শীতে বৃষ্টিপাত কম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত দুই দিনে সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে সে তুলনায় দিনাজপুরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ। এর আগে, গত পাঁচ বছরে জানুয়ারি মাসে জেলায় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে গত দু’দিনে তার দ্বিগুণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ১৮ মিলিমিটার। সকালে বৃষ্টিপাত হয় ১ দশমিক ২ মিলিমিটার, দুপুরে ৯ দশমিক ৮ মিলিমিটার আর সন্ধ্যায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ০ মিলিমিটার।

গতকাল বৃহস্পতিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ; বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮-১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া, বৃষ্টির কারণে মেঘ কেটে যাওয়ায় গতকাল জেলায় সকাল ১০টার পর রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করে। তবে, দুপুরের পর রোদের তেজ কমতে শুরু করে।

এদিকে, শীতকালের রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন আলু ও সরিষা চাষিরা। বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ও দাগ ধরাসহ সরিষার ফলন কমার শঙ্কা তাঁদের।

বিরল উপজেলার কৃষক মতিউর রহমান জানান, ‘আমি সাধারণ আলুর পাশাপাশি বীজ আলুও রোপণ করেছি। সেই সঙ্গে সরিষার আবাদও করেছি। বৃষ্টির কারণে আশঙ্কায় আছি আলুর ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) খালেদুর রহমান জানান, সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হলেও বৃষ্টির পানি জমিতে জমাট না বাধায় কৃষকের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে, যাদের আলু তোলার উপযোগী অবস্থায় আছে তাঁদের হয়তো দু’একদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুরে সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ মিলিমিটার। আপাতত উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২ / ১ স্থানে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পর উত্তরের হিমেল বায়ু সক্রিয় হতে শুরু করেছে পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলে মেঘ কেটে যাওয়ার ফলে এ অঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা আগামী কয়েক দিন ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে এবং জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের শুরুতেই একটি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে বলে জানান তিনি।