অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
সোমবার (১২ আগস্ট) গোয়েন্দা প্রধান আটক হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সানাউল্লাহ জিও নিউজকে বলেন, এটি একটি ‘খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা এবং আমি মনে করি না যে এই স্তরে এর আগে এমন কোনো উদাহরণ আছে।’
তিনি বলেন, সরকার সচেতন যে, সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং অন্যান্য বিষয়েও তাঁর নাম উঠে এসেছে। এই পর্যায়ে এমন পদক্ষেপ আসবে মানুষ এমনটি ভাবতেই পারেনি। এই পদক্ষেপটি জবাবদিহির ব্যবস্থার জন্য সেনাবাহিনীর সুনাম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলেই মনে করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ জিও নিউজ শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’–এ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অবসর নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে জেনারেল ফয়েজের অবশ্যই একটি হাত রয়েছে। সবকিছু জেনেও তিনি বিরত থাকতে পারেননি এবং জল ঘোলা করতে চেয়েছিলেন। যে ব্যক্তি পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়তে অপরিমেয় এবং সীমাহীন শক্তি প্রয়োগ করেন, তাঁদের জন্যই ব্যবস্থায় ক্ষত তৈরি হয়।’
খাজা আসিফ বলেন, জেনারেল হামিদ অবসর নেওয়ার পর ‘সরাসরি আরও বেশি’ করে ভূমিকা রেখেছিলেন। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের গ্রেপ্তারে গত বছর যে দেশব্যাপী সংঘাত শুরু হয়েছিল তার উল্লেখ করে তিনি সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ‘৯ মে যা ঘটেছিল তাতে ভূমিকা থাকতে পারে’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। তবে ঘটনাগুলোতে তাঁর দিকেই আঙুল উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে জানা গেছে, জেনারেল হামিদ তাড়াহুড়ো করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০২২ সালের নভেম্বরে হাইকমান্ডের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। ২০১৯ সালের জুনে তাঁকে আইএসআই প্রধান করা হয়।
২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকে আইএসআই–এর নতুন প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিষয়ে সেনাবাহিনী এবং পিটিআই সরকারের মধ্যে কথিত টানাপোড়েনের মধ্যে জেনারেল হামিদ অন্যতম কুশীলব ছিলেন।
সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর ঘোষণা দেয়, জেনারেল হামিদকে পেশোয়ার কর্পস কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়েছে এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমের নিয়োগের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। ফলে ওই সময় বেসামরিক–সামরিক প্রশাসনের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল।
বিলম্বের পরে পিএমও অবশেষে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর নতুন আইএসআই প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ইমরান খান পরে বলেছিলেন, তিনি কখনই ‘নিজের লোককে সেনাপ্রধান বানাতে’ চাননি। তিনি সেনাবাহিনীর বিষয়ে ‘কখনো হস্তক্ষেপ করেননি’।
২০২২ সালের নভেম্বরে দুটি শীর্ষ সামরিক অফিসের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সের অন্তর্ভুক্ত করা কিছু নাম অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কাছে এসেছিল। ওই তালিকায় ছয়জন সিনিয়র জেনারেলের মধ্যে জেনারেল হামিদের নামও ছিল।
বাহাওয়ালপুর কর্পস কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেনারেল হামিদ পেশোয়ারে একই পদে কাজ করেছিলেন। সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধান এক দশক ধরে দেশের রাজনৈতিক ভূখণ্ডে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছেন।
জেনারেল হামিদের নাম প্রথম জনসাধারণের নজরে আসে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। একটি গোপন সমঝোতার মাধ্যমে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের ফৈজাবাদ অবস্থান কর্মসূচি শেষ করতে সহায়তা করেছিলেন জেনারেল হামিদ।
ঘটনার একটি স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, আইএসআই, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, সামরিক গোয়েন্দা এবং আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এসব সংস্থার কখনো নিজ নিজ পরিমণ্ডল অতিক্রম করা উচিত নয়।
পিএমএল–এন (মুসলিম লীগ–এন) নেতা নওয়াজ শরীফ এবং তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ গত বছর তাঁর কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, জেনারেল হামিদ তাঁদের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং পিটিআই–এর অনুগত সেট–আপকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে, প্রাক্তন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বিচারক শওকত আজিজ সিদ্দিকী একটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সংস্থার লোকরা বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এজেন্সিগুলো নির্বাচনের আগে নওয়াজ এবং মরিয়মকে ভোটের বাইরে রাখতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পরে ওই বিচারককে বরখাস্ত করা হয়।
যাইহোক, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, ওই বিচারক তাঁর অপসারণের ঘটনায় বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক জেনারেলের পাশাপাশি কিছু প্রাক্তন বিচারকের নামও উল্লেখ করেছিলেন।
সাবেক বিচারপতির পক্ষে সিনিয়র কৌঁসুলি হামিদ খান তাঁর আবেদনে বিবাদী হিসেবে নাম দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সংশোধিত আবেদন করেন। সেখানে সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া, জেনারেল হামিদ, তিন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার-ইরফান রামায়, ফয়সাল মারওয়াত এবং তাহির ওয়াফির নাম ছিল। সেই সঙ্গে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি আনোয়ার খান কাসি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার আরবাব মুহাম্মদ আরিফের নামও ছিল।
জেনারেল হামিদ পিটিশনের প্রতিক্রিয়ায় নওয়াজ এবং মরিয়মের আটক দীর্ঘায়িত করার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে তাঁর হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিচারক বিনা কারণে তাঁকে এই মামলায় টেনে এনেছেন।
এ ছাড়া তৎকালীন মানবাধিকার মন্ত্রী রিয়াজ পিরজাদা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেছিলেন, জেনারেল হামিদ নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) দেশে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
২০২৩ সালের মে মাসে, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফয়সাল ভাওদা জেনারেল হামিদকে আল–কাদির ট্রাস্ট মামলার মাস্টারমাইন্ড এবং সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী ৫ হাজার কোটি রুপি বৈধ করার শর্তে বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কয়েক শ কোটি রুপি এবং বিপুল জমি পেয়েছিলেন। পিটিআই সরকারের আমলে যুক্তরাজ্যে সেই অর্থ ধরা পড়ে এবং দেশে ফেরত আনা হয়।
যে মামলায় জেনারেল হামিদ সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন সেই মামলার এজাহার অনুসারে, ২০১৭ সালের ১২ মে পাকিস্তান রেঞ্জারস এবং আইএসআই–এর কর্মকর্তারা টপ সিটির অফিসে এবং সংস্থার মালিক মইজের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে সোনা এবং হিরার অলংকার, নগদ অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কথিত সন্ত্রাসবাদের মামলায় তাঁরা এ অভিযান চালান।
এজাহারে আরও বলা হয়, জেনারেল হামিদের ভাই সরদার নাজাফ এ ঘটনায় মধ্যস্থতা করেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। মইজ পরে বেকসুর খালাস পান। এজাহারে আরও দাবি করা হয়, জেনারেল হামিদ মইজের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই—সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার—একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন।
বৈঠকের সময় জেনারেল হামিদ আবেদনকারীকে বলেছিলেন, অভিযানের সময় ৪০০ তোলা স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছাড়া কিছু জিনিসপত্র তিনি ফিরিয়ে দেবেন। এ ছাড়া আইএসআই–এর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার নাঈম ফখর এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার গাফফার অভিযোগকারীকে নগদ ৪ কোটি রুপি দিতে এবং কয়েক মাসের জন্য একটি বেসরকারি এএপি টিভি নেটওয়ার্ককে স্পনসর করতে জোর জবরদস্তি করেন।
সাবেক আইএসআই কর্মকর্তা ইরতাজা হারুন, সর্দার নাজাফ, ওয়াসিম তাবিশ, জাহিদ মেহমুদ মালিক এবং মোহাম্মদ মুনিরও ওই হাউজিং সোসাইটির অবৈধ দখলে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
সোমবার (১২ আগস্ট) গোয়েন্দা প্রধান আটক হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সানাউল্লাহ জিও নিউজকে বলেন, এটি একটি ‘খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা এবং আমি মনে করি না যে এই স্তরে এর আগে এমন কোনো উদাহরণ আছে।’
তিনি বলেন, সরকার সচেতন যে, সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং অন্যান্য বিষয়েও তাঁর নাম উঠে এসেছে। এই পর্যায়ে এমন পদক্ষেপ আসবে মানুষ এমনটি ভাবতেই পারেনি। এই পদক্ষেপটি জবাবদিহির ব্যবস্থার জন্য সেনাবাহিনীর সুনাম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলেই মনে করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ জিও নিউজ শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’–এ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অবসর নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে জেনারেল ফয়েজের অবশ্যই একটি হাত রয়েছে। সবকিছু জেনেও তিনি বিরত থাকতে পারেননি এবং জল ঘোলা করতে চেয়েছিলেন। যে ব্যক্তি পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়তে অপরিমেয় এবং সীমাহীন শক্তি প্রয়োগ করেন, তাঁদের জন্যই ব্যবস্থায় ক্ষত তৈরি হয়।’
খাজা আসিফ বলেন, জেনারেল হামিদ অবসর নেওয়ার পর ‘সরাসরি আরও বেশি’ করে ভূমিকা রেখেছিলেন। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের গ্রেপ্তারে গত বছর যে দেশব্যাপী সংঘাত শুরু হয়েছিল তার উল্লেখ করে তিনি সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ‘৯ মে যা ঘটেছিল তাতে ভূমিকা থাকতে পারে’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। তবে ঘটনাগুলোতে তাঁর দিকেই আঙুল উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে জানা গেছে, জেনারেল হামিদ তাড়াহুড়ো করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০২২ সালের নভেম্বরে হাইকমান্ডের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। ২০১৯ সালের জুনে তাঁকে আইএসআই প্রধান করা হয়।
২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকে আইএসআই–এর নতুন প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিষয়ে সেনাবাহিনী এবং পিটিআই সরকারের মধ্যে কথিত টানাপোড়েনের মধ্যে জেনারেল হামিদ অন্যতম কুশীলব ছিলেন।
সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর ঘোষণা দেয়, জেনারেল হামিদকে পেশোয়ার কর্পস কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়েছে এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমের নিয়োগের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। ফলে ওই সময় বেসামরিক–সামরিক প্রশাসনের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল।
বিলম্বের পরে পিএমও অবশেষে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর নতুন আইএসআই প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ইমরান খান পরে বলেছিলেন, তিনি কখনই ‘নিজের লোককে সেনাপ্রধান বানাতে’ চাননি। তিনি সেনাবাহিনীর বিষয়ে ‘কখনো হস্তক্ষেপ করেননি’।
২০২২ সালের নভেম্বরে দুটি শীর্ষ সামরিক অফিসের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সের অন্তর্ভুক্ত করা কিছু নাম অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কাছে এসেছিল। ওই তালিকায় ছয়জন সিনিয়র জেনারেলের মধ্যে জেনারেল হামিদের নামও ছিল।
বাহাওয়ালপুর কর্পস কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেনারেল হামিদ পেশোয়ারে একই পদে কাজ করেছিলেন। সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধান এক দশক ধরে দেশের রাজনৈতিক ভূখণ্ডে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছেন।
জেনারেল হামিদের নাম প্রথম জনসাধারণের নজরে আসে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। একটি গোপন সমঝোতার মাধ্যমে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের ফৈজাবাদ অবস্থান কর্মসূচি শেষ করতে সহায়তা করেছিলেন জেনারেল হামিদ।
ঘটনার একটি স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, আইএসআই, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, সামরিক গোয়েন্দা এবং আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এসব সংস্থার কখনো নিজ নিজ পরিমণ্ডল অতিক্রম করা উচিত নয়।
পিএমএল–এন (মুসলিম লীগ–এন) নেতা নওয়াজ শরীফ এবং তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ গত বছর তাঁর কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, জেনারেল হামিদ তাঁদের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং পিটিআই–এর অনুগত সেট–আপকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে, প্রাক্তন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বিচারক শওকত আজিজ সিদ্দিকী একটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সংস্থার লোকরা বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এজেন্সিগুলো নির্বাচনের আগে নওয়াজ এবং মরিয়মকে ভোটের বাইরে রাখতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পরে ওই বিচারককে বরখাস্ত করা হয়।
যাইহোক, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, ওই বিচারক তাঁর অপসারণের ঘটনায় বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক জেনারেলের পাশাপাশি কিছু প্রাক্তন বিচারকের নামও উল্লেখ করেছিলেন।
সাবেক বিচারপতির পক্ষে সিনিয়র কৌঁসুলি হামিদ খান তাঁর আবেদনে বিবাদী হিসেবে নাম দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সংশোধিত আবেদন করেন। সেখানে সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া, জেনারেল হামিদ, তিন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার-ইরফান রামায়, ফয়সাল মারওয়াত এবং তাহির ওয়াফির নাম ছিল। সেই সঙ্গে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি আনোয়ার খান কাসি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার আরবাব মুহাম্মদ আরিফের নামও ছিল।
জেনারেল হামিদ পিটিশনের প্রতিক্রিয়ায় নওয়াজ এবং মরিয়মের আটক দীর্ঘায়িত করার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে তাঁর হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিচারক বিনা কারণে তাঁকে এই মামলায় টেনে এনেছেন।
এ ছাড়া তৎকালীন মানবাধিকার মন্ত্রী রিয়াজ পিরজাদা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেছিলেন, জেনারেল হামিদ নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) দেশে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
২০২৩ সালের মে মাসে, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফয়সাল ভাওদা জেনারেল হামিদকে আল–কাদির ট্রাস্ট মামলার মাস্টারমাইন্ড এবং সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী ৫ হাজার কোটি রুপি বৈধ করার শর্তে বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কয়েক শ কোটি রুপি এবং বিপুল জমি পেয়েছিলেন। পিটিআই সরকারের আমলে যুক্তরাজ্যে সেই অর্থ ধরা পড়ে এবং দেশে ফেরত আনা হয়।
যে মামলায় জেনারেল হামিদ সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন সেই মামলার এজাহার অনুসারে, ২০১৭ সালের ১২ মে পাকিস্তান রেঞ্জারস এবং আইএসআই–এর কর্মকর্তারা টপ সিটির অফিসে এবং সংস্থার মালিক মইজের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে সোনা এবং হিরার অলংকার, নগদ অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কথিত সন্ত্রাসবাদের মামলায় তাঁরা এ অভিযান চালান।
এজাহারে আরও বলা হয়, জেনারেল হামিদের ভাই সরদার নাজাফ এ ঘটনায় মধ্যস্থতা করেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। মইজ পরে বেকসুর খালাস পান। এজাহারে আরও দাবি করা হয়, জেনারেল হামিদ মইজের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই—সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার—একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন।
বৈঠকের সময় জেনারেল হামিদ আবেদনকারীকে বলেছিলেন, অভিযানের সময় ৪০০ তোলা স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছাড়া কিছু জিনিসপত্র তিনি ফিরিয়ে দেবেন। এ ছাড়া আইএসআই–এর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার নাঈম ফখর এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার গাফফার অভিযোগকারীকে নগদ ৪ কোটি রুপি দিতে এবং কয়েক মাসের জন্য একটি বেসরকারি এএপি টিভি নেটওয়ার্ককে স্পনসর করতে জোর জবরদস্তি করেন।
সাবেক আইএসআই কর্মকর্তা ইরতাজা হারুন, সর্দার নাজাফ, ওয়াসিম তাবিশ, জাহিদ মেহমুদ মালিক এবং মোহাম্মদ মুনিরও ওই হাউজিং সোসাইটির অবৈধ দখলে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
৭ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
৭ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
৮ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১১ দিন আগে