আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের বৃহৎ শিল্পগ্রুপ আদানির সঙ্গে ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটি কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় নির্মিত এই কেন্দ্র থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। দীর্ঘ মেয়াদি এই চুক্তির পরতে পরতে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। সে হিসাবে বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবে বাংলাদেশের।
আদানির সঙ্গে পিডিবির করা চুক্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পুরো চুক্তিই এমনভাবে সাজানো, যাতে আদানি গ্রুপ সুবিধা পায়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতি ৩ মাস পর কত বিদ্যুৎ নেবে, তা আগেই ঘোষণা করতে হবে। যদি বাংলাদেশ এর চেয়ে কম বিদ্যুৎ নেয়, তাহলেও ঘোষিত পরিমাণের সমান দাম পরিশোধ করতে হবে। অথচ বাংলাদেশে যেসব বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, সেগুলোর কাছ থেকে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু বিদ্যুৎ নেয় পিডিবি। এ জন্য তিন মাস আগে চাহিদাও পাঠাতে হয় না।
চুক্তি অনুযায়ী, আদানি ইচ্ছা করলেই তৃতীয় পক্ষের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। তৃতীয় পক্ষের কাছে কেন্দ্রটি যদি বেশি দাম পায়, তাহলে তারা সেখানে বিদ্যুৎ বিক্রি করে দিলে ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও ভারতে বিদ্যুৎ বেশি প্রয়োজন হয় গ্রীষ্মকালে। এখন আদানি যদি গ্রীষ্মে ভারতে বিদ্যুৎ দেয় আর শীতে বাংলাদেশকে দেয়, তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে না।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত ১২ আগস্ট তাদের বিদ্যুৎ ক্রয়ের নীতিমালায় পরিবর্তন আনে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ভারতের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানগুলো আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ কিনতে পারবে।
আদানির কেন্দ্রটি ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াটের স্থাপিত ক্ষমতার। চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্র থেকে পিডিবি কখনোই ৩৪ শতাংশের নিচে বিদ্যুৎ নিতে পারবে না। বাংলাদেশ যদি কম বিদ্যুৎ নেয়, তাহলেও ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে যত কয়লা ব্যবহার করা হতো, তার পুরোটার দাম বাংলাদেশ আদানিকে দেবে। শুধু কয়লার দামই নয়, কয়লা পরিবহনের জাহাজভাড়া, বন্দরের ব্যয় ও কয়লার পরিবহনের অর্থও পাবে আদানি।
পটুয়াখালীর পায়রায় স্থাপিত সরকারি প্রতিষ্ঠান আরপিসিএল ও নরেনকোর ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪৯৩ দশমিক ৪৮ গ্রাম কয়লার দাম পাবে। অথচ একই পরিমাণ বিদ্যুতের জন্য আদানি পাবে ৫৫৫ দশমিক ৪৩ গ্রাম কয়লা। এতে বাড়তি কয়লার দাম বাবদ বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা বেশি নিয়ে যাবে আদানি।
অসম চুক্তির কারণে ক্যাপাসিটি পেমেন্টও বেশি দেওয়া হয়েছে আদানিকে। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের মধ্যে চারটি অংশ রয়েছে। এগুলো হলো পরিবর্তনশীল কেন্দ্র ভাড়া, স্থির কেন্দ্র ভাড়া, ইউএস সিপি ইনডেক্স (যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার) ও রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ। আদানির বিদ্যুতে ইউনিটপ্রতি শুধু ক্যাপাসিটি পেমেন্টই পড়বে প্রায় ৬ সেন্ট, যা দেশীয় মুদ্রায় ৭ টাকা ২০ পয়সা। সে হিসাবে বছরে আদানি শুধু কেন্দ্র ভাড়াই নেবে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের গ্যাসভিত্তিক ও তেলভিত্তিক বেসরকারি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের গড় ইউনিটপ্রতি ক্যাপাসিটি চার্জ ৯০ পয়সা থেকে ১ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত।
আদানির সঙ্গে চুক্তিতে কয়লার সিস্টেম লস ধরা হয়েছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ১ লাখ টন কয়লা পরিবহনের সময় ১ হাজার ১০০ টন নষ্ট হয়ে গেছে দাবি করে তার দাম নিতে পারবে আদানি। পায়রায় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ও রামপাল কেন্দ্রে সিস্টেম লসের বিধান রাখা হয়নি।
আদানি ভারতেই কয়লার দামে মিথ্যাচার করে
বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ব্যয়কে বলা হয় পাস-থ্রু। এর মানে হলো বাজারে কয়লা, গ্যাস বা তেলের দাম যত, ঠিক ততটুকুই বিল হিসেবে ক্রেতার কাছে দাবি করতে পারে। আদানির নিজস্ব কয়লাখনি রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়ায়। তারা কয়লার দাম সব সময় বাজারের চেয়ে বেশি দেখায়।
পিডিবির দুজন প্রকৌশলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভারতের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা ডিআরআই) ২০১৬-এর জুলাইয়ে ভারত সরকারের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, কয়লা আমদানিকারকেরা আমদানির ক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ বেশি দাম দেখিয়েছে। এ অর্থ তারা পাচার করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ঝুঁকি জেনেও বিদ্যুৎ বিভাগের সায়
বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদানির বিদ্যুৎ কিনতে সরকার ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) শেখ ফয়েজুল আমীনকে সদস্যসচিব করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটি আদানি গ্রুপের বিদ্যুতের দাম বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে বেশি বলে মত দেয়। এরপরও কমিটি ২৫ বছর মেয়াদে আদানির বিদ্যুৎ কেনার সুপারিশ করে। তবে এ চুক্তি বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের আওতায় করার পরামর্শ দেওয়া হয় কমিটির পক্ষ থেকে। এই আইন অনুযায়ী, আদানির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে দেশের কোনো আদালতে যাওয়া যাবে না। এ সময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন নসরুল হামিদ। তাঁর সঙ্গে গতকাল টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। আর সে সময় বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ছিলেন আহমেদ কায়কাউস। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।
পিডিবির সঙ্গে আদানির চুক্তি সই হয় ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর। তখন পিডিবির চেয়ারম্যান ছিলেন প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ। সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় খালিদ মাহমুদের। তিনি বলেন, ঘটনাটি বেশ আগের। অনেক দিন হয়ে গেছে। আমরা পিপিএ (পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি) করে থাকি আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে। ফলে চুক্তিতে বড় ধরনের অসংগতি থাকার কথা নয়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম টেলিফোনে আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আদানির চুক্তি বাতিল করতে হবে। এই চুক্তির সবখানেই বাংলাদেশের হার হয়েছে।’ অবিলম্বে আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবি জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের বৃহৎ শিল্পগ্রুপ আদানির সঙ্গে ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটি কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় নির্মিত এই কেন্দ্র থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। দীর্ঘ মেয়াদি এই চুক্তির পরতে পরতে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি। সে হিসাবে বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবে বাংলাদেশের।
আদানির সঙ্গে পিডিবির করা চুক্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পুরো চুক্তিই এমনভাবে সাজানো, যাতে আদানি গ্রুপ সুবিধা পায়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতি ৩ মাস পর কত বিদ্যুৎ নেবে, তা আগেই ঘোষণা করতে হবে। যদি বাংলাদেশ এর চেয়ে কম বিদ্যুৎ নেয়, তাহলেও ঘোষিত পরিমাণের সমান দাম পরিশোধ করতে হবে। অথচ বাংলাদেশে যেসব বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে, সেগুলোর কাছ থেকে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু বিদ্যুৎ নেয় পিডিবি। এ জন্য তিন মাস আগে চাহিদাও পাঠাতে হয় না।
চুক্তি অনুযায়ী, আদানি ইচ্ছা করলেই তৃতীয় পক্ষের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। তৃতীয় পক্ষের কাছে কেন্দ্রটি যদি বেশি দাম পায়, তাহলে তারা সেখানে বিদ্যুৎ বিক্রি করে দিলে ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও ভারতে বিদ্যুৎ বেশি প্রয়োজন হয় গ্রীষ্মকালে। এখন আদানি যদি গ্রীষ্মে ভারতে বিদ্যুৎ দেয় আর শীতে বাংলাদেশকে দেয়, তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে না।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত ১২ আগস্ট তাদের বিদ্যুৎ ক্রয়ের নীতিমালায় পরিবর্তন আনে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ভারতের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানগুলো আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ কিনতে পারবে।
আদানির কেন্দ্রটি ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াটের স্থাপিত ক্ষমতার। চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্র থেকে পিডিবি কখনোই ৩৪ শতাংশের নিচে বিদ্যুৎ নিতে পারবে না। বাংলাদেশ যদি কম বিদ্যুৎ নেয়, তাহলেও ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে যত কয়লা ব্যবহার করা হতো, তার পুরোটার দাম বাংলাদেশ আদানিকে দেবে। শুধু কয়লার দামই নয়, কয়লা পরিবহনের জাহাজভাড়া, বন্দরের ব্যয় ও কয়লার পরিবহনের অর্থও পাবে আদানি।
পটুয়াখালীর পায়রায় স্থাপিত সরকারি প্রতিষ্ঠান আরপিসিএল ও নরেনকোর ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪৯৩ দশমিক ৪৮ গ্রাম কয়লার দাম পাবে। অথচ একই পরিমাণ বিদ্যুতের জন্য আদানি পাবে ৫৫৫ দশমিক ৪৩ গ্রাম কয়লা। এতে বাড়তি কয়লার দাম বাবদ বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা বেশি নিয়ে যাবে আদানি।
অসম চুক্তির কারণে ক্যাপাসিটি পেমেন্টও বেশি দেওয়া হয়েছে আদানিকে। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের মধ্যে চারটি অংশ রয়েছে। এগুলো হলো পরিবর্তনশীল কেন্দ্র ভাড়া, স্থির কেন্দ্র ভাড়া, ইউএস সিপি ইনডেক্স (যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার) ও রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ। আদানির বিদ্যুতে ইউনিটপ্রতি শুধু ক্যাপাসিটি পেমেন্টই পড়বে প্রায় ৬ সেন্ট, যা দেশীয় মুদ্রায় ৭ টাকা ২০ পয়সা। সে হিসাবে বছরে আদানি শুধু কেন্দ্র ভাড়াই নেবে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের গ্যাসভিত্তিক ও তেলভিত্তিক বেসরকারি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের গড় ইউনিটপ্রতি ক্যাপাসিটি চার্জ ৯০ পয়সা থেকে ১ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত।
আদানির সঙ্গে চুক্তিতে কয়লার সিস্টেম লস ধরা হয়েছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ১ লাখ টন কয়লা পরিবহনের সময় ১ হাজার ১০০ টন নষ্ট হয়ে গেছে দাবি করে তার দাম নিতে পারবে আদানি। পায়রায় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ও রামপাল কেন্দ্রে সিস্টেম লসের বিধান রাখা হয়নি।
আদানি ভারতেই কয়লার দামে মিথ্যাচার করে
বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ব্যয়কে বলা হয় পাস-থ্রু। এর মানে হলো বাজারে কয়লা, গ্যাস বা তেলের দাম যত, ঠিক ততটুকুই বিল হিসেবে ক্রেতার কাছে দাবি করতে পারে। আদানির নিজস্ব কয়লাখনি রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়ায়। তারা কয়লার দাম সব সময় বাজারের চেয়ে বেশি দেখায়।
পিডিবির দুজন প্রকৌশলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভারতের শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ (ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা ডিআরআই) ২০১৬-এর জুলাইয়ে ভারত সরকারের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, কয়লা আমদানিকারকেরা আমদানির ক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ বেশি দাম দেখিয়েছে। এ অর্থ তারা পাচার করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ঝুঁকি জেনেও বিদ্যুৎ বিভাগের সায়
বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদানির বিদ্যুৎ কিনতে সরকার ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) শেখ ফয়েজুল আমীনকে সদস্যসচিব করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটি আদানি গ্রুপের বিদ্যুতের দাম বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ে বেশি বলে মত দেয়। এরপরও কমিটি ২৫ বছর মেয়াদে আদানির বিদ্যুৎ কেনার সুপারিশ করে। তবে এ চুক্তি বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের আওতায় করার পরামর্শ দেওয়া হয় কমিটির পক্ষ থেকে। এই আইন অনুযায়ী, আদানির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে দেশের কোনো আদালতে যাওয়া যাবে না। এ সময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন নসরুল হামিদ। তাঁর সঙ্গে গতকাল টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। আর সে সময় বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ছিলেন আহমেদ কায়কাউস। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।
পিডিবির সঙ্গে আদানির চুক্তি সই হয় ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর। তখন পিডিবির চেয়ারম্যান ছিলেন প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ। সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় খালিদ মাহমুদের। তিনি বলেন, ঘটনাটি বেশ আগের। অনেক দিন হয়ে গেছে। আমরা পিপিএ (পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি) করে থাকি আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে। ফলে চুক্তিতে বড় ধরনের অসংগতি থাকার কথা নয়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম টেলিফোনে আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আদানির চুক্তি বাতিল করতে হবে। এই চুক্তির সবখানেই বাংলাদেশের হার হয়েছে।’ অবিলম্বে আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবি জানান তিনি।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে