অনলাইন ডেস্ক
বিশ্ব উষ্ণায়নের এই সময়ে তাপমাত্রা এতটাই বেড়েছে যে মনে হয় চারপাশে আগুন লেগেছে। গরমে সেদ্ধপ্রায় ইউরোপ চলমান তাপপ্রবাহের নাম দিয়েছে ‘সেত্তিমানা ইনফার্নেল’ বা নারকীয় সপ্তাহ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রোগীর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালে বরফভর্তি বডিব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে।
জুনকে যুক্তরাজ্যের উষ্ণতম মাস হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত বছরের তাপদাহে ইউরোপজুড়ে ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্ব উষ্ণতার যুগ থেকে ফুটন্ত যুগে প্রবেশ করেছে।
মানুষের শরীর কতটুকু তাপ সইতে পারে তা যাচাইয়ে এক গবেষণায় অংশ নেন বিবিসি রেডিওর উপস্থাপক জেমস গালাঘার। সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেমিয়েন বেইলির নেতৃত্বে এই গবেষণায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
জেমস বলেন, ‘গরম বেড়ে গেলে আমি ঘামের সাগরে ঢলে পড়ি। আর আমাকেই তাপপ্রবাহ পরীক্ষায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অধ্যাপক বেইলি সতর্ক করেন, ‘তোমার শরীরে ঘাম হবে, আর তোমার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও বেশ পরিবর্তন হবে।’
অধ্যাপক বেইলি তাকে এক পরিবেশগত চেম্বারে নিয়ে যান। এটি সাধারণ কক্ষের আকারে বায়ুরোধী এক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা যাতে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জেমস এর আগেও ঠাণ্ডার প্রভাব পরীক্ষা করতে সেখানে গিয়েছিলেন। তবে এই চকচকে স্টিলের দেয়াল, ভারী দরজা এবং ছোট ছোট পোর্টহোল উষ্ণতা বাড়ার প্রতীক্ষায় নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, আমি আমার ওভেন থেকে বেরিয়ে আসছি।’
২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা একদম ঠিকঠাক মনে হয়। তখনই অধ্যাপক বেইলি ‘শরীরের সবকিছু খুলে ফেলার’ প্রথম নির্দশনা দেন। এতে দেখা হবে জেমসের কতটা ঘাম হয় ও তার ওজনের কেমন পরিবর্তন হয়।
এরপর তার ত্বক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গের তাপমাত্রা, রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ট্র্যাক করা হয়। এক বিশাল মাউথপিস দিয়ে তার নিঃশ্বাস বিশ্লেষণ করা হয়। আল্ট্রাসাউন্ডে গলার ক্যারোটিড ধমনী দিয়ে মস্তিস্কে রক্ত প্রবাহ নিরীক্ষণ করা হয়েছে। তখন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ও অন্যান্য সব শারীরবৃত্তীয় সব স্বাভাবিক চলছিল। এরপর ৩০ শব্দ মনে রাখার মতো ছোট পরীক্ষার পর তাপমাত্রা বাড়ানো হয়।
জেমসের দেহের তখন একটাই লক্ষ্য- হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃৎ এবং অন্যান্য অঙ্গের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা। মস্তিষ্কের বা হাইপোথ্যালামাসের থার্মোস্ট্যাট এই তাপমাত্রা একই রাখার সংকেত পাঠাতে থাকে।
৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাময়িক বন্ধ রেখে কিছু পরীক্ষা করা হয়। তখন জেমসের উষ্ণতা অনুভব হয়। চেয়ারে বসে থাকায় তা অস্বস্তিকর না হলেও এই তাপমাত্রায় কাজ বা কসরত করতে ইচ্ছা করবে না।
জেমসের দেহে তখন কিছু স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাকে তুলনামূলক লাল দেখাচ্ছিলো। কারণ তার ত্বকের উপরিভাগের রক্তনালী উষ্ণ রক্তের তাপমাত্রা বাতাসে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছিলো।
জেমসের ঘাম হচ্ছিলো কিন্তু ঘাম ঝরছিল না। এই ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে তাকে আবার শীতল করছিল। এরপর তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস করা হয়। জেমস বলেন,‘তখন আমার মনে হচ্ছিলো গরম আমাকে পিষে ফেলছে।’
অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘পাঁচ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড শুনতে খুব কম শোনায়। কিন্তু শারিরীকভাবে এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং।’
এই তাপমাত্রায় জেমস শরীরের এক লিটারের এক তৃতীয়াংশের মতো পানি হারান। ত্বকের উপরের রক্তনালী উন্মুক্ত করার প্রভাবও বেশ দৃশ্যমান। হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছিলো। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হৃদপিণ্ড তুলনামূলক বেশি রক্ত তৈরি করছিলো।
হৃদপিণ্ডের উপর এই বাড়তি চাপের কারণেই তাপমাত্রা বাড়লে হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে স্মৃতি ক্ষণস্থায়ী হচ্ছে।
তবে জেমসের দেহের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘জেমসের শরীর তার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা রক্ষা করতে বেশ ভালো কাজ করেছে। তবে পরীক্ষাগুলো বলছে এই এক ঘণ্টাতেই সে ২১ ডিগ্রিতে যত সক্রিয় ছিলো, ৪০ ডিগ্রিতে তত সক্রিয় নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমার এই গবেষণায় শুধু তাপমাত্রা বদলানো হয়েছিলো। কিন্তু পরিবেশের অন্যান্য উপাদানগুলো ঠিক ছিলো। পরিবেশের জলীয়বাষ্পের পরিমাণ তথা আর্দ্রতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে যদি কারোও অস্বস্তি লাগে তবে তা আর্দ্রতার কারণে। শুধু ঘামানো যথেষ্ট না। এটি তখনই কার্যকর হয় যখন তা বাষ্পীভূত হয়ে, শীতল অনুভূতি দেয়।’
বাতাসে আগে থেকেই জলীয়বাস্প উপস্থিত থাকলে ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হয় না। ডেমিয়েন ৫০ শতাংশে জলীয়বাষ্প স্থির রেখেছিলেন।
গবেষক র্যাচেল কটেল বলেন, ‘শরীরের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে আমাদের দেহের অঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে।’ এই ক্ষতি নিম্ন তাপমাত্রায়ও হতে পারে, যদি আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘চিন্তার বিষয় হলো, তাপদাহ যে কেবল ঘনঘন, দীর্ঘতর ও আরও তীব্র হচ্ছে তাই নয়, এটি আরও আর্দ্রও হচ্ছে।
র্যাচেল বলেন, ‘গত বছর ভারত ও পাকিস্তানে তীব্র তাপদাহ হয়। এতে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ছিলো অনেক বেশি। এটি অবশ্যই বর্তমানের সমস্যা, ভবিষ্যতের নয়।’
মানবদেহ ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম। ৪০ ডিগ্রিতে আমাদের চৈতন্য লোপ পায় ও জ্ঞান হারানোর আশংকা বৃদ্ধি পায়। উচ্চ কেন্দ্রীয় তাপমাত্রার ফলে দেহের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমন-হৃদ পেশি ও মস্তিষ্ক।
অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘একবার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৪১-৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে উঠে গেলে আমরা মারাত্মক সমস্যাগুলো দেখতে পাই। তখন কাউকে জরুরী চিকিৎসা না দেয়া হলে হাইপারথার্মিয়াতে তার মৃত্যু হতে পারে।’
প্রত্যেক মানুষের তাপ সহ্য করার ক্ষমতা ভিন্ন। বয়স ও স্বাস্থ্য আমাদের আরও দুর্বল করে দিতে পারে। যে তাপমাত্রা আমরা একসময় ছুটিতে উপভোগ করতাম, সে তাপমাত্রা জীবনের বিভিন্ন ধাপে আমাদের জন্য ভয়াবহ হতে পারে।
এই গরমের সাথে মানিয়ে চলতে হলে
ক্রম বৃদ্ধিমান এই তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে চলতে হলে কিছু সাধারণ পরামর্শ হলো- ছায়ায় থাকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা, অ্যালকোহল পরিহার করা, ঘর ঠাণ্ডা রাখা, দিনের উষ্ণতম সময়ে ব্যায়াম না করা এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা।
অধ্যাপক বেইলি এর সাথে আরও একটি পরামর্শ যুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘রোদে পোড়া থেকে সচেতন থাকতে হবে। মৃদু রোদে পোড়ার কারণেও আমাদের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ বা ঘামানোর ক্ষমতা অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’
অধ্যাপক লিজি কেনডন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত এটি এক বিশাল বৃদ্ধি।’
বিশ্ব উষ্ণায়নের এই সময়ে তাপমাত্রা এতটাই বেড়েছে যে মনে হয় চারপাশে আগুন লেগেছে। গরমে সেদ্ধপ্রায় ইউরোপ চলমান তাপপ্রবাহের নাম দিয়েছে ‘সেত্তিমানা ইনফার্নেল’ বা নারকীয় সপ্তাহ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রোগীর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালে বরফভর্তি বডিব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে।
জুনকে যুক্তরাজ্যের উষ্ণতম মাস হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত বছরের তাপদাহে ইউরোপজুড়ে ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্ব উষ্ণতার যুগ থেকে ফুটন্ত যুগে প্রবেশ করেছে।
মানুষের শরীর কতটুকু তাপ সইতে পারে তা যাচাইয়ে এক গবেষণায় অংশ নেন বিবিসি রেডিওর উপস্থাপক জেমস গালাঘার। সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেমিয়েন বেইলির নেতৃত্বে এই গবেষণায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
জেমস বলেন, ‘গরম বেড়ে গেলে আমি ঘামের সাগরে ঢলে পড়ি। আর আমাকেই তাপপ্রবাহ পরীক্ষায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অধ্যাপক বেইলি সতর্ক করেন, ‘তোমার শরীরে ঘাম হবে, আর তোমার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও বেশ পরিবর্তন হবে।’
অধ্যাপক বেইলি তাকে এক পরিবেশগত চেম্বারে নিয়ে যান। এটি সাধারণ কক্ষের আকারে বায়ুরোধী এক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা যাতে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
জেমস এর আগেও ঠাণ্ডার প্রভাব পরীক্ষা করতে সেখানে গিয়েছিলেন। তবে এই চকচকে স্টিলের দেয়াল, ভারী দরজা এবং ছোট ছোট পোর্টহোল উষ্ণতা বাড়ার প্রতীক্ষায় নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, আমি আমার ওভেন থেকে বেরিয়ে আসছি।’
২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা একদম ঠিকঠাক মনে হয়। তখনই অধ্যাপক বেইলি ‘শরীরের সবকিছু খুলে ফেলার’ প্রথম নির্দশনা দেন। এতে দেখা হবে জেমসের কতটা ঘাম হয় ও তার ওজনের কেমন পরিবর্তন হয়।
এরপর তার ত্বক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গের তাপমাত্রা, রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ট্র্যাক করা হয়। এক বিশাল মাউথপিস দিয়ে তার নিঃশ্বাস বিশ্লেষণ করা হয়। আল্ট্রাসাউন্ডে গলার ক্যারোটিড ধমনী দিয়ে মস্তিস্কে রক্ত প্রবাহ নিরীক্ষণ করা হয়েছে। তখন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ও অন্যান্য সব শারীরবৃত্তীয় সব স্বাভাবিক চলছিল। এরপর ৩০ শব্দ মনে রাখার মতো ছোট পরীক্ষার পর তাপমাত্রা বাড়ানো হয়।
জেমসের দেহের তখন একটাই লক্ষ্য- হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃৎ এবং অন্যান্য অঙ্গের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা। মস্তিষ্কের বা হাইপোথ্যালামাসের থার্মোস্ট্যাট এই তাপমাত্রা একই রাখার সংকেত পাঠাতে থাকে।
৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাময়িক বন্ধ রেখে কিছু পরীক্ষা করা হয়। তখন জেমসের উষ্ণতা অনুভব হয়। চেয়ারে বসে থাকায় তা অস্বস্তিকর না হলেও এই তাপমাত্রায় কাজ বা কসরত করতে ইচ্ছা করবে না।
জেমসের দেহে তখন কিছু স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাকে তুলনামূলক লাল দেখাচ্ছিলো। কারণ তার ত্বকের উপরিভাগের রক্তনালী উষ্ণ রক্তের তাপমাত্রা বাতাসে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছিলো।
জেমসের ঘাম হচ্ছিলো কিন্তু ঘাম ঝরছিল না। এই ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে তাকে আবার শীতল করছিল। এরপর তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস করা হয়। জেমস বলেন,‘তখন আমার মনে হচ্ছিলো গরম আমাকে পিষে ফেলছে।’
অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘পাঁচ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড শুনতে খুব কম শোনায়। কিন্তু শারিরীকভাবে এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং।’
এই তাপমাত্রায় জেমস শরীরের এক লিটারের এক তৃতীয়াংশের মতো পানি হারান। ত্বকের উপরের রক্তনালী উন্মুক্ত করার প্রভাবও বেশ দৃশ্যমান। হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়েছিলো। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হৃদপিণ্ড তুলনামূলক বেশি রক্ত তৈরি করছিলো।
হৃদপিণ্ডের উপর এই বাড়তি চাপের কারণেই তাপমাত্রা বাড়লে হৃদরোগে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে স্মৃতি ক্ষণস্থায়ী হচ্ছে।
তবে জেমসের দেহের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘জেমসের শরীর তার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা রক্ষা করতে বেশ ভালো কাজ করেছে। তবে পরীক্ষাগুলো বলছে এই এক ঘণ্টাতেই সে ২১ ডিগ্রিতে যত সক্রিয় ছিলো, ৪০ ডিগ্রিতে তত সক্রিয় নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমার এই গবেষণায় শুধু তাপমাত্রা বদলানো হয়েছিলো। কিন্তু পরিবেশের অন্যান্য উপাদানগুলো ঠিক ছিলো। পরিবেশের জলীয়বাষ্পের পরিমাণ তথা আর্দ্রতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে যদি কারোও অস্বস্তি লাগে তবে তা আর্দ্রতার কারণে। শুধু ঘামানো যথেষ্ট না। এটি তখনই কার্যকর হয় যখন তা বাষ্পীভূত হয়ে, শীতল অনুভূতি দেয়।’
বাতাসে আগে থেকেই জলীয়বাস্প উপস্থিত থাকলে ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হয় না। ডেমিয়েন ৫০ শতাংশে জলীয়বাষ্প স্থির রেখেছিলেন।
গবেষক র্যাচেল কটেল বলেন, ‘শরীরের কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকলে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে আমাদের দেহের অঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে।’ এই ক্ষতি নিম্ন তাপমাত্রায়ও হতে পারে, যদি আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘চিন্তার বিষয় হলো, তাপদাহ যে কেবল ঘনঘন, দীর্ঘতর ও আরও তীব্র হচ্ছে তাই নয়, এটি আরও আর্দ্রও হচ্ছে।
র্যাচেল বলেন, ‘গত বছর ভারত ও পাকিস্তানে তীব্র তাপদাহ হয়। এতে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা ছিলো অনেক বেশি। এটি অবশ্যই বর্তমানের সমস্যা, ভবিষ্যতের নয়।’
মানবদেহ ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম। ৪০ ডিগ্রিতে আমাদের চৈতন্য লোপ পায় ও জ্ঞান হারানোর আশংকা বৃদ্ধি পায়। উচ্চ কেন্দ্রীয় তাপমাত্রার ফলে দেহের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমন-হৃদ পেশি ও মস্তিষ্ক।
অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘একবার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৪১-৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে উঠে গেলে আমরা মারাত্মক সমস্যাগুলো দেখতে পাই। তখন কাউকে জরুরী চিকিৎসা না দেয়া হলে হাইপারথার্মিয়াতে তার মৃত্যু হতে পারে।’
প্রত্যেক মানুষের তাপ সহ্য করার ক্ষমতা ভিন্ন। বয়স ও স্বাস্থ্য আমাদের আরও দুর্বল করে দিতে পারে। যে তাপমাত্রা আমরা একসময় ছুটিতে উপভোগ করতাম, সে তাপমাত্রা জীবনের বিভিন্ন ধাপে আমাদের জন্য ভয়াবহ হতে পারে।
এই গরমের সাথে মানিয়ে চলতে হলে
ক্রম বৃদ্ধিমান এই তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে চলতে হলে কিছু সাধারণ পরামর্শ হলো- ছায়ায় থাকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা, অ্যালকোহল পরিহার করা, ঘর ঠাণ্ডা রাখা, দিনের উষ্ণতম সময়ে ব্যায়াম না করা এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা।
অধ্যাপক বেইলি এর সাথে আরও একটি পরামর্শ যুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘রোদে পোড়া থেকে সচেতন থাকতে হবে। মৃদু রোদে পোড়ার কারণেও আমাদের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ বা ঘামানোর ক্ষমতা অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’
অধ্যাপক লিজি কেনডন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত এটি এক বিশাল বৃদ্ধি।’
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য শক্তিশালী অভিযোজন তহবিল নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি উন্নত দেশগুলোর কাছে অভিযোজন তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগেশৈবাল থেকে জৈব জ্বালানি উৎপাদন নিয়ে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ভিরিডোসের সঙ্গে দীর্ঘসময় ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিল আমেরিকার বহুজাতিক তেল ও গ্যাস করপোরেশন এক্সন–মোবিল। গত বছর তারা এ গবেষণার অংশীদারত্ব ছেড়ে দিলে জ্বালানি খাতে আলোড়ন পড়ে যায়। এক্সন–মোবিল অর্থ উপার্জনের আরও ভালো সুযোগের সন্ধানে শৈবাল থেকে জৈব...
১ দিন আগেদূষণের বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া জোট ‘কিক বিগ পলিউটার্স আউট’–এর এক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই বছরের আয়োজক দেশ আজারবাইজান, আগামী বছরের আয়োজক ব্রাজিল এবং তুরস্ক ছাড়া প্রতিটি দেশ থেকে কপ সম্মেলনের প্রতিনিধির চেয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি লবিস্টদের (তদবিরের লোকজন) সংখ্যা বেশি।
১ দিন আগেজঙ্গলে গিয়েছেন ঘুরতে। সেখানে বাঘ দেখাটা নিঃসন্দেহে রোমাঞ্চকর এক ব্যাপার। কিন্তু হঠাৎ যদি দেখেন আপনার সামনেই মরণপণ লড়াইয়ে নেমেছে দুই বাঘ, নিশ্চয় আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হবে। খুব বেশি সাহসী হলে রোমাঞ্চটা আরও বেশি উপভোগ করবেন। এমন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন ভারতের এক জঙ্গলে বেড়াতে যাওয়া কিছু প
২ দিন আগে