‘ফেনসিডিল সেবনের’ ভিডিও ফাঁস নিয়ে এক মুখে দুই কথা বলেছেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি। তিনি দাবি করেছেন, যে ভিডিওটি ফাঁস হয়েছে, সেখানে আসলে তিনি কোমল পানীয় ‘স্পিড’ পান করছিলেন। পরে আবার বলেছেন, ছাত্রসমাজের অবক্ষয় তুলে ধরতে তিনি একটি শর্টফিল্মে অভিনয় করেছিলেন। ওই দৃশ্যটি শর্টফিল্মের। অবশ্য কোনো শর্টফিল্মে ওই ধরনের কোনো দৃশ্য নেই বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে সম্প্রতি নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। মোবাইলে গোপনে ধারণ করা সাধারণ সম্পাদকের ‘ফেনসিডিল সেবনের’ ভিডিও চিত্র ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হয়েছে দলীয় নারী কর্মীর সঙ্গে সভাপতি সাকিবুল ইসলামের ফোনালাপের একটি অডিও। সেখানে টাকা ও পদের লোভ দেখিয়ে নারী কর্মীর সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এসব নিয়ে বিব্রত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও। অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। সাত কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। এ অবস্থায় অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে গতকাল রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। নগরীর অলোকার মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের নেতা আবু সামার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সম্প্রতি দুপুরের খাবারের পর তিনি স্পিড পান করছিলেন। ওই ভিডিও ধারণ করে তা ফেনসিডিল সেবন বলে প্রচার চালাচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা।

এ সময় একজন সাংবাদিক বলেন, ভিডিওতে তাঁর হাতে যে বোতল দেখা যাচ্ছে, সেটি ফেনসিডিলেরই বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তখন জাকির বলেন, সম্প্রতি তিনি ছাত্রসমাজের অবক্ষয় নিয়ে বানানো একটি শর্টফিল্মে অভিনয় করেছেন। তাহলে ওই ভিডিও সেই শর্টফিল্ম থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে জাকির অভিনীত শর্টফিল্মে ফাঁস হওয়া ভিডিওর মতো কোনো দৃশ্য নেই বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাকির হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। সভাপতি সাকিবুল ইসলামও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। আওয়ামী পরিবার থেকে উঠে আসা ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে নিজেকে দাবি করে সাকিবুল বলেন, সামনে নির্বাচন। তাই ছাত্রলীগকে নিষ্ক্রিয় করতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নারী কর্মীর সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের অডিও রেকর্ডটি ‘সুপার এডিট’ বলেও দাবি করেন তিনি।