জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সংবাদপত্র ডিক্লারেশন বাতিল অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল। তখন ঢাকা থেকে শুধু চারটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হয়। বাকি পত্রিকাগুলোর ডিক্লারেশন বাতিল হলো। সঙ্গে থাকল ১২২টি সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা।
যে দৈনিক পত্রিকাগুলো প্রকাশের অনুমতি পেল, সেগুলো হলো দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, দ্য বাংলাদেশ অবজারভার, দ্য বাংলাদেশ টাইমস। এতে মনে হতে পারে, অনেক সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছিলেন। আসলে চাকরিচ্যুত বেশির ভাগ সাংবাদিক
পেয়েছিলেন সরকারি চাকরি। যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁরা বেতন পাচ্ছিলেন।
স্বাধীনতার পর ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল সংবাদপত্র। সংবাদপত্রগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য সাংবাদিকদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন। এই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন হলিডে সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান। আরও ছিলেন সাংবাদিক শহীদুল হক এবং রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব তোয়াব খান।
১৫ আগস্ট পর্যন্ত পত্রিকাগুলোয় যেভাবে যে খবর ছাপা হয়েছে, ১৬ তারিখে এসেই তা পরিবর্তিত হয়ে গেছে। আব্দুল গনি হাজারীর সম্পাদনায় বাংলাদেশ টাইমসে ১৬ আগস্ট ছাপা হলো আট কলামের প্রধান শিরোনাম—‘মোশতাক অ্যাসিউমস প্রেসিডেন্সি’।
শোল্ডারে লেখা ছিল, ‘মার্শাল ল প্রক্লেইমড ইন দ্য কান্ট্রি: মুজিব কিলড’। ‘অন দ্য থ্রেশলড অব দ্য নিউ এরা’ নামে প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে ছিল সম্পাদকীয়।
দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক ছিলেন নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী। ১৬ আগস্ট সেখানে প্রকাশিত প্রধান সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি উচ্ছেদ: খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনীর শাসনক্ষমতা গ্রহণ’।
আর এই পত্রিকার ১৫ তারিখের প্রথম পাতায় প্রথম দুই কলামে ছাপা হয়েছিল ‘বঙ্গবন্ধু আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করিবেন’।এরপর তিন কলামে ছাপা হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক চুং হির বিশেষ দূতের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলোচনার ছবি। সেদিন ইত্তেফাক প্রকাশ করেছিল বিশেষ ক্রোড়পত্র।
পরদিন তাদের খবরে সবকিছু ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল। যে প্রধান শিরোনামে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ‘শেখ মুজিবের’ নিহত হওয়ার খবর, সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু’ উধাও হয়ে গিয়েছিলেন, তিনি হয়ে গিয়েছিলেন শুধুই ‘শেখ মুজিব’। আর হ্যাঁ, খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলা দরকার—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, সে কথা চেপে গিয়েছিল ইত্তেফাক।
প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছিল বিশেষ সম্পাদকীয়। সে সম্পাদকীয়র শিরোনাম ছিল ‘ঐতিহাসিক নবযাত্রা’। মোশতাক নাকি ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন দেশ ও জাতির ‘ঐতিহাসিক প্রয়োজন পূরণ’ করার জন্য।
দৈনিক বাংলার দিকে চোখ রাখি। ১৫ আগস্ট যে পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা অবদান ও কর্মসূচির ব্যাপারে সংবাদ ছাপা হয়েছিল। দৈনিক বাংলার সম্পাদক ছিলেন এহতেশাম হায়দার চৌধুরী। ‘খোন্দকার মুশতাক নয়া রাষ্ট্রপতি’—এই ছিল দৈনিক বাংলার শিরোনাম। তার শোল্ডারে ছিল ‘শেখ মুজিব নিহত: সামরিক আইন ও সান্ধ্য আইন জারি: সশস্ত্র বাহিনীসমূহের আনুগত্য প্রকাশ’।
হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধু এক দিনের ব্যবধানে হয়ে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব।
প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হওয়া সম্পাদকীয়র শিরোনাম ছিল ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’। সেটা নিশ্চয় বিপথগামী সেনাসদস্যরা লেখেননি।লিখেছিলেন কোনো সাংবাদিকই।
দৈনিক বাংলায়ও বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়া নিয়ে আলাদা কোনো সংবাদ ছাপা হয়নি। প্রধান সংবাদেও বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার নির্মম ঘটনা গুরুত্ব পায়নি।
ওবায়দুল হক ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক। ১৫ আগস্ট সেই পত্রিকায় আওয়ামী নেতা মনসুর আলীকে নিয়ে ছিল প্রতিবেদন। এ ছাড়া বঙ্গভবনে বাকশালের এক অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ এবং তৎকালীন বাকশাল সেক্রেটারি শেখ মনি, জিল্লুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য নিয়ে হয়েছিল আলাদা প্রতিবেদন। ১৬ আগস্ট সেই পত্রিকার প্রথম পাতায় যে সম্পাদকীয় লেখা হয়, তার শিরোনাম ছিল ‘হিস্টরিক্যাল নেসেসিটি’।
প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘মোশতাক বিকামস প্রেসিডেন্ট’।
সাংবাদিকেরা অনেক সময়ই তাঁদের যে মূল কাজ—সত্য প্রকাশ, তা থেকে বিরত থাকেন। ১৯৭৫ সালের পালাবদলের সময়ও তাঁরা তাঁদের মূল কাজটি করতে পেরেছেন কি না, তার নমুনাই এখানে দৃশ্যমান।
১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সংবাদপত্র ডিক্লারেশন বাতিল অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল। তখন ঢাকা থেকে শুধু চারটি জাতীয় দৈনিক প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হয়। বাকি পত্রিকাগুলোর ডিক্লারেশন বাতিল হলো। সঙ্গে থাকল ১২২টি সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা।
যে দৈনিক পত্রিকাগুলো প্রকাশের অনুমতি পেল, সেগুলো হলো দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, দ্য বাংলাদেশ অবজারভার, দ্য বাংলাদেশ টাইমস। এতে মনে হতে পারে, অনেক সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছিলেন। আসলে চাকরিচ্যুত বেশির ভাগ সাংবাদিক
পেয়েছিলেন সরকারি চাকরি। যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁরা বেতন পাচ্ছিলেন।
স্বাধীনতার পর ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল সংবাদপত্র। সংবাদপত্রগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য সাংবাদিকদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন। এই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন হলিডে সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান। আরও ছিলেন সাংবাদিক শহীদুল হক এবং রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব তোয়াব খান।
১৫ আগস্ট পর্যন্ত পত্রিকাগুলোয় যেভাবে যে খবর ছাপা হয়েছে, ১৬ তারিখে এসেই তা পরিবর্তিত হয়ে গেছে। আব্দুল গনি হাজারীর সম্পাদনায় বাংলাদেশ টাইমসে ১৬ আগস্ট ছাপা হলো আট কলামের প্রধান শিরোনাম—‘মোশতাক অ্যাসিউমস প্রেসিডেন্সি’।
শোল্ডারে লেখা ছিল, ‘মার্শাল ল প্রক্লেইমড ইন দ্য কান্ট্রি: মুজিব কিলড’। ‘অন দ্য থ্রেশলড অব দ্য নিউ এরা’ নামে প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে ছিল সম্পাদকীয়।
দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক ছিলেন নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী। ১৬ আগস্ট সেখানে প্রকাশিত প্রধান সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি উচ্ছেদ: খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনীর শাসনক্ষমতা গ্রহণ’।
আর এই পত্রিকার ১৫ তারিখের প্রথম পাতায় প্রথম দুই কলামে ছাপা হয়েছিল ‘বঙ্গবন্ধু আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করিবেন’।এরপর তিন কলামে ছাপা হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক চুং হির বিশেষ দূতের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আলোচনার ছবি। সেদিন ইত্তেফাক প্রকাশ করেছিল বিশেষ ক্রোড়পত্র।
পরদিন তাদের খবরে সবকিছু ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল। যে প্রধান শিরোনামে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ‘শেখ মুজিবের’ নিহত হওয়ার খবর, সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু’ উধাও হয়ে গিয়েছিলেন, তিনি হয়ে গিয়েছিলেন শুধুই ‘শেখ মুজিব’। আর হ্যাঁ, খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলা দরকার—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, সে কথা চেপে গিয়েছিল ইত্তেফাক।
প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছিল বিশেষ সম্পাদকীয়। সে সম্পাদকীয়র শিরোনাম ছিল ‘ঐতিহাসিক নবযাত্রা’। মোশতাক নাকি ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন দেশ ও জাতির ‘ঐতিহাসিক প্রয়োজন পূরণ’ করার জন্য।
দৈনিক বাংলার দিকে চোখ রাখি। ১৫ আগস্ট যে পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা অবদান ও কর্মসূচির ব্যাপারে সংবাদ ছাপা হয়েছিল। দৈনিক বাংলার সম্পাদক ছিলেন এহতেশাম হায়দার চৌধুরী। ‘খোন্দকার মুশতাক নয়া রাষ্ট্রপতি’—এই ছিল দৈনিক বাংলার শিরোনাম। তার শোল্ডারে ছিল ‘শেখ মুজিব নিহত: সামরিক আইন ও সান্ধ্য আইন জারি: সশস্ত্র বাহিনীসমূহের আনুগত্য প্রকাশ’।
হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধু এক দিনের ব্যবধানে হয়ে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব।
প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হওয়া সম্পাদকীয়র শিরোনাম ছিল ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’। সেটা নিশ্চয় বিপথগামী সেনাসদস্যরা লেখেননি।লিখেছিলেন কোনো সাংবাদিকই।
দৈনিক বাংলায়ও বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়া নিয়ে আলাদা কোনো সংবাদ ছাপা হয়নি। প্রধান সংবাদেও বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার নির্মম ঘটনা গুরুত্ব পায়নি।
ওবায়দুল হক ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক। ১৫ আগস্ট সেই পত্রিকায় আওয়ামী নেতা মনসুর আলীকে নিয়ে ছিল প্রতিবেদন। এ ছাড়া বঙ্গভবনে বাকশালের এক অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ এবং তৎকালীন বাকশাল সেক্রেটারি শেখ মনি, জিল্লুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য নিয়ে হয়েছিল আলাদা প্রতিবেদন। ১৬ আগস্ট সেই পত্রিকার প্রথম পাতায় যে সম্পাদকীয় লেখা হয়, তার শিরোনাম ছিল ‘হিস্টরিক্যাল নেসেসিটি’।
প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘মোশতাক বিকামস প্রেসিডেন্ট’।
সাংবাদিকেরা অনেক সময়ই তাঁদের যে মূল কাজ—সত্য প্রকাশ, তা থেকে বিরত থাকেন। ১৯৭৫ সালের পালাবদলের সময়ও তাঁরা তাঁদের মূল কাজটি করতে পেরেছেন কি না, তার নমুনাই এখানে দৃশ্যমান।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে