লবণাক্ততা ঠেকাতে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ১০: ৩৫

পানিতে লবণাক্ততা সমস্যায় তিন মাস ধরে নাকাল চট্টগ্রাম নগরীর মানুষ। এই সমস্যা সমাধানে নতুন প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্পের পাশেই ৩৫ কোটি লিটার ক্ষমতার নতুন একটি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কালুরঘাট এলাকায় স্থাপন করা হয় মোহরা পানি শোধনাগার। হালদা নদী থেকে পানি এনে এখানে শোধন করা হয়। এখান থেকে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৯ কোটি লিটার পানি মেলে। তবে নদীর পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে তা কমে গেছে ৪ কোটি লিটার। এ অবস্থায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ মোহরা পানি শোধনাগার লাগোয়া জায়গায় নতুন প্রকল্প সম্পন্ন করতে চায়। প্রকল্পের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে মোহরা পানি শোধনাগারের পাশে। তবে পানি নেওয়া হবে ৫ কিলোমিটার দূরে কর্ণফুলী (বোয়ালখালী ভান্ডালজুড়ি এলাকা) নদীর উৎস থেকে। যেখানে লবণাক্ততার কোনো সমস্যা নেই।

বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম। তিনি জানান, ওয়াসার পানিকে লবণমুক্ত করতে ভান্ডালজুড়ি এলাকায় পানি তোলার জন্য একটি স্টেশন করা হবে। চট্টগ্রাম ওয়াসা নতুন প্রকল্প গ্রহণে প্রিলিমিনারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল বা পিডিপিপি প্রস্তুতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে নদীর তলদেশ দিয়ে পাঁচ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে কয়েকটি সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

জানা গেছে, তিন মাস ধরে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। বৃষ্টিই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হওয়ায় সেই থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এই অবস্থায় জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। পানি সমস্যার সমাধানে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে মাঠে নামছেন ভুক্তভোগীরা। তাঁরা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহর কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও ওয়াসার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। প্রতিদিন ৪৯ কোটি লিটারের জায়গায় লবণাক্ততার কারণে ৭ কোটি লিটারের মতো পানি কম হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে ওয়াসা।

চট্টগ্রাম ওয়াসার তথ্যমতে, বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক গ্রাহক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। ৭৭০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে সংস্থাটি পানি সরবরাহ করে। বেশির ভাগ লাইন পুরোনো হওয়ার কারণে এমনিতেই সংকটে থাকতে হয় গ্রাহকদের। লাইনে ছিদ্রের কারণে পানি নষ্ট হয়। লবণাক্ততা ও লোডশেডিংয়ের কারণে এখন সংকট আরও প্রকট হয়েছে।

নতুন প্রকল্পের বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আগের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে লবণাক্ততার কথা মাথায় রাখলে নতুন প্রকল্পের দরকার হতো না। ওয়াসাকে মানুষের সমস্যা সমাধানে আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্য সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ–পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত