বিভুরঞ্জন সরকার ও মাসুদ রানা
আজকের পত্রিকা: এ পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া হবে?
হাসানুল হক ইনু: চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটেছে, এর একটা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক দিক আছে। তাই এ পরিস্থিতি সামাল ত্রিমাত্রিক দিক থেকে হতে হবে। যে আন্দোলনের সূত্রপাত শিক্ষাঙ্গনকে কেন্দ্র করে, সেই শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনাই হবে প্রথম কাজ। এরপর শিক্ষাঙ্গনে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে যাতে আর সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ না করে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের কোটা নিয়ে যে মৌলিক দাবি, সেটার নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি দাবিগুলো আমলে নিয়ে আমলা দিয়ে মোকাবিলা না করে রাজনীতিবিদদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অব্যাহত সংলাপ জারি রাখতে হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা সমঝোতায় পৌঁছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকে নিয়ে আসতে হবে। সে জন্য শিক্ষাঙ্গনে কোনো পুলিশের অবস্থান রাখা যাবে না।
এখন যে ছাত্রসংগঠনগুলো সক্রিয় আছে, এ পরিস্থিতির জন্য কিছুদিনের জন্য তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট বরাদ্দ নিয়ে যে বিরোধ, সেটা প্রশাসনের মাধ্যমে নিরসন করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এ ঘটনার কারণে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংঘর্ষ হয়েছে, সেটা মিটমাট করার জন্য কর্তৃপক্ষকে বসে এমন একটা ব্যবস্থা নিতে হবে, পরবর্তী সময়ে যাতে আর সংঘর্ষ না ঘটে। কোনো প্রতিহিংসার রেশ যেন না থাকে।যেসব শিক্ষার্থী মারা গেছে, তালিকা করে তাদের পরিবারের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার ব্যবস্থা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: ব্লক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করার কারণে কি ক্ষোভ বাড়ছে?
হাসানুল হক ইনু: ক্ষোভ অবশ্যই বাড়ছে। আইনমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কথামতো, শিক্ষার্থীদের কোনো মামলায় জড়ানো হবে না। যেহেতু তারা কোনো তাণ্ডব বা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিল না। কিন্তু তাদের নামে যেসব মামলা করা হয়েছে, সেসব থেকে নাম ঘোষণা দিয়ে প্রত্যাহার করতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিতে হবে, কোনো বাড়িতে ব্লক রেইড দেওয়ার সময় কার্ডধারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাড়া ব্লক রেইডে গ্রেপ্তার করা ঠিক হবে না। আর রাস্তাঘাটে শিক্ষার্থীদের হয়রানিও বন্ধ করা দরকার।
আজকের পত্রিকা: জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হলেই কি তাদের নির্মূল করা যাবে?
হাসানুল হক ইনু: যেসব জঙ্গি সংগঠনকে এর আগে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তারা তো এখন সক্রিয় না হয়ে সংকুচিত হয়ে গেছে। অনেকের এখন আর কোনো কার্যক্রম সেভাবে নেই। যখন কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, তখন তারা মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। তারা এসব করলে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজা দেওয়া হবে। নিষিদ্ধ সংগঠন মানে তারা অভিযুক্ত। তরুণ সমাজকে ভুল বুঝিয়ে শিবির করানো হয়। এতে তারা নিবৃত্ত হবে। প্রথম কথা হলো, শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না, বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ করা তো প্রশাসনিক পদক্ষেপ। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে সাজা দিতে হবে। আবার যারা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মওদুদিবাদ প্রচার করে, তাদের গ্রেপ্তার করে কোমর ভেঙে দিতে হবে। ফলে জামায়াত-শিবির গ্রামগঞ্জে কোনো ধরনের তৎপরতা চালাতে পারবে না। এভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে হবে। তাদের যত প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদের নিষিদ্ধ করলে বিদেশিরাও তাদের পক্ষে ওকালতি করতে পারবে না। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধেই ছোবল মারে। গণতন্ত্রকে ব্যবহার করার এই যে চক্রান্ত, সে চক্রান্তও স্তব্ধ হয়ে যাবে।
আজকের পত্রিকা: ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও কেন সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হলো না?
হাসানুল হক ইনু: আওয়ামী লীগের শাসনামলে অতীতের সামরিক শাসনের সাম্প্রদায়িকতার কিছু চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিচারকাজও সম্পন্ন করা গেছে। সাম্প্রদায়িকতার নিরসন এবং জঙ্গিবাদী অপৎপরতা রোধে কিছু সাফল্যও অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে পরিষ্কারভাবে বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে যেটা মোল্লাতন্ত্র হোক বা অন্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে কিছু দ্বৈত নীতি অনুসরণ করার ফলে কোনো লাভ হয়নি। বরং সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রসার ঘটেছে। এটা আমাদের জাতীয় জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সমাজে নানা ক্ষেত্রে বৈষম্য আছে। এ বৈষম্য কেন দূর করা গেল না?
হাসানুল হক ইনু: এ মুহূর্তে আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো ধনবৈষম্য, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মধ্যে বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্য—এ ধরনের নানা বৈষম্য দূর করে একটা সমতার বাংলাদেশ নির্মাণ করা। এটা হলো আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। বৈষম্য দূর করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘরে ঘরে পৌঁছানোর কাজটা হলো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। শুধু দারিদ্র্য দূর করলেই হবে না, বৈষম্যও দূর করতে হবে। আর একটা হলো সুশাসনের চ্যালেঞ্জ। দলবাজি, দুর্নীতি থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করে সুশাসনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ মুহূর্তে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সুশাসনের অভাব, দুর্নীতির প্রসার, ক্ষমতার প্রভাব ইত্যাদির ব্যাপক বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে মুখ বা দল দেখে প্রশাসন চলতে পারে না। দেশকে আইনের মাধ্যমে পরিচালিত করতে হবে। কে ছাত্রলীগ বা কে জাসদ করে—এটা বড় কথা হতে পারে না। আইনের মাধ্যমে চাকরি, আইনের মাধ্যমে পদোন্নতি, আইনের মাধ্যমে ব্যবসা না করা গেলে সেখানে বিচ্যুতি ঘটে। তাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এখন সরকারের কাজ হওয়া উচিত, একটু পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে আসার পর সুশাসনের জন্য দুর্নীতি, দলবাজি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করা। শুধু পদক্ষেপ নয়, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আগে ঘর পরিষ্কার করতে হবে, তারপর বাইরের দিকে তাকাতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আওয়ামী লীগ কি সেসব গ্রহণে দৃঢ় হবে?
হাসানুল হক ইনু: এ ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী তো আমি করতে পারি না। তবে এটুকু বলতে পারি, পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকে উঠে দাঁড়াতে হবে। জামায়াত-শিবির হলো সরকারের বাইরের শত্রু। তাদের প্রতিরোধে করতে আপসহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের ভেতরের যে ত্রুটি-বিচ্যুতি, ভুলগুলোকে সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই। দাবা খেলায় রাজাকে বাঁচাতে হাতি-ঘোড়াকে বিসর্জন দিতে হয়। আমার মনে হয়, একটা সংস্কারে হাত দিতে হবে, যেখানে ঘর পরিষ্কারের জন্য মন্ত্রী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত হাতি-ঘোড়াকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
আজকের পত্রিকা: এ পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া হবে?
হাসানুল হক ইনু: চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটেছে, এর একটা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক দিক আছে। তাই এ পরিস্থিতি সামাল ত্রিমাত্রিক দিক থেকে হতে হবে। যে আন্দোলনের সূত্রপাত শিক্ষাঙ্গনকে কেন্দ্র করে, সেই শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনাই হবে প্রথম কাজ। এরপর শিক্ষাঙ্গনে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে যাতে আর সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ না করে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের কোটা নিয়ে যে মৌলিক দাবি, সেটার নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকি দাবিগুলো আমলে নিয়ে আমলা দিয়ে মোকাবিলা না করে রাজনীতিবিদদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অব্যাহত সংলাপ জারি রাখতে হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা সমঝোতায় পৌঁছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকে নিয়ে আসতে হবে। সে জন্য শিক্ষাঙ্গনে কোনো পুলিশের অবস্থান রাখা যাবে না।
এখন যে ছাত্রসংগঠনগুলো সক্রিয় আছে, এ পরিস্থিতির জন্য কিছুদিনের জন্য তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট বরাদ্দ নিয়ে যে বিরোধ, সেটা প্রশাসনের মাধ্যমে নিরসন করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এ ঘটনার কারণে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংঘর্ষ হয়েছে, সেটা মিটমাট করার জন্য কর্তৃপক্ষকে বসে এমন একটা ব্যবস্থা নিতে হবে, পরবর্তী সময়ে যাতে আর সংঘর্ষ না ঘটে। কোনো প্রতিহিংসার রেশ যেন না থাকে।যেসব শিক্ষার্থী মারা গেছে, তালিকা করে তাদের পরিবারের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার ব্যবস্থা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: ব্লক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করার কারণে কি ক্ষোভ বাড়ছে?
হাসানুল হক ইনু: ক্ষোভ অবশ্যই বাড়ছে। আইনমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কথামতো, শিক্ষার্থীদের কোনো মামলায় জড়ানো হবে না। যেহেতু তারা কোনো তাণ্ডব বা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিল না। কিন্তু তাদের নামে যেসব মামলা করা হয়েছে, সেসব থেকে নাম ঘোষণা দিয়ে প্রত্যাহার করতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিতে হবে, কোনো বাড়িতে ব্লক রেইড দেওয়ার সময় কার্ডধারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাড়া ব্লক রেইডে গ্রেপ্তার করা ঠিক হবে না। আর রাস্তাঘাটে শিক্ষার্থীদের হয়রানিও বন্ধ করা দরকার।
আজকের পত্রিকা: জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হলেই কি তাদের নির্মূল করা যাবে?
হাসানুল হক ইনু: যেসব জঙ্গি সংগঠনকে এর আগে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তারা তো এখন সক্রিয় না হয়ে সংকুচিত হয়ে গেছে। অনেকের এখন আর কোনো কার্যক্রম সেভাবে নেই। যখন কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, তখন তারা মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। তারা এসব করলে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজা দেওয়া হবে। নিষিদ্ধ সংগঠন মানে তারা অভিযুক্ত। তরুণ সমাজকে ভুল বুঝিয়ে শিবির করানো হয়। এতে তারা নিবৃত্ত হবে। প্রথম কথা হলো, শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না, বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিষিদ্ধ করা তো প্রশাসনিক পদক্ষেপ। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে সাজা দিতে হবে। আবার যারা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মওদুদিবাদ প্রচার করে, তাদের গ্রেপ্তার করে কোমর ভেঙে দিতে হবে। ফলে জামায়াত-শিবির গ্রামগঞ্জে কোনো ধরনের তৎপরতা চালাতে পারবে না। এভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে হবে। তাদের যত প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদের নিষিদ্ধ করলে বিদেশিরাও তাদের পক্ষে ওকালতি করতে পারবে না। তারা গণতন্ত্রের কথা বলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধেই ছোবল মারে। গণতন্ত্রকে ব্যবহার করার এই যে চক্রান্ত, সে চক্রান্তও স্তব্ধ হয়ে যাবে।
আজকের পত্রিকা: ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও কেন সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হলো না?
হাসানুল হক ইনু: আওয়ামী লীগের শাসনামলে অতীতের সামরিক শাসনের সাম্প্রদায়িকতার কিছু চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিচারকাজও সম্পন্ন করা গেছে। সাম্প্রদায়িকতার নিরসন এবং জঙ্গিবাদী অপৎপরতা রোধে কিছু সাফল্যও অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে পরিষ্কারভাবে বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে যেটা মোল্লাতন্ত্র হোক বা অন্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে কিছু দ্বৈত নীতি অনুসরণ করার ফলে কোনো লাভ হয়নি। বরং সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রসার ঘটেছে। এটা আমাদের জাতীয় জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সমাজে নানা ক্ষেত্রে বৈষম্য আছে। এ বৈষম্য কেন দূর করা গেল না?
হাসানুল হক ইনু: এ মুহূর্তে আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো ধনবৈষম্য, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মধ্যে বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্য—এ ধরনের নানা বৈষম্য দূর করে একটা সমতার বাংলাদেশ নির্মাণ করা। এটা হলো আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। বৈষম্য দূর করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘরে ঘরে পৌঁছানোর কাজটা হলো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। শুধু দারিদ্র্য দূর করলেই হবে না, বৈষম্যও দূর করতে হবে। আর একটা হলো সুশাসনের চ্যালেঞ্জ। দলবাজি, দুর্নীতি থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করে সুশাসনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ মুহূর্তে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সুশাসনের অভাব, দুর্নীতির প্রসার, ক্ষমতার প্রভাব ইত্যাদির ব্যাপক বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে মুখ বা দল দেখে প্রশাসন চলতে পারে না। দেশকে আইনের মাধ্যমে পরিচালিত করতে হবে। কে ছাত্রলীগ বা কে জাসদ করে—এটা বড় কথা হতে পারে না। আইনের মাধ্যমে চাকরি, আইনের মাধ্যমে পদোন্নতি, আইনের মাধ্যমে ব্যবসা না করা গেলে সেখানে বিচ্যুতি ঘটে। তাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এখন সরকারের কাজ হওয়া উচিত, একটু পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে আসার পর সুশাসনের জন্য দুর্নীতি, দলবাজি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করা। শুধু পদক্ষেপ নয়, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আগে ঘর পরিষ্কার করতে হবে, তারপর বাইরের দিকে তাকাতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আওয়ামী লীগ কি সেসব গ্রহণে দৃঢ় হবে?
হাসানুল হক ইনু: এ ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী তো আমি করতে পারি না। তবে এটুকু বলতে পারি, পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকে উঠে দাঁড়াতে হবে। জামায়াত-শিবির হলো সরকারের বাইরের শত্রু। তাদের প্রতিরোধে করতে আপসহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের ভেতরের যে ত্রুটি-বিচ্যুতি, ভুলগুলোকে সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। আমি একটা উদাহরণ দিতে চাই। দাবা খেলায় রাজাকে বাঁচাতে হাতি-ঘোড়াকে বিসর্জন দিতে হয়। আমার মনে হয়, একটা সংস্কারে হাত দিতে হবে, যেখানে ঘর পরিষ্কারের জন্য মন্ত্রী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত হাতি-ঘোড়াকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে