শাকিলা ববি, সিলেট
সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের মুদিদোকানি মুজিবুর রহমান। কিছুদিন আগে গভীর রাতে তাঁর ভাবির প্রসবব্যথা উঠলে বিপাকে পড়ে যায় পরিবার। কারণ, গ্রামে যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে সেখানে প্রসবকালীন সেবার ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়েই গভীর রাতে সিলেট শহরের ওসমানী মেডিকেল কলেজে এনে ভর্তি করান ভাবিকে।
মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাঝেমধ্যে ডাক্তার আসেন। গ্রামের নারীরা গর্ভকালীন সেবা নিতে পারলেও ডেলিভারি হয় না। যাঁরা কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন, তাঁরাও ঠিক সময়ে আসেন না। দুজন আপা আছেন তাঁরা কখনো ১১টায় আসেন, আবার কখনো ১২টায়। ঘণ্টাখানেক থেকেই আবার চলে যান। এখানকার স্বাস্থ্যসেবা মানে শুধু ভবনটাই আছে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেট সদর উপজেলার আট ইউনিয়নের মধ্যে টুকেরবাজার, কান্দিগাঁও, মোগলগাঁও, হাটখোলা, জালালাবাদ ইউনিয়নের অবস্থান শহর থেকে বেশ দূরে। দেশের অন্য বিভাগের মতো এখানকার সদর উপজেলায় কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেই। সদর উপজেলা জেলা শহরের কাছাকাছি থাকে, সেই ভাবনা থেকে সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়নি। ফলে বছরের পর বছর স্বাস্থ্যসেবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সদর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে, সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলা শহরের মানুষ সরকারি-বেসরকারি—দুই ধরনের পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পেলেও বঞ্চিত আছে জেলাগুলোর প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ। প্রাকৃতিকভাবে হাওরবেষ্টিত জনপদ বেশি এই বিভাগে। তাই এই অঞ্চলগুলো অনেক দুর্গম। এ জন্য এখানকার মানুষজনের প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও অনেকটাই দুর্লভ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোথাও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন থাকলেও সেবা নেই। আবার কোথাও কিছুই নেই।
বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য (বিডিএইচএস) জরিপ ২০১৭-১৮-এর তথ্যমতে, সিলেটে প্রজনন হার বেশি, শিশুমৃত্যু বেশি। এ ছাড়া সিলেটে খর্বকায় শিশু বেশি, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ সবচেয়ে কম, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মা ও শিশুসেবা নেওয়ার প্রবণতাও কম এবং শিশুদের টিকাদানের প্রবণতাও কম।
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার প্রত্যন্ত যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সীমান্তঘেঁষা বান্দ্রা গ্রামের শান্তি হাজং বলেন, মধ্যনগরের সঙ্গে যোগাযোগের সড়কটি ভাঙাচোরা হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। কাছে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় দুর্গম যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সড়ক দিয়ে প্রসূতি মা, শিশু ও বয়স্কদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয়। যার ফলে সড়কের মধ্যেই অনেক রোগী মারা যায় এবং ডেলিভারিও হয়ে যায়।
হবিগঞ্জ বানিয়াচং উপজেলার বাসিন্দারা ছয় মাস পানি ও ছয় মাস ডাঙায় থাকেন। এখানকার বাসিন্দাদের কেউ অসুস্থ হলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন থাকলেও ডাক্তার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া দুঃসহ ব্যাপার। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে হবিগঞ্জ নেওয়া ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার আর
কোনো ব্যবস্থা থাকে না। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনেক দূরে। সেখানেও পর্যাপ্ত সেবা পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে অনেকবার কথা বললেও তাঁরা শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন।’
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক হিমাংশু লাল রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানকার স্বাস্থ্য খাত অন্য এলাকার তুলনায় পিছিয়ে।জেলা বা উপজেলা সদরের বাসিন্দারা ভালোমানের সেবা নিতে পারলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। এসব এলাকায় আমরা মূলত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’প্রসঙ্গত, প্রতিবেদনটি বিএনএনআরসির তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য-সাংবাদিকতায় মিডিয়া ফেলোশিপ-এর আওতায় প্রস্তুতকৃত।
সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের মুদিদোকানি মুজিবুর রহমান। কিছুদিন আগে গভীর রাতে তাঁর ভাবির প্রসবব্যথা উঠলে বিপাকে পড়ে যায় পরিবার। কারণ, গ্রামে যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে সেখানে প্রসবকালীন সেবার ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়েই গভীর রাতে সিলেট শহরের ওসমানী মেডিকেল কলেজে এনে ভর্তি করান ভাবিকে।
মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাঝেমধ্যে ডাক্তার আসেন। গ্রামের নারীরা গর্ভকালীন সেবা নিতে পারলেও ডেলিভারি হয় না। যাঁরা কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন, তাঁরাও ঠিক সময়ে আসেন না। দুজন আপা আছেন তাঁরা কখনো ১১টায় আসেন, আবার কখনো ১২টায়। ঘণ্টাখানেক থেকেই আবার চলে যান। এখানকার স্বাস্থ্যসেবা মানে শুধু ভবনটাই আছে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেট সদর উপজেলার আট ইউনিয়নের মধ্যে টুকেরবাজার, কান্দিগাঁও, মোগলগাঁও, হাটখোলা, জালালাবাদ ইউনিয়নের অবস্থান শহর থেকে বেশ দূরে। দেশের অন্য বিভাগের মতো এখানকার সদর উপজেলায় কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেই। সদর উপজেলা জেলা শহরের কাছাকাছি থাকে, সেই ভাবনা থেকে সেখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়নি। ফলে বছরের পর বছর স্বাস্থ্যসেবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সদর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে, সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলা শহরের মানুষ সরকারি-বেসরকারি—দুই ধরনের পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পেলেও বঞ্চিত আছে জেলাগুলোর প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ। প্রাকৃতিকভাবে হাওরবেষ্টিত জনপদ বেশি এই বিভাগে। তাই এই অঞ্চলগুলো অনেক দুর্গম। এ জন্য এখানকার মানুষজনের প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও অনেকটাই দুর্লভ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোথাও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন থাকলেও সেবা নেই। আবার কোথাও কিছুই নেই।
বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য (বিডিএইচএস) জরিপ ২০১৭-১৮-এর তথ্যমতে, সিলেটে প্রজনন হার বেশি, শিশুমৃত্যু বেশি। এ ছাড়া সিলেটে খর্বকায় শিশু বেশি, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ সবচেয়ে কম, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মা ও শিশুসেবা নেওয়ার প্রবণতাও কম এবং শিশুদের টিকাদানের প্রবণতাও কম।
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার প্রত্যন্ত যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সীমান্তঘেঁষা বান্দ্রা গ্রামের শান্তি হাজং বলেন, মধ্যনগরের সঙ্গে যোগাযোগের সড়কটি ভাঙাচোরা হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। কাছে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় দুর্গম যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সড়ক দিয়ে প্রসূতি মা, শিশু ও বয়স্কদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয়। যার ফলে সড়কের মধ্যেই অনেক রোগী মারা যায় এবং ডেলিভারিও হয়ে যায়।
হবিগঞ্জ বানিয়াচং উপজেলার বাসিন্দারা ছয় মাস পানি ও ছয় মাস ডাঙায় থাকেন। এখানকার বাসিন্দাদের কেউ অসুস্থ হলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন থাকলেও ডাক্তার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া দুঃসহ ব্যাপার। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে হবিগঞ্জ নেওয়া ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার আর
কোনো ব্যবস্থা থাকে না। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনেক দূরে। সেখানেও পর্যাপ্ত সেবা পাওয়া যায় না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে অনেকবার কথা বললেও তাঁরা শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন।’
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক হিমাংশু লাল রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানকার স্বাস্থ্য খাত অন্য এলাকার তুলনায় পিছিয়ে।জেলা বা উপজেলা সদরের বাসিন্দারা ভালোমানের সেবা নিতে পারলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। এসব এলাকায় আমরা মূলত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’প্রসঙ্গত, প্রতিবেদনটি বিএনএনআরসির তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য-সাংবাদিকতায় মিডিয়া ফেলোশিপ-এর আওতায় প্রস্তুতকৃত।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে