জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনকে (২৫) ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পৌর পার্কে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তিন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মহিপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, কুসুম্বা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও যুবলীগ নেতা আনিছুর রহমান শিপন।

ফারুক হোসেনের বাসা পৌর এলাকার দমদমা এলাকায়। পাঁচবিবি ডিগ্রি কলেজের লাগোয়া এলাকায়। তিনি রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র।

নাম প্রকাশ না করে পৌর বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী আজকের পত্রিকাকে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে পাঁচবিবি রেলওয়ে স্টেশন রোডে থানা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ইউপি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করছিলেন ফারুক হোসেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা আনিছুর রহমান শিপনের কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে রাস্তার ওপরে রাখা থানা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ডালিমের মোটরসাইকেল সরিয়ে নিতে বলেন। একটু দূরেই শিপনের কার্যালয়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ দিতে গাড়ি আসবে বলে জানান। কিন্তু মোটরসাইকেলটি না সরানোয় তিনি ক্ষুব্ধ হন। এর কিছুক্ষণ পর পেট্রল ঢেলে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে খবর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা আসেন। কিন্তু ততক্ষণে মোটরসাইকেলটি পুড়ে যায়। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের কর্মীদের নিয়ে সাইফুল পাঁচবিবি থানায় মামলা করতে যান। মামলা করে থানা থেকে বেরিয়ে আসেন সাড়ে ১২টার দিকে। থানার একটু দূরে পৌর পার্কে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একদল নেতা-কর্মী অবস্থা করছিলেন। সেখানে পৌঁছলে তাঁদের ধাওয়া দেন। এতে বিএনপি ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা দৌড় দেন। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু ফারুক পড়ে যান।

থানা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ডালিম অভিযোগ করেন, দৌড়ে পালানোর সময় ফারুক পড়ে গেলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। মহিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, জয়পুরহাট সরকারি আধুনিক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বুধবার বিকেলে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

ফারুকের মা বিলকিস খাতুন বলেন, ‘আমার নিষ্পাপ ছেলেকে এভাবে নৃশংস কায়দায় হত্যা করল। যারা এ কাজ করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই।’

জানতে চাইলে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, নিহতের মা বাদী হয়ে ১০ জনের নামে মামলা করেছেন। ঘটনার পরই তিনজনকে আটক করা হয়েছে।