রজত কান্তি রায়, ঢাকা
এককালে যে স্বচ্ছ কাচের টাংস্টেন বৈদ্যুতিক বাতি ছিল রাতের বিস্ময়জাগানিয়া আলোর উৎস, হেমন্তে সকালের রংটা তা-ই। ফটোগ্রাফির ভাষায়, এটা ওয়ার্ম লাইট। মধ্য হেমন্ত যখন গড়িয়ে গড়িয়ে শীতের দিকে ধীর পায়ে চলতে থাকে, আলোর রঙে তখন খানিক পরিবর্তন হয়। সকালবেলা সে আলোয় পিঠ এলিয়ে দিয়ে ধোঁয়া-ওঠা গরমাগরম ফ্যানভাত খেতাম একসময়। সেই ধোঁয়া-ওঠা ভাতে সংগত দিত নুন, সরিষার তেল, টেলে নেওয়া মরিচ আর ভর্তা। ফ্ল্যাশ ব্যাক থেকে ফ্ল্যাশ ব্যাকে যেতে থাকলে দেখা যাবে, সকালের সোনালি আলোয় পিঠ পেতে পিঁড়িতে বসে আছেন বাবা, ঠাকুরদাদা, পরদাদা, তস্য পরদাদা। সামনে দাঁড়িয়ে সারদা রানি, গোলেনুর বেগম কিংবা বেগম সুফিয়া রহমান জীবন ঘষে বানিয়ে গেছেন প্রবাদ। আর একুশ শতকের কোনো এক হেমন্তে বসে অর্বাচীন আমি লিখে চলেছি সেই সব ভুলে যাওয়া গল্প আর প্রবাদের কথা।
শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে ভর্তার মতো এক তুচ্ছ বিষয়কে ফেনিয়ে তুলছি কেন? সোজা কথায়, উত্তেজিত হয়ে। ‘তেল নুন চরতা, তবে হবে ভর্তা’ প্রবাদটি প্রথম শুনেই চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল এক অপূর্ব অভিজ্ঞতার বয়ান। কড়াইয়ে তেল গরম হলে তাতে ছেড়ে দিন পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ। অল্প তেলে ভাজা ভাজা করে নিন সেগুলো। এবার তাতে খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ আলু আর পরিমাণমতো লবণ দিন। তারপর মিহি করে পিষে নিন হাত দিয়ে বা বাঁশের মুড়ো দিয়ে বানানো নোড়ায়। তৈরি হয়ে গেল স্বর্ণাভ আলুভর্তা। এই যে আধুনিক রেসিপি বয়ানের স্টাইল, সেটাই খুব সরলভাবে বলে দেওয়া আছে ছয় শব্দের এ প্রবাদে।
কোন জিনিসটির ভর্তা হয় না? সবজির মধ্যে ভর্তার উপকরণ হিসেবে আলু ও বেগুন জনপ্রিয় বটে। কিন্তু বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, পটোল, করলা, কাঁচকলা-সবগুলোরই ভর্তা হয়। বেশ সুস্বাদু ভর্তা হয়। ডালের মধ্যে মসুর ডালের ভর্তা জগতে বিখ্যাত। খেসারির ডালেরও ভর্তা খাওয়া হয়। আছে ডিমভর্তা। আর একটু ফিউশন করলে ডিম-আলুর ভর্তাও বানানো যায়। উত্তরবঙ্গে শীতে ভাতের হাঁড়িতে লাউশাক দিয়ে সেদ্ধ করে তার ভর্তা খাওয়া হয় জমিয়ে। মাছের মধ্যে টাকি আর চিংড়ি প্রধান। ইলিশের ‘ল্যাঞ্জা’ ভর্তাও পাওয়া যায়। সিরাজগঞ্জে ইলিশের ভর্তা বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া রুই মাছের ভর্তার কথা শুনেছি, না খেলেও।
ময়মনসিংহে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করে শুঁটকি বানিয়ে তার ভর্তা খাওয়ার চল আছে। ওই অঞ্চলেরই বিখ্যাত খাবার কাবক বা মুরগির মাংসের ভর্তা। এটা আবার এতই বিখ্যাত যে নতুন জামাইয়ের আগমনে খাওয়াতেই হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, ফরিদপুর ইত্যাদি এলাকায় কাঞ্জিরভাত খাওয়া হয় আট-দশ পদের ভর্তা দিয়ে। কাঁচকলার ভর্তা, কচুরমুখী ভর্তা, লাইশাক ভর্তা, পটোলের খোসা কিংবা কাঁচকলার খোসার ভর্তা অসাধারণ খাবার। শুঁটকি ভর্তার কথা বলতে হবে নতুন করে? ছোট্ট করে বলে রাখি, ভাটি অঞ্চলের মানুষ চ্যাপা শুঁটকির ভর্তা না খেলে জাত্যভিমান হারিয়ে ফেলে বলেই আমার ধারণা।
এককালে যে স্বচ্ছ কাচের টাংস্টেন বৈদ্যুতিক বাতি ছিল রাতের বিস্ময়জাগানিয়া আলোর উৎস, হেমন্তে সকালের রংটা তা-ই। ফটোগ্রাফির ভাষায়, এটা ওয়ার্ম লাইট। মধ্য হেমন্ত যখন গড়িয়ে গড়িয়ে শীতের দিকে ধীর পায়ে চলতে থাকে, আলোর রঙে তখন খানিক পরিবর্তন হয়। সকালবেলা সে আলোয় পিঠ এলিয়ে দিয়ে ধোঁয়া-ওঠা গরমাগরম ফ্যানভাত খেতাম একসময়। সেই ধোঁয়া-ওঠা ভাতে সংগত দিত নুন, সরিষার তেল, টেলে নেওয়া মরিচ আর ভর্তা। ফ্ল্যাশ ব্যাক থেকে ফ্ল্যাশ ব্যাকে যেতে থাকলে দেখা যাবে, সকালের সোনালি আলোয় পিঠ পেতে পিঁড়িতে বসে আছেন বাবা, ঠাকুরদাদা, পরদাদা, তস্য পরদাদা। সামনে দাঁড়িয়ে সারদা রানি, গোলেনুর বেগম কিংবা বেগম সুফিয়া রহমান জীবন ঘষে বানিয়ে গেছেন প্রবাদ। আর একুশ শতকের কোনো এক হেমন্তে বসে অর্বাচীন আমি লিখে চলেছি সেই সব ভুলে যাওয়া গল্প আর প্রবাদের কথা।
শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে ভর্তার মতো এক তুচ্ছ বিষয়কে ফেনিয়ে তুলছি কেন? সোজা কথায়, উত্তেজিত হয়ে। ‘তেল নুন চরতা, তবে হবে ভর্তা’ প্রবাদটি প্রথম শুনেই চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল এক অপূর্ব অভিজ্ঞতার বয়ান। কড়াইয়ে তেল গরম হলে তাতে ছেড়ে দিন পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ। অল্প তেলে ভাজা ভাজা করে নিন সেগুলো। এবার তাতে খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ আলু আর পরিমাণমতো লবণ দিন। তারপর মিহি করে পিষে নিন হাত দিয়ে বা বাঁশের মুড়ো দিয়ে বানানো নোড়ায়। তৈরি হয়ে গেল স্বর্ণাভ আলুভর্তা। এই যে আধুনিক রেসিপি বয়ানের স্টাইল, সেটাই খুব সরলভাবে বলে দেওয়া আছে ছয় শব্দের এ প্রবাদে।
কোন জিনিসটির ভর্তা হয় না? সবজির মধ্যে ভর্তার উপকরণ হিসেবে আলু ও বেগুন জনপ্রিয় বটে। কিন্তু বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, পটোল, করলা, কাঁচকলা-সবগুলোরই ভর্তা হয়। বেশ সুস্বাদু ভর্তা হয়। ডালের মধ্যে মসুর ডালের ভর্তা জগতে বিখ্যাত। খেসারির ডালেরও ভর্তা খাওয়া হয়। আছে ডিমভর্তা। আর একটু ফিউশন করলে ডিম-আলুর ভর্তাও বানানো যায়। উত্তরবঙ্গে শীতে ভাতের হাঁড়িতে লাউশাক দিয়ে সেদ্ধ করে তার ভর্তা খাওয়া হয় জমিয়ে। মাছের মধ্যে টাকি আর চিংড়ি প্রধান। ইলিশের ‘ল্যাঞ্জা’ ভর্তাও পাওয়া যায়। সিরাজগঞ্জে ইলিশের ভর্তা বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া রুই মাছের ভর্তার কথা শুনেছি, না খেলেও।
ময়মনসিংহে কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করে শুঁটকি বানিয়ে তার ভর্তা খাওয়ার চল আছে। ওই অঞ্চলেরই বিখ্যাত খাবার কাবক বা মুরগির মাংসের ভর্তা। এটা আবার এতই বিখ্যাত যে নতুন জামাইয়ের আগমনে খাওয়াতেই হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, ফরিদপুর ইত্যাদি এলাকায় কাঞ্জিরভাত খাওয়া হয় আট-দশ পদের ভর্তা দিয়ে। কাঁচকলার ভর্তা, কচুরমুখী ভর্তা, লাইশাক ভর্তা, পটোলের খোসা কিংবা কাঁচকলার খোসার ভর্তা অসাধারণ খাবার। শুঁটকি ভর্তার কথা বলতে হবে নতুন করে? ছোট্ট করে বলে রাখি, ভাটি অঞ্চলের মানুষ চ্যাপা শুঁটকির ভর্তা না খেলে জাত্যভিমান হারিয়ে ফেলে বলেই আমার ধারণা।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে