জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
৬৯ লাখ ৭ হাজার ৪৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার আসামি ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন ‘অবৈধ অর্থে গড়া’ পাঁচতলা বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন। সম্পদ বিক্রি করে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কাউন্টার টেররিজমের হাতে মঙ্গলবার রাতে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২০২১ সালে জেল থেকে বের হওয়ার পর মাঝেমধ্যে অফিসেও যেতেন সাময়িক চাকরিচ্যুত জয়নাল। প্রতি মাসে ১৪ হাজার টাকা বেতনও পেতেন। যোগাযোগ ছিল নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, কাউন্সিলর ও পাসপোর্ট অফিসের চক্রের সঙ্গে, যাঁদের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে করতেন ভোটার, পাসপোর্ট ও জন্মনিবন্ধন।
অবৈধ সুযোগ নিয়ে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জয়নালকে তাঁর সম্পদ বিক্রির সুযোগ দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে এত অবৈধ সম্পদ পেয়েও সেসব কেন দুদক জব্দ করেনি, সেই প্রশ্ন সামনে আসছে এখন। এমনকি জয়নালের তিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বারবার বদলি হওয়া নিয়ে দুদকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী।
আখতার কবির বলেন, ‘১৬৪ ধারায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি জয়নাল স্বীকার করেছেন বলে মিডিয়ায় এসেছে। তাঁর তো জামিন হওয়ারও কথা না। দুদকের মামলায় অবৈধ সম্পদের টাকায় পাঁচতলা বাড়ি করার প্রমাণও মিলেছে। ব্যাংকের অবৈধ টাকা ফ্রিজ না করে বাড়িসহ অবৈধ আয়ে অর্জিত স্থাবর সম্পদ দুদক হেফাজতে না নিয়ে মারাত্মক গাফিলতি করেছে। এই মামলায় তৎপর না হওয়া মানে দুদকের কর্মকর্তারাই দুর্নীতিতে জড়িত। দুদকের এখনই উচিত জয়নাল যাতে বিদেশ যেতে না পারেন, সে জন্য পাসপোর্ট জব্দ করা। যেহেতু মামলা চলমান, তাই আদালত থেকে সম্পদ হেফাজতের আদেশ দ্রুত নিয়ে দুদকের উচিত তাঁর সব সম্পদ ক্রোক করা।’
২০১৯ সালে রোহিঙ্গা নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটিতে তাঁকে এক নম্বর আসামি করা হয়। মামলা দুটি হলো—দুদক চট্টগ্রাম ২, মামলা নম্বর ১, ১ (১২) ১৯। এই মামলার বাদী তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী, যাকে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হয়।
এরপর মামলার তদন্তভার পান চট্টগ্রাম দুদকের আরেক কর্মকর্তা রতন কুমার দাশ। তাঁকেও বদলি করা হয়। আরেকটি মামলা হলো ৪৭/ ১৯। এটির বাদী ছিলেন দুদক থেকে রাঘববোয়ালের রোষে চাকরি হারানো আলোচিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। এখন এই মামলার তদন্ত করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার পৌর এলাকার আশকরিয়াপাড়ায় তার পাঁচতলা ভবনের সন্ধান পায়, যেটি অবৈধ টাকায় তৈরি বলে দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় চট্টগ্রামে এমএলএসএস পদে যোগদান করেন জয়নাল। তখন মাসিক বেতন পেতেন ৫ হাজার ৯৬০ টাকা। ২০১৯ সালে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত তিনি বেতন পেতেন ১৩ হাজার ৯০০ টাকা। চাকরিতে যোগদান থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের মামলার আগ পর্যন্ত বেতন পান ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৯০০ টাকা। ওই বেতনই জয়নালের একমাত্র আয়ের উৎস। তাঁর নামে কোনো আয়কর নথিও নেই। বেতনের ৮০ ভাগ পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খরচ বাদ দিলে খরচ হয় ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫২০ টাকা। তাঁর কাছে থাকার কথা ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৩৮০ টাকা।
কিন্তু দুদকের মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলীর অনুসন্ধানে জয়নালের লাখ লাখ টাকার হদিস মেলে। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই বাঁশখালীর গ্রামের বাড়িতে সাড়ে ৫ লাখ টাকায় পাঁচ শতক নাল জমি কেনেন। ওই জমিতে পাঁচতলার ভিত্তি দিয়ে চারতলা তোলেন। এতে খরচ হয় ৬৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে আরেকটি জায়গা কেনেন। এভাবে জয়নালের স্থাবর-অস্থাবর ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮২২ টাকার সম্পদের হদিস পায় দুদক। এর মধ্যে বেতনের সাড়ে ৪ লাখ টাকা বাদ দিলে ৬৯ লাখ ৭ হাজার ৪৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায় জয়নালের।
কয়েক কোটি টাকার বাড়িটি তড়িঘড়ি করে বিক্রি
এর আগে জয়নালকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর পাঁচতলা ভবনটি নির্মাণাধীন ছিল। ওই সময় তিনতলা পর্যন্ত কাঠ-বাঁশ দিয়ে ঢালাইয়ের জন্য রেখেছিলেন।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে চারতলা পর্যন্ত। তোলা হয়নি রুমের দেয়াল। ভবনের অনেক জায়গায় রং করেছেন, ফিনিশিং করেছেন। এমনকি নিচতলায় তিন পরিবার ভাড়াও থাকে। ২০২১ সালে জয়নাল জেল থেকে বের হয়ে বাড়িটি রেডি করে বিক্রি করেছেন বলে দাবি তাঁর।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে বাঁশখালীর পৌর সদরের বাসিন্দা আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুল মোনাফের কাছে কোটি টাকার বাড়িটি তড়িঘড়ি করে ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন বলে স্বীকার করেন জয়নাল। যার কাছে বিক্রি করেছেন, তিনি তাঁর বাবা।
জমির অংশটিও আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেন বলে জানান জয়নাল। বাড়ি ও জমিটি এখন তাঁর নামে নেই। যাঁদের কাছে বিক্রি করেছেন, তাঁদের নামে নামজারিও হয়ে গেছে। গ্রেপ্তারের আগে এমন তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
ওই সময়ে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার পর বাড়িটি সরকারি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল বলে তদন্ত করা হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে আদালত জয়নালের সম্পদ সরকারের হেফাজতে নেওয়ার পর আদেশ দিয়েছেন কি না, তা জানাতে পারেননি দুদকের আইনজীবী মুজিবুল হক চৌধুরী।
চট্টগ্রাম আদালতে চট্টগ্রাম-১-এর দুদকের সহকারী পরিদর্শক এম এ লতিফ (জিআরও) অফিসে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জয়নালের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা ৪৭/ ১৯ এখনো তদন্তাধীন পর্যায়ে। এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়নি। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দুদকের মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। একইভাবে রতন কুমার দাশও তদন্ত করে ওই প্রতিবেদন দিয়ে মামলার চার্জশিট দিয়েছেন। তবে সেখানে জয়নালের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীকেও আসামি করা হয়েছে, যেটি এখন নিষ্পত্তির পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে দুদকের শরীফের করা মানি লন্ডারিং মামলায় জয়নালকে এক নম্বর আসামি করা হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, জয়নাল আবেদীন রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন। এখান থেকে অর্জিত অবৈধ টাকা ঢাকায় এই মামলায় আরেক আসামি সত্য সুন্দর দের কাছে পাঠাতেন। সত্য সুন্দর দে নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে টেকনিক্যাল এক্সপার্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি আল-আরাফাহ ব্যাংকে ১ লাখ ৯৭ হাজার, ইসলামী ব্যাংকে ১ লাখ ৫০ হাজার, কুরিয়ারে ৩ লাখ ৫০ হাজারসহ মোট ৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা অবৈধ উপায়ে গ্রহণ করেন। আরেক আসামি মো. জাফর ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখায় জয়নালের হিসাবটিতে ৬০ হাজার টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা দেন। একই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ৬ লাখ টাকাসহ মোট ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে কমিশন পান। এ ছাড়া আসামি ঋষিকেশ দাশ আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা, ইসলামী ব্যাংকে ৭০ হাজার টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ৩ লাখসহ মোট ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা আদান-প্রদানে সহায়তা করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
জেল থেকে বের হয়েও আগের পেশায় জয়নাল
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং মামলায় ২০১৯ সালে জেলে যান জয়নাল। পরে সাময়িক চাকরিচ্যুতও হন, যেটি গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত বহাল রাখেন। যাওয়া-আসা ছিল চট্টগ্রাম ও ঢাকার নির্বাচন কমিশন অফিসে। ১০ আত্মীয় ছাড়াও তাঁর হয়ে কাজ করেন অন্তত ৫০ জন অপারেটর, যাদের মাধ্যমে এখনো অবৈধভাবে এনআইডি ও পাসপোর্ট পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। চাকরিচ্যুত হলেও তিনি কর্মস্থলে যান বলে আজকের পত্রিকাকে নিজেই স্বীকার করেন জয়নাল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রামে জয়নালের নেতৃত্বে এখনো একটি প্রতারক চক্র সক্রিয়। এখন প্রায় সময় অফিস করেন ডবলমুরিং থানা অফিসের কার্যালয়ে। যাতায়াত আছে নগরের লাভ লেইনের সামনে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসেও। কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ে ডেটা এন্ট্রি অফিসার পদে রয়েছেন তাঁর খালাতো ভাই মোজাফ্ফের আহমেদ। তাঁর বোনের জামাই নুর আহমেদ চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি হাটহাজারীতে বদলি হন। এই দুজন যে আত্মীয়, তা স্বীকার করেন জয়নাল। ২০১৯ সালে দুদকের মামলায় তাঁর আত্মীয় খালাতো ভাই মোজাফ্ফের আহমেদ, তাঁর বোনের জামাই নুর আহমেদকে দিয়ে জয়নাল অবৈধ কাজ করাতেন বলে দুদক মামলায় উল্লেখ করেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে কম সময়ে এনআইডি পাইয়ে দেবেন বলে এক ভুক্তভোগী থেকে ৬ হাজার টাকা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই ভুক্তভোগী কাজ করেন আবার আরেকজনের মাধ্যমে। যাঁর এনআইডির কাজ করেন, তাঁর নাম নোমান ইবনে জামাল।
এ ছাড়া কাগজপত্র ছাড়া জন্মনিবন্ধন পেতে ৫০ হাজার টাকা নিতেন তিনি। শুধু নাম সংশোধনীর জন্য দুটি জন্মনিবন্ধনের কাজ করে দিতে ৪৫ হাজার টাকা চান। কিন্তু ডবলমুরিং হাজিপাড়া এলাকার দুজন বাসিন্দা বেশি টাকা চাওয়ায় আর দেননি। ঘটনাটি দুই মাস আগের। নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, জয়নালের চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিসে ছয়জন কর্মচারী রয়েছেন, যাঁরা জয়নালের হয়ে অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির কাজে সহযোগিতা করতেন। ভুয়া জন্মনিবন্ধন ও জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য রামপুরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিসের দুজন কর্মচারী, চট্টগ্রামের চান্দগাঁও কাউন্সিলর অফিস, কোতোয়ালির ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিস, বাঁশখালীর একজন মহিলা কাউন্সিলর, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে বেশ কয়েকজন তাঁর হয়ে কাজ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নাল আজকের পত্রিকাকে বলেছিলেন, ‘সাময়িক চাকরিচ্যুত হলেও মাঝেমধ্যে আমি অফিসে যাই, কাজ করি। পাঁচতলা বাড়িটি ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। তবে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
এদিকে অফিসে জয়নালের কাজ করার বিষয়টি আজকের পত্রিকার কাছে অস্বীকার করেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ডবলমুরিং নয়, জয়নাল আবেদীন বিভিন্নজনের কাজ নিয়ে লাভ লেইন এলাকার চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসেও যাতায়াত করেন।
দুদকের চট্টগ্রাম-২ উপপরিচালক মো. আতিকুর আলমের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। দুদকের সূত্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালে করা মামলাটির চার্জশিট সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করার আইন রয়েছে। তিনটি মামলার মধ্যে মাত্র একটির চার্জশিট দিতে পেরেছে দুদক।
চট্টগ্রাম দুদকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তদন্ত শেষে চার্জশিটের জন্য মামলাটি কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তারা চার্জশিট দেওয়ার জন্য এখনো অনুমোদন দেয়নি, তাই আদালতে জমা দিতে পারিনি।’
৬৯ লাখ ৭ হাজার ৪৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার আসামি ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন ‘অবৈধ অর্থে গড়া’ পাঁচতলা বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন। সম্পদ বিক্রি করে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কাউন্টার টেররিজমের হাতে মঙ্গলবার রাতে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২০২১ সালে জেল থেকে বের হওয়ার পর মাঝেমধ্যে অফিসেও যেতেন সাময়িক চাকরিচ্যুত জয়নাল। প্রতি মাসে ১৪ হাজার টাকা বেতনও পেতেন। যোগাযোগ ছিল নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, কাউন্সিলর ও পাসপোর্ট অফিসের চক্রের সঙ্গে, যাঁদের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে করতেন ভোটার, পাসপোর্ট ও জন্মনিবন্ধন।
অবৈধ সুযোগ নিয়ে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জয়নালকে তাঁর সম্পদ বিক্রির সুযোগ দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে এত অবৈধ সম্পদ পেয়েও সেসব কেন দুদক জব্দ করেনি, সেই প্রশ্ন সামনে আসছে এখন। এমনকি জয়নালের তিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বারবার বদলি হওয়া নিয়ে দুদকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী।
আখতার কবির বলেন, ‘১৬৪ ধারায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি জয়নাল স্বীকার করেছেন বলে মিডিয়ায় এসেছে। তাঁর তো জামিন হওয়ারও কথা না। দুদকের মামলায় অবৈধ সম্পদের টাকায় পাঁচতলা বাড়ি করার প্রমাণও মিলেছে। ব্যাংকের অবৈধ টাকা ফ্রিজ না করে বাড়িসহ অবৈধ আয়ে অর্জিত স্থাবর সম্পদ দুদক হেফাজতে না নিয়ে মারাত্মক গাফিলতি করেছে। এই মামলায় তৎপর না হওয়া মানে দুদকের কর্মকর্তারাই দুর্নীতিতে জড়িত। দুদকের এখনই উচিত জয়নাল যাতে বিদেশ যেতে না পারেন, সে জন্য পাসপোর্ট জব্দ করা। যেহেতু মামলা চলমান, তাই আদালত থেকে সম্পদ হেফাজতের আদেশ দ্রুত নিয়ে দুদকের উচিত তাঁর সব সম্পদ ক্রোক করা।’
২০১৯ সালে রোহিঙ্গা নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটিতে তাঁকে এক নম্বর আসামি করা হয়। মামলা দুটি হলো—দুদক চট্টগ্রাম ২, মামলা নম্বর ১, ১ (১২) ১৯। এই মামলার বাদী তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী, যাকে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হয়।
এরপর মামলার তদন্তভার পান চট্টগ্রাম দুদকের আরেক কর্মকর্তা রতন কুমার দাশ। তাঁকেও বদলি করা হয়। আরেকটি মামলা হলো ৪৭/ ১৯। এটির বাদী ছিলেন দুদক থেকে রাঘববোয়ালের রোষে চাকরি হারানো আলোচিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। এখন এই মামলার তদন্ত করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার পৌর এলাকার আশকরিয়াপাড়ায় তার পাঁচতলা ভবনের সন্ধান পায়, যেটি অবৈধ টাকায় তৈরি বলে দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় চট্টগ্রামে এমএলএসএস পদে যোগদান করেন জয়নাল। তখন মাসিক বেতন পেতেন ৫ হাজার ৯৬০ টাকা। ২০১৯ সালে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত তিনি বেতন পেতেন ১৩ হাজার ৯০০ টাকা। চাকরিতে যোগদান থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের মামলার আগ পর্যন্ত বেতন পান ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৯০০ টাকা। ওই বেতনই জয়নালের একমাত্র আয়ের উৎস। তাঁর নামে কোনো আয়কর নথিও নেই। বেতনের ৮০ ভাগ পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খরচ বাদ দিলে খরচ হয় ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫২০ টাকা। তাঁর কাছে থাকার কথা ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৩৮০ টাকা।
কিন্তু দুদকের মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলীর অনুসন্ধানে জয়নালের লাখ লাখ টাকার হদিস মেলে। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই বাঁশখালীর গ্রামের বাড়িতে সাড়ে ৫ লাখ টাকায় পাঁচ শতক নাল জমি কেনেন। ওই জমিতে পাঁচতলার ভিত্তি দিয়ে চারতলা তোলেন। এতে খরচ হয় ৬৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে আরেকটি জায়গা কেনেন। এভাবে জয়নালের স্থাবর-অস্থাবর ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮২২ টাকার সম্পদের হদিস পায় দুদক। এর মধ্যে বেতনের সাড়ে ৪ লাখ টাকা বাদ দিলে ৬৯ লাখ ৭ হাজার ৪৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায় জয়নালের।
কয়েক কোটি টাকার বাড়িটি তড়িঘড়ি করে বিক্রি
এর আগে জয়নালকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর পাঁচতলা ভবনটি নির্মাণাধীন ছিল। ওই সময় তিনতলা পর্যন্ত কাঠ-বাঁশ দিয়ে ঢালাইয়ের জন্য রেখেছিলেন।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে চারতলা পর্যন্ত। তোলা হয়নি রুমের দেয়াল। ভবনের অনেক জায়গায় রং করেছেন, ফিনিশিং করেছেন। এমনকি নিচতলায় তিন পরিবার ভাড়াও থাকে। ২০২১ সালে জয়নাল জেল থেকে বের হয়ে বাড়িটি রেডি করে বিক্রি করেছেন বলে দাবি তাঁর।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে বাঁশখালীর পৌর সদরের বাসিন্দা আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুল মোনাফের কাছে কোটি টাকার বাড়িটি তড়িঘড়ি করে ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন বলে স্বীকার করেন জয়নাল। যার কাছে বিক্রি করেছেন, তিনি তাঁর বাবা।
জমির অংশটিও আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেন বলে জানান জয়নাল। বাড়ি ও জমিটি এখন তাঁর নামে নেই। যাঁদের কাছে বিক্রি করেছেন, তাঁদের নামে নামজারিও হয়ে গেছে। গ্রেপ্তারের আগে এমন তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
ওই সময়ে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার পর বাড়িটি সরকারি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল বলে তদন্ত করা হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে আদালত জয়নালের সম্পদ সরকারের হেফাজতে নেওয়ার পর আদেশ দিয়েছেন কি না, তা জানাতে পারেননি দুদকের আইনজীবী মুজিবুল হক চৌধুরী।
চট্টগ্রাম আদালতে চট্টগ্রাম-১-এর দুদকের সহকারী পরিদর্শক এম এ লতিফ (জিআরও) অফিসে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জয়নালের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা ৪৭/ ১৯ এখনো তদন্তাধীন পর্যায়ে। এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়নি। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দুদকের মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। একইভাবে রতন কুমার দাশও তদন্ত করে ওই প্রতিবেদন দিয়ে মামলার চার্জশিট দিয়েছেন। তবে সেখানে জয়নালের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীকেও আসামি করা হয়েছে, যেটি এখন নিষ্পত্তির পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে দুদকের শরীফের করা মানি লন্ডারিং মামলায় জয়নালকে এক নম্বর আসামি করা হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, জয়নাল আবেদীন রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন। এখান থেকে অর্জিত অবৈধ টাকা ঢাকায় এই মামলায় আরেক আসামি সত্য সুন্দর দের কাছে পাঠাতেন। সত্য সুন্দর দে নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে টেকনিক্যাল এক্সপার্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি আল-আরাফাহ ব্যাংকে ১ লাখ ৯৭ হাজার, ইসলামী ব্যাংকে ১ লাখ ৫০ হাজার, কুরিয়ারে ৩ লাখ ৫০ হাজারসহ মোট ৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা অবৈধ উপায়ে গ্রহণ করেন। আরেক আসামি মো. জাফর ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখায় জয়নালের হিসাবটিতে ৬০ হাজার টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা দেন। একই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ৬ লাখ টাকাসহ মোট ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে কমিশন পান। এ ছাড়া আসামি ঋষিকেশ দাশ আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখায় মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা, ইসলামী ব্যাংকে ৭০ হাজার টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ৩ লাখসহ মোট ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা আদান-প্রদানে সহায়তা করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
জেল থেকে বের হয়েও আগের পেশায় জয়নাল
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং মামলায় ২০১৯ সালে জেলে যান জয়নাল। পরে সাময়িক চাকরিচ্যুতও হন, যেটি গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত বহাল রাখেন। যাওয়া-আসা ছিল চট্টগ্রাম ও ঢাকার নির্বাচন কমিশন অফিসে। ১০ আত্মীয় ছাড়াও তাঁর হয়ে কাজ করেন অন্তত ৫০ জন অপারেটর, যাদের মাধ্যমে এখনো অবৈধভাবে এনআইডি ও পাসপোর্ট পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। চাকরিচ্যুত হলেও তিনি কর্মস্থলে যান বলে আজকের পত্রিকাকে নিজেই স্বীকার করেন জয়নাল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রামে জয়নালের নেতৃত্বে এখনো একটি প্রতারক চক্র সক্রিয়। এখন প্রায় সময় অফিস করেন ডবলমুরিং থানা অফিসের কার্যালয়ে। যাতায়াত আছে নগরের লাভ লেইনের সামনে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসেও। কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ে ডেটা এন্ট্রি অফিসার পদে রয়েছেন তাঁর খালাতো ভাই মোজাফ্ফের আহমেদ। তাঁর বোনের জামাই নুর আহমেদ চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি হাটহাজারীতে বদলি হন। এই দুজন যে আত্মীয়, তা স্বীকার করেন জয়নাল। ২০১৯ সালে দুদকের মামলায় তাঁর আত্মীয় খালাতো ভাই মোজাফ্ফের আহমেদ, তাঁর বোনের জামাই নুর আহমেদকে দিয়ে জয়নাল অবৈধ কাজ করাতেন বলে দুদক মামলায় উল্লেখ করেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে কম সময়ে এনআইডি পাইয়ে দেবেন বলে এক ভুক্তভোগী থেকে ৬ হাজার টাকা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই ভুক্তভোগী কাজ করেন আবার আরেকজনের মাধ্যমে। যাঁর এনআইডির কাজ করেন, তাঁর নাম নোমান ইবনে জামাল।
এ ছাড়া কাগজপত্র ছাড়া জন্মনিবন্ধন পেতে ৫০ হাজার টাকা নিতেন তিনি। শুধু নাম সংশোধনীর জন্য দুটি জন্মনিবন্ধনের কাজ করে দিতে ৪৫ হাজার টাকা চান। কিন্তু ডবলমুরিং হাজিপাড়া এলাকার দুজন বাসিন্দা বেশি টাকা চাওয়ায় আর দেননি। ঘটনাটি দুই মাস আগের। নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, জয়নালের চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিসে ছয়জন কর্মচারী রয়েছেন, যাঁরা জয়নালের হয়ে অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির কাজে সহযোগিতা করতেন। ভুয়া জন্মনিবন্ধন ও জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য রামপুরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিসের দুজন কর্মচারী, চট্টগ্রামের চান্দগাঁও কাউন্সিলর অফিস, কোতোয়ালির ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিস, বাঁশখালীর একজন মহিলা কাউন্সিলর, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে বেশ কয়েকজন তাঁর হয়ে কাজ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নাল আজকের পত্রিকাকে বলেছিলেন, ‘সাময়িক চাকরিচ্যুত হলেও মাঝেমধ্যে আমি অফিসে যাই, কাজ করি। পাঁচতলা বাড়িটি ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। তবে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
এদিকে অফিসে জয়নালের কাজ করার বিষয়টি আজকের পত্রিকার কাছে অস্বীকার করেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ডবলমুরিং নয়, জয়নাল আবেদীন বিভিন্নজনের কাজ নিয়ে লাভ লেইন এলাকার চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসেও যাতায়াত করেন।
দুদকের চট্টগ্রাম-২ উপপরিচালক মো. আতিকুর আলমের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। দুদকের সূত্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালে করা মামলাটির চার্জশিট সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করার আইন রয়েছে। তিনটি মামলার মধ্যে মাত্র একটির চার্জশিট দিতে পেরেছে দুদক।
চট্টগ্রাম দুদকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তদন্ত শেষে চার্জশিটের জন্য মামলাটি কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তারা চার্জশিট দেওয়ার জন্য এখনো অনুমোদন দেয়নি, তাই আদালতে জমা দিতে পারিনি।’
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
৮ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
৮ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
৮ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১২ দিন আগে