সম্প্রতি চরকিতে রিলিজ হয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত এবং নুসরাত ইমরোজ তিশা ও সরয়ার ফারুকী অভিনীত সিনেমা ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। আসলেই কি ফারুকী-তিশার জীবনের গল্প এটা? হলে কতখানি? আর কীভাবে এই গল্প হয়ে উঠেছে সাধারণের গল্প? বিস্তারিত নিয়ে ফারুকীর সঙ্গে কথা বলেছেন এম এস রানা।
সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফির কতটা বাস্তব আর কতটা কল্পনাপ্রসূত?
হতে পারে সিক্সটি-ফোরটি, হতে পারে ফিফটি-ফিফটি। কিন্তু যদি বলি, সিক্সটি পার্সেন্ট ফ্যাক্ট, তাহলে বাকি ফোরটি পার্সেন্ট কি মিথ্যা? না। এই যে ফোরটি পার্সেন্ট, এটা হয়তো আমাদের জীবনে অন্যভাবে ঘটেছে। আবার যে অংশটুকু সত্যিই আমাদের জীবনে ঘটেছে, সেটাও কি হুবহু এভাবেই ঘটেছে? সেটাও কিন্তু না, ওটাও রিকনস্ট্রাক্ট করেছি আমাদের প্রয়োজনে। ফলে এটা একটা ফিকশন। অ্যাট দ্য সেম টাইম এটা মিথ্যা না।
জেলে যাওয়ার মতো ঘটনা তো আপনার জীবনে ঘটেনি। এই ঘটনাটা কেন এল সিনেমায়?
আমি তো এখনো জেলেই আছি।
মানে?
জেলে তো আপনি ফিজিক্যালি থাকতে পারেন, আবার মেন্টালিও থাকতে পারেন। আমি তো নানাভাবেই জেলে আছি।
এই যে আপস করার ব্যাপারটা, পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটা?
এমন আপস করেই তো আমরা বেঁচে আছি। এ রকম অপমানের জীবনই তো আমাদের জীবন। এটা তো শুধু আমার একার অপমান না। আমরা যারা ক্ষমতাহীন, তারা ক্ষমতাবানদের পায়ের কাছে বসে থেকে ক্ষমা চেয়েই তো বেঁচে আছি। বাংলাদেশে ক্ষমতাহীন যত মানুষ আছে, তারা প্রত্যেকেই বুঝবে, এটার অর্থ কী। হাজার হাজার মানুষ আমাকে বার্তা পাঠিয়েছে। কেউ লিখেছে, আপনি যখন পায়ের কাছে বসেছেন, ক্ষমা চেয়েছেন, তখন আমার কান্না পেয়েছে।
আপনার জীবনে এমন অপমানের ঘটনা কী কী ঘটেছে?
অসংখ্য ঘটনা। একটা উদাহরণ দিই। আমার সিনেমা কদিন পরপরই আটকা পড়ে সেন্সর বোর্ডে। একজন ফিল্মমেকারকে অপমান-অপদস্থ করার সবচেয়ে বড় এবং সহজ কৌশল এটা। কতজনের বাসায় ভিডিও প্লেয়ারসহ চলে গেছি সিনেমাটি দেখানোর জন্য। সিনেমা চলছে, উনি এর মাঝে ফোনে কথা বলছেন, ব্যবসা বা রাজনীতির কাজ করছেন। কিছুক্ষণ পর আমাকে উপদেশ দিচ্ছেন, জ্ঞান দিচ্ছেন—আপনারা কেন এ ধরনের সিনেমা বানান? এটা তো হয় নাই। আমি শুনি, বলি, হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন হয়তো। এটা একজন ফিল্মমেকারের জন্য কতটা অপমানের; এমন একেকটা ঘটনার পর আমার বুক ফেটে কান্না এসেছে, মনে হয়েছে, কেন এমন অপমানের জীবন বেছে নিলাম। কেন ফিল্মমেকার হলাম?
সিনেমার গল্পটা কীভাবে তৈরি হলো?
গল্পটা নিয়ে আমি আর তিশা কথা বলতে শুরু করেছি কোভিডের সময়। বাস্তবে তখন আমরা বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। যখন জানতে পারলাম যে বাচ্চা হবে না, তিশা একটা ট্রমার মধ্যে চলে গেল, মেন্টাল স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তখনই আমরা দুজন ডিসাইড করলাম, এটা নিয়েই লেখা উচিত। লেখা শুরু করলাম। এর মাঝে তিশা কনসিভ করল, গল্পে ওইটা ঢুকছে, আমাদের জীবনে যা যা ঘটছে, সেটা গল্পে ঢুকছে। এই বাজি ফোটানো আমাদের জীবনে ঘটেছে বলেই গল্পে ঢুকেছে।
কেমন ছিল ঘটনাটা?
ইলহাম (ফারুকী-তিশার মেয়ে) যখন হয়, ৫ জানুয়ারি। তার আগে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ভয়ংকরভাবে বাজি ফোটানো শুরু হলো। তার আগের থার্টি ফার্স্ট নাইটে একটা তিন মাসের বাচ্চা বাজি ফোটানোর শব্দে আতঙ্কে প্যানিক অ্যাটাকে মারা গিয়েছিল। ওই নিউজটা আমার মাথায় ছিল। যখন দেখলাম আমার বউয়ের পেটের বাচ্চা বাজি ফোটানোর শব্দে ক্রমাগত লাথি মারছে, আনইউজুয়াল মুভমেন্ট করছে, ওই ঘটনা থেকেই মাথায় এল, এখান থেকেই ঘটনার মোড় ঘুরতে পারে।
ডিপজলকে এই প্রথম অনেকটা মৌন চরিত্রে পাওয়া গেল। দর্শক কিন্তু তাঁকে ভিন্নভাবে দেখে অভ্যস্ত।
বৃষ্টি হয়ে ঝরলেই যে মেঘকে ভয়ংকর লাগে, সব সময় সেটা সত্য না, মাঝেমধ্যে শান্ত, স্থবির, থমথমে কালো মেঘকেও ভয়ংকর লাগে। এ রকম চরিত্র আমরা বাস্তবে দেখেছি। ওখান থেকেই চরিত্রটা ডিজাইন করা।
গল্পে পুলিশ সহযোগিতা করছে, আবার বিরুদ্ধে কথা বললে করছে না। অন্যদিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় একজন খ্যাতিমান নির্মাতাকে অপরাধী হতে হলো, খ্যাতিমান অভিনেত্রীও রেহাই পেলেন না হয়রানি থেকে। এমনটা কি সত্যিই ঘটেছে জীবনে?
খোঁজ নিয়ে দেখেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার অপরাধে কত মানুষ কত রকম বিপদে পড়েছে। ফিল্মমেকার বা অভিনেতা যত খ্যাতিমানই হোক, তারা তো ক্ষমতাবান না, ফলে তাদের বিপদে পড়াটাও স্বাভাবিক। আমি তো একসময় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর কথা বলতাম, আমার যে নানাবিধ বিপদ, কে বলবে এগুলো সে কারণে নয়?
সিনেমায় যখন খ্যাতিমান নির্মাতা-অভিনেতারাও অসহায় হয়ে পড়েন, তখন সাধারণ মানুষ হিসেবে অনেক দর্শকেরও তো নিজেকে অসহায় মনে হয়?
তিশার অভিনয় এতটাই জীবন্ত হয়েছে যে তিশা যখন বিপদে পড়ছে, তখন দর্শকের মনে হচ্ছে যে তারা বিপদে পড়ছে। দর্শক আসলে নিজের মনে তাদের বিপদগুলো খুঁজে বের করছে। তিশা যখন অসহায় হয়ে পড়ছে, দর্শকের মনে হচ্ছে তারাও তো আসলে অসহায়। এই ঘটনাগুলো তাদের স্যাড করে দেয়। এই যে স্যাডনেসটা, এর দরকার আছে। কেন জানেন? যেন আরেকবার রিয়েলাইজেশন হয়—আমরা কী রকমভাবে বেঁচে আছি।
সিনেমায় নায়ক সাধারণত পরাজিত হয় না। অথচ এই সিনেমায় নায়ক পরাজিত হচ্ছে, অবদমিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে আবার কম্প্রোমাইজ করছে। এই যে একেবারেই মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের একটা গল্প, এটা কেন সিনেমা হলে রিলিজ দেওয়া হলো না?
আমি এই সিনেমা থিয়েটারে দেখানোর পক্ষে প্রথম থেকেই যুদ্ধ করছিলাম। আমি জানি, এই সিনেমা ওটিটিতে দেখার চেয়ে সিনেমা হলে দেখলে দর্শকের মনে বেশি ইমপ্যাক্ট ফেলবে। কিন্তু আমার সিনেমা নিয়ে এতবার এত কিছু করার পরে আমি কোন ভরসায় এই সেন্সর বোর্ডকে আমার সিনেমা দিব?
নির্মাতা হিসেবে বলুন, অভিনেতা সরয়ার ফারুকী কেমন করলেন?
আমি এই চরিত্র নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, কাউকে কাউকে রেডি করেও রেখেছিলাম। যদিও আমি জানি, অটোবায়োগ্রাফি বলে এতে তিশার সঙ্গে আমারই অভিনয় করা উচিত। শেষ পর্যন্ত তিশা আর রনির চেষ্টায় আমি রাজি হয়েছি। তবে প্রথম দু-এক দিনের মধ্যে যদি দেখতাম, আমি এই চরিত্রকে যে রকম চাই, চরিত্রটা তার আশপাশেও যাচ্ছে না, তাহলে ডেফিনিটলি আমি ফুটেজ ফেলে দিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে চরিত্রটা করাতাম।
তিশার অভিনয় নিয়ে বলুন। সহশিল্পী হিসেবে কেমন ছিলেন তিনি?
তিশা ভালো অভিনেত্রী, সেটা সবাই জানেন। কিন্তু এটা তার ক্যারিয়ারের একটা মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। একটা সিম্পল দৃশ্য, যেখানে কিছুই ঘটছে না, কী করে দর্শককে সেখানে আটকে রাখা যায়, এটা তিশা দেখিয়েছে। আমি কেবল দেখছিলাম তাকে সাপোর্টটা দিতে পারছি কি না। আমার যে অভিনয়, সে ব্যাপারেও আমি পুরো কৃতিত্ব তিশাকেই দিতে চাই। কারণ, ভালো অভিনয়শিল্পী তার পাশের অভিনয়শিল্পীর ওপর ইমপ্যাক্ট ফেলে।
দর্শকেরা কী বলছেন?
অনেক দিন পর দর্শকের যে পরিমাণ অ্যাপ্রিসিয়েশন পাচ্ছি, এটা অবিশ্বাস্য। বিশেষ করে অনেক নারী দর্শক বলেছে, আপনি যে দেখিয়েছেন আমরা পরাজয়ের মধ্য দিয়ে যাই, এই পরাজয়ের মধ্যেও আমরা থামি না, এগিয়ে যাই। মধ্যবিত্তের পরাজয়ের যে গল্প, মধ্যবিত্তের এগিয়ে যাওয়ার গল্পও এটা।
প্রথম দৃশ্যে তিশার উড়তে চাওয়া, আবার সন্তান জন্মের পর নার্সের প্রশ্ন, গায়ের রং কালো কেন? বিষয়গুলো কি আপনাদের জীবনের? নাকি সমাজের?
এটা তো ঘটে আমাদের সমাজে। অন্যদের জীবনে, আরও অনেকের জীবনে। সিনেমাটি আয়তনে খুব ছোট, ৮২ মিনিটের। কিন্তু অনেক বিষয় ঢুকেছে এর মধ্যে। মাদারহুড, ফাদারহুড, আমাদের মধ্যবিত্তদের বেঁচে থাকা, কম্প্রোমাইজ করা।
সাধারণ দর্শকের কাছে পৌঁছানোর সহজ মাধ্যম কিন্তু টেলিভিশন। অথচ আপনি টেলিভিশনে কাজ করছেন না। কেন?
আমি সব মাধ্যমেই কাজ করতে চাই, আমি তো আমার গল্পটাই বলতে চাই। তবে এটা নির্ভর করছে ওই টেলিভিশন আমাকে প্রোপার বাজেট দিতে পারছে কি না, আমাকে প্রোপার স্পেস বা পরিবেশ দিতে পারছে কি না। তেমনটা হলে অবশ্যই আমি টেলিভিশনের জন্য কাজ করব।
সম্প্রতি চরকিতে রিলিজ হয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত এবং নুসরাত ইমরোজ তিশা ও সরয়ার ফারুকী অভিনীত সিনেমা ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। আসলেই কি ফারুকী-তিশার জীবনের গল্প এটা? হলে কতখানি? আর কীভাবে এই গল্প হয়ে উঠেছে সাধারণের গল্প? বিস্তারিত নিয়ে ফারুকীর সঙ্গে কথা বলেছেন এম এস রানা।
সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফির কতটা বাস্তব আর কতটা কল্পনাপ্রসূত?
হতে পারে সিক্সটি-ফোরটি, হতে পারে ফিফটি-ফিফটি। কিন্তু যদি বলি, সিক্সটি পার্সেন্ট ফ্যাক্ট, তাহলে বাকি ফোরটি পার্সেন্ট কি মিথ্যা? না। এই যে ফোরটি পার্সেন্ট, এটা হয়তো আমাদের জীবনে অন্যভাবে ঘটেছে। আবার যে অংশটুকু সত্যিই আমাদের জীবনে ঘটেছে, সেটাও কি হুবহু এভাবেই ঘটেছে? সেটাও কিন্তু না, ওটাও রিকনস্ট্রাক্ট করেছি আমাদের প্রয়োজনে। ফলে এটা একটা ফিকশন। অ্যাট দ্য সেম টাইম এটা মিথ্যা না।
জেলে যাওয়ার মতো ঘটনা তো আপনার জীবনে ঘটেনি। এই ঘটনাটা কেন এল সিনেমায়?
আমি তো এখনো জেলেই আছি।
মানে?
জেলে তো আপনি ফিজিক্যালি থাকতে পারেন, আবার মেন্টালিও থাকতে পারেন। আমি তো নানাভাবেই জেলে আছি।
এই যে আপস করার ব্যাপারটা, পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটা?
এমন আপস করেই তো আমরা বেঁচে আছি। এ রকম অপমানের জীবনই তো আমাদের জীবন। এটা তো শুধু আমার একার অপমান না। আমরা যারা ক্ষমতাহীন, তারা ক্ষমতাবানদের পায়ের কাছে বসে থেকে ক্ষমা চেয়েই তো বেঁচে আছি। বাংলাদেশে ক্ষমতাহীন যত মানুষ আছে, তারা প্রত্যেকেই বুঝবে, এটার অর্থ কী। হাজার হাজার মানুষ আমাকে বার্তা পাঠিয়েছে। কেউ লিখেছে, আপনি যখন পায়ের কাছে বসেছেন, ক্ষমা চেয়েছেন, তখন আমার কান্না পেয়েছে।
আপনার জীবনে এমন অপমানের ঘটনা কী কী ঘটেছে?
অসংখ্য ঘটনা। একটা উদাহরণ দিই। আমার সিনেমা কদিন পরপরই আটকা পড়ে সেন্সর বোর্ডে। একজন ফিল্মমেকারকে অপমান-অপদস্থ করার সবচেয়ে বড় এবং সহজ কৌশল এটা। কতজনের বাসায় ভিডিও প্লেয়ারসহ চলে গেছি সিনেমাটি দেখানোর জন্য। সিনেমা চলছে, উনি এর মাঝে ফোনে কথা বলছেন, ব্যবসা বা রাজনীতির কাজ করছেন। কিছুক্ষণ পর আমাকে উপদেশ দিচ্ছেন, জ্ঞান দিচ্ছেন—আপনারা কেন এ ধরনের সিনেমা বানান? এটা তো হয় নাই। আমি শুনি, বলি, হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন হয়তো। এটা একজন ফিল্মমেকারের জন্য কতটা অপমানের; এমন একেকটা ঘটনার পর আমার বুক ফেটে কান্না এসেছে, মনে হয়েছে, কেন এমন অপমানের জীবন বেছে নিলাম। কেন ফিল্মমেকার হলাম?
সিনেমার গল্পটা কীভাবে তৈরি হলো?
গল্পটা নিয়ে আমি আর তিশা কথা বলতে শুরু করেছি কোভিডের সময়। বাস্তবে তখন আমরা বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। যখন জানতে পারলাম যে বাচ্চা হবে না, তিশা একটা ট্রমার মধ্যে চলে গেল, মেন্টাল স্ট্রেসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তখনই আমরা দুজন ডিসাইড করলাম, এটা নিয়েই লেখা উচিত। লেখা শুরু করলাম। এর মাঝে তিশা কনসিভ করল, গল্পে ওইটা ঢুকছে, আমাদের জীবনে যা যা ঘটছে, সেটা গল্পে ঢুকছে। এই বাজি ফোটানো আমাদের জীবনে ঘটেছে বলেই গল্পে ঢুকেছে।
কেমন ছিল ঘটনাটা?
ইলহাম (ফারুকী-তিশার মেয়ে) যখন হয়, ৫ জানুয়ারি। তার আগে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ভয়ংকরভাবে বাজি ফোটানো শুরু হলো। তার আগের থার্টি ফার্স্ট নাইটে একটা তিন মাসের বাচ্চা বাজি ফোটানোর শব্দে আতঙ্কে প্যানিক অ্যাটাকে মারা গিয়েছিল। ওই নিউজটা আমার মাথায় ছিল। যখন দেখলাম আমার বউয়ের পেটের বাচ্চা বাজি ফোটানোর শব্দে ক্রমাগত লাথি মারছে, আনইউজুয়াল মুভমেন্ট করছে, ওই ঘটনা থেকেই মাথায় এল, এখান থেকেই ঘটনার মোড় ঘুরতে পারে।
ডিপজলকে এই প্রথম অনেকটা মৌন চরিত্রে পাওয়া গেল। দর্শক কিন্তু তাঁকে ভিন্নভাবে দেখে অভ্যস্ত।
বৃষ্টি হয়ে ঝরলেই যে মেঘকে ভয়ংকর লাগে, সব সময় সেটা সত্য না, মাঝেমধ্যে শান্ত, স্থবির, থমথমে কালো মেঘকেও ভয়ংকর লাগে। এ রকম চরিত্র আমরা বাস্তবে দেখেছি। ওখান থেকেই চরিত্রটা ডিজাইন করা।
গল্পে পুলিশ সহযোগিতা করছে, আবার বিরুদ্ধে কথা বললে করছে না। অন্যদিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় একজন খ্যাতিমান নির্মাতাকে অপরাধী হতে হলো, খ্যাতিমান অভিনেত্রীও রেহাই পেলেন না হয়রানি থেকে। এমনটা কি সত্যিই ঘটেছে জীবনে?
খোঁজ নিয়ে দেখেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার অপরাধে কত মানুষ কত রকম বিপদে পড়েছে। ফিল্মমেকার বা অভিনেতা যত খ্যাতিমানই হোক, তারা তো ক্ষমতাবান না, ফলে তাদের বিপদে পড়াটাও স্বাভাবিক। আমি তো একসময় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর কথা বলতাম, আমার যে নানাবিধ বিপদ, কে বলবে এগুলো সে কারণে নয়?
সিনেমায় যখন খ্যাতিমান নির্মাতা-অভিনেতারাও অসহায় হয়ে পড়েন, তখন সাধারণ মানুষ হিসেবে অনেক দর্শকেরও তো নিজেকে অসহায় মনে হয়?
তিশার অভিনয় এতটাই জীবন্ত হয়েছে যে তিশা যখন বিপদে পড়ছে, তখন দর্শকের মনে হচ্ছে যে তারা বিপদে পড়ছে। দর্শক আসলে নিজের মনে তাদের বিপদগুলো খুঁজে বের করছে। তিশা যখন অসহায় হয়ে পড়ছে, দর্শকের মনে হচ্ছে তারাও তো আসলে অসহায়। এই ঘটনাগুলো তাদের স্যাড করে দেয়। এই যে স্যাডনেসটা, এর দরকার আছে। কেন জানেন? যেন আরেকবার রিয়েলাইজেশন হয়—আমরা কী রকমভাবে বেঁচে আছি।
সিনেমায় নায়ক সাধারণত পরাজিত হয় না। অথচ এই সিনেমায় নায়ক পরাজিত হচ্ছে, অবদমিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে আবার কম্প্রোমাইজ করছে। এই যে একেবারেই মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের একটা গল্প, এটা কেন সিনেমা হলে রিলিজ দেওয়া হলো না?
আমি এই সিনেমা থিয়েটারে দেখানোর পক্ষে প্রথম থেকেই যুদ্ধ করছিলাম। আমি জানি, এই সিনেমা ওটিটিতে দেখার চেয়ে সিনেমা হলে দেখলে দর্শকের মনে বেশি ইমপ্যাক্ট ফেলবে। কিন্তু আমার সিনেমা নিয়ে এতবার এত কিছু করার পরে আমি কোন ভরসায় এই সেন্সর বোর্ডকে আমার সিনেমা দিব?
নির্মাতা হিসেবে বলুন, অভিনেতা সরয়ার ফারুকী কেমন করলেন?
আমি এই চরিত্র নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, কাউকে কাউকে রেডি করেও রেখেছিলাম। যদিও আমি জানি, অটোবায়োগ্রাফি বলে এতে তিশার সঙ্গে আমারই অভিনয় করা উচিত। শেষ পর্যন্ত তিশা আর রনির চেষ্টায় আমি রাজি হয়েছি। তবে প্রথম দু-এক দিনের মধ্যে যদি দেখতাম, আমি এই চরিত্রকে যে রকম চাই, চরিত্রটা তার আশপাশেও যাচ্ছে না, তাহলে ডেফিনিটলি আমি ফুটেজ ফেলে দিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে চরিত্রটা করাতাম।
তিশার অভিনয় নিয়ে বলুন। সহশিল্পী হিসেবে কেমন ছিলেন তিনি?
তিশা ভালো অভিনেত্রী, সেটা সবাই জানেন। কিন্তু এটা তার ক্যারিয়ারের একটা মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। একটা সিম্পল দৃশ্য, যেখানে কিছুই ঘটছে না, কী করে দর্শককে সেখানে আটকে রাখা যায়, এটা তিশা দেখিয়েছে। আমি কেবল দেখছিলাম তাকে সাপোর্টটা দিতে পারছি কি না। আমার যে অভিনয়, সে ব্যাপারেও আমি পুরো কৃতিত্ব তিশাকেই দিতে চাই। কারণ, ভালো অভিনয়শিল্পী তার পাশের অভিনয়শিল্পীর ওপর ইমপ্যাক্ট ফেলে।
দর্শকেরা কী বলছেন?
অনেক দিন পর দর্শকের যে পরিমাণ অ্যাপ্রিসিয়েশন পাচ্ছি, এটা অবিশ্বাস্য। বিশেষ করে অনেক নারী দর্শক বলেছে, আপনি যে দেখিয়েছেন আমরা পরাজয়ের মধ্য দিয়ে যাই, এই পরাজয়ের মধ্যেও আমরা থামি না, এগিয়ে যাই। মধ্যবিত্তের পরাজয়ের যে গল্প, মধ্যবিত্তের এগিয়ে যাওয়ার গল্পও এটা।
প্রথম দৃশ্যে তিশার উড়তে চাওয়া, আবার সন্তান জন্মের পর নার্সের প্রশ্ন, গায়ের রং কালো কেন? বিষয়গুলো কি আপনাদের জীবনের? নাকি সমাজের?
এটা তো ঘটে আমাদের সমাজে। অন্যদের জীবনে, আরও অনেকের জীবনে। সিনেমাটি আয়তনে খুব ছোট, ৮২ মিনিটের। কিন্তু অনেক বিষয় ঢুকেছে এর মধ্যে। মাদারহুড, ফাদারহুড, আমাদের মধ্যবিত্তদের বেঁচে থাকা, কম্প্রোমাইজ করা।
সাধারণ দর্শকের কাছে পৌঁছানোর সহজ মাধ্যম কিন্তু টেলিভিশন। অথচ আপনি টেলিভিশনে কাজ করছেন না। কেন?
আমি সব মাধ্যমেই কাজ করতে চাই, আমি তো আমার গল্পটাই বলতে চাই। তবে এটা নির্ভর করছে ওই টেলিভিশন আমাকে প্রোপার বাজেট দিতে পারছে কি না, আমাকে প্রোপার স্পেস বা পরিবেশ দিতে পারছে কি না। তেমনটা হলে অবশ্যই আমি টেলিভিশনের জন্য কাজ করব।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে