কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল গতকাল মঙ্গলবার। শেষ দিনে আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজল খানের বড় ছেলে মাসুদ পারভেজ খান ইমরান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তা ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) দুই নেতাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য ও কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার। এর আগে গত মঙ্গলবার কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি কামরুল আহসান বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রয়াত আফজল খানের পরিবার থেকে গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আঞ্জুম সুলতানা সীমা নির্বাচন করেছিলেন। বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর কাছে পরাজিত হন তিনি। এ সিটি নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন আফজল খানের বড় ছেলে মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, কিন্তু দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, ‘সুখে-দুঃখে নগরবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সব সময় ছিলাম, আছি। আমি দীর্ঘ সময় কুমিল্লা শহরে কাজ করছি। নগরের সাধারণ জনগণ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের চাপে এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।’

বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর ছোট ভাই কাইমুল হক রিংকু মনোনয়ন জমা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচনের যে আশ্বাস দিয়েছে তা যদি শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে তাহলে কুমিল্লা মহানগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী মনিরুল হক সাক্কু তৃতীয়বারের মতো মেয়র হবেন। এই আশা ও জনগণের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা মনোনয়নপত্র দাখিল করলাম।’

বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘কুমিল্লার নির্যাতিত মানুষ তাঁদের কণ্ঠস্বর হিসেবে আমাকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য পাঠিয়েছেন। বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়া নিয়ে আমার কোনো দ্বিমত নেই। আমি যেহেতু দল করি সেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াটা যদি মতানৈক্যর সৃষ্টি করে তাহলে কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা আমি মাথা পেতে নেব।

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘আমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীকে শক্তিশালী মনে করি। আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দিয়েছে সেও কম শক্তিশালী না। বিগত দুই বার নৌকার পরাজয়ের কারণ ও ভুলগুলো সংশোধন করেছি। আগামী নির্বাচনে এসব ভুল হবে না বলে আশা করি। মহানগর আওয়ামী লীগে কোনো বিভক্তি নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করে মেয়রের পদটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব।’

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান, ‘সুশৃঙ্খল পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার কথা শুনিনি।’ 
কুসিক নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে বৃহস্পতিবার ও প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে এবং ভোট গ্রহণ ১৫ জুন।