুযায়ী কোনো পর্ষদ চেয়ারম্যান দুটি অফিস ব্যবহার করতে পারেন না।
এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে কোম্পানি খুলে ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা করার বিষয়ে জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল গত বৃহস্পতিবার বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকের ১৭ জন শেয়ারহোল্ডারের উদ্যোগে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামের কোম্পানিটি তৈরি করা হয়েছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই কোম্পানিটি পরিচালনা করছেন। ব্যাংকের নিম্নপদগুলোর জনবল নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোম্পানিটি ভূমিকা রাখছে।
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ার কারসাজিতেও এনআরবিসি ব্যাংক এবং এর চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের নাম এসেছে। তবে এ ঘটনায় পারভেজ তমাল বা এনআরবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আগেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার তথ্য মেলে। রূপপুর শাখা থেকে পাপা রোমা নামের কনসালট্যান্সি ফার্মের মালিককে ৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। যে জমি বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়ার কথা, উল্টো সেই জমি কেনার জন্য আগে ঋণ দিয়ে পরে জমি বন্ধক রাখা হয়। ওই ঘটনাকে বাংলাদেশ ব্যাংক তখন সুস্পষ্ট জালিয়াতি হিসেবে উল্লেখ করেছিল। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এমন এক গ্রাহকের নামে ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়, যিনি ঋণের জন্য আবেদনই করেননি। ভুক্তভোগী গ্রাহক খুলনার দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
প্রবাসীদের বিনিয়োগে চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে ২০১৩ সালে যাত্রা করে এনআরবিসি ব্যাংক।
ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মার্চে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও গোলাম আউলিয়া ব্যাংকটির পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে কর্মকর্তা-কর্মী নিয়োগ ও ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড দুই বছর এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে গার্ড, পিয়নসহ চুক্তিভিত্তিক লোক নেবে। কিন্তু এ ধরনের নিয়োগ এবং ক্রয়ের জন্য কোনো বিজ্ঞপ্তি ও দরপত্র প্রকাশ করা হয়নি। যদিও এনআরবিসি ব্যাংকের ক্রয় ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বান করার বাধ্যবাধকতা আছে। এ ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নীতিমালা লঙ্ঘন করে পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সেবা নেওয়া ব্যাংকের সুশাসনের পরিপন্থী। এর দায় এড়াতে পারেন না ব্যাংকটির সিইও গোলাম আউলিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ১৬ উদ্যোক্তা-পরিচালকের মধ্যে ৯ জনই এনআরবিসি ব্যাংকের। কিন্তু এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে এনআরবিসি ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবেও দেখানো হয়নি।
জানা গেছে, এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে আছেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল। আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হলেন মেজর (অব.) এ এইচ এম শফিউল্লাহ। প্রতিষ্ঠানটি সিকিউরিটি সার্ভিস, গাড়ি সার্ভিস, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা, ক্যাশ ব্যবস্থাপনা সেবা, কেনাকাটা, ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সেবা দিয়ে থাকে। দিলকুশার ২ নম্বর হোল্ডিংয়ে হাদি ম্যানশনের আটতলায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়।
কোম্পানি গঠন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় কৌশলে এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালকদের আধিপত্য রাখা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) ২০১৫ সালের এক পরিপত্র অনুযায়ী, সহযোগী প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত কমিটিতে কোনো ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের থাকার সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একই বিভাগের ২০১৩ সালের ১১ নম্বর সার্কুলার অনুসারে, অনুমোদিত চাকরিবিধির আওতায় নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাংক পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট থাকার সুযোগ নেই। কিন্তু এসব জানা সত্ত্বেও এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৯ পরিচালক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট নামে কোম্পানি গঠন করেন এবং তাঁরা সবাই প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগসহ যাবতীয় কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত। এটি বিআরপিডির উল্লিখিত নির্দেশনার লঙ্ঘন।
অভিজ্ঞতা ছাড়াই নিয়োগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এনআরবিসি ব্যাংকের ৬৩তম ও ৬৬তম পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) ফরহাদ সরকার, মেজর (অব.) মো. পারভেজ হোসেনসহ অপর এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাকে ব্যাংকটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ব্যাংকের নীতিমালায় এ ধরনের পদে নিয়োগের জন্য ১৩ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতার শর্ত থাকলেও তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। অবৈধভাবে নিয়োগের বিষয়টি ব্যাংকের এমডির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানোর বিধান থাকলেও গোলাম আউলিয়া তা গোপন করেছেন। ফরহাদ সরকার ও পারভেজ হোসেন বর্তমানে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) পদে কর্মরত।
ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে, যোগ্যতা ছাড়া কোনো নিয়োগ রীতিমতো অন্যায়। যাঁরা এটা করবেন, তাঁদের বিচারের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।
সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধির মাধ্যমে আয় সংকোচন
প্রতিবেদনমতে, এনআরবিসির চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল নতুন প্রতিষ্ঠান এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্বে থাকাসহ ব্যাংকের বর্ণিত অবস্থাটি এনআরবিসি ব্যাংকের শৃঙ্খলার জন্য উদ্বেগজনক, অনৈতিক এবং সুশাসনের পরিপন্থী। এ ছাড়া চলতি বছরের মে পর্যন্ত ব্যাংকটি ৯৩টি শাখা, ২২০টি উপশাখা, ২৯২টি ভূমি নিবন্ধন উপশাখা, ১৩১টি অংশীদারত্ব উপশাখা, ১১৬টি বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ বুথ এবং ২৫টি বিআরটিএ বুথ স্থাপন করেছে। একদিকে ব্যাংকের উপশাখা ও বুথ স্থাপনের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের মাধ্যমে ব্যাংকটিতে নিয়োগের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি এনআরবিসি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে দেওয়া সার্ভিস চার্জের পরিমাণও বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। এতে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যয় বাড়ানোর মাধ্যমে আয় সংকুচিত করা হয়েছে।
পর্ষদ সভায় বাড়তি ব্যয়
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বিদ্যমান নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। এটি অনভিপ্রেত। একইভাবে পরিচালকদের সভায় অংশগ্রহণের সম্মানীর সর্বোচ্চ সীমা ৮ হাজার টাকা হলেও ১৩টি সভায় পরিচালকদের ভ্যাটসহ ৯ হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, চেয়ারম্যান, এমডি কিংবা কোনো পরিচালক নিজ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারেন না। এটি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের সংঘাতের মধ্যে পড়ে। ব্যাংকের নামের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যক্তিগত কোনো কোম্পানি গঠনেরও বিধান নেই। যেকোনো ব্যাংকে জনবল নিয়োগ, কেনাকাটা থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয়ে নিজস্ব নীতিমালা থাকে। এ নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে যদি কিছু হয়, সেটি অবশ্যই অপরাধ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
সাড়া নেই সিইওর
অভিযোগের বিষয়ে জানতে এনআরবিসি ব্যাংকের এমডি এবং সিইও গোলাম আউলিয়াকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১১ মিনিট পর্যন্ত কয়েকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পাশাপাশি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিষয়বস্তু জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে তাঁকে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
একইভাবে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের আরও বক্তব্য জানতে গতকাল বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১০ মিনিট পর্যন্ত কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে এবং জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। যদিও আগে তিনি কিছু বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু সেদিন অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
দায় এড়াতে পারেন না সিইও
আহসান এইচ মনসুর বলেন, কোনো ব্যাংক নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাজারদর অনুযায়ী পণ্য সেবা নিতে পারে। এর জন্য ক্রয় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। সেটি না করে নিজের মতো স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু পণ্য ও সেবা কিনলে তাতে গ্রাহকের অর্থের অপব্যবহার হবে। এ ছাড়া গোপনে চুক্তি করলে এবং তাতে স্বাক্ষর করলে তার দায় ব্যাংকটির সিইও এড়াতে পারেন না।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে