জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
কীভাবে ঘটতে পেরেছিল সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড? ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলো, অথচ সশস্ত্র বাহিনী থেকে কোনো প্রতিবাদ এল না, বরং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানেরা রেডিও বাংলাদেশে (সেদিনই বাংলাদেশ বেতার পরিচিত হয়েছে এই নতুন নামে) গিয়ে ভাষণ দিয়ে নতুন সরকারের প্রতি আনুগত্য জানিয়েছিলেন।
পরবর্তীকালে অনেকে গুটিকয় উচ্ছৃঙ্খল সেনা অফিসার কী করে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারলেন, তার বিশ্লেষণ করেছেন। সেই বিশ্লেষণের কয়েকটির সঙ্গে পরিচিত হলে পুরো ঘটনা দেখার চোখ খুলে যেতে পারে।
১৫ আগস্ট ঘটানো নৃশংসতা মূলত ছিল কতিপয় সেনা কর্মকর্তার বিদ্রোহ। একটি বিরাট ষড়যন্ত্রকে রূপদান করেছিলেন এই সেনা কর্মকর্তারা। ফলে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি সে সময় এই বিদ্রোহ দমনে সক্রিয় হতো, তাহলে এই উচ্ছৃঙ্খল সেনাদের দাপট আর থাকত না। হত্যাকাণ্ডের পর যেভাবে ফারুক-রশিদ সিনিয়র অফিসারদের সামনে ঘুরে বেড়িয়েছেন, তাতে এই সন্দেহও হয় যে এসব অফিসারের কেউ কেউ হয়তো আগে থেকে জানতেন, মেজররা কী ঘটাতে পারেন।
সন্দেহের তির অনেকের দিকেই ধাবিত হয়। তবে তৎকালীন ডিএফআইয়ের (বর্তমান ডিজিএফআই) প্রধান ব্রিগেডিয়ার আবদুর রউফের কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। ‘তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও না বলা কথা’ নামের বইয়ে লে. কর্নেল (অব.) এম এ হামিদ পিএসসি যা লিখেছেন, তাতে বলা হয়েছে, জনৈক গোয়েন্দা পরিচালক ১৫ আগস্ট রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে ব্রিগেডিয়ার রউফকে একটা জরুরি সংবাদ দেন। ক্যান্টনমেন্টে সেই রাতে ট্যাংক ও সৈন্যদের চলাচলের এই জরুরি সংবাদ পেয়ে ব্রিগেডিয়ার রউফ কী করলেন? তিনি এ রকম একটি বার্তা পেয়েও তা বঙ্গবন্ধুকে জানালেন না, সেনাপ্রধানকে জানালেন না! এমনকি গার্ডরুমেও জানালেন না। তিনি নাকি বিপদের আশঙ্কা করে গলফ কোর্সের একটি গাছের নিচে লুকিয়ে থাকেন। সকাল সাড়ে ছয়টায় তিনি সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর ব্যাটম্যানের সহায়তায় সেনাভবনে প্রবেশ করেন।
ব্রিগেডিয়ার রউফের ওপর বঙ্গবন্ধু সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি তাঁর জায়গায় কর্নেল জামিলকে ডিএফআইয়ের প্রধান করেছিলেন। ১৫ আগস্টই ক্ষমতা হস্তান্তর করার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হয়েছেন শুনেই কর্নেল জামিল ৩২ নম্বরের বাড়ির উদ্দেশে ছুটে যান, আর ব্রিগেডিয়ার রউফ একটি গাছের নিচে লুকিয়ে থাকেন! দুজনের আচরণের কী বৈপরীত্য!
সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ আক্রমণের বিষয়ে জানতে পারেন ভোর ৫টা ১৫ থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে। তিনি রাষ্ট্রপতিকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি বঙ্গবন্ধুকে ফোনে পেলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে বললেন, কোনোভাবে বাড়ি ত্যাগ করতে পারেন কি না। এরপরও যদি সেনাপ্রধান কিংবা শাফায়াত জামিল অনুগত সেনাদের নিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক বা প্রতি আক্রমণ করতেন, তাহলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ত এই বিদ্রোহ। কিন্তু সেটা করা হয়নি।
সে সময় জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ, শাফায়াত জামিলের ভূমিকারও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। শাফায়াত জামিল তাঁর কথা লিখেছেন। জিয়াউর রহমান বা খালেদ মোশাররফ এ ব্যাপারে কিছু লিখে যাননি। তবে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম তাঁর ‘সৈনিক জীবন: গৌরবের একাত্তর রক্তাক্ত পঁচাত্তর’ বইয়ে ১৫ আগস্টের কথা লিখেছেন এভাবে, ‘আমরা দুজন (অন্যজন শাফায়াত জামিল) দ্রুত হেঁটে জিয়ার বাসায় গেলাম। সেখানে ১ম ইস্ট বেঙ্গলের সৈনিকেরা গার্ড ডিউটি করছে, সবাই আমার পরিচিত। তারা গেট খুলে দিলে বাসার ভিতরে ঢুকি।’
কলবেল টিপলে জিয়াউর রহমান নিজেই দরজা খুলে দিয়েছিলেন। তার পরনে ছিল সাদা পায়জামা, সাদা হাফহাতা গেঞ্জি। তিনি শেভ করছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার খবর দেওয়ার সময় জিয়া বলেছিলেন, ‘সো হোয়াট? প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেবেন। আমরা সংবিধান মেনে চলব।’
ফারুক যে একদিন জিয়াউর রহমানের বাড়ির লনে এসে নিজেদের পরিকল্পনার আঁচ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তাকে, সে কথাটা ধাক্কা মারে বুকে।
কীভাবে ঘটতে পেরেছিল সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড? ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলো, অথচ সশস্ত্র বাহিনী থেকে কোনো প্রতিবাদ এল না, বরং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানেরা রেডিও বাংলাদেশে (সেদিনই বাংলাদেশ বেতার পরিচিত হয়েছে এই নতুন নামে) গিয়ে ভাষণ দিয়ে নতুন সরকারের প্রতি আনুগত্য জানিয়েছিলেন।
পরবর্তীকালে অনেকে গুটিকয় উচ্ছৃঙ্খল সেনা অফিসার কী করে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারলেন, তার বিশ্লেষণ করেছেন। সেই বিশ্লেষণের কয়েকটির সঙ্গে পরিচিত হলে পুরো ঘটনা দেখার চোখ খুলে যেতে পারে।
১৫ আগস্ট ঘটানো নৃশংসতা মূলত ছিল কতিপয় সেনা কর্মকর্তার বিদ্রোহ। একটি বিরাট ষড়যন্ত্রকে রূপদান করেছিলেন এই সেনা কর্মকর্তারা। ফলে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি সে সময় এই বিদ্রোহ দমনে সক্রিয় হতো, তাহলে এই উচ্ছৃঙ্খল সেনাদের দাপট আর থাকত না। হত্যাকাণ্ডের পর যেভাবে ফারুক-রশিদ সিনিয়র অফিসারদের সামনে ঘুরে বেড়িয়েছেন, তাতে এই সন্দেহও হয় যে এসব অফিসারের কেউ কেউ হয়তো আগে থেকে জানতেন, মেজররা কী ঘটাতে পারেন।
সন্দেহের তির অনেকের দিকেই ধাবিত হয়। তবে তৎকালীন ডিএফআইয়ের (বর্তমান ডিজিএফআই) প্রধান ব্রিগেডিয়ার আবদুর রউফের কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। ‘তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও না বলা কথা’ নামের বইয়ে লে. কর্নেল (অব.) এম এ হামিদ পিএসসি যা লিখেছেন, তাতে বলা হয়েছে, জনৈক গোয়েন্দা পরিচালক ১৫ আগস্ট রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে ব্রিগেডিয়ার রউফকে একটা জরুরি সংবাদ দেন। ক্যান্টনমেন্টে সেই রাতে ট্যাংক ও সৈন্যদের চলাচলের এই জরুরি সংবাদ পেয়ে ব্রিগেডিয়ার রউফ কী করলেন? তিনি এ রকম একটি বার্তা পেয়েও তা বঙ্গবন্ধুকে জানালেন না, সেনাপ্রধানকে জানালেন না! এমনকি গার্ডরুমেও জানালেন না। তিনি নাকি বিপদের আশঙ্কা করে গলফ কোর্সের একটি গাছের নিচে লুকিয়ে থাকেন। সকাল সাড়ে ছয়টায় তিনি সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর ব্যাটম্যানের সহায়তায় সেনাভবনে প্রবেশ করেন।
ব্রিগেডিয়ার রউফের ওপর বঙ্গবন্ধু সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি তাঁর জায়গায় কর্নেল জামিলকে ডিএফআইয়ের প্রধান করেছিলেন। ১৫ আগস্টই ক্ষমতা হস্তান্তর করার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হয়েছেন শুনেই কর্নেল জামিল ৩২ নম্বরের বাড়ির উদ্দেশে ছুটে যান, আর ব্রিগেডিয়ার রউফ একটি গাছের নিচে লুকিয়ে থাকেন! দুজনের আচরণের কী বৈপরীত্য!
সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ আক্রমণের বিষয়ে জানতে পারেন ভোর ৫টা ১৫ থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে। তিনি রাষ্ট্রপতিকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি বঙ্গবন্ধুকে ফোনে পেলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে বললেন, কোনোভাবে বাড়ি ত্যাগ করতে পারেন কি না। এরপরও যদি সেনাপ্রধান কিংবা শাফায়াত জামিল অনুগত সেনাদের নিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক বা প্রতি আক্রমণ করতেন, তাহলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ত এই বিদ্রোহ। কিন্তু সেটা করা হয়নি।
সে সময় জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ, শাফায়াত জামিলের ভূমিকারও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। শাফায়াত জামিল তাঁর কথা লিখেছেন। জিয়াউর রহমান বা খালেদ মোশাররফ এ ব্যাপারে কিছু লিখে যাননি। তবে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম তাঁর ‘সৈনিক জীবন: গৌরবের একাত্তর রক্তাক্ত পঁচাত্তর’ বইয়ে ১৫ আগস্টের কথা লিখেছেন এভাবে, ‘আমরা দুজন (অন্যজন শাফায়াত জামিল) দ্রুত হেঁটে জিয়ার বাসায় গেলাম। সেখানে ১ম ইস্ট বেঙ্গলের সৈনিকেরা গার্ড ডিউটি করছে, সবাই আমার পরিচিত। তারা গেট খুলে দিলে বাসার ভিতরে ঢুকি।’
কলবেল টিপলে জিয়াউর রহমান নিজেই দরজা খুলে দিয়েছিলেন। তার পরনে ছিল সাদা পায়জামা, সাদা হাফহাতা গেঞ্জি। তিনি শেভ করছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার খবর দেওয়ার সময় জিয়া বলেছিলেন, ‘সো হোয়াট? প্রেসিডেন্ট মারা গেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেবেন। আমরা সংবিধান মেনে চলব।’
ফারুক যে একদিন জিয়াউর রহমানের বাড়ির লনে এসে নিজেদের পরিকল্পনার আঁচ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তাকে, সে কথাটা ধাক্কা মারে বুকে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে