শাইখ সিরাজ
সমতলে চা চাষ হবে—এমনটি কারও ধারণায় ছিল না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পঞ্চগড় সফরে এসে সমতল ভূমিতে চা চাষের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছিলেন। এরপর স্বল্প পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে পঞ্চগড়ের সমতল ভূমিতে চা চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে চা চাষের জমির পরিমাণ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালে বেশ কয়েকটি কোম্পানি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চায়ের বাগান গড়ে তোলে। এখন এই সমতলের চা-ই পাল্টে দিচ্ছে শত বছরের পঞ্চগড়ের কৃষি ও কৃষি ব্যবস্থাপনা।
ধান, পাট, আখের মাঠগুলোর দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। মাঠজুড়ে চা-পাতার গাঢ় সবুজ। তবে চা ঘিরে পঞ্চগড়ের কৃষকদের মাঝে যে স্বপ্ন রচিত হয়েছিল, মাঠের বাস্তবতায় তা একটু ভিন্ন। কৃষক ও কোম্পানির মাঝে একটা অমীমাংসিত দ্বন্দ্ব রেখেই এ খাত প্রসারিত হচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, চা কোম্পানিগুলোর একটা সিন্ডিকেট বিভিন্নভাবে তাঁদের ঠকিয়ে যাচ্ছে।
যা হোক, চা-বাগান পঞ্চগড়ের চিরায়ত ভূ-প্রাকৃতিক রূপে আনে পরিবর্তন। অন্যদিকে তেঁতুলিয়া থেকে দেখতে পাওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার আকর্ষণে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গুরুত্ব বাড়ছে পঞ্চগড়ের। আর এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে অনেক উদ্যোক্তা নিচ্ছেন কৃষি পর্যটনভিত্তিক প্রকল্প। পঞ্চগড় সদর উপজেলার মধুবন গ্রামের রেজাউল করিম রেজা তেমনই একজন।
মধুবন গ্রামটি সবুজ ও সুন্দর। এখানেই ব্যবসায়ী রেজাউল করিম একটি কৃষি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার চিন্তা থেকে সাজিয়ে তুলছেন তাঁর সমন্বিত কৃষি খামার। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কৃষিজমিতে চা-বাগানের পাশাপাশি, শুরু করেছেন ড্রাগন ফলের চাষ। আরও আছে মাছের পুকুর ও গবাদিপশুর খামার।
প্রতিবার কোরবানিকে লক্ষ্য করে রেজাউল মোটাতাজাকরণের জন্য গরু লালনপালন করেন। এ বছরও তাঁর খামারে রয়েছে ৭০টির মতো গরু। ধীরে ধীরে খামার বড় করছেন রেজাউল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সামনে রেখে চলছে খামার পরিবর্ধনের কাজ। বর্তমানে একটি শেডে গরু লালনপালনের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে আরও একটি শেড তৈরি হয়ে গেছে, সেখানে হবে ডেইরি খামার। ছাগল ও ভেড়া লালনপালনের জন্য আরও একটি শেড তৈরির কাজ চলছে। রেজাউলের খামারটি ঘুরতে ঘুরতে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে। বললেন, ইতিমধ্যে এক কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করেছেন তিনি গরুর খামারটি গড়ে তুলতে। বুঝতে পারছেন ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের টেকসই খাত হবে কৃষি। এ চিন্তা থেকেই কৃষিতে বিনিয়োগ।
গরুর গোবর থেকে ভার্মি কম্পোস্ট ও বায়োগ্যাস তৈরির পরিকল্পনাও তাঁর আছে। একটু এগিয়ে যেতেই চোখে পড়ল বিশাল এক পুকুর। রেজাউল বললেন, তাঁর তিনটি পুকুরে চলছে মাছ চাষ। জানতে চেয়েছিলাম, মাছ চাষে লাভ কেমন? বললেন, লাভ থাকছে ভালোই।
পুকুরের তীর ঘেঁষে পেয়ারার বাগান। এখানে চার শ পেয়ারাগাছে ফল এসেছে। রেজাউল জানালেন, পেয়ারা বেশ লাভজনক। সবচেয়ে বড় কথা, পেয়ারার বাজার স্থিতিশীল। সারা বছরই কম-বেশি চাহিদা থাকে। এ ছাড়া শুরু করেছেন ড্রাগন ফলের চাষ। আছে ৫০ বিঘা জমিতে চায়ের বাগান। সব মিলিয়ে কৃষি ঘিরেই তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। তৈরি করছেন পর্যটকদের থাকার জন্য কটেজ। কৃষি পর্যটনকে কেন্দ্র করে তাঁর সমন্বিত কৃষির এই উদ্যোগ।
শুধু রেজাউল করিমই নন, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার শুভাসুজন গ্রামে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন সৈয়দ মাহফুজার রহমান সেলিম। সেলিম এমনিতে যুক্ত ছিলেন ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় চায়ের বাগান করবেন ভেবে ১৫ বছরের জন্য ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়েছিলেন। কিন্তু হিসাবে লাভের পাল্লা ভারী মনে হলো মাল্টা চাষের। তাই গড়ে তুললেন মাল্টার বাগান। বিশাল মাল্টার বাগান এখন পঞ্চগড়ের অন্যতম এক আকর্ষণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসে বারি-১ মাল্টা চাষের মধ্য দিয়ে সেই বাগানের যাত্রা শুরু। ৯ হাজার গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এ বছর প্রথম ফল আসা শুরু করেছে। দেখেই বোঝা যায় মাল্টার ফলন বেশ ভালো। গাছে গাছে ঝুলে আছে মাল্টা।
সেলিম বললেন, ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে প্রতিবছর ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে তাঁকে। মাল্টার বাগান করার আগে ইউটিউবে এ নিয়ে যত প্রতিবেদন আছে সব দেখেছেন। দেশের নানান জায়গায় গিয়ে মাল্টাবাগান ঘুরে দেখে এসেছেন। এমনকি চুয়াডাঙ্গার সাখাওয়াত হোসেনের বাগানেও গিয়েছেন তিনি। শুধু মাল্টাই নয়, মাল্টার পাশাপাশি লেবু ও কমলার গাছও রোপণ করেছেন তিনি।
সেলিমের কাছে জানতে চাই, ‘ফলন অনুযায়ী বেচাবিক্রি কী পরিমাণ আশা করছেন?’ বললেন, এ বছর ৩৫-৪০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছেন। তিন বছরে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ১ কোটি টাকা। জানতে চেয়েছিলাম, বিনিয়োগের এই ১ কোটি টাকা উঠিয়ে আনতে কত বছর লাগতে পারে। বললেন, আল্লাহ সহায় হলে, সবকিছু ঠিক থাকলে, আগামী বছরেই উঠে যাবে বলে আশা করা যায়। মাল্টার একটা বাজার ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। বাগান থেকেই তিনি মাল্টা বিক্রি করতে পারছেন।
আজকের দিনে আধুনিক কৃষি মানেই কৃষককে বাজার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও ভালো ধারণা থাকতে হবে। সৈয়দ মাহফুজার রহমান সেলিমও মাল্টা চাষের আগে ঘুরে দেখে নিয়েছেন দেশের মাল্টাবাগান ও বাজার ব্যবস্থাপনা। তবে সেলিমের লক্ষ্য আরও গভীরে।
সেলিমের এই বাগান গড়ার পেছনে রয়েছে কৃষিভিত্তিক পর্যটন ক্ষেত্র তৈরির চিন্তা। দেখা গেল বাগানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই আছে।দুপুরের রোদেও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন পর্যটকেরা। কেউ বাগান করার উদ্দেশ্যে জানতে এসেছেন বাগান তৈরির প্রক্রিয়া, কেউবা ৬০ বিঘা জমির বিশাল বাগান ঘুরে দেখার উদ্দেশ্যে এসেছেন। সেলিম জানালেন, আগামী বছরই দর্শনার্থীর জন্য বাগানকে নতুন করে সাজাবেন। সেলিমের সঙ্গে কথা বলতে বলতে লক্ষ করলাম, পর্যটকদের কেউ পরিবারসহ ঘুরতে এসেছেন। সেলফি তুলছেন।
আশার কথা হচ্ছে, শিল্পোদ্যোক্তা থেকে ব্যবসায়ী অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন কৃষি উদ্যোগের সঙ্গে। ফলে সম্প্রসারিত ও আধুনিক হচ্ছে কৃষি বাণিজ্য। ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে কৃষিশিল্প। আবার সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে অনেকেই ঘোচাচ্ছেন বেকারত্ব, তৈরি করছেন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। কৃষি খামারে এখন অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই খামারের উপার্জন থেকেই তাঁদের জীবন-জীবিকা।
কৃষিকে ঘিরে এমন উদ্যোগগুলোই ধীরে ধীরে বিকশিত করবে শতভাগ বাণিজ্যিক কৃষি। রেজাউল করিমের মতো ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগেই এ দেশে তৈরি হবে কৃষিশিল্পের নতুন ধারা। অধিক উৎপাদনশীল, আধুনিক ও প্রযুক্তির কৃষির অগ্রযাত্রায় এ উদ্যোগগুলো মূলত প্রাথমিক ধাপ। আমার বিশ্বাস, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কৃষি পর্যটন খাতেও এই উদ্যোগগুলো রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলাদেশ হবে বহুমুখী এক টেকসই কৃষি অর্থনীতির দেশ।
লেখক:পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই
সমতলে চা চাষ হবে—এমনটি কারও ধারণায় ছিল না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পঞ্চগড় সফরে এসে সমতল ভূমিতে চা চাষের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছিলেন। এরপর স্বল্প পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে পঞ্চগড়ের সমতল ভূমিতে চা চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে চা চাষের জমির পরিমাণ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালে বেশ কয়েকটি কোম্পানি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চায়ের বাগান গড়ে তোলে। এখন এই সমতলের চা-ই পাল্টে দিচ্ছে শত বছরের পঞ্চগড়ের কৃষি ও কৃষি ব্যবস্থাপনা।
ধান, পাট, আখের মাঠগুলোর দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। মাঠজুড়ে চা-পাতার গাঢ় সবুজ। তবে চা ঘিরে পঞ্চগড়ের কৃষকদের মাঝে যে স্বপ্ন রচিত হয়েছিল, মাঠের বাস্তবতায় তা একটু ভিন্ন। কৃষক ও কোম্পানির মাঝে একটা অমীমাংসিত দ্বন্দ্ব রেখেই এ খাত প্রসারিত হচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, চা কোম্পানিগুলোর একটা সিন্ডিকেট বিভিন্নভাবে তাঁদের ঠকিয়ে যাচ্ছে।
যা হোক, চা-বাগান পঞ্চগড়ের চিরায়ত ভূ-প্রাকৃতিক রূপে আনে পরিবর্তন। অন্যদিকে তেঁতুলিয়া থেকে দেখতে পাওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার আকর্ষণে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গুরুত্ব বাড়ছে পঞ্চগড়ের। আর এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে অনেক উদ্যোক্তা নিচ্ছেন কৃষি পর্যটনভিত্তিক প্রকল্প। পঞ্চগড় সদর উপজেলার মধুবন গ্রামের রেজাউল করিম রেজা তেমনই একজন।
মধুবন গ্রামটি সবুজ ও সুন্দর। এখানেই ব্যবসায়ী রেজাউল করিম একটি কৃষি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার চিন্তা থেকে সাজিয়ে তুলছেন তাঁর সমন্বিত কৃষি খামার। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কৃষিজমিতে চা-বাগানের পাশাপাশি, শুরু করেছেন ড্রাগন ফলের চাষ। আরও আছে মাছের পুকুর ও গবাদিপশুর খামার।
প্রতিবার কোরবানিকে লক্ষ্য করে রেজাউল মোটাতাজাকরণের জন্য গরু লালনপালন করেন। এ বছরও তাঁর খামারে রয়েছে ৭০টির মতো গরু। ধীরে ধীরে খামার বড় করছেন রেজাউল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সামনে রেখে চলছে খামার পরিবর্ধনের কাজ। বর্তমানে একটি শেডে গরু লালনপালনের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে আরও একটি শেড তৈরি হয়ে গেছে, সেখানে হবে ডেইরি খামার। ছাগল ও ভেড়া লালনপালনের জন্য আরও একটি শেড তৈরির কাজ চলছে। রেজাউলের খামারটি ঘুরতে ঘুরতে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে। বললেন, ইতিমধ্যে এক কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করেছেন তিনি গরুর খামারটি গড়ে তুলতে। বুঝতে পারছেন ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের টেকসই খাত হবে কৃষি। এ চিন্তা থেকেই কৃষিতে বিনিয়োগ।
গরুর গোবর থেকে ভার্মি কম্পোস্ট ও বায়োগ্যাস তৈরির পরিকল্পনাও তাঁর আছে। একটু এগিয়ে যেতেই চোখে পড়ল বিশাল এক পুকুর। রেজাউল বললেন, তাঁর তিনটি পুকুরে চলছে মাছ চাষ। জানতে চেয়েছিলাম, মাছ চাষে লাভ কেমন? বললেন, লাভ থাকছে ভালোই।
পুকুরের তীর ঘেঁষে পেয়ারার বাগান। এখানে চার শ পেয়ারাগাছে ফল এসেছে। রেজাউল জানালেন, পেয়ারা বেশ লাভজনক। সবচেয়ে বড় কথা, পেয়ারার বাজার স্থিতিশীল। সারা বছরই কম-বেশি চাহিদা থাকে। এ ছাড়া শুরু করেছেন ড্রাগন ফলের চাষ। আছে ৫০ বিঘা জমিতে চায়ের বাগান। সব মিলিয়ে কৃষি ঘিরেই তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। তৈরি করছেন পর্যটকদের থাকার জন্য কটেজ। কৃষি পর্যটনকে কেন্দ্র করে তাঁর সমন্বিত কৃষির এই উদ্যোগ।
শুধু রেজাউল করিমই নন, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার শুভাসুজন গ্রামে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন সৈয়দ মাহফুজার রহমান সেলিম। সেলিম এমনিতে যুক্ত ছিলেন ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় চায়ের বাগান করবেন ভেবে ১৫ বছরের জন্য ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়েছিলেন। কিন্তু হিসাবে লাভের পাল্লা ভারী মনে হলো মাল্টা চাষের। তাই গড়ে তুললেন মাল্টার বাগান। বিশাল মাল্টার বাগান এখন পঞ্চগড়ের অন্যতম এক আকর্ষণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসে বারি-১ মাল্টা চাষের মধ্য দিয়ে সেই বাগানের যাত্রা শুরু। ৯ হাজার গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এ বছর প্রথম ফল আসা শুরু করেছে। দেখেই বোঝা যায় মাল্টার ফলন বেশ ভালো। গাছে গাছে ঝুলে আছে মাল্টা।
সেলিম বললেন, ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে প্রতিবছর ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে তাঁকে। মাল্টার বাগান করার আগে ইউটিউবে এ নিয়ে যত প্রতিবেদন আছে সব দেখেছেন। দেশের নানান জায়গায় গিয়ে মাল্টাবাগান ঘুরে দেখে এসেছেন। এমনকি চুয়াডাঙ্গার সাখাওয়াত হোসেনের বাগানেও গিয়েছেন তিনি। শুধু মাল্টাই নয়, মাল্টার পাশাপাশি লেবু ও কমলার গাছও রোপণ করেছেন তিনি।
সেলিমের কাছে জানতে চাই, ‘ফলন অনুযায়ী বেচাবিক্রি কী পরিমাণ আশা করছেন?’ বললেন, এ বছর ৩৫-৪০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছেন। তিন বছরে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ১ কোটি টাকা। জানতে চেয়েছিলাম, বিনিয়োগের এই ১ কোটি টাকা উঠিয়ে আনতে কত বছর লাগতে পারে। বললেন, আল্লাহ সহায় হলে, সবকিছু ঠিক থাকলে, আগামী বছরেই উঠে যাবে বলে আশা করা যায়। মাল্টার একটা বাজার ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। বাগান থেকেই তিনি মাল্টা বিক্রি করতে পারছেন।
আজকের দিনে আধুনিক কৃষি মানেই কৃষককে বাজার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও ভালো ধারণা থাকতে হবে। সৈয়দ মাহফুজার রহমান সেলিমও মাল্টা চাষের আগে ঘুরে দেখে নিয়েছেন দেশের মাল্টাবাগান ও বাজার ব্যবস্থাপনা। তবে সেলিমের লক্ষ্য আরও গভীরে।
সেলিমের এই বাগান গড়ার পেছনে রয়েছে কৃষিভিত্তিক পর্যটন ক্ষেত্র তৈরির চিন্তা। দেখা গেল বাগানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই আছে।দুপুরের রোদেও বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন পর্যটকেরা। কেউ বাগান করার উদ্দেশ্যে জানতে এসেছেন বাগান তৈরির প্রক্রিয়া, কেউবা ৬০ বিঘা জমির বিশাল বাগান ঘুরে দেখার উদ্দেশ্যে এসেছেন। সেলিম জানালেন, আগামী বছরই দর্শনার্থীর জন্য বাগানকে নতুন করে সাজাবেন। সেলিমের সঙ্গে কথা বলতে বলতে লক্ষ করলাম, পর্যটকদের কেউ পরিবারসহ ঘুরতে এসেছেন। সেলফি তুলছেন।
আশার কথা হচ্ছে, শিল্পোদ্যোক্তা থেকে ব্যবসায়ী অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন কৃষি উদ্যোগের সঙ্গে। ফলে সম্প্রসারিত ও আধুনিক হচ্ছে কৃষি বাণিজ্য। ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে কৃষিশিল্প। আবার সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে অনেকেই ঘোচাচ্ছেন বেকারত্ব, তৈরি করছেন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। কৃষি খামারে এখন অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই খামারের উপার্জন থেকেই তাঁদের জীবন-জীবিকা।
কৃষিকে ঘিরে এমন উদ্যোগগুলোই ধীরে ধীরে বিকশিত করবে শতভাগ বাণিজ্যিক কৃষি। রেজাউল করিমের মতো ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগেই এ দেশে তৈরি হবে কৃষিশিল্পের নতুন ধারা। অধিক উৎপাদনশীল, আধুনিক ও প্রযুক্তির কৃষির অগ্রযাত্রায় এ উদ্যোগগুলো মূলত প্রাথমিক ধাপ। আমার বিশ্বাস, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কৃষি পর্যটন খাতেও এই উদ্যোগগুলো রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলাদেশ হবে বহুমুখী এক টেকসই কৃষি অর্থনীতির দেশ।
লেখক:পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে