মহানায়ক উত্তম কুমারের জন্মদিন আজ

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪: ১৩

আজ রোববার মহানায়ক উত্তম কুমারের জন্মদিন। সাধারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেও অভিনয়ে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ থেকে তিনি পেয়েছিলেন ‘মহানায়ক’ খেতাব। ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার প্রকৃত নাম অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। পিতার নাম সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় এবং মা চপলা দেবী। তিন ভাইবোনের মধ্যে উত্তম কুমার ছিলেন সবার বড়। কলকাতার সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে তিনি গোয়েঙ্কা কলেজে ভর্তি হন। কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও পড়াশোনা আর এগোয়নি।
 
১৯৪৮ সালে ‘দৃষ্টিদান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে উত্তম কুমারের অভিনয়জীবন শুরু হয়েছিল। তবে তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘মায়াডোর’। যদিও হিন্দি চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়নি। ‘বসু পরিবার’ ছবিতে তিনি প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ মুক্তি পেলে চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন। এই ছবিতে তিনি কালজয়ী নায়িকা সুচিত্রা সেনের বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন।

‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এর মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়েছিল। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে এ জুটি ব্যবসায়িকভাবে সফল এবং প্রশংসিত কয়েকটি চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকায় একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে হারানো সুর, পথে হল দেরি, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা এবং সাগরিকা অন্যতম।

মহানায়ক উত্তম কুমার। ছবি: সংগৃহীতউত্তম কুমার বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে ‘ছোটেসি মুলাকাত’, ‘অমানুষ’ এবং ‘আনন্দ আশ্রম’ অন্যতম। তিনি উপমহাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় দুটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। প্রথমটি ‘নায়ক’ এবং দ্বিতীয়টি ‘চিড়িয়াখানা’। ‘চিড়িয়াখানা’ ছবিতে তিনি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ছবিতে স্বভাবসুলভ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে উত্তম কুমার নিজেকে সু-অভিনেতা হিসেবে প্রমাণ করেন। এই ছবিতে তিনি তাঁর পরিচিত ইমেজ থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছিলেন। এতে তিনি সফলও হয়েছিলেন। ভুবন ভোলানো হাসি, প্রেমিকসুলভ আচার-আচরণ বা ব্যবহারের বাইরেও যে থাকতে পারে অভিনয় এবং অভিনয়ের নানা ধরন, মূলত সেটাই তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন।

 ১৯৬৭ সালে ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ ছবি দুটির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন উত্তম কুমার। অবশ্য এর আগে ১৯৫৭ সালে অজয় কর পরিচালিত ‘হারানো সুর’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি সমগ্র ভারতজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন। সে বছর ‘হারানো সুর’ পেয়েছিল রাষ্ট্রপতির সার্টিফিকেট অব মেরিট। ইংরেজি উপন্যাস ‘রানডম হারভেস্ট’ অবলম্বনে এ ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যে ছবির প্রযোজক ছিলেন উত্তম কুমার নিজেই।

কমেডি চরিত্রেও মহানায়ক উত্তম ছিলেন সমান পারদর্শী। ‘দেয়া নেয়া’ ছবিতে হৃদয়হরণ চরিত্রে অভিনয় করে সেই প্রতিভার স্বাক্ষরও রেখে গেছেন তিনি।

উত্তম কুমার গৌরী দেবীকে বিয়ে করেন। তাঁদের একমাত্র সন্তান গৌতম চট্টোপাধ্যায় মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ক্যানসারে মারা যান। টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা গৌরব চট্টোপাধ্যায়, উত্তম কুমারের একমাত্র নাতি। ১৯৬৩ সালে উত্তম কুমার তাঁর পরিবার ছেড়ে চলে যান। মারা যান ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মহানায়ক দীর্ঘ ১৭ বছর তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে বসবাস করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ থেকে ট্রেনে হামলা, কয়েকজন জখম, ট্রেন চলাচল বন্ধ

স্বামীও জানতেন না স্ত্রী ঢাকা মেডিকেলের ছাত্রী নন

ঢাকার যানজট নিরসনে ৫ কোটির সিগন্যাল ব্যবস্থা, বাস্তবায়নে লাগবে ৬ মাস

১১ সদস্যের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন, আছেন যাঁরা

এস আলমের ঋণ জালিয়াতি: বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত