টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানাগার না থাকায় বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবহারিক ক্লাস হচ্ছে না। এ কারণে ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক বিষয় সম্পর্কে কোনো ধরনের জ্ঞান তৈরি হচ্ছে না।

মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার ৫৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০টি বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। কিন্তু দু-একটা বাদে এ উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়েই বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবহারিক ক্লাস বলতে যা বোঝায় তা নেওয়া হয় না।

সরেজমিনে উপজেলা সদরের মির্জাপুর সরকারি সদয় কৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবহারিক চর্চার জন্য একটি বিজ্ঞানাগার কক্ষ আছে। কিন্তু সেখানে নেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। যা-ও দু-একটি রয়েছে, তাও দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে। কক্ষটি অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে।

প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়া কীভাবে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস হয় এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সরঞ্জাম ব্যবহার না হওয়ায় অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবহারিক ক্লাস হয় না বলে স্বীকারও করেন তিনি।

উপজেলার গোড়াই উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে কোনো বিজ্ঞানাগার নেই। ক্লাসে অনেক সময় হাতে-কলমে বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।

উপজেলার বরাটি-নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাস উদ্দিন বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে ব্যবহারিক ক্লাস হয়, তবে তাঁর কোনো ধারাবাহিকতা নেই। দেওহাটা এ জে উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খোরশেদ আলম বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানাগার রয়েছে। তবে ব্যবহারিক ক্লাস শুধু এসএসসি পরীক্ষার আগে নেওয়া হয়। মির্জাপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান উদ্দিন বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানাগার না থাকায় তিনি খুবই অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন। 

এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার প্রবীর কুমার চৌধুরী বলেন, দু-একটি বাদে এ উপজেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়েই বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবহারিক ক্লাস বলতে যা বোঝায় তা নেওয়া হয় না।

মির্জাপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা দুর্লভ বিশ্বাস বলেন, হাতে-কলমে শিক্ষা অর্থাৎ ব্যবহারিক ক্লাস বাদে বিজ্ঞান শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলফিকার হায়দার বলেন, ‘আমি এ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে নতুন যোগদান করেছি।’