বাংলাদেশ ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার রসবোধের অভাব নেই। মালয়েশিয়া ম্যাচের আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রসিক কাবরেরারই দেখা মিলল। 
দলের রক্ষণ নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট? এ প্রশ্নে কাবরেরার উত্তর, ‘খুবই সন্তুষ্ট’। তুর্কমেনিস্তান ম্যাচে বেশ কিছু ভুল পাস হয়েছে...প্রশ্নটা শেষ না হতে দিয়েই কাবরেরার উত্তর, ‘খুবই সন্তুষ্ট’! কোচের এমন কাণ্ডে হেসেই ফেললেন পাশে বসা অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।

বাহরাইন আর তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ হেরে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার আর কোনো সুযোগ নেই বাংলাদেশের। পরের পর্বে খেলার সুযোগ না থাকলেও দেশে ফেরার সুযোগ আছে অন্তত ভালো একটা লড়াই উপহার দিয়ে। সেই ভালো লড়াইটা র‍্যাঙ্কিংয়ে ৩৪ ধাপ এগিয়ে থাকা স্বাগতিক মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দিতে চান জামাল ভূঁইয়ারা। বুকিত জলিল স্টেডিয়ামে ৭০ হাজার মালয়েশিয়ান দর্শকের সামনে বাংলাদেশের মানুষকে উপহার দিতে চান মনে রাখার মতো একটা ম্যাচ।

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল ঘুরেফিরে সামনে এসেছে স্বাগতিক দর্শকদের বিষয়টি। বিপুল দর্শকের সামনে বাংলাদেশের ফুটবলাররা খেলতে প্রস্তুত কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে কাবরেরা বলেছেন, ‘আমাদের জন্য ৭০ হাজার দর্শকের সামনে খেলতে পারাটা শুধু অতিরিক্ত অনুপ্রেরণাই নয়, অনেক ফুটবলারের জন্য এটা স্বপ্নের মতো। আমাদের জন্য এটাই দেখানোর সঠিক সময় যে আমরা যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়তে পারি। আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। সব চাপ মালয়েশিয়ার ওপর।’ কোচের জবাবটারই প্রতিধ্বনি করেছেন অধিনায়ক জামাল। বললেন, ‘ফুটবল খেলতে পারাটাই আমাদের বড় অনুপ্রেরণা। ম্যাচটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং চাপ মালয়েশিয়ার ওপরেই থাকবে। তারা তাদের সেরাটা দিয়েই লড়বে। কারণ, তাদের জিততে হবে।’

এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততেই হবে বাছাইপর্বে ‘ই’ গ্রুপের স্বাগতিক মালয়েশিয়াকে। নিজ দর্শকের সামনে স্বাগতিকদের চাপে ফেলতে চাইলেও ভালো খেলার তাগিদ আছে বাংলাদেশের ফুটবলারদেরও। বিশেষ করে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে জামালদের পাসিং ফুটবল মন ভরিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের। ভালো খেলে হেরে গেলেও সেই ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে মালয়েশিয়া ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় কাবরেরার শিষ্যদের। জামাল বললেন, ‘সেদিন (তুর্কমেনিস্তান ম্যাচ) অনেকেই শুয়ে পড়েছিল হতাশায়। সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল যে আমাদের ম্যাচটা জেতা সম্ভব ছিল। আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। সেরাটা দিয়ে দেশকে গর্বিত করতে হবে। আমরা সেটাই করতে চাই।’

র‍্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকলেও মালয়েশিয়া যে অজেয় নয়, সেই সাক্ষী দিচ্ছে পরিসংখ্যান। আগের ৯ ম্যাচের শেষ দুটিতে মালয়েশিয়াকে জিততে দেয়নি বাংলাদেশ। ১৯৮২ সালে আছে জয়ের স্মৃতিও। শুরুর কয়েক মিনিট ধরে খেলতে পারলে আরও একবার মালয়েশিয়াকে রুখে দেওয়া যাবে বলে বিশ্বাস কাবরেরার, ‘শুরু থেকেই মালয়েশিয়া আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে। শুরুর ১০ মিনিটেই তারা ম্যাচটা শেষ করে দিতে চাইবে। আমাদের গোল করতে হবে, মনোযোগ ধরে রাখতে হবে, তাদের আটকে ভুলের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

মালয়েশিয়ায় থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের মাঠে আসার আহ্বানও জানালেন জামাল, ‘যাঁরা মালয়েশিয়ায় আছেন, তাঁরা যদি স্টেডিয়ামে আসতে পারেন, তাহলে ভালো হবে।’