বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
চিকিৎসায় অবহেলার কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে দুই চিকিৎসককে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এই গ্রেপ্তার ঠিক হয়নি বলে দাবি চিকিৎসক সমাজের। এরপর প্রতিবাদ জানাতে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। দুই দিনের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যক্তিগত চেম্বার ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া বন্ধ রাখেন চিকিৎসকেরা। এতে দেশের লাখ লাখ রোগী দুর্ভোগের শিকার হয়। অসুস্থ শিশু, মুমূর্ষু রোগী ও প্রসূতিদের নিয়ে চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েন স্বজনেরা। সারা দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে একধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই কর্মসূচিকে অমানবিক ও অপেশাদারসুলভ বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকদেরই অনেকে।
ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে গত মাসে অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসবের পর মারা যান প্রসূতি ও নবজাতক। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে মামলার পর গ্রেপ্তার করা হয় দুই চিকিৎসককে। তাঁরা হলেন ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা। তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর প্রতিবাদে গাইনি ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) গত শনিবার চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে চিকিৎসকদের ৩৬টি সংগঠন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছে। এতে দেশের ১৭ হাজার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকে সব ধরনের চিকিৎসা, সেবা, পরামর্শ, অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। সারা দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে রোগীরা আরও অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছে।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা জানান, সাধারণ মানের প্রতিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ছোট-বড় ১০টি অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে। অন্যদিকে বেসরকারি পর্যায়ের বড় হাসপাতালগুলোতে ৩০ থেকে ৫০টি ওটি হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বর্তমানে সারা দেশে নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০টি। এর প্রতিটি হাসপাতালে ১০টি করে অস্ত্রোপচার হলে দিনে প্রায় অর্ধলক্ষ অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে।
একইভাবে নিবন্ধিত প্রায় ১৫ হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে কয়েক লাখ রোগী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিয়ে থাকেন। পেশাজীবী চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। এর দায় তাঁদের নিতে হবে।
গত শনিবার দেশের গাইনি চিকিৎসকদের সংগঠন ওজিএসবি চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখার কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরপর মেডিসিন, সার্জারিসহ ৩৬টি সংগঠনের অর্ধলক্ষাধিক চিকিৎসক এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তবে সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের সেবা স্বাভাবিকভাবে চলছে। কিন্তু বেসরকারি সেবা বন্ধ থাকায় সরকারিতে চাপ আরও বেড়েছে।
গতকাল সকালে ঢাকার মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতাল, তেজগাঁওয়ের শমরিতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গ্রিন রোডের কমফোর্ট, সেন্ট্রাল ও গ্রিন লাইফ; পান্থপথের স্কয়ার ও বিআরবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে চিকিৎসাসেবা বন্ধ। বন্ধ আছে অস্ত্রোপচারও। এ ছাড়া আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন, তাতেও একই চিত্র লক্ষ করা গেছে।
তবে এই কর্মসূচির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁরা বলছেন, প্রসূতিসেবা বন্ধ রাখা আর চর্ম রোগীর চিকিৎসা দেওয়া এক কথা নয়। চিকিৎসকের কাজ মানুষের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখা, মৃত্যুর ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়া নয়। তা ছাড়া কোনো সংগঠন শুরুতেই এ ধরনের কর্মসূচি দিতে পারে না। এর আগে সরকারের কাছে দাবি জানানো, দাবির সপক্ষে কর্মসূচি পালন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে স্মারকলিপি প্রদান, এমনকি অনশনের মতো কর্মসূচি পালন করা যেতে পারে। কিন্তু চিকিৎসক হয়ে সেবা বন্ধ রাখা জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রসূতিবিদ বলেন, ‘ওজিএসবির ঘোষিত কর্মসূচির আগে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করা দরকার ছিল। যে চিকিৎসককে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাঁর গাফিলতি থাকলে সেটি প্রকাশ করা উচিত ছিল। কিন্তু তাঁরা সেটি করেননি, এমনকি তাঁকে নিরাপত্তা দিতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন, যা রহস্যজনক।’
তবে সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দেশের গ্রামে-গঞ্জে চিকিৎসক নির্যাতন একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোনো চিকিৎসক ঝুঁকি নিয়ে কোনো রোগীর চিকিৎসা করবেন না।
জেলায় জেলায় অসহায়ত্বের ছবি
প্রাইভেট চেম্বার এবং প্রাইভেট অপারেশন বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করছেন সিলেটের চিকিৎসকেরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রোগীরা।
ওজিএসবি সিলেট শাখার সদস্য ডা. সুরাইয়া আফরোজ জানান, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা পেয়ে আমরা এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছি। বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। আগে থেকে না জানায় রোগীরা এসে পড়েছে চরম বিপাকে। বেসরকারি হাসপাতালেও একই অবস্থা।’
রাজশাহীতে চিকিৎসকদের আন্দোলনে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা। গতকাল প্রাইভেট কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেননি চিকিৎসকেরা। সব প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রেখে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেন। ফলে বিভিন্ন জেলা থেকে রাজশাহীতে আসা শত শত রোগী পড়েছে দুর্ভোগে।
পাবনার চাটমোহর থেকে রাজশাহীতে যাওয়া রব্বানী জানান, তিনি মেডিসিনের ডাক্তারের কাছে এসেছেন, কিন্তু দেখা পাননি, আবার বাড়ি ফিরে যেতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে দুদিন রাজশাহীতে থাকতে হবে।
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রাজশাহী শাখার সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার হোসেন আলী বলেন, ‘চেম্বার না করার সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের। এখানে আমাদের করার কিছু নেই।’
চিকিৎসক ধর্মঘটের কারণে বগুড়ার শতাধিক বেসরকারি ক্লিনিকে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। সকাল থেকেই বগুড়া শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ভর্তি নিতে পারেনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
বগুড়া শহরের মফিজ পাগলার মোড় এলাকার ইসলামী হাসপাতালের পরিচালক মাজেদুর রহমান জুয়েল জানান, বগুড়া শহর এবং উপজেলা পর্যায়ে ১২৫টি ক্লিনিকে চিকিৎসক ধর্মঘটের জন্য অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তাঁর হাসপাতালে ২৬ জন রোগী ভর্তি আছে, তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকদের চেম্বারগুলো তালা দেওয়া। রোগীরা আসছে, তবে ডাক্তার না থাকায় ফিরে যাচ্ছে।
নিরাপত্তা চেয়ে রিট করবেন চিকিৎসকেরা
কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং হেনস্তা বন্ধে এবার আইনি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে ফেডারেশন অব অল সোসাইটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে রিট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এই রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা। গতকাল রাতে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
চিকিৎসায় অবহেলার কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে দুই চিকিৎসককে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এই গ্রেপ্তার ঠিক হয়নি বলে দাবি চিকিৎসক সমাজের। এরপর প্রতিবাদ জানাতে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। দুই দিনের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যক্তিগত চেম্বার ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া বন্ধ রাখেন চিকিৎসকেরা। এতে দেশের লাখ লাখ রোগী দুর্ভোগের শিকার হয়। অসুস্থ শিশু, মুমূর্ষু রোগী ও প্রসূতিদের নিয়ে চরম অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েন স্বজনেরা। সারা দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে একধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই কর্মসূচিকে অমানবিক ও অপেশাদারসুলভ বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকদেরই অনেকে।
ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে গত মাসে অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসবের পর মারা যান প্রসূতি ও নবজাতক। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে মামলার পর গ্রেপ্তার করা হয় দুই চিকিৎসককে। তাঁরা হলেন ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহা। তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর প্রতিবাদে গাইনি ও প্রসূতিবিদ চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) গত শনিবার চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে চিকিৎসকদের ৩৬টি সংগঠন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছে। এতে দেশের ১৭ হাজার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকে সব ধরনের চিকিৎসা, সেবা, পরামর্শ, অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। সারা দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে রোগীরা আরও অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছে।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা জানান, সাধারণ মানের প্রতিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ছোট-বড় ১০টি অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে। অন্যদিকে বেসরকারি পর্যায়ের বড় হাসপাতালগুলোতে ৩০ থেকে ৫০টি ওটি হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বর্তমানে সারা দেশে নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০টি। এর প্রতিটি হাসপাতালে ১০টি করে অস্ত্রোপচার হলে দিনে প্রায় অর্ধলক্ষ অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে।
একইভাবে নিবন্ধিত প্রায় ১৫ হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে কয়েক লাখ রোগী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিয়ে থাকেন। পেশাজীবী চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। এর দায় তাঁদের নিতে হবে।
গত শনিবার দেশের গাইনি চিকিৎসকদের সংগঠন ওজিএসবি চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখার কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরপর মেডিসিন, সার্জারিসহ ৩৬টি সংগঠনের অর্ধলক্ষাধিক চিকিৎসক এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তবে সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের সেবা স্বাভাবিকভাবে চলছে। কিন্তু বেসরকারি সেবা বন্ধ থাকায় সরকারিতে চাপ আরও বেড়েছে।
গতকাল সকালে ঢাকার মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতাল, তেজগাঁওয়ের শমরিতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গ্রিন রোডের কমফোর্ট, সেন্ট্রাল ও গ্রিন লাইফ; পান্থপথের স্কয়ার ও বিআরবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে চিকিৎসাসেবা বন্ধ। বন্ধ আছে অস্ত্রোপচারও। এ ছাড়া আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন, তাতেও একই চিত্র লক্ষ করা গেছে।
তবে এই কর্মসূচির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁরা বলছেন, প্রসূতিসেবা বন্ধ রাখা আর চর্ম রোগীর চিকিৎসা দেওয়া এক কথা নয়। চিকিৎসকের কাজ মানুষের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখা, মৃত্যুর ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়া নয়। তা ছাড়া কোনো সংগঠন শুরুতেই এ ধরনের কর্মসূচি দিতে পারে না। এর আগে সরকারের কাছে দাবি জানানো, দাবির সপক্ষে কর্মসূচি পালন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে স্মারকলিপি প্রদান, এমনকি অনশনের মতো কর্মসূচি পালন করা যেতে পারে। কিন্তু চিকিৎসক হয়ে সেবা বন্ধ রাখা জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রসূতিবিদ বলেন, ‘ওজিএসবির ঘোষিত কর্মসূচির আগে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করা দরকার ছিল। যে চিকিৎসককে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাঁর গাফিলতি থাকলে সেটি প্রকাশ করা উচিত ছিল। কিন্তু তাঁরা সেটি করেননি, এমনকি তাঁকে নিরাপত্তা দিতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন, যা রহস্যজনক।’
তবে সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দেশের গ্রামে-গঞ্জে চিকিৎসক নির্যাতন একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোনো চিকিৎসক ঝুঁকি নিয়ে কোনো রোগীর চিকিৎসা করবেন না।
জেলায় জেলায় অসহায়ত্বের ছবি
প্রাইভেট চেম্বার এবং প্রাইভেট অপারেশন বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করছেন সিলেটের চিকিৎসকেরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রোগীরা।
ওজিএসবি সিলেট শাখার সদস্য ডা. সুরাইয়া আফরোজ জানান, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা পেয়ে আমরা এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছি। বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। আগে থেকে না জানায় রোগীরা এসে পড়েছে চরম বিপাকে। বেসরকারি হাসপাতালেও একই অবস্থা।’
রাজশাহীতে চিকিৎসকদের আন্দোলনে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা। গতকাল প্রাইভেট কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেননি চিকিৎসকেরা। সব প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রেখে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেন। ফলে বিভিন্ন জেলা থেকে রাজশাহীতে আসা শত শত রোগী পড়েছে দুর্ভোগে।
পাবনার চাটমোহর থেকে রাজশাহীতে যাওয়া রব্বানী জানান, তিনি মেডিসিনের ডাক্তারের কাছে এসেছেন, কিন্তু দেখা পাননি, আবার বাড়ি ফিরে যেতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে দুদিন রাজশাহীতে থাকতে হবে।
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রাজশাহী শাখার সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার হোসেন আলী বলেন, ‘চেম্বার না করার সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের। এখানে আমাদের করার কিছু নেই।’
চিকিৎসক ধর্মঘটের কারণে বগুড়ার শতাধিক বেসরকারি ক্লিনিকে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। সকাল থেকেই বগুড়া শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ভর্তি নিতে পারেনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
বগুড়া শহরের মফিজ পাগলার মোড় এলাকার ইসলামী হাসপাতালের পরিচালক মাজেদুর রহমান জুয়েল জানান, বগুড়া শহর এবং উপজেলা পর্যায়ে ১২৫টি ক্লিনিকে চিকিৎসক ধর্মঘটের জন্য অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তাঁর হাসপাতালে ২৬ জন রোগী ভর্তি আছে, তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকদের চেম্বারগুলো তালা দেওয়া। রোগীরা আসছে, তবে ডাক্তার না থাকায় ফিরে যাচ্ছে।
নিরাপত্তা চেয়ে রিট করবেন চিকিৎসকেরা
কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং হেনস্তা বন্ধে এবার আইনি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে ফেডারেশন অব অল সোসাইটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে রিট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এই রিট করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা। গতকাল রাতে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে