সাতক্ষীরার কুখ্যাত রাজাকার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খান রোকনুজ্জামানকে (৭২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শনিবার তাঁকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-২-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শিহাব করিম।
শিহাব করিম জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী খান রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার রোকনুজ্জামান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে তিনি ও রাজাকার বাহিনীর অন্য দোসররা সাতক্ষীরা এলাকায় মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা, গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজ করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে খান রোকনুজ্জামান মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে নিয়ে খান রোকনুজ্জামান সাতক্ষীরা জেলায় পাঁচজনকে গলা কেটে ও একজনকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেন। এ ছাড়া দুজনকে ধর্ষণ ও ১৪ জনকে আটক করে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন। এই অভিযোগে ২০১৫ সালে সাতক্ষীরায় খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে অবৈধ আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা, গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে একটি মামলা দায়ের হয়।
পরবর্তীকালে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। যা ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত শেষে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য অনুযায়ী খান রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। ট্রাইব্যুনাল দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের মার্চ মাসের ২৪ তারিখ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।