চয়ন বিকাশ ভদ্র
হঠাৎ দেখলে মনে হবে, আপনি নয়নতারা দেখছেন। কিন্তু একটু খুঁটিয়ে দেখলে বুঝবেন, আপনার দেখা নয়নতারার সঙ্গে এর খানিক অমিল আছে। ফলে একধরনের ধন্দে পড়ে যাবেন। তবে এটা ঠিক, আপনি নয়নতারা না দেখলেও দেখেছেন এর নিকটাত্মীয়কে।
ঢাকা শহরের ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন উদ্যান বলধা গার্ডেন। ভাওয়াল জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ১৯০৯ সালে এই বাগান ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় সফরকালে ভীষণ ব্যস্ততার মাঝেও বাগানটি দেখতে এসে প্রশংসা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বলধা গার্ডেন দেখে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘নরেন, কালি কলম দিয়ে আমি সারা জীবন যা করেছি, তুমি গাছপালা দিয়ে তা-ই করে চলেছ।’
যেখানে বিরল যে উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন, হোক সে পৃথিবীর দূরতম প্রান্তে, অকাতর অর্থব্যয়ে তা সংগ্রহ করেছিলেন নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী। তিনি তাঁর শখের এ বাগানে কাঠমালতী বা ডাকুর ফুলটিও চাষ করেছিলেন।
বলধা গার্ডেনের সিবিলি অংশের প্রধান ফটক দিয়ে সোজা একটু এগিয়ে গেলে হাতের ডান দিকে চোখে পড়বে গুল্মজাতীয় গাছে নয়নতারার মতো ফুল। এ গাছই ডাকুর। সারা বছরই এর শাখায় থোকায় থোকায় ফুল ফোটে। অনেক ফুল একসঙ্গে দেখতে তারার মতো মনে হয়। এ ফুলের সৌন্দর্য অনন্য। ডাকুর চিরসবুজ গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।
ডাকুরের বৈজ্ঞানিক নাম কপসিয়া ফ্রুটিকোসা। এটি অ্যাপোসাইনেসি পরিবারের সদস্য। এই ফুল ইংরেজিতে সার্ব ভিনেকা, পিংক কপসিয়া এবং পিংক গার্ডেনিয়া নামে পরিচিত। ডাকুর মূলত ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের ফুল। এ ফুলের আরেক নাম কাঠমালতী। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা— সব ঋতুতেই গাছটিতে হালকা গোলাপি রঙের ফুল তারার মতো জ্বলজ্বল করে।
ঝোপজাতীয় এ গুল্মকে বাড়তে দিলে চার মিটার লম্বা হতে পারে। অবশ্য কেটেছেঁটে পছন্দমতো গাছের আকার দেওয়া যায়। ডাকুরের গাঢ় সবুজ পাতা চোখ বা নৌকা আকৃতির। পাতায় শিরাগুলো সহজেই নজরে পড়ে। পাতার সামনের দিক ডিম্বাকার এবং পেছনের দিক সুচালো। খুব শক্ত সেই পাতা বের হয় জোড়ায় জোড়ায়। ফুলগুলো গুচ্ছবদ্ধ ও হালকা গোলাপি রঙের। ফুলের পাপড়ি হয় পাঁচটি এবং এগুলোর গোড়ার দিকে গাঢ় গোলাপি রং দেখা যায়। ফুলের পাঁচটি পাপড়ি সমানভাবে সাজানো থাকে। নতুন ফুল অনেকটা সাদাটে গোলাপি। আবার বাসি ফুল সাদা রং ধারণ করতে থাকে। তবে ফুলের কেন্দ্রে সব সময় গাঢ় গোলাপি রং থেকেই যায়। নয়নতারা ফুলেরও একই রকম পাঁচটি পাপড়ির কেন্দ্রে অন্য একটি রং দেখা যায়। গাছে ফুল থাকে অনেক দিন।
বাংলাদেশের আবহাওয়া এই ফুলের চাষের উপযোগী হলেও কাঠমালতী বা ডাকুরের চাষ এ দেশে খুব একটা হয়নি। সচরাচর সব বাগানে এটি দেখা যায় না। ঢাকার মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান এবং বলধা গার্ডেনে গেলেই এই ফুলের স্নিগ্ধ পরশ পেতে পারেন। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা প্রাঙ্গণেও কিছু ডাকুরগাছ রয়েছে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ।
হঠাৎ দেখলে মনে হবে, আপনি নয়নতারা দেখছেন। কিন্তু একটু খুঁটিয়ে দেখলে বুঝবেন, আপনার দেখা নয়নতারার সঙ্গে এর খানিক অমিল আছে। ফলে একধরনের ধন্দে পড়ে যাবেন। তবে এটা ঠিক, আপনি নয়নতারা না দেখলেও দেখেছেন এর নিকটাত্মীয়কে।
ঢাকা শহরের ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন উদ্যান বলধা গার্ডেন। ভাওয়াল জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ১৯০৯ সালে এই বাগান ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় সফরকালে ভীষণ ব্যস্ততার মাঝেও বাগানটি দেখতে এসে প্রশংসা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বলধা গার্ডেন দেখে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘নরেন, কালি কলম দিয়ে আমি সারা জীবন যা করেছি, তুমি গাছপালা দিয়ে তা-ই করে চলেছ।’
যেখানে বিরল যে উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন, হোক সে পৃথিবীর দূরতম প্রান্তে, অকাতর অর্থব্যয়ে তা সংগ্রহ করেছিলেন নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী। তিনি তাঁর শখের এ বাগানে কাঠমালতী বা ডাকুর ফুলটিও চাষ করেছিলেন।
বলধা গার্ডেনের সিবিলি অংশের প্রধান ফটক দিয়ে সোজা একটু এগিয়ে গেলে হাতের ডান দিকে চোখে পড়বে গুল্মজাতীয় গাছে নয়নতারার মতো ফুল। এ গাছই ডাকুর। সারা বছরই এর শাখায় থোকায় থোকায় ফুল ফোটে। অনেক ফুল একসঙ্গে দেখতে তারার মতো মনে হয়। এ ফুলের সৌন্দর্য অনন্য। ডাকুর চিরসবুজ গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ।
ডাকুরের বৈজ্ঞানিক নাম কপসিয়া ফ্রুটিকোসা। এটি অ্যাপোসাইনেসি পরিবারের সদস্য। এই ফুল ইংরেজিতে সার্ব ভিনেকা, পিংক কপসিয়া এবং পিংক গার্ডেনিয়া নামে পরিচিত। ডাকুর মূলত ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের ফুল। এ ফুলের আরেক নাম কাঠমালতী। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা— সব ঋতুতেই গাছটিতে হালকা গোলাপি রঙের ফুল তারার মতো জ্বলজ্বল করে।
ঝোপজাতীয় এ গুল্মকে বাড়তে দিলে চার মিটার লম্বা হতে পারে। অবশ্য কেটেছেঁটে পছন্দমতো গাছের আকার দেওয়া যায়। ডাকুরের গাঢ় সবুজ পাতা চোখ বা নৌকা আকৃতির। পাতায় শিরাগুলো সহজেই নজরে পড়ে। পাতার সামনের দিক ডিম্বাকার এবং পেছনের দিক সুচালো। খুব শক্ত সেই পাতা বের হয় জোড়ায় জোড়ায়। ফুলগুলো গুচ্ছবদ্ধ ও হালকা গোলাপি রঙের। ফুলের পাপড়ি হয় পাঁচটি এবং এগুলোর গোড়ার দিকে গাঢ় গোলাপি রং দেখা যায়। ফুলের পাঁচটি পাপড়ি সমানভাবে সাজানো থাকে। নতুন ফুল অনেকটা সাদাটে গোলাপি। আবার বাসি ফুল সাদা রং ধারণ করতে থাকে। তবে ফুলের কেন্দ্রে সব সময় গাঢ় গোলাপি রং থেকেই যায়। নয়নতারা ফুলেরও একই রকম পাঁচটি পাপড়ির কেন্দ্রে অন্য একটি রং দেখা যায়। গাছে ফুল থাকে অনেক দিন।
বাংলাদেশের আবহাওয়া এই ফুলের চাষের উপযোগী হলেও কাঠমালতী বা ডাকুরের চাষ এ দেশে খুব একটা হয়নি। সচরাচর সব বাগানে এটি দেখা যায় না। ঢাকার মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান এবং বলধা গার্ডেনে গেলেই এই ফুলের স্নিগ্ধ পরশ পেতে পারেন। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা প্রাঙ্গণেও কিছু ডাকুরগাছ রয়েছে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে