সম্পাদকীয়
শুভ নববর্ষ। সুস্বাগত ১৪২৯। শুরু হলো আরেকটি বছর। আজকের পত্রিকার সব পাঠককে জানাই নববর্ষের শুভেচ্ছা। জীর্ণ-পুরোনো সবকিছু ভেসে যাক। শুরু হোক নতুনের জয়গান। অধিকাংশ
বর্ষপঞ্জির উৎপত্তি ধর্ম-সম্পর্কিত হলেও বাংলা নববর্ষের সঙ্গে যুক্ত আছে কৃষিকাজ ও খাজনার সম্পর্ক। এ কারণেই বাংলা বর্ষপঞ্জিতে ধর্মীয় অনুষঙ্গ নেই, তাই বাঙালির এ পঞ্জিকাটি হয়ে উঠতে পেরেছে ধর্ম-সম্প্রদায়নির্বিশেষে বাংলায় বসবাসরত প্রতিটি মানুষের অসাম্প্রদায়িক সর্বজনীন উৎসব।
কলকাতায় প্রথম আদালত মেয়র্স কোর্ট ছিল ১৭২৬ থেকে ১৭৭৩ পর্যন্ত। সেই কোর্টের প্রথম যে বাংলা দলিলটি অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পেয়েছে, সেটি বর্তমানে রয়েছে ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে। তাতে তারিখ দেওয়া আছে এভাবে: ‘সন ১১৬২, ইঙ্গরেজী ১৭৫৬ সাল, তারিখ ২২ মাঘ ২ ফেবরিল।’ খেয়াল করলে দেখা যাবে, ১১৬২ সন লেখা আছে ঠিকই কিন্তু এটি যে বাংলা সন, সেটি নেই; অর্থাৎ সে সময় বছরটাকে বাংলা সন বলে চিহ্নিত করা হয়নি। উনিশ শতকের প্রথম দিকেও তা বাংলা সন হিসেবে পরিচিত ছিল না। এ কথার সূত্র ধরে বলা যায়, সম্রাট আকবর বাংলা সন নামে কোনো সন প্রবর্তন করেননি। তিনি যে সনটি চালু করেন তা তাঁর সাম্রাজ্যের সর্বত্রই ছিল বিরাজমান, এটি তখন পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে। ফসলের সঙ্গে খাজনা আদায়ের যোগ থেকেই এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, যা উনিশ শতকে এসে বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ হিসেবে পরিচিত হয়। পয়লা বৈশাখ তখনো একটি সর্বজনীন উৎসবের রূপ পায়নি। কালে কালে তা হয়ে উঠেছে বাঙালির তথা এই ভূখণ্ডে বসবাসরত সব মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব। এত বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পৃথিবীতে বিরল।
পয়লা বৈশাখের যে উৎসব তার মূল খুঁজতে আমাদের যেতে হবে গ্রামে। একসময় জমিদারেরা পয়লা বৈশাখ অথবা বছরের প্রথমদিকে পুণ্যাহ বলে একটা উৎসব করতেন। তাঁদের কাছারি বাড়ি সাজানো হতো, সেখান থেকে ভেসে আসত বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ। প্রজারা সেই কাছারির ভেতর যেত এবং সেখানেই হতো টাকাপয়সার আদান-প্রদান, অনেকটা হালখাতার মতো। বাঙালি যখন নিজের সংস্কৃতি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করল, তখনই পয়লা বৈশাখ হয়ে উঠতে লাগল সর্বজনীন। পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ বাঙালির চোখ খুলে দিয়েছিল, সেটাই সম্ভবত পয়লা বৈশাখকে সর্বজনীন করে তুলেছিল। সেই ঐতিহ্যের পথ ধরে পয়লা বৈশাখ আজ অনন্য সাংস্কৃতিক পরিচয় হয়ে উঠেছে।
এখন রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা, সারা দেশের বিভিন্ন শহরে, গ্রামগঞ্জে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলা আমাদের পরিচয়কে সংহত করে। ব্যবসায়ীরা হালখাতা নিয়ে এই উৎসবে যুক্ত হন, তরুণ-তরুণীরা রঙিন পোশাক পরেন, ঐতিহ্যবাহী নানা দেশি খাবারের উৎসবে পরিণত হয় দিনটি।
যেকোনো নববর্ষ মানেই নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন। জীবনকে রঙিন করে তোলার আকাঙ্ক্ষা। সবার জন্য একটি শান্তিময় দেশ হিসেবে আমাদের দেশকে পরিচিত করে তোলার একটা প্রচ্ছন্ন বার্তাও থাকে নববর্ষে।
শুভ নববর্ষ, বাংলাদেশ।
শুভ নববর্ষ। সুস্বাগত ১৪২৯। শুরু হলো আরেকটি বছর। আজকের পত্রিকার সব পাঠককে জানাই নববর্ষের শুভেচ্ছা। জীর্ণ-পুরোনো সবকিছু ভেসে যাক। শুরু হোক নতুনের জয়গান। অধিকাংশ
বর্ষপঞ্জির উৎপত্তি ধর্ম-সম্পর্কিত হলেও বাংলা নববর্ষের সঙ্গে যুক্ত আছে কৃষিকাজ ও খাজনার সম্পর্ক। এ কারণেই বাংলা বর্ষপঞ্জিতে ধর্মীয় অনুষঙ্গ নেই, তাই বাঙালির এ পঞ্জিকাটি হয়ে উঠতে পেরেছে ধর্ম-সম্প্রদায়নির্বিশেষে বাংলায় বসবাসরত প্রতিটি মানুষের অসাম্প্রদায়িক সর্বজনীন উৎসব।
কলকাতায় প্রথম আদালত মেয়র্স কোর্ট ছিল ১৭২৬ থেকে ১৭৭৩ পর্যন্ত। সেই কোর্টের প্রথম যে বাংলা দলিলটি অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পেয়েছে, সেটি বর্তমানে রয়েছে ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে। তাতে তারিখ দেওয়া আছে এভাবে: ‘সন ১১৬২, ইঙ্গরেজী ১৭৫৬ সাল, তারিখ ২২ মাঘ ২ ফেবরিল।’ খেয়াল করলে দেখা যাবে, ১১৬২ সন লেখা আছে ঠিকই কিন্তু এটি যে বাংলা সন, সেটি নেই; অর্থাৎ সে সময় বছরটাকে বাংলা সন বলে চিহ্নিত করা হয়নি। উনিশ শতকের প্রথম দিকেও তা বাংলা সন হিসেবে পরিচিত ছিল না। এ কথার সূত্র ধরে বলা যায়, সম্রাট আকবর বাংলা সন নামে কোনো সন প্রবর্তন করেননি। তিনি যে সনটি চালু করেন তা তাঁর সাম্রাজ্যের সর্বত্রই ছিল বিরাজমান, এটি তখন পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে। ফসলের সঙ্গে খাজনা আদায়ের যোগ থেকেই এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, যা উনিশ শতকে এসে বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ হিসেবে পরিচিত হয়। পয়লা বৈশাখ তখনো একটি সর্বজনীন উৎসবের রূপ পায়নি। কালে কালে তা হয়ে উঠেছে বাঙালির তথা এই ভূখণ্ডে বসবাসরত সব মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব। এত বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পৃথিবীতে বিরল।
পয়লা বৈশাখের যে উৎসব তার মূল খুঁজতে আমাদের যেতে হবে গ্রামে। একসময় জমিদারেরা পয়লা বৈশাখ অথবা বছরের প্রথমদিকে পুণ্যাহ বলে একটা উৎসব করতেন। তাঁদের কাছারি বাড়ি সাজানো হতো, সেখান থেকে ভেসে আসত বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ। প্রজারা সেই কাছারির ভেতর যেত এবং সেখানেই হতো টাকাপয়সার আদান-প্রদান, অনেকটা হালখাতার মতো। বাঙালি যখন নিজের সংস্কৃতি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করল, তখনই পয়লা বৈশাখ হয়ে উঠতে লাগল সর্বজনীন। পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ বাঙালির চোখ খুলে দিয়েছিল, সেটাই সম্ভবত পয়লা বৈশাখকে সর্বজনীন করে তুলেছিল। সেই ঐতিহ্যের পথ ধরে পয়লা বৈশাখ আজ অনন্য সাংস্কৃতিক পরিচয় হয়ে উঠেছে।
এখন রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা, সারা দেশের বিভিন্ন শহরে, গ্রামগঞ্জে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলা আমাদের পরিচয়কে সংহত করে। ব্যবসায়ীরা হালখাতা নিয়ে এই উৎসবে যুক্ত হন, তরুণ-তরুণীরা রঙিন পোশাক পরেন, ঐতিহ্যবাহী নানা দেশি খাবারের উৎসবে পরিণত হয় দিনটি।
যেকোনো নববর্ষ মানেই নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন। জীবনকে রঙিন করে তোলার আকাঙ্ক্ষা। সবার জন্য একটি শান্তিময় দেশ হিসেবে আমাদের দেশকে পরিচিত করে তোলার একটা প্রচ্ছন্ন বার্তাও থাকে নববর্ষে।
শুভ নববর্ষ, বাংলাদেশ।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে