ভোট প্রয়োগের নিশ্চয়তা চায় যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৯: ১৯

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ যাতে নিজেদের ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপ চায় যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকা সফররত মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আকতার গতকাল সোমবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আফরিন আকতারের সাক্ষাতের পর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে জনগণের ভোট প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে।একই বৈঠকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক্‌-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সাম্প্রতিক ঢাকা সফর ও রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও দুই দেশের বহুমুখী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা দিক, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নিয়ে কথা হয়েছে বলে দূতাবাস জানায়।

আফরিন আকতারের বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন মাসুদ বিন মোমেন। পররাষ্ট্রসচিব এ কথাও বলেন, সম্প্রতি ঢাকা সফর করে যাওয়া মার্কিন দুই প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রাক্‌-নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন যেসব সুপারিশ করেছে, তার প্রতি দেশটির সরকারের সমর্থন আছে।

এনডিআই ও আইআরআইয়ের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের সুপারিশে সংলাপ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে—এ বিষয়ে সরকারের কী অবস্থান, এমন প্রশ্নে মোমেন বলেন, সংলাপ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করে। আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে জনগণের অংশগ্রহণের কথা বোঝানো হয়েছে।

নির্বাচন সহিংসতামুক্ত করার মার্কিন প্রস্তাব প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, সহিংসতায় কমপক্ষে দুটি পক্ষ লাগে। সহিংসতামুক্ত নির্বাচন করার দায়দায়িত্ব জনগণ এবং দলগুলোরও আছে।

যুক্তরাষ্ট্র যদি ভোটের সময় পর্যবেক্ষক পাঠায়, তাহলে সরকার সহযোগিতা করবে বলে পররাষ্ট্রসচিব জানান।

মোমেন বলেন, আফরিন আকতারের সঙ্গে বৈঠকে র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য দেশটিকে অনুরোধ করা হয়েছে। 
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে র‍্যাব নির্বাচনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে পররাষ্ট্রসচিব মার্কিন কর্মকর্তাকে জানান।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অবস্থা ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কথা বলা নিয়ে কিছুদিন আগেও সরকার কড়া অবস্থান নিয়েছিল। এখন সরকার একই বিষয়ে বিদেশিদের সঙ্গে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কূটনৈতিক চ্যানেলে কোনো কিছু জানতে চাইলে, ব্যাখ্যা চাইলে সরকার তা বিবেচনা করবে। এর বাইরে জনসমক্ষে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বললে অযাচিত হস্তক্ষেপ বলে বিবেচিত হতে পারে। এতে আপত্তি আছে সরকারের।’

এর বাইরে ইসরায়েলের অবরোধের মুখে ফিলিস্তিনের গাজার বর্তমান পরিস্থিতি ও সেখানে নারী, শিশু ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠানোর সুযোগ উন্মুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়েছে বলে পররাষ্ট্রসচিব জানান। 

পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মার্কিন এই কর্মকর্তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উভয় বৈঠকেই মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষের সেখানে ফেরত পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজনৈতিক দলের শাস্তির বিধান থাকছে না আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে: আসিফ নজরুল

জুলাই–আগস্ট গণহত্যা: ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিতে সময় এক মাস

শিক্ষায় বড় রদবদল, প্রধান প্রকৌশলীসহ ৩ জনকে ওএসডি

সাবেক আইজিপি মামুন ছিলেন গণহত্যার প্রধান সেনাপতি: শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর

দ্রুত নির্বাচন দিন, নির্বাচিত সরকারই দেশ চালাবে: মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত