বিভুরঞ্জন সরকার
দেশে কি খুব শিগগির বড় ধরনের কোনো আন্দোলন হওয়ার সম্ভাবনা কেউ দেখছেন? এই প্রশ্নের উত্তর এককথায় আর কেউ দিতে না পারলেও বিএনপির নেতারা নির্দ্বিধায় হাত তুলে বলবেন, অবশ্যই। সরকার পতনের ঘণ্টাধ্বনিও তাঁরা শুনছেন। আবার সরকারি দলের নেতারা বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে বলেন, অমন আন্দোলনের কথা তো সেই কত বছর ধরেই শুনছি। তারা কাজে বড় নয়, শুধু কথায়ই বড়।
বিএনপি আগে আন্দোলন জমাতে পারেনি বলে এখন বা অদূর ভবিষ্যতেও জমাতে পারবে না, সেটা জোর দিয়ে বলা যায় না। একটা কথা ঠিক যে দিন-তারিখ ঠিক করে কোনো গণ-আন্দোলন হয় না। কোন ঘটনায় মানুষ পথে নামবে বা কী ঘটলে মানুষের ক্ষোভ প্রশমন করা সহজ হবে না, তা আগে থেকে বলা যায় না। অথচ মানুষের মন না বুঝে বিএনপি আন্দোলনের তারিখ বলে তামাশা করে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে টানা তিন মেয়াদে। এই সময়জুড়েই বিএনপি সরকার হটানোর আন্দোলনের কথা বলে আসছে। এর মধ্যে দুই দফায় বেশ বড় গোলযোগ তৈরির চেষ্টা করে, বোমাবাজি, আগুন-সন্ত্রাস করেও সরকারের ভিত দুর্বল করতে পারেনি। উল্টো তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মানুষ এখন আর তাই আন্দোলনের কথা শুনলে খুব উৎসাহবোধ করে না।
আগে আমাদের দেশে একাধিক গণ-আন্দোলন বা গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান ও বাংলাদেশ আমলে এরশাদ—এই দুই সামরিক স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে গণ-আন্দোলনের কারণেই। কিন্তু দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর অবশ্য কোনো নির্বাচিত সরকারকেই মেয়াদকাল পূর্ণ হওয়ার আগে আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটানো যায়নি। আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদকালে আন্দোলন করে হটাতে পারেনি। বিএনপিও পারছে না শেখ হাসিনাকে হটাতে। মানুষ এখন আর আন্দোলন করে সরকারকে গদিচ্যুত করতে উৎসাহ পায় না। কারণ, সরকার বদল হলে যারা ক্ষমতায় যায়, তাদের কারও কারও ভাগ্যের ব্যাপক পরিবর্তন হলেও সাধারণ মানুষের লাভ তেমন কিছু হয় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য প্রায়ই বলেন যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের সাধারণ মানুষ কিছু না কিছু পায়। অন্যরা ক্ষমতায় গেলে নিজেরাই সব চেটেপুটে খায়।
কথাটি শতভাগ সত্য হলে ভালো হতো। কিন্তু তা তো নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে দলের মোটা আলীরা যা পায়, সেই তুলনায় জনতা, অর্থাৎ চিকন আলীদের পাওয়ার পরিমাণ একেবারেই সামান্য। তবু বিএনপি বা অন্য দলের চেয়ে আওয়ামী লীগের গণমুখী রাজনীতির যে বৈশিষ্ট্য ছিল, এখন তারও পরিবর্তন এসেছে। তৃণমূলের মানুষদের আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তিতে ব্যবধান বাড়ছে। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা, এমপি, মন্ত্রীর দুর্নীতির কথা অনেক মানুষের মুখে মুখে ফিরলেও তাঁরা এসব শোনেন না। নীতিনির্ধারকেরা মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বললেও বাস্তবে দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয়ের নীতি নিতেই দেখা যায়।
এর মধ্যে দেশে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় শুরু হয়েছে লোডশেডিং। বিএনপির নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে বলার বড় মওকা পেয়ে গেছেন। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে, এখন বিদ্যুৎ, এরপর জ্বালানি তেল, এরপর দেখবেন খাজাঞ্চিখানা শূন্য হচ্ছে, রিজার্ভ শেষ হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়ে উঠছে।’
শ্রীলঙ্কার অভূতপূর্ব জনজাগরণ, আন্দোলনকারীদের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পলায়ন, নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খবরে আমাদের দেশের সরকারবিরোধী মহলগুলোর জিবে জল এনে দিয়েছে। বিএনপিসহ আওয়ামী লীগবিরোধী সবাই এখন দিন গুনছে, বাংলাদেশ কবে শ্রীলঙ্কা হচ্ছে? বিএনপির এক পাতিনেতা তো ২৭ জুলাই বলেছেন, এক মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি বাংলাদেশেরও হবে।
আমাদের দেশের দু-একটি গণমাধ্যমও জ্বালানি মজুত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে এমন সব রিপোর্ট ছাপছে, যেগুলো পড়ে মানুষ বিভ্রান্ত হওয়া ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, রিজার্ভ কমে নাকি ৩১ বিলিয়ন ডলারে এসেছে। যদি তাই হয়, তাহলে কি আমাদের হাহাকার করতে হবে? বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়েছিল, তখন যে রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার, তখন কি বাংলাদেশ অচল হয়ে গিয়েছিল? জ্বালানি তেলের সংকট কি শুধু বাংলাদেশে দেখা দিয়েছে, সেটা কি বিশ্বজোড়া সমস্যা নয়? সরকার লোডশেডিংসহ কিছু সংযমী পদক্ষেপ নেওয়ায় যাঁরা হাহাকার করছেন, তাঁরা আসলে কী চান?
যদি তর্কের খাতিরে এটা ধরেও নিই যে দেশে সত্যি সত্যি একটা মারাত্মক সংকট আসছে, তাহলে তার সমাধান কি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো? শেখ হাসিনাকে হটিয়ে কাকে ক্ষমতায় বসালে জ্বালানি-সংকট, ডলারের সংকটসহ আরও যেসব সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেসব দূর হবে? কোন দল বা নেতা-নেত্রীর হাতে সব সংকটমোচনের জাদুর কাঠি আছে? সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি সক্ষমতা দেখাতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে কাকে? বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশে কি দুর্নীতিমুক্ত সুশাসনের নজির স্থাপিত হয়েছিল?
গরম কড়াই থেকে জ্বলন্ত চুলায় ঝাঁপিয়ে পড়ার দুর্বুদ্ধি যাঁরা দেন, তাঁদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের ওপরও অবশ্যই চাপ রাখতে হবে, যাতে সরকার ভয়াবহ সংকটকালেও কোনো ধরনের খামখেয়ালিপনা করতে না পারে। আন্দোলনের নামে উচ্ছৃঙ্খলতা নয়, শান্তি বজায় রেখে সরকারের অপচয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা যে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজেদের মতো আইন বা শাসন চালু করার বেপরোয়া মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দৃঢ় গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সিনেমা ‘হীরক রাজার দেশে’র একটি জনপ্রিয় সংলাপ উদ্ধৃত করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান...’।
শেখ হাসিনাকে কেউ হীরক রাজার সঙ্গে তুলনা করতেই পারেন। দেশে গণতন্ত্র নেই, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই—বলার পর যখন শেখ হাসিনাকে হীরক রাজার সঙ্গে তুলনা করা হয়, তখন তাকে মাত্রাছাড়া বলেই মনে হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যদি কিছুটাও এগিয়ে থাকে, তাহলে সেটা স্বীকার করেই তাঁর ব্যর্থতা ও অসফলতার কথা বলাটাই মানানসই হয়।
দড়ি ধরে টান মারার আহ্বান কার উদ্দেশে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম? দেশের মানুষকে পতঙ্গ না ভেবে মানুষ ভাবতে না শিখলে বিএনপির প্রতি মানুষের সমর্থনটা আত্মিক হবে বলে মনে হয় না।
লেখক: সহকারী সম্পাদক আজকের পত্রিকা
দেশে কি খুব শিগগির বড় ধরনের কোনো আন্দোলন হওয়ার সম্ভাবনা কেউ দেখছেন? এই প্রশ্নের উত্তর এককথায় আর কেউ দিতে না পারলেও বিএনপির নেতারা নির্দ্বিধায় হাত তুলে বলবেন, অবশ্যই। সরকার পতনের ঘণ্টাধ্বনিও তাঁরা শুনছেন। আবার সরকারি দলের নেতারা বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে বলেন, অমন আন্দোলনের কথা তো সেই কত বছর ধরেই শুনছি। তারা কাজে বড় নয়, শুধু কথায়ই বড়।
বিএনপি আগে আন্দোলন জমাতে পারেনি বলে এখন বা অদূর ভবিষ্যতেও জমাতে পারবে না, সেটা জোর দিয়ে বলা যায় না। একটা কথা ঠিক যে দিন-তারিখ ঠিক করে কোনো গণ-আন্দোলন হয় না। কোন ঘটনায় মানুষ পথে নামবে বা কী ঘটলে মানুষের ক্ষোভ প্রশমন করা সহজ হবে না, তা আগে থেকে বলা যায় না। অথচ মানুষের মন না বুঝে বিএনপি আন্দোলনের তারিখ বলে তামাশা করে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে টানা তিন মেয়াদে। এই সময়জুড়েই বিএনপি সরকার হটানোর আন্দোলনের কথা বলে আসছে। এর মধ্যে দুই দফায় বেশ বড় গোলযোগ তৈরির চেষ্টা করে, বোমাবাজি, আগুন-সন্ত্রাস করেও সরকারের ভিত দুর্বল করতে পারেনি। উল্টো তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মানুষ এখন আর তাই আন্দোলনের কথা শুনলে খুব উৎসাহবোধ করে না।
আগে আমাদের দেশে একাধিক গণ-আন্দোলন বা গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান ও বাংলাদেশ আমলে এরশাদ—এই দুই সামরিক স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে গণ-আন্দোলনের কারণেই। কিন্তু দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর অবশ্য কোনো নির্বাচিত সরকারকেই মেয়াদকাল পূর্ণ হওয়ার আগে আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটানো যায়নি। আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদকালে আন্দোলন করে হটাতে পারেনি। বিএনপিও পারছে না শেখ হাসিনাকে হটাতে। মানুষ এখন আর আন্দোলন করে সরকারকে গদিচ্যুত করতে উৎসাহ পায় না। কারণ, সরকার বদল হলে যারা ক্ষমতায় যায়, তাদের কারও কারও ভাগ্যের ব্যাপক পরিবর্তন হলেও সাধারণ মানুষের লাভ তেমন কিছু হয় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য প্রায়ই বলেন যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের সাধারণ মানুষ কিছু না কিছু পায়। অন্যরা ক্ষমতায় গেলে নিজেরাই সব চেটেপুটে খায়।
কথাটি শতভাগ সত্য হলে ভালো হতো। কিন্তু তা তো নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে দলের মোটা আলীরা যা পায়, সেই তুলনায় জনতা, অর্থাৎ চিকন আলীদের পাওয়ার পরিমাণ একেবারেই সামান্য। তবু বিএনপি বা অন্য দলের চেয়ে আওয়ামী লীগের গণমুখী রাজনীতির যে বৈশিষ্ট্য ছিল, এখন তারও পরিবর্তন এসেছে। তৃণমূলের মানুষদের আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তিতে ব্যবধান বাড়ছে। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা, এমপি, মন্ত্রীর দুর্নীতির কথা অনেক মানুষের মুখে মুখে ফিরলেও তাঁরা এসব শোনেন না। নীতিনির্ধারকেরা মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বললেও বাস্তবে দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয়ের নীতি নিতেই দেখা যায়।
এর মধ্যে দেশে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় শুরু হয়েছে লোডশেডিং। বিএনপির নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে বলার বড় মওকা পেয়ে গেছেন। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে, এখন বিদ্যুৎ, এরপর জ্বালানি তেল, এরপর দেখবেন খাজাঞ্চিখানা শূন্য হচ্ছে, রিজার্ভ শেষ হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়ে উঠছে।’
শ্রীলঙ্কার অভূতপূর্ব জনজাগরণ, আন্দোলনকারীদের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পলায়ন, নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খবরে আমাদের দেশের সরকারবিরোধী মহলগুলোর জিবে জল এনে দিয়েছে। বিএনপিসহ আওয়ামী লীগবিরোধী সবাই এখন দিন গুনছে, বাংলাদেশ কবে শ্রীলঙ্কা হচ্ছে? বিএনপির এক পাতিনেতা তো ২৭ জুলাই বলেছেন, এক মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি বাংলাদেশেরও হবে।
আমাদের দেশের দু-একটি গণমাধ্যমও জ্বালানি মজুত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে এমন সব রিপোর্ট ছাপছে, যেগুলো পড়ে মানুষ বিভ্রান্ত হওয়া ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, রিজার্ভ কমে নাকি ৩১ বিলিয়ন ডলারে এসেছে। যদি তাই হয়, তাহলে কি আমাদের হাহাকার করতে হবে? বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়েছিল, তখন যে রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার, তখন কি বাংলাদেশ অচল হয়ে গিয়েছিল? জ্বালানি তেলের সংকট কি শুধু বাংলাদেশে দেখা দিয়েছে, সেটা কি বিশ্বজোড়া সমস্যা নয়? সরকার লোডশেডিংসহ কিছু সংযমী পদক্ষেপ নেওয়ায় যাঁরা হাহাকার করছেন, তাঁরা আসলে কী চান?
যদি তর্কের খাতিরে এটা ধরেও নিই যে দেশে সত্যি সত্যি একটা মারাত্মক সংকট আসছে, তাহলে তার সমাধান কি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো? শেখ হাসিনাকে হটিয়ে কাকে ক্ষমতায় বসালে জ্বালানি-সংকট, ডলারের সংকটসহ আরও যেসব সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেসব দূর হবে? কোন দল বা নেতা-নেত্রীর হাতে সব সংকটমোচনের জাদুর কাঠি আছে? সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি সক্ষমতা দেখাতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে কাকে? বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে দেশে কি দুর্নীতিমুক্ত সুশাসনের নজির স্থাপিত হয়েছিল?
গরম কড়াই থেকে জ্বলন্ত চুলায় ঝাঁপিয়ে পড়ার দুর্বুদ্ধি যাঁরা দেন, তাঁদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের ওপরও অবশ্যই চাপ রাখতে হবে, যাতে সরকার ভয়াবহ সংকটকালেও কোনো ধরনের খামখেয়ালিপনা করতে না পারে। আন্দোলনের নামে উচ্ছৃঙ্খলতা নয়, শান্তি বজায় রেখে সরকারের অপচয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা যে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজেদের মতো আইন বা শাসন চালু করার বেপরোয়া মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দৃঢ় গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সিনেমা ‘হীরক রাজার দেশে’র একটি জনপ্রিয় সংলাপ উদ্ধৃত করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সবাইকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান...’।
শেখ হাসিনাকে কেউ হীরক রাজার সঙ্গে তুলনা করতেই পারেন। দেশে গণতন্ত্র নেই, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই—বলার পর যখন শেখ হাসিনাকে হীরক রাজার সঙ্গে তুলনা করা হয়, তখন তাকে মাত্রাছাড়া বলেই মনে হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যদি কিছুটাও এগিয়ে থাকে, তাহলে সেটা স্বীকার করেই তাঁর ব্যর্থতা ও অসফলতার কথা বলাটাই মানানসই হয়।
দড়ি ধরে টান মারার আহ্বান কার উদ্দেশে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম? দেশের মানুষকে পতঙ্গ না ভেবে মানুষ ভাবতে না শিখলে বিএনপির প্রতি মানুষের সমর্থনটা আত্মিক হবে বলে মনে হয় না।
লেখক: সহকারী সম্পাদক আজকের পত্রিকা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে