সুমন আহসানুল ইসলাম
একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী—তবে সেটা সাফল্যের, অর্জনের। স্বাধীনতার অর্ধশতকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল হয়ে ওঠা বাংলাদেশের অন্যতম সাফল্য।
গত ২৩ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হয়ে গেল জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসবিষয়ক সপ্তম গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম অধিবেশন। ১৮৫টি দেশের প্রায় চার হাজার প্রতিনিধির এই সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ ছিল সবার। বাংলাদেশের সেশনগুলোয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি, জানার জন্য প্রশ্ন দেখে গর্বিত হয়েছি বাংলাদেশি হিসেবে।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এই সাফল্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যায়নি। এটা ছিল দুর্ভোগ আর হারানোর বেদনায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য মানুষের বেঁচে থাকার এবং দুর্যোগ জয়ের এক ঐকান্তিক অভিযান। তৃণমূল পর্যায়ের দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের ভিশন, যেটা শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।
স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শুরুটাই ছিল দুটো বড় দুর্যোগের মানবিক সহায়তা এবং পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়ে। প্রথমত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গৃহহীন, জীবিকাহীন কোটি মানুষের পুনর্বাসন এবং দ্বিতীয়ত, ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত উপকূলীয় জীবন-জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ দুর্যোগ ঝুঁকি থেকে তাদের সুরক্ষা। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বিভীষিকাময় রাতের পর কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা, পুনর্বাসন দূরে থাক, মাত্র চার মাসের মধ্যেই পাকিস্তানি হানাদাররা শুরু করে বর্বর জেনোসাইড আর ধ্বংসলীলা।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত উপকুলীয় এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। উপকূলবর্তী মানুষ ও গবাদিপশু বাঁচাতে তিনি মাটির উঁচু ঢিবি বানাতে নির্দেশ দেন। উঁচু মাটির ঢিবিগুলোই ‘মুজিব কেল্লা’। সেই সময়ের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে নির্মিত এই মুজিব কেল্লাগুলোই বর্তমান সময়ের সাইক্লোন শেল্টারের আদি ধারণা। অবকাঠামোগত মুজিব কেল্লার পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলায় সামাজিক সামর্থ্য নির্মাণের ভিতটাও তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর দূরদর্শী দুর্যোগ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম (সিপিপি), যা বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম কমিউনিটি ভলান্টিয়ার মডেল হিসেবে পরিচিত। একই সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ বিনির্মাণে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন জাতির পিতা।
সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করেছে, এগিয়ে গেছে সাফল্যের দিকে। প্রায়ই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের বিস্ময়বোধক প্রশ্ন শুনতে হয়, ‘তোমরা নাকি চব্বিশ ঘণ্টার নোটিশে ৫-৭ মিলিয়ন মানুষকে ইভাকুয়েট করতে সক্ষম? হাউ পসিবল?’ বাংলাদেশ যখনই কোনো দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে, তা থেকে নতুন নতুন স্থানীয় ধারণা উদ্ভাবন এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এখন আমরা গর্বের সঙ্গেই বলতে পারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ একটি রোল মডেল।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারায় পরিবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশ। পরিবর্তন হচ্ছে দেশ, দেশের মানুষের দুর্যোগ-নাজুকতা, যোগ হচ্ছে নতুন নতুন বিপদ। বর্ধিষ্ণু বিপন্নতার কারণগুলোর মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সবাই মোটামুটি ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে প্রতিদিন। অথচ কোনো ধরনের পুনঃপর্যালোচনা ছাড়াই ২০০৯ সালে প্রণীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান বিবেচনায় রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জাতীয় পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২০২৫। ফলে অনেক সময়ই উন্নয়ন প্রকল্প এবং পরিকল্পনাগুলো প্রয়োজনানুগ হচ্ছে না; বরং কখনো কখনো উন্নয়নসৃষ্ট দুর্যোগ রূপে আবির্ভূত হচ্ছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণেও বাংলাদেশে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন দুর্যোগ। অগ্নিকাণ্ড, ভবনধস, বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতা এবং বন্যা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা কিংবা সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে আমাদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ, পরিকল্পনা কিংবা বিনিয়োগ নেই। যদিও শিল্পায়ন এবং নগরায়ণের এক বড় অংশীজন বা স্টেকহোল্ডার ব্যবসায়ী তথা করপোরেট সেক্টর, কিন্তু ব্যবসায়িক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাদের সচেতনতা, আলোচনা কিংবা অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান নিয়ে কিছু আলোচনা শোনা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা তথ্যপ্রযুক্তির বিপত্তি-ব্যবস্থাপনাবিষয়ক। বড় দুর্যোগে ব্যবসা চালু রাখা, ক্ষয়ক্ষতি কমানো, বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার করা ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা ও চর্চা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। যদিও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০২০ সালের এক গবেষণায় উত্তরদাতাদের ৩১ শতাংশ ব্যবসায়ী জলবায়ু প্রভাবিত অভিযোজনের ব্যর্থতাকে আগামী দশকে বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি ব্যবসাঝুঁকির অন্যতম বলে চিহ্নিত করেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সাফল্য এবং খামতির বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। ১৯৭০ বা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যতসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছিল, আমরা সাফল্যের সঙ্গে সেটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদিকে, তিন বা পাঁচ দশক আগে উপকূলীয় অঞ্চলে যে পরিমাণ আর্থিক/ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ছিল, বর্তমানে তা হাজার গুণ বেশি। সিডর, আইলা কিংবা পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোতে প্রাণহানি কম হলেও রাতারাতি সর্বস্ব খুইয়েছেন বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুর্যোগ শিল্প ও ব্যবসা তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আর্থিক এবং ব্যবসায়িক ঝুঁকি বিবেচনা করাটা এখন জরুরি।
দুর্যোগ-ঝুঁকি স্থানান্তর বা ডিস্ট্রিবিউশনের অন্যতম ইনস্ট্রুমেন্ট হলো ইনস্যুরেন্স বা বিমা। ১৯৯১ সালে জাতিসংঘের ৪৬তম অধিবেশনে জলবায়ু ঝুঁকি ইনস্যুরেন্সবিষয়ক সিদ্ধান্ত হলেও দু-একটি ছোটখাটো পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ছাড়া বাংলাদেশে সিআরআই নিয়ে কোনো উদ্যোগই নেই। যদিও ২০১৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জলবায়ুভিত্তিক বিমা নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও বিমা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিমাব্যবস্থা চালু করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি ও পেশাজীবীরা সিআরআই সম্পর্কে সামান্যই ধারণা রাখেন। ২০১৯ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ১৫ শতাংশ বিমা-পেশাজীবী সিআরআই সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন বা বোঝেন বলে দাবি করেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্যোগ এবং জলবায়ু ঝুঁকি বিমা নিয়ে কাজ করার সময় এখনই।
চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, যেখানে আমাদের সাফল্য এবং সীমাবদ্ধতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। আমাদের সাফল্যের একটা বড় মাইলস্টোন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) এবং তার কর্মকাণ্ড। সুনামগঞ্জ-সিলেটে বন্যার বিষয়টি পাঁচ দিন আগে নিশ্চিত পূর্বাভাস দিয়েছিল এফএফডব্লিউসি। এটা আমাদের সাফল্য। সীমাবদ্ধতা হলো, কেউই এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস জেনে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। জনগণকে সচেতন করা হয়নি, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কোনো ধরনের তৎপরতা দেখায়নি। পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সবাই নৌকা খুঁজতে শুরু করেছেন। অথচ এই কাজটা এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস পেয়েই করা যেত। গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে যে মানুষটি বিপদে পড়েছেন, আগে থেকে পূর্বাভাস তাঁকে জানালে তিনি আগেই চলে যেতেন হাসপাতালের কাছাকাছি নিরাপদ জায়গায়।
অন্যান্য অনেক খাতের মতোই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ—বাস্তবায়নের নেতৃত্ব। নীতি, পরিকল্পনা ইত্যাদি বিবেচনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও বাস্তবায়নের সব পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা বিষয়ে ধারণা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ব্যাপক।
গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা একটা একাডেমিক এবং পেশাগত পারদর্শিতা হিসেবে উদীয়মান। আমাদের দেশে দশটি সরকারি এবং তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাক্রম চালু আছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স করা শিক্ষার্থীরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক পেশায় খুব একটা আসতে আগ্রহী হন না প্রধানত দুটি কারণে। প্রথমত, বাংলাদেশে দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনাকে এখনো বিশেষজ্ঞ বা পেশাগত দক্ষতার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ধরে নেওয়া হয়, কেউ কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ পেলেই দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনার কাজ করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী কার্যক্রমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব শিক্ষাক্রম এবং সিলেবাস মানোত্তীর্ণ নয় বলে নানা মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেন। তাই সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে দক্ষ ও পেশাদার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা কর্মীর অভাব দেখা যায়।
আমাদের অভিজ্ঞতায় অনেক কিছুই টেস্ট-অ্যান্ড-ট্রাই করে ঠেকে ঠেকে অর্জন করছি। এসব অর্জন ধরে রেখে এগিয়ে যেতে নিয়মতান্ত্রিক ও ভবিষ্যৎমুখী চিন্তা এবং দক্ষতা ও পেশাদারত্বের বিকল্প নেই। সামনের দিনে অগ্রাধিকার তাই দক্ষ ও পেশাদারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার।
লেখক: দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ
একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী—তবে সেটা সাফল্যের, অর্জনের। স্বাধীনতার অর্ধশতকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল হয়ে ওঠা বাংলাদেশের অন্যতম সাফল্য।
গত ২৩ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হয়ে গেল জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসবিষয়ক সপ্তম গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম অধিবেশন। ১৮৫টি দেশের প্রায় চার হাজার প্রতিনিধির এই সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ ছিল সবার। বাংলাদেশের সেশনগুলোয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি, জানার জন্য প্রশ্ন দেখে গর্বিত হয়েছি বাংলাদেশি হিসেবে।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এই সাফল্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যায়নি। এটা ছিল দুর্ভোগ আর হারানোর বেদনায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য মানুষের বেঁচে থাকার এবং দুর্যোগ জয়ের এক ঐকান্তিক অভিযান। তৃণমূল পর্যায়ের দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের ভিশন, যেটা শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।
স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শুরুটাই ছিল দুটো বড় দুর্যোগের মানবিক সহায়তা এবং পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়ে। প্রথমত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গৃহহীন, জীবিকাহীন কোটি মানুষের পুনর্বাসন এবং দ্বিতীয়ত, ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত উপকূলীয় জীবন-জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ দুর্যোগ ঝুঁকি থেকে তাদের সুরক্ষা। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বিভীষিকাময় রাতের পর কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা, পুনর্বাসন দূরে থাক, মাত্র চার মাসের মধ্যেই পাকিস্তানি হানাদাররা শুরু করে বর্বর জেনোসাইড আর ধ্বংসলীলা।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত উপকুলীয় এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। উপকূলবর্তী মানুষ ও গবাদিপশু বাঁচাতে তিনি মাটির উঁচু ঢিবি বানাতে নির্দেশ দেন। উঁচু মাটির ঢিবিগুলোই ‘মুজিব কেল্লা’। সেই সময়ের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে নির্মিত এই মুজিব কেল্লাগুলোই বর্তমান সময়ের সাইক্লোন শেল্টারের আদি ধারণা। অবকাঠামোগত মুজিব কেল্লার পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলায় সামাজিক সামর্থ্য নির্মাণের ভিতটাও তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর দূরদর্শী দুর্যোগ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম (সিপিপি), যা বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম কমিউনিটি ভলান্টিয়ার মডেল হিসেবে পরিচিত। একই সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ বিনির্মাণে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন জাতির পিতা।
সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করেছে, এগিয়ে গেছে সাফল্যের দিকে। প্রায়ই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের বিস্ময়বোধক প্রশ্ন শুনতে হয়, ‘তোমরা নাকি চব্বিশ ঘণ্টার নোটিশে ৫-৭ মিলিয়ন মানুষকে ইভাকুয়েট করতে সক্ষম? হাউ পসিবল?’ বাংলাদেশ যখনই কোনো দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে, তা থেকে নতুন নতুন স্থানীয় ধারণা উদ্ভাবন এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এখন আমরা গর্বের সঙ্গেই বলতে পারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ একটি রোল মডেল।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারায় পরিবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশ। পরিবর্তন হচ্ছে দেশ, দেশের মানুষের দুর্যোগ-নাজুকতা, যোগ হচ্ছে নতুন নতুন বিপদ। বর্ধিষ্ণু বিপন্নতার কারণগুলোর মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সবাই মোটামুটি ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে প্রতিদিন। অথচ কোনো ধরনের পুনঃপর্যালোচনা ছাড়াই ২০০৯ সালে প্রণীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান বিবেচনায় রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জাতীয় পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২০২৫। ফলে অনেক সময়ই উন্নয়ন প্রকল্প এবং পরিকল্পনাগুলো প্রয়োজনানুগ হচ্ছে না; বরং কখনো কখনো উন্নয়নসৃষ্ট দুর্যোগ রূপে আবির্ভূত হচ্ছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণেও বাংলাদেশে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন দুর্যোগ। অগ্নিকাণ্ড, ভবনধস, বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতা এবং বন্যা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা কিংবা সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে আমাদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ, পরিকল্পনা কিংবা বিনিয়োগ নেই। যদিও শিল্পায়ন এবং নগরায়ণের এক বড় অংশীজন বা স্টেকহোল্ডার ব্যবসায়ী তথা করপোরেট সেক্টর, কিন্তু ব্যবসায়িক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাদের সচেতনতা, আলোচনা কিংবা অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান নিয়ে কিছু আলোচনা শোনা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা তথ্যপ্রযুক্তির বিপত্তি-ব্যবস্থাপনাবিষয়ক। বড় দুর্যোগে ব্যবসা চালু রাখা, ক্ষয়ক্ষতি কমানো, বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার করা ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা ও চর্চা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। যদিও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০২০ সালের এক গবেষণায় উত্তরদাতাদের ৩১ শতাংশ ব্যবসায়ী জলবায়ু প্রভাবিত অভিযোজনের ব্যর্থতাকে আগামী দশকে বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি ব্যবসাঝুঁকির অন্যতম বলে চিহ্নিত করেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সাফল্য এবং খামতির বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। ১৯৭০ বা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যতসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছিল, আমরা সাফল্যের সঙ্গে সেটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদিকে, তিন বা পাঁচ দশক আগে উপকূলীয় অঞ্চলে যে পরিমাণ আর্থিক/ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ছিল, বর্তমানে তা হাজার গুণ বেশি। সিডর, আইলা কিংবা পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোতে প্রাণহানি কম হলেও রাতারাতি সর্বস্ব খুইয়েছেন বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুর্যোগ শিল্প ও ব্যবসা তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আর্থিক এবং ব্যবসায়িক ঝুঁকি বিবেচনা করাটা এখন জরুরি।
দুর্যোগ-ঝুঁকি স্থানান্তর বা ডিস্ট্রিবিউশনের অন্যতম ইনস্ট্রুমেন্ট হলো ইনস্যুরেন্স বা বিমা। ১৯৯১ সালে জাতিসংঘের ৪৬তম অধিবেশনে জলবায়ু ঝুঁকি ইনস্যুরেন্সবিষয়ক সিদ্ধান্ত হলেও দু-একটি ছোটখাটো পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ছাড়া বাংলাদেশে সিআরআই নিয়ে কোনো উদ্যোগই নেই। যদিও ২০১৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জলবায়ুভিত্তিক বিমা নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও বিমা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিমাব্যবস্থা চালু করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি ও পেশাজীবীরা সিআরআই সম্পর্কে সামান্যই ধারণা রাখেন। ২০১৯ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ১৫ শতাংশ বিমা-পেশাজীবী সিআরআই সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন বা বোঝেন বলে দাবি করেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্যোগ এবং জলবায়ু ঝুঁকি বিমা নিয়ে কাজ করার সময় এখনই।
চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, যেখানে আমাদের সাফল্য এবং সীমাবদ্ধতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। আমাদের সাফল্যের একটা বড় মাইলস্টোন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) এবং তার কর্মকাণ্ড। সুনামগঞ্জ-সিলেটে বন্যার বিষয়টি পাঁচ দিন আগে নিশ্চিত পূর্বাভাস দিয়েছিল এফএফডব্লিউসি। এটা আমাদের সাফল্য। সীমাবদ্ধতা হলো, কেউই এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস জেনে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। জনগণকে সচেতন করা হয়নি, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কোনো ধরনের তৎপরতা দেখায়নি। পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সবাই নৌকা খুঁজতে শুরু করেছেন। অথচ এই কাজটা এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস পেয়েই করা যেত। গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে যে মানুষটি বিপদে পড়েছেন, আগে থেকে পূর্বাভাস তাঁকে জানালে তিনি আগেই চলে যেতেন হাসপাতালের কাছাকাছি নিরাপদ জায়গায়।
অন্যান্য অনেক খাতের মতোই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ—বাস্তবায়নের নেতৃত্ব। নীতি, পরিকল্পনা ইত্যাদি বিবেচনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও বাস্তবায়নের সব পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা বিষয়ে ধারণা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ব্যাপক।
গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা একটা একাডেমিক এবং পেশাগত পারদর্শিতা হিসেবে উদীয়মান। আমাদের দেশে দশটি সরকারি এবং তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাক্রম চালু আছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স করা শিক্ষার্থীরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক পেশায় খুব একটা আসতে আগ্রহী হন না প্রধানত দুটি কারণে। প্রথমত, বাংলাদেশে দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনাকে এখনো বিশেষজ্ঞ বা পেশাগত দক্ষতার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ধরে নেওয়া হয়, কেউ কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ পেলেই দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনার কাজ করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী কার্যক্রমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব শিক্ষাক্রম এবং সিলেবাস মানোত্তীর্ণ নয় বলে নানা মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেন। তাই সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে দক্ষ ও পেশাদার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা কর্মীর অভাব দেখা যায়।
আমাদের অভিজ্ঞতায় অনেক কিছুই টেস্ট-অ্যান্ড-ট্রাই করে ঠেকে ঠেকে অর্জন করছি। এসব অর্জন ধরে রেখে এগিয়ে যেতে নিয়মতান্ত্রিক ও ভবিষ্যৎমুখী চিন্তা এবং দক্ষতা ও পেশাদারত্বের বিকল্প নেই। সামনের দিনে অগ্রাধিকার তাই দক্ষ ও পেশাদারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার।
লেখক: দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে