অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
কখনো কি অনুভব করেছেন, ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে? অথবা পেটের ভেতর ফড় ফড় করে প্রজাপতি উড়ছে? কিংবা মেরুদণ্ড দিয়ে নেমে যাচ্ছে শীতল স্রোত? এই প্রতিটি অভিজ্ঞতা কখনো না কখনো আমাদের জীবনে ঘটেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলোকেই বলা হচ্ছে ইমোশনাল বডি ম্যাপিং বা আবেগময় দৈহিক মানচিত্র।
আবেগের বহিঃপ্রকাশ মনোদৈহিক; অর্থাৎ মনের সঙ্গে সঙ্গে প্রায়ই একে আমরা শরীরে অনুভব করি।
দুঃখবোধের সময় শরীরে কী ঘটে
দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা ইত্যাদি শরীরের এক বা একাধিক জায়গায় দৈহিক লক্ষণ তৈরি করে। মনে রাখতে হবে, অনুভূতি বা ফিলিং আমাদের পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রথম মাধ্যম ছিল—মস্তিষ্ক বা ভাষাজ্ঞান পূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার আগে। কাজেই আমরা এটিকে বুদ্ধি দিয়ে মনে রাখতে পারব না। গবেষণা বলছে, গর্ভস্থ স্মৃতিও অবচেতন মনে থাকে। কিন্তু আমাদের সচেতন মন সেটা ভুলে গেছে।
কী কী প্রভাব পড়ে
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দেহের ওপরের অংশে, বিশেষ করে রক্ত চলাচল বাড়ে রাগ ও আনন্দের অনুভূতির সঙ্গে। আনন্দ দেখা গেছে সারা দেহে অনুভূতির তীব্রতা বাড়ায়।
অন্যদিকে দেহের নিম্নাংশের রক্ত চলাচল কমে দুঃখবোধের সঙ্গে। ফলে দুশ্চিন্তায় বা বিষণ্নতায় পা ঠান্ডা হয়ে আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সুস্থতায় শরীরের সঙ্গে মনের সংযুক্তি
অনেকেরই দেখা যায় শারীরিক অসুখ-বিসুখ কোনো পরীক্ষায় ধরা পড়ছে না। সব রিপোর্ট স্বাভাবিক। কিন্তু রোগী দৈহিকভাবে খুবই খারাপ বোধ করছে। এর কারণ, শরীরে যখন তীব্র ব্যথা হয়, শরীর তখন অজ্ঞান হয়ে যায়। কিন্তু মনে যখন তীব্র কষ্ট হয়, তখন মন কিছু লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ করে। এ জন্যই বলে, সুস্থতার সঙ্গে শরীর ও মনের নিবিড় যোগাযোগ আছে। আমরা অবচেতন মনের অনুভূতিগুলো যদি সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পারি, শারীরিক কোনো কারণ ছাড়া অসুস্থ হয়ে যাব।
অনেকেই একটা কথা বলেন, কোনো ব্যাপার না অথবা বাদ দাও। এই শব্দগুলো জীবন থেকে অনুভূতি প্রকাশে বাদ দিন। কারণ আবেগ যদি প্রকাশিত না হয়, সেটা শরীরে জমে থেকে শরীরকে খারাপ বোধ করায়।
আবেগ চেপে রাখার ক্ষতি
এক গবেষণা বলছে, যারা অনুভূতি বা আবেগ প্রকাশ না করে চেপে রাখে, তাদের ৩০ শতাংশের প্রিম্যাচিউর মৃত্যু ঘটে। তাদের ক্যানসারের আশঙ্কা ৭০ শতাংশ বেশি। কাজেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ স্বাস্থ্যকর।
দীর্ঘমেয়াদি চেপে রাখা দুঃখ বোধ শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ তৈরি করে। যেমন:
দুঃখবোধের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ যেভাবে সেলফ মোটিভেশন
প্রথমেই মনে রাখা দরকার, প্রত্যেক মানুষের দুঃখবোধের একটি অদৃশ্য বোঝা কাঁধে আছে। এই বোঝা সম্পর্কে সচেতন না হলে এটা বিভিন্নভাবে আমাদের চাপে ফেলতে পারে। যেমন:
কখনো কখনো দুঃখবোধ শরীরে জমে থাকে। তখন আমরা নির্দিষ্ট কিছু আচরণ করি এবং ভোগান্তির শিকার হই। যেমন বিতৃষ্ণা, ভুল সিদ্ধান্ত, অল্পতে ছ্যাঁৎ করে ওঠা, নিজেই নিজের ক্ষতি করা, মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা বাড়ানো, বিষণ্নতা, ক্লান্তি।
বিশেষ করে যাদের অতীতে পারিবারিক বা যৌন সহিংসতার ইতিহাস আছে, এ ক্ষেত্রে তারা বেশি অসহায়।
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, জীবনের বড় কোনো পরিবর্তন, প্রিয়জনের মৃত্যু, চাকরি হারানো, বিশ্বাসঘাতকতা, সহিংসতা, বৈষম্য বা বর্ণবাদের শিকার হওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য ঘটনা থেকে দুঃখবোধ আসতে পারে জীবনে।
পারিবারিক সাহায্য
এসব ক্ষেত্রে পারিবারিক সাহায্য খুবই জরুরি। কারণ তখন একটি মানুষের মানসিক অবস্থা নবজাতকের মতো। পরিবারের প্রয়োজন তখন উপদেশ না দিয়ে চুপ করে পাশে থাকা। কোনো উপদেশ বা কোনো জাজমেন্টাল মন্তব্য করা যাবে না। এ সময় স্পর্শ খুব ভালো কাজ করে। খেয়াল করলে দেখবেন, নবজাতক কাঁদলে কোলে তুলে নিলে চুপ হয়ে যায়। বড়দের তো আর কোলে তুলে নেওয়া যায় না। কিন্তু হাতটি ধরে চুপ করে বসে থাকা যায় তার পাশে। মৌনতা কখনো কখনো হিরণ্ময়। মানুষের যোগাযোগ বা কমিউনিকেশনের মাত্র ৭ শতাংশ মৌখিক, বাকি ৯৩ শতাংশই ভাষাহীন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ কখন
যখন দুঃখবোধ প্রতিবেদনের কাজগুলো করতে বাধার সৃষ্টি করবে, তখন। এখানে মনে রাখা দরকার, শিশুরাও কিন্তু দুঃখবোধে আক্রান্ত হয়। তারা কিছু বোঝে না বলে আমরা ভাবি যে ওদের অনুভূতি নেই। কিন্তু শিশুদের অনুভূতিবোধ সাংঘাতিক তীব্র।
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি
কখনো কি অনুভব করেছেন, ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে? অথবা পেটের ভেতর ফড় ফড় করে প্রজাপতি উড়ছে? কিংবা মেরুদণ্ড দিয়ে নেমে যাচ্ছে শীতল স্রোত? এই প্রতিটি অভিজ্ঞতা কখনো না কখনো আমাদের জীবনে ঘটেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলোকেই বলা হচ্ছে ইমোশনাল বডি ম্যাপিং বা আবেগময় দৈহিক মানচিত্র।
আবেগের বহিঃপ্রকাশ মনোদৈহিক; অর্থাৎ মনের সঙ্গে সঙ্গে প্রায়ই একে আমরা শরীরে অনুভব করি।
দুঃখবোধের সময় শরীরে কী ঘটে
দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা ইত্যাদি শরীরের এক বা একাধিক জায়গায় দৈহিক লক্ষণ তৈরি করে। মনে রাখতে হবে, অনুভূতি বা ফিলিং আমাদের পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রথম মাধ্যম ছিল—মস্তিষ্ক বা ভাষাজ্ঞান পূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার আগে। কাজেই আমরা এটিকে বুদ্ধি দিয়ে মনে রাখতে পারব না। গবেষণা বলছে, গর্ভস্থ স্মৃতিও অবচেতন মনে থাকে। কিন্তু আমাদের সচেতন মন সেটা ভুলে গেছে।
কী কী প্রভাব পড়ে
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দেহের ওপরের অংশে, বিশেষ করে রক্ত চলাচল বাড়ে রাগ ও আনন্দের অনুভূতির সঙ্গে। আনন্দ দেখা গেছে সারা দেহে অনুভূতির তীব্রতা বাড়ায়।
অন্যদিকে দেহের নিম্নাংশের রক্ত চলাচল কমে দুঃখবোধের সঙ্গে। ফলে দুশ্চিন্তায় বা বিষণ্নতায় পা ঠান্ডা হয়ে আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সুস্থতায় শরীরের সঙ্গে মনের সংযুক্তি
অনেকেরই দেখা যায় শারীরিক অসুখ-বিসুখ কোনো পরীক্ষায় ধরা পড়ছে না। সব রিপোর্ট স্বাভাবিক। কিন্তু রোগী দৈহিকভাবে খুবই খারাপ বোধ করছে। এর কারণ, শরীরে যখন তীব্র ব্যথা হয়, শরীর তখন অজ্ঞান হয়ে যায়। কিন্তু মনে যখন তীব্র কষ্ট হয়, তখন মন কিছু লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ করে। এ জন্যই বলে, সুস্থতার সঙ্গে শরীর ও মনের নিবিড় যোগাযোগ আছে। আমরা অবচেতন মনের অনুভূতিগুলো যদি সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পারি, শারীরিক কোনো কারণ ছাড়া অসুস্থ হয়ে যাব।
অনেকেই একটা কথা বলেন, কোনো ব্যাপার না অথবা বাদ দাও। এই শব্দগুলো জীবন থেকে অনুভূতি প্রকাশে বাদ দিন। কারণ আবেগ যদি প্রকাশিত না হয়, সেটা শরীরে জমে থেকে শরীরকে খারাপ বোধ করায়।
আবেগ চেপে রাখার ক্ষতি
এক গবেষণা বলছে, যারা অনুভূতি বা আবেগ প্রকাশ না করে চেপে রাখে, তাদের ৩০ শতাংশের প্রিম্যাচিউর মৃত্যু ঘটে। তাদের ক্যানসারের আশঙ্কা ৭০ শতাংশ বেশি। কাজেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ স্বাস্থ্যকর।
দীর্ঘমেয়াদি চেপে রাখা দুঃখ বোধ শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ তৈরি করে। যেমন:
দুঃখবোধের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ যেভাবে সেলফ মোটিভেশন
প্রথমেই মনে রাখা দরকার, প্রত্যেক মানুষের দুঃখবোধের একটি অদৃশ্য বোঝা কাঁধে আছে। এই বোঝা সম্পর্কে সচেতন না হলে এটা বিভিন্নভাবে আমাদের চাপে ফেলতে পারে। যেমন:
কখনো কখনো দুঃখবোধ শরীরে জমে থাকে। তখন আমরা নির্দিষ্ট কিছু আচরণ করি এবং ভোগান্তির শিকার হই। যেমন বিতৃষ্ণা, ভুল সিদ্ধান্ত, অল্পতে ছ্যাঁৎ করে ওঠা, নিজেই নিজের ক্ষতি করা, মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা বাড়ানো, বিষণ্নতা, ক্লান্তি।
বিশেষ করে যাদের অতীতে পারিবারিক বা যৌন সহিংসতার ইতিহাস আছে, এ ক্ষেত্রে তারা বেশি অসহায়।
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, জীবনের বড় কোনো পরিবর্তন, প্রিয়জনের মৃত্যু, চাকরি হারানো, বিশ্বাসঘাতকতা, সহিংসতা, বৈষম্য বা বর্ণবাদের শিকার হওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য ঘটনা থেকে দুঃখবোধ আসতে পারে জীবনে।
পারিবারিক সাহায্য
এসব ক্ষেত্রে পারিবারিক সাহায্য খুবই জরুরি। কারণ তখন একটি মানুষের মানসিক অবস্থা নবজাতকের মতো। পরিবারের প্রয়োজন তখন উপদেশ না দিয়ে চুপ করে পাশে থাকা। কোনো উপদেশ বা কোনো জাজমেন্টাল মন্তব্য করা যাবে না। এ সময় স্পর্শ খুব ভালো কাজ করে। খেয়াল করলে দেখবেন, নবজাতক কাঁদলে কোলে তুলে নিলে চুপ হয়ে যায়। বড়দের তো আর কোলে তুলে নেওয়া যায় না। কিন্তু হাতটি ধরে চুপ করে বসে থাকা যায় তার পাশে। মৌনতা কখনো কখনো হিরণ্ময়। মানুষের যোগাযোগ বা কমিউনিকেশনের মাত্র ৭ শতাংশ মৌখিক, বাকি ৯৩ শতাংশই ভাষাহীন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ কখন
যখন দুঃখবোধ প্রতিবেদনের কাজগুলো করতে বাধার সৃষ্টি করবে, তখন। এখানে মনে রাখা দরকার, শিশুরাও কিন্তু দুঃখবোধে আক্রান্ত হয়। তারা কিছু বোঝে না বলে আমরা ভাবি যে ওদের অনুভূতি নেই। কিন্তু শিশুদের অনুভূতিবোধ সাংঘাতিক তীব্র।
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে