গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর লেভেল ক্রসিংয়ে রেললাইনের নিচের মাটি দেবে গেছে। রেল ও অন্য যানবাহন চলাচলের সময় ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়। যানবাহন আটকে এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া দেবে যাওয়া অংশে জমে থাকা পানি ছিটকে অনেক সময় পথচারীদের শরীরে লাগছে।

জয়দেবপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আবুল হোসেন জানান, প্রতিদিন জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন দিয়ে ৮৫টি রেল যাতায়াত করে। এ ছাড়া জয়দেবপুর-শিববাড়ি-রাজবাড়ী সড়কে শত শত যাত্রী ও মালবাহী যানবাহন এবং কয়েক হাজার রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যান চলাচল করে থাকে। এ সড়কে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, শিববাড়ি-রাজবাড়ী সড়কে জয়দেবপুর জংশনের এই অংশে গত তিন মাসে দুবার রেললাইনের পাত লাইনচ্যুত হয়। লেভেল ক্রসিংয়ের মাঝখানে রেললাইনের নিচের মাটি দেবে যাওয়াতে গর্ত হয়ে গেছে। এখন গর্তে পানি জমে থাকে। এখানে প্রবল ঝাঁকুনি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। ট্রেন ও যানবাহন চলাচলের সময় জমে থাকা পানি ছিটকে মানুষের শরীরে লাগে।

দেখা যায়, জয়দেবপুর-শিববাড়ি-রাজবাড়ী সড়কের ওপর দিয়ে রেললাইন চলে গেছে। জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের উত্তর পাশেই এই লেভেল ক্রসিং। সড়কের যে অংশজুড়ে রেললাইন অতিক্রম করেছে, সেই অংশের কোথাও কোথাও সড়কের ঢালাই ফেটে টুকরো হয়েছে আবার কোথাও দেবে গেছে। দেবে যাওয়া এসব স্থানে পানি জমে আছে। ভারী যানবাহন এমনকি রিকশা চলাচলের সময় রেললাইন নড়ে। রেল চলাচলের সময়ও জাম্পিং করতে দেখা যায়। তাই এ সড়কে যানবাহন ও রেল চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এ পথে নিয়মিত চলাচলকারী কোহিনুর বেগম বলেন, ‘আমরা অনেক সময় হেঁটে রেললাইন পার হয়ে সড়কের পশ্চিম পাশ থেকে গাড়িতে উঠি। তখন কোনো যানবাহন চলাচল করলে ময়লাযুক্ত পানি এসে আমাদের শরীরে লাগে। রেললাইনের মাঝখানের গর্তে যানবাহন আটকে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

রেললাইনের পাশের ফলের দোকানি মো. সাইফুল বলেন, ‘এখানে রেললাইনের নিচের ও সড়কের কিছু অংশের মাটি দেবে গেছে। ফলে অনেক সময় যানবাহন গর্তে আটকে যায়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা ছাড়া মানুষের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।’

স্থানীয় অধিবাসী ইকবাল হোসেন জানান, শিববাড়ি-রাজবাড়ী সড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মালবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করে। আশপাশে নগর ভবন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, থানা, আদালতপাড়াসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস থাকায় সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। লেভেল ক্রসিং পারাপারের সময় রেল চলে এলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। তাই রেললাইন যাতে জাম্পিং না করে, সে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশলী বিভাগের কিম্যান মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, ‘এখানে রেললাইন কিছুটা দেবে গেছে। সড়কের এই অংশে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় ঝুঁকি রয়েছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। শিগগির রেললাইন উঁচুকরণের কাজ শুরু হবে।’

রেলওয়ের পূর্ত বিভাগের আইডব্লিউ আব্দুর রউফ বলেন, ‘ওই লেভেল ক্রসিংয়ে রেললাইনের নিচের মাটি দেবে গেছে। ফলে যানবাহন ও রেল চলাচলের সময় এখানে লাইন জাম্পিং হয়। রেললাইন উঁচু করার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, শিগগির কাজ শুরু করা হবে।’