ইশতিয়াক হাসান
২০২০-এর ডিসেম্বর। বান্দরবানের বগা লেক থেকে কেওক্রাডাং যাচ্ছিলাম হেঁটে। পথে দার্জিলিং পাড়ায় পৌঁছানোর বেশ কতকটা আগে উঁচু এক পাহাড় পড়ে। হাঁপাতে হাঁপাতে ওটায় উঠে পড়লাম। সেখানে বমদের কয়েকটা ছাপড়া দোকান। অনেকটা পথ হেঁটে, পাহাড় বেয়ে ক্লান্ত পর্যটকদের কাছে ফল ও এটা-সেটা বিক্রি করেন বমরা। এ রকম একটি দোকানের বেঞ্চে বসে লেবুর শরবত পান করতে করতে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলাম। এ সময় সঙ্গে করে আনা বাঘ, চিতা বাঘ, মেঘলা চিতাসহ বিভিন্ন প্রাণীর ছবি দেখাতে লাগলাম বম নারী-পুরুষদের। একপর্যায়ে একটা ছবি দেখিয়ে একজন বললেন, লতা বাঘ আছে এদিককার পাহাড়ে। অবাক হলাম, স্থানীয় বম নামের পাশাপাশি লতা বাঘ নামেও একে তাঁরা চেনেন দেখে।
অবশ্য লতা বাঘ নামটির সঙ্গে পরিচিত এই ভ্রমণেরও এক যুগ আগে। সালটা ২০০৭-০৮। বন্যপ্রাণীপ্রেমী সরওয়ার পাঠান ভাইয়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের বন-পাহাড়ে। কয়েকটা দিন রাম পাহাড়, সীতা পাহাড় এবং কাপ্তাই মুখ খালের জঙ্গল, ঝিরিতে দারুণ রোমাঞ্চকর সময় কাটল। তখনই ওখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে শুনি লতা বাঘের গল্প। গাছে চড়ায় নাকি ওদের জুড়ি মেলা ভার। বর্ণনা শুনে অনুমান করলাম, জন্তুটা মেঘলা চিতা বা গেছো বাঘ হতে পারে। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান ভাই কাপ্তাইয়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে মেঘলা চিতার ছবিও পান।
তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও প্রিয় এই প্রাণীকে এখন পর্যন্ত প্রকৃতিতে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। দেখেছি বন্দী অবস্থায়, কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এবং ভারতের দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায়।
আজ ৪ আগস্ট। বিশ্ব মেঘলা চিতা দিবস। মেঘলা চিতা নিয়ে পুরোনো দিনের এবং এখনকার আরও অনেক গল্পই হবে। তবে এর আগে বরং সংক্ষেপে জেনে নেই, সে দেখতে কেমন।
গায়ের রং ধূসর থেকে মেটে বাদামি। শরীরে মেঘের মতো ছোপ ছোপ। তাই নাম ক্লাউডেড ল্যাপার্ড বা মেঘলা চিতা। অবশ্য আরও নানা নাম আছে প্রাণীটির। গেছো বাঘ, মেঘা বাঘ, লাম চিতা ইত্যাদি। ওজন ১৮-২০ কেজি। লম্বায় তিন ফুট বা তার বেশি। প্রায় শরীরের সমান লেজটি ভারী সুন্দর। বৃক্ষচর মেঘলা চিতাদের গাছে গাছে কাটে সময়। গাছে চলাফেরার সময় লম্বা লেজটি শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে কাজে লাগে। দিন-রাতের একটা বড় সময় মেঘলা চিতাদের পায়ের পাতা বিড়াল গোত্রের অন্য জন্তুদের মতো নরম নয়, শক্ত।
গাছে বেশি সময় থাকার কারণে এদের প্রিয় শিকার বানর। কখনো ওপর থেকে হরিণ বা অন্য কোনো বন্য প্রাণীর ওপর লাফিয়ে পড়ে আচমকা। গাছ থেকে নামার সময় মাথা থাকে নিচের দিকে।
একসময় প্রাণিবিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে বুঝি বা মেঘলা চিতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তার পরই এদের বেশ কয়েকটিকে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তক ঘেঁটে যদ্দুর জেনেছি, ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে দুটি লাম চিতার বাচ্চা ধরা পড়ে। ২০০৫ সালে পাওয়া যায় ময়মনসিংহের গারো পাহাড়ে। ২০০৯ সালে রাঙামাটির এক পাহাড়ে দুটি বাচ্চা নিয়ে একটি মা লাম চিতা ঘুরে বেড়াচ্ছিল। স্থানীয়রা তাড়া করলে একটি বাচ্চা নিয়ে মা পালাতে পারলেও অপর বাচ্চাটি ধরা পড়ে। শুনেছি পরে ওই বাচ্চাকে আবার বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বান্দরবানের থানচি-আলীকদম এলাকায় সাঙ্গু-মাতামুহুরী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ওখানকার খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করি। বছর দশেক আগের কথা। বান্দরবানের গহিনে বড় একটি ভ্রমণ শেষে ফিরে পর্বতারোহী ও বনপ্রেমী সালেহীন আরশাদী কথা প্রসঙ্গে জানায়, আন্ধারমানিকে যে পাড়াটায় উঠেছিল, সেখানের এক বাড়িতে একটা মৃত প্রাণীর চামড়া দেখে চিতা বাঘ মনে করে ছবি তুলে এনেছে। ওরা সেখানে পৌঁছার দিন কয়েক আগেই নাকি শিকার করা হয়েছে। অনুরোধ করতেই ছবিটা পাঠিয়ে দিল মেইল করে। দেখেই সন্দেহ হয়, তার পরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাঠাই অধ্যাপক মনিরুল খানকে। যা ভেবেছিলাম তাই, ওটা একটা লাম চিতার চামড়া।
রাঙামাটির সাজেক-কাসালংয়ের পাশেই ভারতের ডামপা টাইগার রিজার্ভ। আমার জানামতে, পৃথিবীর যেসব অরণ্যে মেঘলা চিতার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে ডামপা উল্লেখযোগ্য। কাসালং রিজার্ভ ফরেস্ট ও সাজেকের পাহাড়ে হঠাৎ হঠাৎ মেঘলা চিতার দেখা পাওয়ার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কাসালংয়ের জঙ্গলে যে এরা এখনো মোটামুটি সংখ্যায় আছে, এর প্রমাণ ক্যামেরা ট্র্যাপে বারবার এদের বন্দী হওয়া। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ের খণ্ড বনগুলো করিডরের মাধ্যমে জোড়া লাগানোর বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে বন বিভাগ। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইইউসিএনকে। এই সমীক্ষার অংশ হিসেবেই অন্য গবেষক, বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাসালংয়ের গহিন অরণ্যে যান মনিরুল খান। তখন ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়ে মেঘলা চিতা।
এদিকে বন্যপ্রাণী গবেষক এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমা জানিয়েছেন, গত জুনেও কাসালংয়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে মেঘলা চিতার ছবি ধরা পড়েছে। একবার নয়, কয়েকবারই তাঁদের পাতা ক্যামেরা ট্র্যাপে বন্দী হয়েছে আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণী। এখনো বাংলাদেশের অনেক বনের তুলনায় কাসালংয়ে মেঘলা চিতা ভালো সংখ্যায় থাকতে পারে বলে অনুমান সুপ্রিয় চাকমার।
পাহাড়ি জঙ্গল মেঘলা চিতাদের বেশ প্রিয়। এমনকি হিমালয়ের ৯ হাজার ফুট উচ্চতায়ও দেখা মিলেছে এদের। তবে ম্যানগ্রোভ বনেও বাস করার রেকর্ড আছে আশ্চর্য সুন্দর এই জন্তুর। ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে মেঘলা চিতারা সুন্দর মানিয়ে নিয়েছে।
এবার একটু সিলেটের জঙ্গলের দিকে নজর দিই। একসময় সিলেট অঞ্চলে লাম চিতারা সংখ্যায় বেশ ছিল, তাতে সন্দেহ নেই। ছোটবেলায় হবিগঞ্জে নানাবাড়িতে গেলে বিশাল লোহাগড়া বাঘ, মাঝারি আকারের ফুলেশ্বরীসহ নানা ধরনের বাঘের গল্প শুনতাম। পরে জানতে পারি, এই ফুলেশ্বরী আসলে গেছো বাঘ বা লাম চিতাই। মুক্তাগাছার জমিদার ব্রজেন্দ্রনারায়ণ আচার্য চৌধুরী তাঁর বই ‘শিকার ও শিকারি’তে লিখেছেন ফুলেশ্বরীর কথা। সেখানেও তিনি এর গাছে চড়ায় দক্ষতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। কোথাও কোথাও অবশ্য চিতা বাঘকেও ফুলেশ্বরী বলা হয় বলে শুনেছি।
কর্নেল এইচ এস উড ছিলেন চিকিৎসক। আসাম, বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) ও সিলেটে ছিল পোস্টিং। সিভিল সার্জন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ওই সব এলাকায়। তাঁর বইয়েও সিলেটের বন-পাহাড়ে একসময় অনেকে ক্লাউডেড ল্যাপার্ড থাকার তথ্য আছে। সে সময় এসব মেঘলা চিতা স্থানীয় অধিবাসীদের হাতে ধরাও পড়ত হঠাৎ হঠাৎ।
এইচ এস উড লিখেছেন, এসব অঞ্চলের লোকেরা একে ‘বান্দর বাঘ’ বলত। তবে গাছ বাওয়ায় দক্ষ বলে, নাকি বানর শিকারে পটু বলে এই নামকরণ—নিশ্চিত হতে পারেননি উড। মেঘলা চিতার ভয়ে বানরদের তিনি দলেবলে গাছে না থেকে পাথরের চাতালে রাত কাটাতে দেখেছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতাগুলো অবশ্য আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগের। উড একটা লাম চিতা শিকারও করেছিলেন। গাছের প্রায় ৮০ ফুট ওপরে উঠে তাঁর দিকেই তাকিয়ে ছিল চিতাটা। তখনই শটগানের গুলিতে মারেন জন্তুটাকে।
সিলেটের জঙ্গলে উঁচু উঁচু গাছে এখনো অল্প হলেও মেঘলা চিতাদের আবাস আছে বলে ধারণা করা হয়। আমার অনুমান, সিলেট বিভাগের রেমা-কালেঙ্গা, লাঠিটিলা, সাগরনাল, আদমপুর-খুরমার মতো অরণ্যগুলোতে মেঘলা চিতাদের থাকার সম্ভাবনা বেশি।
একটা সময় আমার ধারণা ছিল মেঘলা চিতা বুঝি বা শুধু পাহাড়ি এলাকায়ই থাকতে পারে। তবে খোঁজ-খবর নিতেই জানতে পারি ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে এমনকি শালবনেও এদের থাকার নজির আছে। সাম্প্রতিক এক আলাপে মনিরুল খান জানান, একটা সময় গজনীসহ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শালবনে হঠাৎ হঠাৎ মেঘলা চিতার দেখা পাওয়ার কিংবা ধরা পড়ার খবর আসত। সেটা অবশ্য গত শতকের নব্বইয়ের দশকের ঘটনা। সে হিসাবে মধুপুর–ভাওয়ালের শালবনেও আগে এরা থাকাটা খুব স্বাভাবিক।
এ ধরনের একটা মেঘলা চিতা শিকারের বিবরণ আছে সরওয়ার পাঠানের শিকার রোমাঞ্চ বইয়ে। ঘটনাটা ১৯৬৭-৬৮ সালের। গাজীপুরের শালবন থেকে একটি গেছো বাঘ শীতলক্ষ্যা পেরিয়ে চলে আসে নরসিংদীর চরসিন্দুরের সুলতানপুর গ্রামে। বেশ কয়েকটা ছাগল আর কুকুর পেটে যায় ওর। ওটাকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তখন শিকার করেন সরওয়ার ভাইয়ের বাবা ফজলুল হক পাঠান।
বাংলাদেশ ছাড়া লাম চিতা আছে ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সুমাত্রা ও বোর্নিও দ্বীপের মেঘলা চিতা বা ক্লাউডেড ল্যাপার্ডদের একটু ভিন্ন ধরনের একটি প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রাণিবিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হয়, বোর্নিও দ্বীপে বাঘ ও চিতা বাঘের অনুপস্থিতির কারণে মেঘলা চিতার সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। আমার মতে, বাংলাদেশের বনগুলোতে এখন চিতা বাঘের সংখ্যা একেবারে কমে গেলেও মেঘলা চিতারা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে।
শাহরিয়ার সিজার রহমানদের সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের (সিসিএ) ক্যামেরা ট্র্যাপে সাঙ্গু-মাতামুহুরি অরণ্যে মেঘলা চিতারা বন্দী হয়েছে কয়েকবারই। ২০২০ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিজার রহমানের ছবিসহ একটি পোস্ট দেখে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বেশ নাদুসনুদুস একটা মেঘলা চিতা মারা পড়ছিল আলীকদম এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিকারিদের হাতে।
কয়েক বছর আগে আলীকদমের দুর্গম অঞ্চলে থাকা একজন ম্রোর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মাতামুহুরি অরণ্যে এখনো এরা আছে। গহিন জঙ্গলে যাওয়া মানুষেরা দেখা পান হঠাৎ হঠাৎ। পাহাড় ও অরণ্যপ্রেমী অপু নজরুল বছর তিন-চার আগে থানচি থেকে রাতের বেলা বান্দরবান শহরে আসার পথে গাড়ির লাইটের আলোয় রাস্তা পেরিয়ে যেতে দেখেছেন লাম চিতাকে।
মেঘলা চিতারা কিন্তু বাঘ কিংবা চিতা বাঘের মতো গর্জন করতে পারে না। আর পা একটু খাট হওয়ায় মূল আকৃতির তুলনায় একটু ছোট দেখায় এদের। কিন্তু এদের কোনো কোনোটির শরীরের দৈর্ঘ্য চিতা বাঘের কাছাকাছিই। এবার লাম চিতাদের নিয়ে একটা আশ্চর্য তথ্য দিচ্ছি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ১০০ ডিগ্রি কোণে মুখ হাঁ করতে পারে এরা। আবার মাথার খুলির আকার অনুপাতে বিড়াল গোত্রের জন্তুদের মধ্যে এদের শ্বদন্তই সবচেয়ে বড়। অনেকে আদর করে এদের ‘টুথ টাইগার’ বা ‘দাঁতাল বাঘ’ নামে ডাকে। আমি যেমন এদের ‘নয়া জমানার দাঁতাল বাঘ’ বলে বেশ আনন্দ পাই।
সম্ভবত গহীন অরণ্যে বাস এবং গাছে বেশি সময় কাটানোই এদের এখনো দেশের কোনো কোনো বনে টিকিয়ে রেখেছে। উঁচু উঁচু মহিরুহে ডাল, লতাপাতার আড়ালে শরীর মিশিয়ে দিয়ে আরও বহু বছর রহস্যময় মেঘলা চিতারা ফাঁকি দেবে মানুষকে, মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াবে, শিকার করবে বনে-পাহাড়ে—এটাই আশা।
২০২০-এর ডিসেম্বর। বান্দরবানের বগা লেক থেকে কেওক্রাডাং যাচ্ছিলাম হেঁটে। পথে দার্জিলিং পাড়ায় পৌঁছানোর বেশ কতকটা আগে উঁচু এক পাহাড় পড়ে। হাঁপাতে হাঁপাতে ওটায় উঠে পড়লাম। সেখানে বমদের কয়েকটা ছাপড়া দোকান। অনেকটা পথ হেঁটে, পাহাড় বেয়ে ক্লান্ত পর্যটকদের কাছে ফল ও এটা-সেটা বিক্রি করেন বমরা। এ রকম একটি দোকানের বেঞ্চে বসে লেবুর শরবত পান করতে করতে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলাম। এ সময় সঙ্গে করে আনা বাঘ, চিতা বাঘ, মেঘলা চিতাসহ বিভিন্ন প্রাণীর ছবি দেখাতে লাগলাম বম নারী-পুরুষদের। একপর্যায়ে একটা ছবি দেখিয়ে একজন বললেন, লতা বাঘ আছে এদিককার পাহাড়ে। অবাক হলাম, স্থানীয় বম নামের পাশাপাশি লতা বাঘ নামেও একে তাঁরা চেনেন দেখে।
অবশ্য লতা বাঘ নামটির সঙ্গে পরিচিত এই ভ্রমণেরও এক যুগ আগে। সালটা ২০০৭-০৮। বন্যপ্রাণীপ্রেমী সরওয়ার পাঠান ভাইয়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের বন-পাহাড়ে। কয়েকটা দিন রাম পাহাড়, সীতা পাহাড় এবং কাপ্তাই মুখ খালের জঙ্গল, ঝিরিতে দারুণ রোমাঞ্চকর সময় কাটল। তখনই ওখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে শুনি লতা বাঘের গল্প। গাছে চড়ায় নাকি ওদের জুড়ি মেলা ভার। বর্ণনা শুনে অনুমান করলাম, জন্তুটা মেঘলা চিতা বা গেছো বাঘ হতে পারে। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান ভাই কাপ্তাইয়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে মেঘলা চিতার ছবিও পান।
তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও প্রিয় এই প্রাণীকে এখন পর্যন্ত প্রকৃতিতে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। দেখেছি বন্দী অবস্থায়, কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এবং ভারতের দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায়।
আজ ৪ আগস্ট। বিশ্ব মেঘলা চিতা দিবস। মেঘলা চিতা নিয়ে পুরোনো দিনের এবং এখনকার আরও অনেক গল্পই হবে। তবে এর আগে বরং সংক্ষেপে জেনে নেই, সে দেখতে কেমন।
গায়ের রং ধূসর থেকে মেটে বাদামি। শরীরে মেঘের মতো ছোপ ছোপ। তাই নাম ক্লাউডেড ল্যাপার্ড বা মেঘলা চিতা। অবশ্য আরও নানা নাম আছে প্রাণীটির। গেছো বাঘ, মেঘা বাঘ, লাম চিতা ইত্যাদি। ওজন ১৮-২০ কেজি। লম্বায় তিন ফুট বা তার বেশি। প্রায় শরীরের সমান লেজটি ভারী সুন্দর। বৃক্ষচর মেঘলা চিতাদের গাছে গাছে কাটে সময়। গাছে চলাফেরার সময় লম্বা লেজটি শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে কাজে লাগে। দিন-রাতের একটা বড় সময় মেঘলা চিতাদের পায়ের পাতা বিড়াল গোত্রের অন্য জন্তুদের মতো নরম নয়, শক্ত।
গাছে বেশি সময় থাকার কারণে এদের প্রিয় শিকার বানর। কখনো ওপর থেকে হরিণ বা অন্য কোনো বন্য প্রাণীর ওপর লাফিয়ে পড়ে আচমকা। গাছ থেকে নামার সময় মাথা থাকে নিচের দিকে।
একসময় প্রাণিবিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে বুঝি বা মেঘলা চিতা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তার পরই এদের বেশ কয়েকটিকে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তক ঘেঁটে যদ্দুর জেনেছি, ১৯৯২ সালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে দুটি লাম চিতার বাচ্চা ধরা পড়ে। ২০০৫ সালে পাওয়া যায় ময়মনসিংহের গারো পাহাড়ে। ২০০৯ সালে রাঙামাটির এক পাহাড়ে দুটি বাচ্চা নিয়ে একটি মা লাম চিতা ঘুরে বেড়াচ্ছিল। স্থানীয়রা তাড়া করলে একটি বাচ্চা নিয়ে মা পালাতে পারলেও অপর বাচ্চাটি ধরা পড়ে। শুনেছি পরে ওই বাচ্চাকে আবার বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বান্দরবানের থানচি-আলীকদম এলাকায় সাঙ্গু-মাতামুহুরী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ওখানকার খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করি। বছর দশেক আগের কথা। বান্দরবানের গহিনে বড় একটি ভ্রমণ শেষে ফিরে পর্বতারোহী ও বনপ্রেমী সালেহীন আরশাদী কথা প্রসঙ্গে জানায়, আন্ধারমানিকে যে পাড়াটায় উঠেছিল, সেখানের এক বাড়িতে একটা মৃত প্রাণীর চামড়া দেখে চিতা বাঘ মনে করে ছবি তুলে এনেছে। ওরা সেখানে পৌঁছার দিন কয়েক আগেই নাকি শিকার করা হয়েছে। অনুরোধ করতেই ছবিটা পাঠিয়ে দিল মেইল করে। দেখেই সন্দেহ হয়, তার পরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাঠাই অধ্যাপক মনিরুল খানকে। যা ভেবেছিলাম তাই, ওটা একটা লাম চিতার চামড়া।
রাঙামাটির সাজেক-কাসালংয়ের পাশেই ভারতের ডামপা টাইগার রিজার্ভ। আমার জানামতে, পৃথিবীর যেসব অরণ্যে মেঘলা চিতার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে ডামপা উল্লেখযোগ্য। কাসালং রিজার্ভ ফরেস্ট ও সাজেকের পাহাড়ে হঠাৎ হঠাৎ মেঘলা চিতার দেখা পাওয়ার কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কাসালংয়ের জঙ্গলে যে এরা এখনো মোটামুটি সংখ্যায় আছে, এর প্রমাণ ক্যামেরা ট্র্যাপে বারবার এদের বন্দী হওয়া। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশের দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ের খণ্ড বনগুলো করিডরের মাধ্যমে জোড়া লাগানোর বিষয়ে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে বন বিভাগ। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আইইউসিএনকে। এই সমীক্ষার অংশ হিসেবেই অন্য গবেষক, বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাসালংয়ের গহিন অরণ্যে যান মনিরুল খান। তখন ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়ে মেঘলা চিতা।
এদিকে বন্যপ্রাণী গবেষক এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমা জানিয়েছেন, গত জুনেও কাসালংয়ে ক্যামেরা ট্র্যাপে মেঘলা চিতার ছবি ধরা পড়েছে। একবার নয়, কয়েকবারই তাঁদের পাতা ক্যামেরা ট্র্যাপে বন্দী হয়েছে আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণী। এখনো বাংলাদেশের অনেক বনের তুলনায় কাসালংয়ে মেঘলা চিতা ভালো সংখ্যায় থাকতে পারে বলে অনুমান সুপ্রিয় চাকমার।
পাহাড়ি জঙ্গল মেঘলা চিতাদের বেশ প্রিয়। এমনকি হিমালয়ের ৯ হাজার ফুট উচ্চতায়ও দেখা মিলেছে এদের। তবে ম্যানগ্রোভ বনেও বাস করার রেকর্ড আছে আশ্চর্য সুন্দর এই জন্তুর। ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে মেঘলা চিতারা সুন্দর মানিয়ে নিয়েছে।
এবার একটু সিলেটের জঙ্গলের দিকে নজর দিই। একসময় সিলেট অঞ্চলে লাম চিতারা সংখ্যায় বেশ ছিল, তাতে সন্দেহ নেই। ছোটবেলায় হবিগঞ্জে নানাবাড়িতে গেলে বিশাল লোহাগড়া বাঘ, মাঝারি আকারের ফুলেশ্বরীসহ নানা ধরনের বাঘের গল্প শুনতাম। পরে জানতে পারি, এই ফুলেশ্বরী আসলে গেছো বাঘ বা লাম চিতাই। মুক্তাগাছার জমিদার ব্রজেন্দ্রনারায়ণ আচার্য চৌধুরী তাঁর বই ‘শিকার ও শিকারি’তে লিখেছেন ফুলেশ্বরীর কথা। সেখানেও তিনি এর গাছে চড়ায় দক্ষতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। কোথাও কোথাও অবশ্য চিতা বাঘকেও ফুলেশ্বরী বলা হয় বলে শুনেছি।
কর্নেল এইচ এস উড ছিলেন চিকিৎসক। আসাম, বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) ও সিলেটে ছিল পোস্টিং। সিভিল সার্জন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ওই সব এলাকায়। তাঁর বইয়েও সিলেটের বন-পাহাড়ে একসময় অনেকে ক্লাউডেড ল্যাপার্ড থাকার তথ্য আছে। সে সময় এসব মেঘলা চিতা স্থানীয় অধিবাসীদের হাতে ধরাও পড়ত হঠাৎ হঠাৎ।
এইচ এস উড লিখেছেন, এসব অঞ্চলের লোকেরা একে ‘বান্দর বাঘ’ বলত। তবে গাছ বাওয়ায় দক্ষ বলে, নাকি বানর শিকারে পটু বলে এই নামকরণ—নিশ্চিত হতে পারেননি উড। মেঘলা চিতার ভয়ে বানরদের তিনি দলেবলে গাছে না থেকে পাথরের চাতালে রাত কাটাতে দেখেছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতাগুলো অবশ্য আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগের। উড একটা লাম চিতা শিকারও করেছিলেন। গাছের প্রায় ৮০ ফুট ওপরে উঠে তাঁর দিকেই তাকিয়ে ছিল চিতাটা। তখনই শটগানের গুলিতে মারেন জন্তুটাকে।
সিলেটের জঙ্গলে উঁচু উঁচু গাছে এখনো অল্প হলেও মেঘলা চিতাদের আবাস আছে বলে ধারণা করা হয়। আমার অনুমান, সিলেট বিভাগের রেমা-কালেঙ্গা, লাঠিটিলা, সাগরনাল, আদমপুর-খুরমার মতো অরণ্যগুলোতে মেঘলা চিতাদের থাকার সম্ভাবনা বেশি।
একটা সময় আমার ধারণা ছিল মেঘলা চিতা বুঝি বা শুধু পাহাড়ি এলাকায়ই থাকতে পারে। তবে খোঁজ-খবর নিতেই জানতে পারি ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে এমনকি শালবনেও এদের থাকার নজির আছে। সাম্প্রতিক এক আলাপে মনিরুল খান জানান, একটা সময় গজনীসহ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শালবনে হঠাৎ হঠাৎ মেঘলা চিতার দেখা পাওয়ার কিংবা ধরা পড়ার খবর আসত। সেটা অবশ্য গত শতকের নব্বইয়ের দশকের ঘটনা। সে হিসাবে মধুপুর–ভাওয়ালের শালবনেও আগে এরা থাকাটা খুব স্বাভাবিক।
এ ধরনের একটা মেঘলা চিতা শিকারের বিবরণ আছে সরওয়ার পাঠানের শিকার রোমাঞ্চ বইয়ে। ঘটনাটা ১৯৬৭-৬৮ সালের। গাজীপুরের শালবন থেকে একটি গেছো বাঘ শীতলক্ষ্যা পেরিয়ে চলে আসে নরসিংদীর চরসিন্দুরের সুলতানপুর গ্রামে। বেশ কয়েকটা ছাগল আর কুকুর পেটে যায় ওর। ওটাকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তখন শিকার করেন সরওয়ার ভাইয়ের বাবা ফজলুল হক পাঠান।
বাংলাদেশ ছাড়া লাম চিতা আছে ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সুমাত্রা ও বোর্নিও দ্বীপের মেঘলা চিতা বা ক্লাউডেড ল্যাপার্ডদের একটু ভিন্ন ধরনের একটি প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রাণিবিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হয়, বোর্নিও দ্বীপে বাঘ ও চিতা বাঘের অনুপস্থিতির কারণে মেঘলা চিতার সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। আমার মতে, বাংলাদেশের বনগুলোতে এখন চিতা বাঘের সংখ্যা একেবারে কমে গেলেও মেঘলা চিতারা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে।
শাহরিয়ার সিজার রহমানদের সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের (সিসিএ) ক্যামেরা ট্র্যাপে সাঙ্গু-মাতামুহুরি অরণ্যে মেঘলা চিতারা বন্দী হয়েছে কয়েকবারই। ২০২০ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিজার রহমানের ছবিসহ একটি পোস্ট দেখে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বেশ নাদুসনুদুস একটা মেঘলা চিতা মারা পড়ছিল আলীকদম এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিকারিদের হাতে।
কয়েক বছর আগে আলীকদমের দুর্গম অঞ্চলে থাকা একজন ম্রোর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মাতামুহুরি অরণ্যে এখনো এরা আছে। গহিন জঙ্গলে যাওয়া মানুষেরা দেখা পান হঠাৎ হঠাৎ। পাহাড় ও অরণ্যপ্রেমী অপু নজরুল বছর তিন-চার আগে থানচি থেকে রাতের বেলা বান্দরবান শহরে আসার পথে গাড়ির লাইটের আলোয় রাস্তা পেরিয়ে যেতে দেখেছেন লাম চিতাকে।
মেঘলা চিতারা কিন্তু বাঘ কিংবা চিতা বাঘের মতো গর্জন করতে পারে না। আর পা একটু খাট হওয়ায় মূল আকৃতির তুলনায় একটু ছোট দেখায় এদের। কিন্তু এদের কোনো কোনোটির শরীরের দৈর্ঘ্য চিতা বাঘের কাছাকাছিই। এবার লাম চিতাদের নিয়ে একটা আশ্চর্য তথ্য দিচ্ছি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ১০০ ডিগ্রি কোণে মুখ হাঁ করতে পারে এরা। আবার মাথার খুলির আকার অনুপাতে বিড়াল গোত্রের জন্তুদের মধ্যে এদের শ্বদন্তই সবচেয়ে বড়। অনেকে আদর করে এদের ‘টুথ টাইগার’ বা ‘দাঁতাল বাঘ’ নামে ডাকে। আমি যেমন এদের ‘নয়া জমানার দাঁতাল বাঘ’ বলে বেশ আনন্দ পাই।
সম্ভবত গহীন অরণ্যে বাস এবং গাছে বেশি সময় কাটানোই এদের এখনো দেশের কোনো কোনো বনে টিকিয়ে রেখেছে। উঁচু উঁচু মহিরুহে ডাল, লতাপাতার আড়ালে শরীর মিশিয়ে দিয়ে আরও বহু বছর রহস্যময় মেঘলা চিতারা ফাঁকি দেবে মানুষকে, মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াবে, শিকার করবে বনে-পাহাড়ে—এটাই আশা।
ঢাকার বাতাস আজ খুবই অস্বাস্থ্যকর। বায়ুদূষণের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সকালে পরিমাপ অনুযায়ী ঢাকার বায়ুদূষণের স্কোর ২৪৫। অন্যদিকে বায়ুদূষণের শীর্ষে পাকিস্তানের লাহোর। গুরুতর বায়ুদূষণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। এ ছাড়া দূষণের শীর্ষ পাঁচ দেশের তালিকায় ঘুরে ফিরে এই তিন দেশেরই বিভিন্ন
৪৩ মিনিট আগেআজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৯) দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর জলবায়ু ও পরিবেশ সাংবাদিকদের সংগঠন ‘সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম’ (সাকজেএফ) এর নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগেসেন্টমার্টিনের প্রবাল রক্ষায় সেখানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন ধরেই আলোচনায় দ্বীপটি । এরই মধ্যে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল আবিষ্কৃত হলো প্রশান্ত মহাসাগরে। অসংখ্য ক্ষুদ্র প্রাণী একসঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি প্রাচীরের পরিবর্তে একটি বিশালাকায় প্রবাল গঠন করেছে সেখা
২০ ঘণ্টা আগেঢাকার বাতাস আজও অস্বাস্থ্যকর। বায়ুদূষণের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ওপরে উঠে দাঁড়িয়েছে পাঁচ এ। সকালে পরিমাপ অনুযায়ী ঢাকার বায়ুদূষণের স্কোর ১২৩। অন্যদিকে একদিনের ব্যবধানে আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে পাকিস্তানের লাহোর। গুরুতর বায়ুদূষণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। এ ছাড়া দূষণের শীর্ষ পাঁচ দেশের
১ দিন আগে