হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যে বৈশ্বিক বাজারে ভোজ্যতেল, ডাল, গমসহ অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার তিন মাসের মাথায় ১ হাজার ৯৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায় প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম। সম্প্রতি বাড়তে শুরু করেছে গমের দাম। যুদ্ধের আগে যেখানে প্রতি টন গমের বুকিং মূল্য ছিল ৩০০ ডলার। সেখানে গত সপ্তাহে ভারত গম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর এখন বৈশ্বিক বাজারে গমের বুকিং মানি ৬০০ ডলার ছাড়িয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। কারণ, এই দুই দেশ বিশ্বের মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ গম সরবরাহ করে। বাংলাদেশেও ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকেরা এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বাংলাদেশ ভোগ্যপণ্যের মধ্যে ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও গমের ব্যাপারে পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে তেল আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গম ও বিভিন্ন ধরনের ডাল আমদানি করা হয় ইউক্রেন, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও আর্জেন্টিনা থেকে। চিনি কেনা হয় ব্রাজিল, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড থেকে। এর সঙ্গে আরও কিছু দেশ আছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা-পরবর্তী জাহাজসংকট, সর্বোপরি ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যহ্রাস পরিস্থিতিকে সামগ্রিকভাবে আরও জটিল করে তুলছে। আমদানিকারকেরা বলছেন, আগামী ছয় মাস হয়তো এসব পণ্যের কোনো সংকট তৈরি হবে না। কিন্তু আমাদের উচিত এখনই বিকল্প দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে মজুত করা। এবং সেটা সরকারি-বেসরকারি দুই পর্যায়েই। তাঁরা আরও বলছেন, ভোগ্যপণ্য আমদানির স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে না পারলে সামনে সংকট তৈরি হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) এ কে এম আলী আহাদ খান বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ ভোজ্যতেল, চিনি ও ডালের মজুত রয়েছে, তা দিয়ে আগামী ছয় মাস পর্যন্ত চালানো সম্ভব। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা গেলে দেশে পণ্যের কোনো সংকট হবে না বলে তিনি মনে করছেন। তিনি মনে করেন, ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি বন্ধের আদেশ তুলে দেওয়ায় বাজারে পাম তেলের দাম কমবে। তবে সয়াবিন তেলের ঘাটতি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় রয়েছে।
কী বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে গম, চাল, ডাল, চিনি ও তেলবীজ আমদানি বেড়েছে। এ সময়ে গম আমদানিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৭২ কোটি ৩ লাখ ডলার। আর দেশে দিন দিন গমের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিও বাড়ছে। এ সময়ে ভোজ্যতেল আমদানিতে খরচ বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। এই বাড়ার পেছনে অবশ্য আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই দায়ী। মসুর, ছোলা, মটরসহ সব ধরনের ডাল আমদানিতে খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় গুণ। আর সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে চিনি। গত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় এই অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি খরচ বেড়েছে ৭৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এই ক্রমবর্ধমান বাড়তি খরচ ভোগ্যপণ্য নিয়ে চিন্তা ক্রমে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে গম সবচেয়ে ভালো উদাহরণ। গমের সিংহভাগই আসত রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে এখন ওই দুই দেশ থেকে আমদানি বন্ধ। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে ৬ লাখ ৮৭ হাজার টন গম আমদানি হয়। এর অর্ধেকের বেশি আমদানি করা হয়েছে ভারত থেকে। এখন ভারতের গম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা পুরো বিশ্ববাজারকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
আমদানিকারকেরা যা বলছেন
ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘ ভোগ্যপণ্য সংকট নিয়ে যে সতর্ক বার্তা দিয়েছে, এটি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্রভাব ফেলছে, সেটি ইতিমধ্যে সারা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে। তিনি বলেন, এই যুদ্ধের কারণে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। সামনে দাম আরও বাড়বে।
জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমদানিকারকেরা চাইলেই এখন পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। কারণ বিশ্বে পর্যাপ্ত পণ্য নেই। সরকারের মাধ্যমে ছাড়া ভারত গম রপ্তানি করবে না। তাহলে ব্যবসায়ীরা চাইলেও এখন ওই দেশ থেকে গম আমদানি করতে পারবে না। কৃষ্ণসাগরের ওই দিক দিয়ে কেউ এখন ভয়েও পণ্য আমদানি করে না। সে জন্য এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
খাতুনগঞ্জের অন্যতম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর বলেন, ‘এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের বিলাসী পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে। বিলাসী পণ্য আমদানি কমিয়ে এখন বেশি বেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে হবে। কমপক্ষে ৫-৬ মাস যাতে পণ্যের কোনো ঘাটতি দেখা না দেয়, সেই পরিমাণ পণ্য আমদানি করে মজুত করতে হবে। তাহলে ভোগ্যপণ্যের সংকট তৈরি হবে না। তিনি বলেন, পাশাপাশি যেসব মেগা প্রকল্প চলমান আছে, সেগুলো আপাতত বন্ধ রাখতে হবে। যাতে রিজার্ভের ওপর চাপ না পড়ে। কারণ রিজার্ভের ওপর চাপ পড়লে সেটি ডলারের দাম বাড়িয়ে দেবে। আর তাতে ভোগ্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে।
আগামী ছয় মাসের মধ্যে খাদ্যের কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম। তাঁর মালিকানাধীন আলম ট্রেডিং গমসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য আমদানি করে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ যেহেতু সতর্ক বার্তা দিয়েছে, তাই খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে আমাদেরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ, আমাদের দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি। তাই আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদাও বেশি। এখন আগে থেকে পণ্য আমদানি করে মজুত করা না হলে পরে সংকট তৈরি হবে।
জাতিসংঘের আশঙ্কা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ বলছে, এই সমস্যার সমাধান করা না গেলে ভবিষ্যতে খাদ্যের সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। গত বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ইউক্রেন যদি আগের মতো পণ্য রপ্তানি শুরু না করে তাহলে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে, যা বছরের পর বছর স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সংঘাত লাখ লাখ মানুষকে অপুষ্টি, অনাহার ও দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
গুতেরেস বলেন, পণ্য রপ্তানি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে রাশিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যথাসম্ভব যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলিও বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউক্রেন শস্য ও ভোজ্যতেল রপ্তানি করতে না পারলে যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার এ বছর শেষে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারে। এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, দরিদ্র দেশগুলোর জন্য এটি ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যে বৈশ্বিক বাজারে ভোজ্যতেল, ডাল, গমসহ অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার তিন মাসের মাথায় ১ হাজার ৯৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায় প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম। সম্প্রতি বাড়তে শুরু করেছে গমের দাম। যুদ্ধের আগে যেখানে প্রতি টন গমের বুকিং মূল্য ছিল ৩০০ ডলার। সেখানে গত সপ্তাহে ভারত গম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর এখন বৈশ্বিক বাজারে গমের বুকিং মানি ৬০০ ডলার ছাড়িয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। কারণ, এই দুই দেশ বিশ্বের মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ গম সরবরাহ করে। বাংলাদেশেও ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকেরা এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বাংলাদেশ ভোগ্যপণ্যের মধ্যে ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও গমের ব্যাপারে পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে তেল আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গম ও বিভিন্ন ধরনের ডাল আমদানি করা হয় ইউক্রেন, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও আর্জেন্টিনা থেকে। চিনি কেনা হয় ব্রাজিল, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড থেকে। এর সঙ্গে আরও কিছু দেশ আছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা-পরবর্তী জাহাজসংকট, সর্বোপরি ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যহ্রাস পরিস্থিতিকে সামগ্রিকভাবে আরও জটিল করে তুলছে। আমদানিকারকেরা বলছেন, আগামী ছয় মাস হয়তো এসব পণ্যের কোনো সংকট তৈরি হবে না। কিন্তু আমাদের উচিত এখনই বিকল্প দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে মজুত করা। এবং সেটা সরকারি-বেসরকারি দুই পর্যায়েই। তাঁরা আরও বলছেন, ভোগ্যপণ্য আমদানির স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে না পারলে সামনে সংকট তৈরি হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) এ কে এম আলী আহাদ খান বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ ভোজ্যতেল, চিনি ও ডালের মজুত রয়েছে, তা দিয়ে আগামী ছয় মাস পর্যন্ত চালানো সম্ভব। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা গেলে দেশে পণ্যের কোনো সংকট হবে না বলে তিনি মনে করছেন। তিনি মনে করেন, ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি বন্ধের আদেশ তুলে দেওয়ায় বাজারে পাম তেলের দাম কমবে। তবে সয়াবিন তেলের ঘাটতি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় রয়েছে।
কী বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে গম, চাল, ডাল, চিনি ও তেলবীজ আমদানি বেড়েছে। এ সময়ে গম আমদানিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৭২ কোটি ৩ লাখ ডলার। আর দেশে দিন দিন গমের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিও বাড়ছে। এ সময়ে ভোজ্যতেল আমদানিতে খরচ বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। এই বাড়ার পেছনে অবশ্য আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই দায়ী। মসুর, ছোলা, মটরসহ সব ধরনের ডাল আমদানিতে খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় গুণ। আর সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে চিনি। গত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় এই অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি খরচ বেড়েছে ৭৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এই ক্রমবর্ধমান বাড়তি খরচ ভোগ্যপণ্য নিয়ে চিন্তা ক্রমে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে গম সবচেয়ে ভালো উদাহরণ। গমের সিংহভাগই আসত রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে এখন ওই দুই দেশ থেকে আমদানি বন্ধ। এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে ৬ লাখ ৮৭ হাজার টন গম আমদানি হয়। এর অর্ধেকের বেশি আমদানি করা হয়েছে ভারত থেকে। এখন ভারতের গম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা পুরো বিশ্ববাজারকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
আমদানিকারকেরা যা বলছেন
ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘ ভোগ্যপণ্য সংকট নিয়ে যে সতর্ক বার্তা দিয়েছে, এটি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্রভাব ফেলছে, সেটি ইতিমধ্যে সারা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে। তিনি বলেন, এই যুদ্ধের কারণে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। সামনে দাম আরও বাড়বে।
জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমদানিকারকেরা চাইলেই এখন পণ্য আমদানি করতে পারছেন না। কারণ বিশ্বে পর্যাপ্ত পণ্য নেই। সরকারের মাধ্যমে ছাড়া ভারত গম রপ্তানি করবে না। তাহলে ব্যবসায়ীরা চাইলেও এখন ওই দেশ থেকে গম আমদানি করতে পারবে না। কৃষ্ণসাগরের ওই দিক দিয়ে কেউ এখন ভয়েও পণ্য আমদানি করে না। সে জন্য এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
খাতুনগঞ্জের অন্যতম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর বলেন, ‘এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের বিলাসী পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে। বিলাসী পণ্য আমদানি কমিয়ে এখন বেশি বেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে হবে। কমপক্ষে ৫-৬ মাস যাতে পণ্যের কোনো ঘাটতি দেখা না দেয়, সেই পরিমাণ পণ্য আমদানি করে মজুত করতে হবে। তাহলে ভোগ্যপণ্যের সংকট তৈরি হবে না। তিনি বলেন, পাশাপাশি যেসব মেগা প্রকল্প চলমান আছে, সেগুলো আপাতত বন্ধ রাখতে হবে। যাতে রিজার্ভের ওপর চাপ না পড়ে। কারণ রিজার্ভের ওপর চাপ পড়লে সেটি ডলারের দাম বাড়িয়ে দেবে। আর তাতে ভোগ্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে।
আগামী ছয় মাসের মধ্যে খাদ্যের কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম। তাঁর মালিকানাধীন আলম ট্রেডিং গমসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য আমদানি করে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ যেহেতু সতর্ক বার্তা দিয়েছে, তাই খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে আমাদেরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ, আমাদের দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি। তাই আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদাও বেশি। এখন আগে থেকে পণ্য আমদানি করে মজুত করা না হলে পরে সংকট তৈরি হবে।
জাতিসংঘের আশঙ্কা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ বলছে, এই সমস্যার সমাধান করা না গেলে ভবিষ্যতে খাদ্যের সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। গত বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ইউক্রেন যদি আগের মতো পণ্য রপ্তানি শুরু না করে তাহলে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে, যা বছরের পর বছর স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সংঘাত লাখ লাখ মানুষকে অপুষ্টি, অনাহার ও দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
গুতেরেস বলেন, পণ্য রপ্তানি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে রাশিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যথাসম্ভব যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলিও বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউক্রেন শস্য ও ভোজ্যতেল রপ্তানি করতে না পারলে যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার এ বছর শেষে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারে। এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, দরিদ্র দেশগুলোর জন্য এটি ধ্বংস ডেকে আনতে পারে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে