সুজাতা, অভিনেত্রী এবং নায়ক আজিমের স্ত্রী
আজিম একজন বরেণ্য অভিনেতা ছিলেন। তাঁকে হারিয়ে এই ২০ বছরে শুধু একটি কথাই বারবার মনে হয়েছে, আজিমের একটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও কি প্রাপ্য নয়! আজিমের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কেও রাষ্ট্র এত বছরে স্বীকৃতি দিতে পারল না! এটা নিয়ে আমার আক্ষেপ নেই, চরম দুঃখবোধ আছে। এই দুঃখবোধ নিয়েই কি মরতে হবে! আজিম যদি মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় পেতেন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতেন, হয়তো স্ত্রী হিসেবে শান্তিতে মরতে পারতাম। আমার সন্তান-নাতিরা গর্ব নিয়ে বাঁচতে পারত।
আজিম অস্ত্র হাতে ময়দানে যুদ্ধ করেননি, তবে অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধ করা যোদ্ধাদের চরম সময়ের বন্ধু ছিলেন। জীবন বাজি রেখে নিজের সর্বস্ব দিয়ে সাহায্য করেছেন। ১৯৭১ সালে দুই হাত বাড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। কিছু উদাহরণ দেই:
আমাদের ১৯৬৭ সালে বিয়ে হয়। ১৯৭১ সালে দেশে যখন যুদ্ধ চলছে, তখন এক মাস আগে আমাকে কিনে দেওয়া নতুন গাড়িটি বিক্রি করে দেন আজিম। গাড়িটির দাম ছিল ২৫ হাজার টাকা। বিক্রির সব টাকা মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে দেন আজিম। আমাকে বলেন, ‘সবার আগে প্রয়োজন দেশ, বেঁচে থাকলে গাড়ি কেনা যাবে।’
একদিন এক মুরগিওয়ালা এসেছেন। তার কাছ থেকে দুইটা মুরগি নিয়ে অনেকগুলো টাকা দিয়ে দিলেন আজিম। আমি বললাম, এতগুলো টাকা দিলে আর দুইটা মুরগি নিলে? উনি আমাকে ডেকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বলল, আস্তে কথা বলো। উনি মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারা নানা ছদ্মবেশে আসতেন, আজিম আগে থেকেই তাঁদের সাহায্যের জন্য জোগাড়-ব্যবস্থা করে রাখতেন।
মুক্তিযোদ্ধারা এখনো বেঁচে আছেন। আজিমের এসব অবদানের কথা তাঁরা নিশ্চয়ই সম্মানভরে স্মরণ করবেন। এখনো বেঁচে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। উনি জানেন আজিমের অবদান। অধুনালুপ্ত বিচিত্রার সম্পাদক শাহাদত হোসেন চৌধুরীর ছোট ভাই ফতেহ আলীও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ওই মুরগিওয়ালা হয়ে উনিই এসেছিলেন। তিনিও বেঁচে আছেন।
যেসব জিনিস মুক্তিযোদ্ধারা প্রকাশ্যে এসে কিনতে পারতেন না। যেমন—কুপি, তেল, ব্যান্ডেজ—এসব আমরা সংগ্রহ করে ওনাদের জন্য রেখে দিতাম। শুধু তাই নয়, হিন্দুদের বিপদ আঁচ করতে পেরে তাদেরও বিশেষ সহযোগিতা করেছেন আজিম। আমি তো হিন্দু ছিলাম। আমার পরিবারকেও নিজের খরচে ভারতে পাঠিয়েছেন। অভিনেত্রী সুমিতা দি থাকতেন এফডিসির ফ্লোরে, তাঁকে সাহায্য করেছেন। চিত্র পরিচালক প্রদীপ দে এখনো বেঁচে আছেন, উনিও জানেন আজিমের অবদান। তাঁর এই কাজগুলো একসময় পাকিস্তানি সেনারা জেনে যায়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
আমি জানতে পারলাম, পাকিস্তানি কর্নেল মুমতাজ নাকি কিছুটা সৎ। উনি হয়তো আজিমকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন। আমি সাহস নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে গেলাম। কয়েক দিন ঘুরেও ওনার কোনো খোঁজ পাই না। একদিন মুমতাজের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলো। ওনার কাছে আমার ও আজিমের পরিচয় দিলাম। তখন তো আমরা দুজনেই সিনেমা করছি। ওনার পা চেপে ধরে অনুরোধ করলাম, যেন আজিমকে ছেড়ে দেওয়া হয়। উনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন।
পরদিন আমি আবার গেলাম। অনেক অপেক্ষার পর মুমতাজ এসে বললেন, উনি বেঁচে আছেন। আপনাকে টেলিফোনে কথা বলিয়ে দিচ্ছি। আজিম কেঁদে বললেন, ওরা মনে হয় আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে অত্যাচার করছে। আমি মুমতাজকে বললাম, তাঁকে তো মেরে ফেলা হবে। উনি বললেন, দেখছি কী করা যায়। প্রায় দেড় মাস পরে ছেড়ে দেওয়া হয় আজিমকে। ছোট্ট একটি রুম থেকে ৫২ জন একসঙ্গে বের হয়েছিলেন। অনেকের অবস্থা ভীষণ খারাপ ছিল নির্যাতিত হয়ে। বন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে আজিম আবারও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে শুরু করেন। তার বক্তব্য ছিল, দেশ স্বাধীন করতেই হবে। দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে হয়তো তাঁকে আর বাঁচানো যেত না। আমারও যে কত দিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। তখন আমি নাটক বন্ধ করে দিলাম। লাল কালি দিয়ে আমাকে চিঠি দেওয়া হলো। তুমি যদি নাটক না করো, তোমাদের বাসায় বোম মারা হবে।
চলচ্চিত্রে আজিমের পরিচয় শুধু অভিনয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য তিনি একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক, হল মালিক হয়ে উঠেছিলেন। নিজেই শুধু ছবি প্রযোজনা করেননি, অন্যদেরও উৎসাহ দিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, নিজে অভিনয় করেছেন, সংশ্লিষ্ট থেকেছেন প্রতিটি ক্ষেত্রেই।
আসলে আজিম ছিলেন দেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম এক কারিগর। তাঁর অভিনীত কয়েকটি সিনেমা হলো ‘হারানো দিন’, ‘নতুন সুর’, ‘মেঘ ভাঙ্গা রোদ’, ‘ডাকবাবু’, ‘সাইফুল মুলক বদিউজ্জামাল’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘ভানুমতি’ ইত্যাদি। তাঁর পরিচালিত সিনেমা ‘টাকার খেলা’, ‘প্রতিনিধি’, ‘জীবন মরণ’, ‘বদলা’, ‘গাদ্দার’, ‘দেবর ভাবী’ ইত্যাদি। ‘মালা’, ‘ডাকবাবু’, ‘আমির সওদাগর’, ‘ভেলুয়া সুন্দরী’, ‘মধুমালা’, ‘রাখাল বন্ধু’ প্রভৃতি ছবিতে আমার নায়ক ছিলেন আজিম।
আজিম একজন বরেণ্য অভিনেতা ছিলেন। তাঁকে হারিয়ে এই ২০ বছরে শুধু একটি কথাই বারবার মনে হয়েছে, আজিমের একটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও কি প্রাপ্য নয়! আজিমের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কেও রাষ্ট্র এত বছরে স্বীকৃতি দিতে পারল না! এটা নিয়ে আমার আক্ষেপ নেই, চরম দুঃখবোধ আছে। এই দুঃখবোধ নিয়েই কি মরতে হবে! আজিম যদি মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় পেতেন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতেন, হয়তো স্ত্রী হিসেবে শান্তিতে মরতে পারতাম। আমার সন্তান-নাতিরা গর্ব নিয়ে বাঁচতে পারত।
আজিম অস্ত্র হাতে ময়দানে যুদ্ধ করেননি, তবে অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধ করা যোদ্ধাদের চরম সময়ের বন্ধু ছিলেন। জীবন বাজি রেখে নিজের সর্বস্ব দিয়ে সাহায্য করেছেন। ১৯৭১ সালে দুই হাত বাড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন। কিছু উদাহরণ দেই:
আমাদের ১৯৬৭ সালে বিয়ে হয়। ১৯৭১ সালে দেশে যখন যুদ্ধ চলছে, তখন এক মাস আগে আমাকে কিনে দেওয়া নতুন গাড়িটি বিক্রি করে দেন আজিম। গাড়িটির দাম ছিল ২৫ হাজার টাকা। বিক্রির সব টাকা মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে দেন আজিম। আমাকে বলেন, ‘সবার আগে প্রয়োজন দেশ, বেঁচে থাকলে গাড়ি কেনা যাবে।’
একদিন এক মুরগিওয়ালা এসেছেন। তার কাছ থেকে দুইটা মুরগি নিয়ে অনেকগুলো টাকা দিয়ে দিলেন আজিম। আমি বললাম, এতগুলো টাকা দিলে আর দুইটা মুরগি নিলে? উনি আমাকে ডেকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বলল, আস্তে কথা বলো। উনি মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারা নানা ছদ্মবেশে আসতেন, আজিম আগে থেকেই তাঁদের সাহায্যের জন্য জোগাড়-ব্যবস্থা করে রাখতেন।
মুক্তিযোদ্ধারা এখনো বেঁচে আছেন। আজিমের এসব অবদানের কথা তাঁরা নিশ্চয়ই সম্মানভরে স্মরণ করবেন। এখনো বেঁচে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। উনি জানেন আজিমের অবদান। অধুনালুপ্ত বিচিত্রার সম্পাদক শাহাদত হোসেন চৌধুরীর ছোট ভাই ফতেহ আলীও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ওই মুরগিওয়ালা হয়ে উনিই এসেছিলেন। তিনিও বেঁচে আছেন।
যেসব জিনিস মুক্তিযোদ্ধারা প্রকাশ্যে এসে কিনতে পারতেন না। যেমন—কুপি, তেল, ব্যান্ডেজ—এসব আমরা সংগ্রহ করে ওনাদের জন্য রেখে দিতাম। শুধু তাই নয়, হিন্দুদের বিপদ আঁচ করতে পেরে তাদেরও বিশেষ সহযোগিতা করেছেন আজিম। আমি তো হিন্দু ছিলাম। আমার পরিবারকেও নিজের খরচে ভারতে পাঠিয়েছেন। অভিনেত্রী সুমিতা দি থাকতেন এফডিসির ফ্লোরে, তাঁকে সাহায্য করেছেন। চিত্র পরিচালক প্রদীপ দে এখনো বেঁচে আছেন, উনিও জানেন আজিমের অবদান। তাঁর এই কাজগুলো একসময় পাকিস্তানি সেনারা জেনে যায়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
আমি জানতে পারলাম, পাকিস্তানি কর্নেল মুমতাজ নাকি কিছুটা সৎ। উনি হয়তো আজিমকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন। আমি সাহস নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে গেলাম। কয়েক দিন ঘুরেও ওনার কোনো খোঁজ পাই না। একদিন মুমতাজের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলো। ওনার কাছে আমার ও আজিমের পরিচয় দিলাম। তখন তো আমরা দুজনেই সিনেমা করছি। ওনার পা চেপে ধরে অনুরোধ করলাম, যেন আজিমকে ছেড়ে দেওয়া হয়। উনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন।
পরদিন আমি আবার গেলাম। অনেক অপেক্ষার পর মুমতাজ এসে বললেন, উনি বেঁচে আছেন। আপনাকে টেলিফোনে কথা বলিয়ে দিচ্ছি। আজিম কেঁদে বললেন, ওরা মনে হয় আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে অত্যাচার করছে। আমি মুমতাজকে বললাম, তাঁকে তো মেরে ফেলা হবে। উনি বললেন, দেখছি কী করা যায়। প্রায় দেড় মাস পরে ছেড়ে দেওয়া হয় আজিমকে। ছোট্ট একটি রুম থেকে ৫২ জন একসঙ্গে বের হয়েছিলেন। অনেকের অবস্থা ভীষণ খারাপ ছিল নির্যাতিত হয়ে। বন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে আজিম আবারও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে শুরু করেন। তার বক্তব্য ছিল, দেশ স্বাধীন করতেই হবে। দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে হয়তো তাঁকে আর বাঁচানো যেত না। আমারও যে কত দিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। তখন আমি নাটক বন্ধ করে দিলাম। লাল কালি দিয়ে আমাকে চিঠি দেওয়া হলো। তুমি যদি নাটক না করো, তোমাদের বাসায় বোম মারা হবে।
চলচ্চিত্রে আজিমের পরিচয় শুধু অভিনয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য তিনি একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক, হল মালিক হয়ে উঠেছিলেন। নিজেই শুধু ছবি প্রযোজনা করেননি, অন্যদেরও উৎসাহ দিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, নিজে অভিনয় করেছেন, সংশ্লিষ্ট থেকেছেন প্রতিটি ক্ষেত্রেই।
আসলে আজিম ছিলেন দেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম এক কারিগর। তাঁর অভিনীত কয়েকটি সিনেমা হলো ‘হারানো দিন’, ‘নতুন সুর’, ‘মেঘ ভাঙ্গা রোদ’, ‘ডাকবাবু’, ‘সাইফুল মুলক বদিউজ্জামাল’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘ভানুমতি’ ইত্যাদি। তাঁর পরিচালিত সিনেমা ‘টাকার খেলা’, ‘প্রতিনিধি’, ‘জীবন মরণ’, ‘বদলা’, ‘গাদ্দার’, ‘দেবর ভাবী’ ইত্যাদি। ‘মালা’, ‘ডাকবাবু’, ‘আমির সওদাগর’, ‘ভেলুয়া সুন্দরী’, ‘মধুমালা’, ‘রাখাল বন্ধু’ প্রভৃতি ছবিতে আমার নায়ক ছিলেন আজিম।
হলে গেলে দর্শকেরা সিনেমা দেখা বাদ দিয়ে নাকি তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকে! সিনেমা মুক্তির পর হলে না যাওয়ার কারণ হিসেবে এমনটাই জানালেন চিত্রনায়ক শাকিব খান।
২৩ মিনিট আগেবহু আগেই অভিনয় জগৎকে বিদায় জানিয়েছেন রাকেশ রোশন। এরপর শুরু করেন সিনেমা পরিচালনা। একের পর এক হিট সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। বলা চলে পরিচালনায় নিজেকে পক্ত করেছিলেন এই অভিনেতা। সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন পরিচালনা থেকেও অবসর নেবেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগেগত বছর এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইকো ফিল্ম ল্যাব: ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম রেসিডেন্সি’র অংশ হিসেবে সুব্রত সরকার ও অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘হইতে সুরমা’।
১৩ ঘণ্টা আগেচলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিডনি, মেলবোর্ন ও অ্যাডিলেডে কয়েকটি কনসার্ট করেছেন। ফিরেই ব্যস্ত হয়েছেন দেশের মঞ্চে। ১৫ নভেম্বর সেনা প্রাঙ্গণে গেয়েছেন ‘ঢাকা রেট্রো’ কনসার্টে। এবার জেমস জানালেন নতুন খবর।
১ দিন আগে