এস এম চন্দন
বাংলাদেশে সোনালি আঁশ পাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলের সবগুলো বন্ধ হয়ে আছে। সরকারি পাটকলগুলোর যাত্রা শুরু হয়েছিল পাকিস্তান আমলের শুরুর দিকে। খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলে উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে। বাকি মিলগুলো চালু হয়েছে আরও আগে। খুব স্বাভাবিকভাবেই মিলগুলোর যন্ত্রাংশ এখন পুরোনো হয়ে গেছে। এগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি। তা না হলে উৎপাদন খরচ আর বিক্রয়মূল্য সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা কঠিন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতের পাটকলে এক টন চট তৈরিতে প্রয়োজন হয় ৪০ জন শ্রমিক, সেখানে বাংলাদেশে সমপরিমাণ চট তৈরিতে লাগে ৮০ জন। উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ টিকতে পারে না।
আরেকটি বড় সমস্যা হলো, সময়মতো পাট কেনার টাকা না পাওয়া। যখন চাষি পাট কেটে জাগ দিচ্ছেন, দাম কম—তখন পাট কেনার টাকা বরাদ্দ হয় না। এই একই পাট চাষির হাত থেকে ফড়িয়াদের হাতে চলে গেলে দামটা বেড়ে যায়, তখন শুরু হয় পাট কেনা। টাকা পেতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক ছোট পাট ব্যবসায়ী মিল গেটে পাট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে মিলকে কেন্দ্র করে বড় ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। তাঁরা ইচ্ছেমতো পাট বিক্রি করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। তা ছাড়া যেহেতু বাকিতে পাট বিক্রি করছেন, ভবিষ্যতে কত দাম উঠবে তা অনিশ্চিত, তাই বরাদ্দকৃত দামের সঙ্গে যোগ করে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় তাঁদের। এটা পাটকলের জন্য ক্ষতিকর। এসব তথ্য দিয়েছেন বিভিন্ন পাটকলের হিসাব বিভাগে কর্মরত ব্যক্তিরা।
পাট কেনার ক্ষেত্রে সরকারের একটি নীতিমালা আছে। পাটের তিনটি গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের পাট সি বটম, মধ্যম মানের ক্রস বটম এবং নিম্ন মানেরটি এসএমআর। পাটকলের কয়েকজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করলেন, সি বটম বা ক্রস বটমের টাকা খরচ করে এসএমআর গ্রেডের পাট কেনা হয়। পাটকলের উৎপাদনে কাঁচামাল (পাট) থেকে পরিত্যক্ত হওয়ার গ্রহণযোগ্য পরিমাণ হলো: সি বটম ৫ শতাংশ, আর বাকি দুটি ৭ থেকে ৮ শতাংশ। কিন্তু গ্রেডের কম বা বেশি কেনার সঙ্গে একদিকে টাকা অপচয় বা লুট, আরেক দিকে উৎপাদন কম হওয়ার বিষয়টি জড়িত। অসাধু ব্যবসায়ী এবং অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভেজা পাট কেনার অভিযোগটিও করেছেন কেউ কেউ। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর—তিন মাস পাট মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যখন পাটের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ২২ শতাংশকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এর পরের বাকি সময়ে এই আর্দ্রতার স্বাভাবিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা নেমে আসে ১৮ শতাংশে। কখনো কখনো পাটে পানি দিয়ে সেই পাট বিক্রি করা হয়। পানির কারণে পাটের ওজন বেড়ে যায়। ব্যবসায়ী বেশি দাম পান, অথচ বিক্রি করা পাটের ওজন দামের তুলনায় কম থাকে। ভেজা পাটের ব্যবহারে যন্ত্রাংশেরও সমস্যা তৈরি হয়। এইসব সমস্যার অন্তরালে দুর্নীতি আর ভুল নীতির ভূমিকাটাই সবচেয়ে বেশি। নানাবিধ চক্রান্ত আর চাপের মুখেও এখনো বাংলাদেশে সারা বিশ্বের মোট পাটের ২৬ শতাংশের বেশি উৎপাদন হয়।
সারা বাংলাদেশে যে ২৬টি সরকারি পাটকল, তার মধ্যে যশোরের নওয়াপাড়ার রাজঘাটে অবস্থিত কার্পেটিং জুট মিলে কার্পেটের উপযোগী পাটজাত পণ্য সিবিসি (কার্পেট ব্যাকিং ক্লোদ) তৈরি হতো। এ ছাড়া চট্টগ্রামের গুল আহমেদ পাটকলেও সিবিসি উৎপাদন করা হয়। বাকি ২৪টি মিলে শুধু চট বা ছালা তৈরি হয়, যা বস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অথচ বেসরকারি খাতে অনেকগুলো স্পিনিং ও টোয়াইন মিল রয়েছে, যেগুলো পাট থেকে সুতা তৈরি করে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এসব সুতার যথেষ্ট চাহিদা আছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় খাতে স্পিনিং ও টোয়াইন তৈরির কোনো ব্যবস্থা ছিল না, অথচ পর্যাপ্ত জায়গা ছিল। কয়েক বছর আগে ঢাকায় ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার-জি’ ২৩৫ ধরনের পাটপণ্য প্রদর্শিত হয়েছিল।
২০২০ সালের জুলাই মাসে হঠাৎ করেই দেশের সব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। শ্রমিকনেতাদের তথ্যমতে, প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক এ সময় চাকরি হারান। সরকার বলেছিল, মিল বন্ধ নয়, উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে। আধুনিকায়নের মাধ্যমে এগুলো আবার চালু করা হবে। এই ঘোষণার বাস্তবায়ন আর হয়নি। সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পরে ৪৪ বছরে এই পাটকলগুলোর লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছর যে পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে গত কয়েক বছরে, সেই তুলনায় এই লোকসান অনেক কম। তা ছাড়া লোকসানের কারণে মিল বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমাধান হতে পারে না।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বিজেএমসির পরিচালনায় এখন একটি পাটকলও চলে না, অথচ প্রতিষ্ঠানটি বহাল তবিয়তেই টিকে আছে! বিজেএমসি এবং পাটকলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেতনও পাচ্ছেন নিয়মিত। সবাই আছে, নেই শুধু শ্রমিক। এ কারণেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো সদর্পে এখনো লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। মিল বন্ধ হওয়ার পরও বিজেএমসির ২ হাজার ৪০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রতি মাসে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হচ্ছে। সে হিসাবে জুলাই ২০২০ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত খরচ ৫০০ কোটি টাকা। (সূত্র: আজকের পত্রিকা, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩)
অথচ খুলনায় ‘পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ’ যে সুপারিশ দিয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল ১২০০ কোটি টাকা খরচ করলেই মিলগুলো আধুনিকায়ন করা সম্ভব। ২১টি মিলের শ্রমিকেরা পাওনা টাকা পেয়েছেন, কিন্তু ৫টি মিলের শ্রমিকেরা কোনো পাওনা টাকা পাননি। মিল বন্ধ হওয়ার পর জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাতে নেমে ট্রাকচাপায় নিহত হন খুলনার প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের শ্রমিক কুট্টি। এভাবে আরও অনেক শ্রমিক এখন রিকশা, মাহেন্দ্র (ইঞ্জিনচালিত থ্রি হুইলার), সিএনজি অথবা ইজিবাইক চালাচ্ছেন।
সরকারি ও বেসরকারি যৌথ মালিকানায় মিল চালানোর পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) বাস্তবায়নের কথা বলেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু বাংলাদেশে জাতীয়করণকৃত পাটকল, যেগুলো পরে ব্যক্তিমালিকানা বা বিরাষ্ট্রীকরণ হয়েছে, সেগুলো এখন বন্ধ। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল পিপিপির আওতায় দেওয়া কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান নয় বলেই মনে করেন রাষ্ট্রীয় পাটকলের শ্রমিক, তথা কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ।
লেখক: সংগঠক, পাটকল শ্রমিক আন্দোলন, খুলনা
বাংলাদেশে সোনালি আঁশ পাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলের সবগুলো বন্ধ হয়ে আছে। সরকারি পাটকলগুলোর যাত্রা শুরু হয়েছিল পাকিস্তান আমলের শুরুর দিকে। খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলে উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে। বাকি মিলগুলো চালু হয়েছে আরও আগে। খুব স্বাভাবিকভাবেই মিলগুলোর যন্ত্রাংশ এখন পুরোনো হয়ে গেছে। এগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি। তা না হলে উৎপাদন খরচ আর বিক্রয়মূল্য সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা কঠিন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতের পাটকলে এক টন চট তৈরিতে প্রয়োজন হয় ৪০ জন শ্রমিক, সেখানে বাংলাদেশে সমপরিমাণ চট তৈরিতে লাগে ৮০ জন। উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ টিকতে পারে না।
আরেকটি বড় সমস্যা হলো, সময়মতো পাট কেনার টাকা না পাওয়া। যখন চাষি পাট কেটে জাগ দিচ্ছেন, দাম কম—তখন পাট কেনার টাকা বরাদ্দ হয় না। এই একই পাট চাষির হাত থেকে ফড়িয়াদের হাতে চলে গেলে দামটা বেড়ে যায়, তখন শুরু হয় পাট কেনা। টাকা পেতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক ছোট পাট ব্যবসায়ী মিল গেটে পাট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে মিলকে কেন্দ্র করে বড় ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। তাঁরা ইচ্ছেমতো পাট বিক্রি করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। তা ছাড়া যেহেতু বাকিতে পাট বিক্রি করছেন, ভবিষ্যতে কত দাম উঠবে তা অনিশ্চিত, তাই বরাদ্দকৃত দামের সঙ্গে যোগ করে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় তাঁদের। এটা পাটকলের জন্য ক্ষতিকর। এসব তথ্য দিয়েছেন বিভিন্ন পাটকলের হিসাব বিভাগে কর্মরত ব্যক্তিরা।
পাট কেনার ক্ষেত্রে সরকারের একটি নীতিমালা আছে। পাটের তিনটি গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের পাট সি বটম, মধ্যম মানের ক্রস বটম এবং নিম্ন মানেরটি এসএমআর। পাটকলের কয়েকজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করলেন, সি বটম বা ক্রস বটমের টাকা খরচ করে এসএমআর গ্রেডের পাট কেনা হয়। পাটকলের উৎপাদনে কাঁচামাল (পাট) থেকে পরিত্যক্ত হওয়ার গ্রহণযোগ্য পরিমাণ হলো: সি বটম ৫ শতাংশ, আর বাকি দুটি ৭ থেকে ৮ শতাংশ। কিন্তু গ্রেডের কম বা বেশি কেনার সঙ্গে একদিকে টাকা অপচয় বা লুট, আরেক দিকে উৎপাদন কম হওয়ার বিষয়টি জড়িত। অসাধু ব্যবসায়ী এবং অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভেজা পাট কেনার অভিযোগটিও করেছেন কেউ কেউ। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর—তিন মাস পাট মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যখন পাটের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ২২ শতাংশকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এর পরের বাকি সময়ে এই আর্দ্রতার স্বাভাবিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা নেমে আসে ১৮ শতাংশে। কখনো কখনো পাটে পানি দিয়ে সেই পাট বিক্রি করা হয়। পানির কারণে পাটের ওজন বেড়ে যায়। ব্যবসায়ী বেশি দাম পান, অথচ বিক্রি করা পাটের ওজন দামের তুলনায় কম থাকে। ভেজা পাটের ব্যবহারে যন্ত্রাংশেরও সমস্যা তৈরি হয়। এইসব সমস্যার অন্তরালে দুর্নীতি আর ভুল নীতির ভূমিকাটাই সবচেয়ে বেশি। নানাবিধ চক্রান্ত আর চাপের মুখেও এখনো বাংলাদেশে সারা বিশ্বের মোট পাটের ২৬ শতাংশের বেশি উৎপাদন হয়।
সারা বাংলাদেশে যে ২৬টি সরকারি পাটকল, তার মধ্যে যশোরের নওয়াপাড়ার রাজঘাটে অবস্থিত কার্পেটিং জুট মিলে কার্পেটের উপযোগী পাটজাত পণ্য সিবিসি (কার্পেট ব্যাকিং ক্লোদ) তৈরি হতো। এ ছাড়া চট্টগ্রামের গুল আহমেদ পাটকলেও সিবিসি উৎপাদন করা হয়। বাকি ২৪টি মিলে শুধু চট বা ছালা তৈরি হয়, যা বস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অথচ বেসরকারি খাতে অনেকগুলো স্পিনিং ও টোয়াইন মিল রয়েছে, যেগুলো পাট থেকে সুতা তৈরি করে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এসব সুতার যথেষ্ট চাহিদা আছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় খাতে স্পিনিং ও টোয়াইন তৈরির কোনো ব্যবস্থা ছিল না, অথচ পর্যাপ্ত জায়গা ছিল। কয়েক বছর আগে ঢাকায় ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার-জি’ ২৩৫ ধরনের পাটপণ্য প্রদর্শিত হয়েছিল।
২০২০ সালের জুলাই মাসে হঠাৎ করেই দেশের সব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। শ্রমিকনেতাদের তথ্যমতে, প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক এ সময় চাকরি হারান। সরকার বলেছিল, মিল বন্ধ নয়, উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে। আধুনিকায়নের মাধ্যমে এগুলো আবার চালু করা হবে। এই ঘোষণার বাস্তবায়ন আর হয়নি। সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পরে ৪৪ বছরে এই পাটকলগুলোর লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছর যে পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে গত কয়েক বছরে, সেই তুলনায় এই লোকসান অনেক কম। তা ছাড়া লোকসানের কারণে মিল বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমাধান হতে পারে না।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বিজেএমসির পরিচালনায় এখন একটি পাটকলও চলে না, অথচ প্রতিষ্ঠানটি বহাল তবিয়তেই টিকে আছে! বিজেএমসি এবং পাটকলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেতনও পাচ্ছেন নিয়মিত। সবাই আছে, নেই শুধু শ্রমিক। এ কারণেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো সদর্পে এখনো লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। মিল বন্ধ হওয়ার পরও বিজেএমসির ২ হাজার ৪০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রতি মাসে ১২ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হচ্ছে। সে হিসাবে জুলাই ২০২০ থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত খরচ ৫০০ কোটি টাকা। (সূত্র: আজকের পত্রিকা, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩)
অথচ খুলনায় ‘পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ’ যে সুপারিশ দিয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল ১২০০ কোটি টাকা খরচ করলেই মিলগুলো আধুনিকায়ন করা সম্ভব। ২১টি মিলের শ্রমিকেরা পাওনা টাকা পেয়েছেন, কিন্তু ৫টি মিলের শ্রমিকেরা কোনো পাওনা টাকা পাননি। মিল বন্ধ হওয়ার পর জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাতে নেমে ট্রাকচাপায় নিহত হন খুলনার প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের শ্রমিক কুট্টি। এভাবে আরও অনেক শ্রমিক এখন রিকশা, মাহেন্দ্র (ইঞ্জিনচালিত থ্রি হুইলার), সিএনজি অথবা ইজিবাইক চালাচ্ছেন।
সরকারি ও বেসরকারি যৌথ মালিকানায় মিল চালানোর পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) বাস্তবায়নের কথা বলেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু বাংলাদেশে জাতীয়করণকৃত পাটকল, যেগুলো পরে ব্যক্তিমালিকানা বা বিরাষ্ট্রীকরণ হয়েছে, সেগুলো এখন বন্ধ। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল পিপিপির আওতায় দেওয়া কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান নয় বলেই মনে করেন রাষ্ট্রীয় পাটকলের শ্রমিক, তথা কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ।
লেখক: সংগঠক, পাটকল শ্রমিক আন্দোলন, খুলনা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে