খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় এবার আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে কৃষকদের মধ্যে শুরু হয়েছে পাকা ধান ঘরে তোলার ব্যস্ততা। উপজেলায় এবার আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষি কার্যালয় ও কৃষকেরা। এদিকে বাজারে চালের দাম চড়া থাকায় এবার লাভও বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুম থেকে চলতি মৌসুমে আমন ধানের চাষ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এবার উপজেলায় আউশ ধানে ২০০ হেক্টর ও আমন ধানে ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।

যা উফশী জাতের আউশ ধানে বেড়ে ২১০ হেক্টর ও আমন ধানে ২ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে ফসল উৎপাদিত হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড়ে উৎপাদিত হয়েছে ২ দশমিক ৭ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদিত হবে ৬ হাজার ৯ শত ২১ মেট্রিক টন চাল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কালাডেবা, সোনাইআগা, ফেনীরকুল, মাহামুনি, সদুকার্বারীপাড়া, নজিরটিলা, লামকুপাড়া, বলিপাড়া, লালছড়ি, নোয়াপাড়া, রুপাইছড়ি, পাতাছড়া, জরিচন্দ্রপাড়া, রসুলপুরসহ অনেক গ্রামে কৃষকেরা ধান কাটছেন। আবার কেউ ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যত দূর চোখ যায় খেতজুড়ে দোল খাচ্ছে সোনালি শিষ। বেশির ভাগ খেতের ধান পাকতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে মহামুনি এলাকার কৃষক কাসেম মুনশি জানান, আমন ধানের রোগবালাই খুব কম। ফলন ও ভালো হয়েছে এবার। ধানের দাম আগে থেকে বেশি। বেশি লাভের আশায় এবার ১২ কানি জমিতে আমন চাষ করেছেন তিনি। উৎপাদন খরচ বাদেও চাষাবাদে লাভ হয়েছে।

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষাণি রেসাচিং মারমা এবং তাঁর সঙ্গীরা জানান, এবার ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় মালিকপক্ষ খুশি। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধান কাটতে হয়। দৈনিক জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে দেয়।

চাল ব্যবসায়ী মোস্তফা জানান, এবার ধানের দাম গতবারের চেয়ে বেশি। সরকারিভাবে মণপ্রতি ধানের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এবং খুচরা বাজারে আমন ৮৬০ এবং ৯০০ টাকা করে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরী বলেন, উপজেলায় অন্যবারের থেকে এবার আমনের চাষ ভালো হয়েছে। যা বিগত বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ রেকর্ড। শুরু থেকেই কৃষকদের নানাভাবে সহায়তা করা হয়েছে। মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো বীজ ও সার পাওয়ায় রামগড়ে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।