ঈশ্বরগঞ্জে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশির ভাগ ঘরেই তালা ঝুলছে। নির্মাণের পর কয়েক মাসের মধ্যেই ঘরের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ঘরে কেউ থাকতে রাজি না হওয়া ১৩টি ঘরের মধ্যে ৯টিই খাল অবস্থায় পড়ে আছে। উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের মুক্তাপুর এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের মুক্তাপুর এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় একসঙ্গে ১৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়। চারটি ঘরে পরিবার বসবাস করলেও ৯টি ঘর রয়েছে তালাবন্ধ অবস্থায়। যে ঘরগুলোতে মানুষ বাস করছেন সেগুলোর দেয়াল এবং মেঝের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। পায়খানার দরজাগুলোও ভেঙে পড়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ফাঁকা ৯টি ঘরে এখন ঝুলছে ছোট-বড় তালা। দীর্ঘদিন ধরে মানুষ না থাকায় রাতে ভুতুড়ে বাড়ি বলে মনে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘর পাওয়ার অযোগ্য এমন পরিবারকেও ঘর দেওয়া হয়েছে। যে কারণে ওইগুলো এখন ফাঁকা পড়ে আছে। ফাঁকা ঘরগুলোতে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে সত্যিকার ভূমিহীনদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

ঘর ছেড়ে যাওয়া ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের দাবি, নির্মাণাধীন ঘরগুলোতে নিম্নমানের কাজ হওয়ায় নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যেই ঘরের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে। খসে পড়ছে দেওয়ালের পলেস্তারা। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ ওই ঘরগুলোতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। যে কারণে বাধ্য হয়েই ঘর ছেড়েছেন তাঁরা।

অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী কয়েকজন জানান, ঘরে তালা দিয়ে বেশির ভাগ মানুষই চলে গেছেন। তাঁদের কেউ থাকেন নিজ বাড়িতেই, কেউ থাকেন ঢাকায়। এমনও পরিবার আছে, শুধু ঘর দখল করে তালাবন্ধ করে চলে গেছে, আর কখনো আসেন। এ জন্যই বেশির ভাগ ঘর ফাঁকা পড়ে আছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী রওশনারা নামের এক গৃহবধূ বলেন, ঘর নির্মাণের পর কিছুদিন কয়েকটি পরিবারের সদস্য বাস করলেও পরে ঘরে তাঁরা তালাবন্ধ করে চলে গেছেন। এরপর আর তাঁদের দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে ইউএনও মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, যাঁরা ঘরগুলোতে থাকতে না চান, তাঁদের বরাদ্দ বাতিল ও নতুন করে ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ছাড়াও নির্মাণাধীন ঘরগুলো যেখানে যেখানে সমস্যা হয়েছে, ওইগুলো দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।