মিনহাজ তুহিন, চবি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের পর, এবার অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত পাঁচটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এর মধ্যে একটি ফোনালাপে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএসের অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শানা যায়। অপর একটিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর শীর্ষ ব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করতে উপাচার্যের টাকার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী।
এ ঘটনায় উপাচার্যের পিএসকে অপসারণ করে আগের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত বছরের ১৪ নভেম্বর ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য তিন সদস্যের বোর্ড বসে। বোর্ডে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ না থাকা, আবেদনকারীদের মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া একাধিক প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত অযোগ্যদের সুপারিশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল আবেদনকারীদের।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে উপাচার্যের ভাতিজা আজফার কামাল চৌধুরী শাওন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইলিয়াস সিদ্দিকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। যদিও এ ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা একটা চক্রান্ত। আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমরা ওই লোককে (আহমেদ হোসেন) জেলে দিয়েছি। রবীন (পিএস) তো নিজেই আগের জায়গায় চলে গেছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা খুব স্বচ্ছভাবে নিয়েছি। কিন্তু যাঁরা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরা এসব করেছেন। আমরা শক্ত হাতে এসব দমন করছি।’
পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা এটা (নিয়োগ) রেফার ব্যাক করব। কোনো অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দিব না। কর্মচারী হোক আর যাই হোক, আমরা কাউকে ছাড় দিব না। আমি সৎভাবে কাজ করে বিতর্কিত হব কেন?’
তবে তদন্ত কমিটিতে কে কে আছেন জানতে চাইলে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে চাননি উপাচার্য।
এ দিকে ফোনালাপে নাম উঠে আসা কর্মচারী আহমদ হোসেনকে উপাচার্য জেলে দিয়েছেন দাবি করলেও তাঁকে দিব্যি ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এমনকি ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আহমদ হোসেন বলেন, ‘আমার মোবাইল ফোনটা হারিয়ে গেছে। আমি এসবের কিছুই জানি না।’ ফোন হারানোর জিডি করেছেন কি না জানতে চাইলে নেতিবাচক জবাব দেন তিনি।
অন্যদিকে চাকরিপ্রার্থী ওয়াক্কাসকে কল দিলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। আর উপাচার্যের পিএস রবীনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি।
প্রথম ফোনালাপ: উপাচার্যের সহকারী খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীন ও নিয়োগপ্রার্থীর মধ্যে কথোপকথন—
রবীন: ম্যাডামের (উপাচার্য) সঙ্গে দেখা হলে তোমার কথা বলব। ম্যাডাম যেভাবে বলে সেভাবে হবে।
নিয়োগপ্রার্থী: ঠিক আছে, আপনি একটু দয়া করে আমার বিষয়টা দেখবেন আরকি।
রবীন: ঠিক আছে, ইনশাআল্লাহ। চট্টগ্রামের দেখেই তো আমি টান দিলাম (তোমাকে)। কিন্তু প্রেক্ষাপট বা বাস্তবতা হলো এগুলোই হচ্ছে সব জায়গায়। আমি তোমার ভাবির (রবীনের স্ত্রী) জন্যও চেষ্টা করেছি। কিন্তু গতবার আমি শুধু এটা (টাকা) দেইনি বলেই হয় নাই। আমি এখানেই আছি, অথচ আমার স্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে। বর্তমানে সে সাদার্ন ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আছে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করি নাই বলেই হয়নি এটা। অন্যথায় এত দিনে হয়ে যেত। সোজা কথা এটাই।
নিয়োগপ্রার্থী: আপনি যে কারণে ভিকটিম হয়েছিলেন। আপনি যেহেতু এখন ম্যাডামের সঙ্গে আছেন, অন্য কেউ যেন এমন ভিকটিম না হয়, আমি আপনার কাছে এটা আশা করব আরকি।
রবীন: আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। তবে বাস্তবতা যেটা, সেটা আমি তোমাকে ইঙ্গিত করলাম।
নিয়োগপ্রার্থী: বুঝতে পেরেছি। আপনি যদি ম্যাডামের (উপাচার্য) সঙ্গে আমার সাক্ষাতের বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে আমি বিষয়টা দেখব ইনশাআল্লাহ।
রবীন: ঠিক আছে।
দ্বিতীয় ফোনালাপ:
চবি কর্মচারী: আপনি কি এখানে (চবিতে) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন করেছেন?
নিয়োগপ্রার্থী: আমি আবেদন করেছি।
কর্মচারী: কোনো লবিং করেছেন কি?
নিয়োগপ্রার্থী: আপনি কে বলছেন, আপনার পরিচয়টা দিলে সুবিধা হয়।
কর্মচারী: আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস থেকে বলছি। ১৪ তারিখ (১৪ নভেম্বর, ২০২১) আপনাদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পড়েছে। এখানে আপনার নাম দেখে ফোন করেছি, লবিং করছেন কি না, সেটা জানার জন্য।
নিয়োগপ্রার্থী: লবিং বলতে আমাদের চট্টগ্রাম আনোয়ারা থানার একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে একটা ডিও লেটার নিয়েছিলাম। যাইহোক আপনার নাম কী? বাড়ি কোথায় আপনার?
কর্মচারী: আমার নাম আহমদ হোসেন। বাড়ি এখানেই, হাটহাজারী।
নিয়োগপ্রার্থী: এখন কীভাবে কী করা যায়, আমাকে পরামর্শ দিন।
কর্মচারী: এখন তো আসলে লবিং ছাড়া কিছুই হবে না, এটা সবাই জানে।
নিয়োগপ্রার্থী: আমি আরবি বিভাগের এক ভাই এবং আমাদের চবির এক স্যারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। ওনারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। এখন বাস্তবতা কী, সেটা তো জানি না।
কর্মচারী: ঠিক আছে, এখানে চট্টগ্রামের দুইজন আছে ক্যান্ডিডেট, এর মধ্যে আপনি একজন। যাইহোক, যদি প্রয়োজন মনে করেন অ্যাডভান্স দিতে পারবেন, ফোন দিবেন আরকি। আর যেহেতু আপনার পরিচিত মানুষ আছে, দেখেন কী করা যায়।
তৃতীয় ফোনালাপ:
নিয়োগপ্রার্থী: আমাকে পদ্ধতিটা শিখিয়ে দিন, কার মাধ্যমে কী করতে হবে?
কর্মচারী: একটা জিনিস আপনিও বুঝেন, আমিও বুঝি, সবাই বুঝে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লেনদেন ছাড়া কোনো কিছুই হয় না। এ জন্য মন্ত্রীর সুপারিশ বলেন বা যার সুপারিশই বলেন, কোনো কিছুই কার্যকরী হবে না। কারণ সব জায়গায় টাকা লাগে। এখন কথা হলো, আপনাকে যদি ম্যাডামের (উপাচার্য) সঙ্গে বসিয়ে দিই, আর ম্যাডাম যদি রাজি হন, তাহলে আপনাকে অর্ধেক পেমেন্ট আগে দিয়ে ফেলতে হবে। আর বাকি অর্ধেক আপনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাওয়ার পর দিবেন।
নিয়োগপ্রার্থী: কাকে দিতে হবে পেমেন্ট? ম্যাডাম কে?
কর্মচারী: ম্যাডামকে না, ম্যাডাম কি সরাসরি (টাকা) নিবে নাকি? তা ছাড়া ম্যাডাম আবার মন্ত্রণালয়ে লাইন ঘাট সব ম্যানেজ করবেন। যাইহোক, এটা আমি জানি বলেই আপনাকে জানালাম। এখন আপনার যদি সম্মতি থাকে তাহলে আমি আলাপ করে দেখতে পারি। ম্যাডাম যদি রাজি হন, তাহলে আপনি অর্ধেক পেমেন্ট করবেন এবং পেমেন্ট যে করছেন সেটার একটা চেক অথবা ডকুমেন্ট দিতে হবে। কিন্তু ম্যাডাম যদি ‘না’ বলেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীও যদি ব্যক্তিগতভাবে সুপারিশ করেন কোনো কাজ হবে না। এটাই শেষ কথা। কারণ ম্যাডাম নিজেও তো আসছেন অনেক টাকা খরচ করে। তবে এ সমস্ত কথা কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। তাহলে আপনারও বিপদ, আমারও বিপদ। এখন আপনার যদি সম্মতি থাকে এবং ম্যাডাম যদি রাজি হন, তাহলে একটা কন্ট্রাক্ট করা যায়।
নিয়োগপ্রার্থী: বুঝতে পারলাম, অ্যামাউন্ট কত?
কর্মচারী: অ্যামাউন্ট হলো ১৬ (লাখ)।
নিয়োগপ্রার্থী: তাহলে তো কঠিন অবস্থা।
কর্মচারী: তৃতীয় শ্রেণির একটা চাকরির জন্য এখন ১০-১২ লাখ টাকা লাগে। চতুর্থ শ্রেণির, যেমন— মালি, প্রহরীর এসব চাকরির জন্য লাগে ৮ লাখ টাকা। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হলো সর্বোচ্চ সম্মানী পদ। কাজেই এখানে ১৬ লাখের কম দিলে হবে না।
নিয়োগপ্রার্থী: কার মারফতে (মাধ্যমে) দিতে হবে টাকা?
কর্মচারী: সেটা পরে জানাব। আগে আপনার যদি সম্মতি থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। যেভাবেই হোক আমি সেটা নেওয়ার ব্যবস্থা করব।
নিয়োগপ্রার্থী: ঠিক আছে।
কর্মচারী: যেহেতু চট্টগ্রামের বাহিরের মানুষ বেশি (নিয়োগপ্রার্থীদের মধ্যে)। চট্টগ্রামের মধ্যে আছেন আপনারা দুইজন। আর আমিও চাই যে চট্টগ্রামের একজনের হোক। চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে চট্টগ্রামের যারা তাদের পক্ষে থাকাটাই তো স্বাভাবিক। এ জন্য চট্টগ্রামের দুই জনকেই বলছি আমি এ বিষয়ে।
নিয়োগপ্রার্থী: চট্টগ্রামের মধ্যে তো চার-পাঁচ জন আবেদন করছে। রেজাল্ট ভালো দুইজনের আরকি।
কর্মচারী: ওরকম হলে তো আমরা জানতাম। শুধু আবেদন করলেই তো হবে না। রেজাল্ট ওতো ভালো হতে হবে।
নিয়োগপ্রার্থী: ঠিক আছে। আমি দেখি, যদিও আমার জন্য এ টাকা ম্যানেজ করা কষ্টকর হয়ে যাবে। আমি গরিবের ছেলে। পড়াশোনা করেছি কষ্ট করে।
কর্মচারী: যাইহোক, চিন্তাভাবনা করে জানাবেন। আর রেজাল্টও লাগবে। যার কারণে দুইটাই (রেজাল্ট এবং টাকা) প্রয়োজন। এখন এটা আপনার সম্মতির ওপর। এটা চাইলে বাইরের কাওকেও বলতে পারতাম।
নিয়োগপ্রার্থী: জ্বি, পারলে দিব, না পারলে সাধারণভাবে গিয়ে পরীক্ষা দিব আরকি। যদিও এত টাকা সংগ্রহ করা আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।
কর্মচারী: ঠিক আছে আপনি চিন্তাভাবনা করে দেখেন।
চতুর্থ ফোনালাপ: ঢাবি ও চবির ফারসি বিভাগের দুই ছাত্রের কথোপকথন—
চবি ছাত্র: আব্দুল করিম (ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি) স্যারের রুমে ঢোকার আগে ওয়াক্কাসকে (আরও এক নিয়োগপ্রার্থী) বলে দিয়েছি যে, তোমাকে ভাইবাতে কী কী জিজ্ঞেস করেছে এটা বলবে না এবং ভিসি ম্যাডাম কী কী বলেছে, সেটাও বলবে না। কারণ সে পলিটিকস বোঝে না। এ ছাড়া আমি আপনাকে ভাইবার সময় নিচে (প্রশাসনিক ভাবনের) জানিয়েছিলাম না যে, কথাবার্তা বলছেন কি না? এটা কেন বলছি জানেন?
ঢাবি ছাত্র: কেন বলছেন?
চবি ছাত্র: কারণ ভিসি ম্যাডামের ভাতিজা (আফজার কামাল চৌধুরী শাওন) মান্নান ভাইকে (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের ল্যাব সহকারী) বলছে, চট্টগ্রামের যে ছেলেগুলো আছে, তারা লবিং করেছে কি না উনি জানেন না। মান্নান ভাইয়ের সঙ্গে আমার ২০ বছরের সম্পর্ক। উনি আমাকে বলেছে, চট্টগ্রামের কেউ আছে কি না? থাকলে ম্যানেজ করে দিতে পারতাম। তো আমি বলছি, চট্টগ্রামের একজন আছে আমাদের। আমি যোগাযোগ করে দেখি। সে জন্য আপনি কতটুকু লবিং করতে পারছেন বা পারেন নাই, সেটা তো আমি জানি না। ওই নিউজটা আপনাকে দিলাম।
ঢাবি ছাত্র: জ্বি, বুঝতে পেরেছি।
পঞ্চম ফোনালাপ:
চবি ছাত্র: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিদ্দিকী ওয়াক্কাসকে (মুহাম্মদ ওয়াক্কাস-ভাইবা বোর্ডের সুপারিশ পাওয়া নিয়োগপ্রার্থীদের একজন) ফোন দিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে ওয়াক্কাস আমাকে কল দিয়ে বিষয়টি জানায়। আমি বললাম, সিদ্দিকী স্যার তো আমাদের কাছের মানুষ, কী বলেছে স্যার? সে বলল, স্যার একটা মোবাইল নম্বর দিয়েছে তাকে। নম্বরটা ওর কাছ থেকে নিয়ে দেখলাম যে, এটা রবীন স্যারের (ডেপুটি রেজিস্ট্রার খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন) নম্বর। পরে আমি ওয়াক্কাসকে রবীন স্যারের কাছে তাড়াতাড়ি যেতে বললাম। তা ছাড়া রবীন স্যার ভিসি ম্যামের কাছের মানুষ।
ঢাবি ছাত্র: আচ্ছা, তারপর?
চবি ছাত্র: ওয়াক্কাসকে আমি আগেই বলেছি, এখানে টাকা পয়সার যেহেতু একটা বিষয় আছে, টাকার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তুই যতটুকু দিতে পারবি, সেটা বলবি। রবীন স্যার কনফার্ম করে দিবে। পরে রবীন স্যার ওয়াক্কাসকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলেছে। আমি বিষয়টা ডিপার্টমেন্টের কোনো শিক্ষককেও বলতে নিষেধ করেছি। আপনিও এটা কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
ঢাবি ছাত্র: এখন ওয়াক্কাস কি ৫ লাখ টাকা দিতে পারবে?
চবি ছাত্র: না, ও বোধহয় ৫ লাখ দিতে পারবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের পর, এবার অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত পাঁচটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এর মধ্যে একটি ফোনালাপে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএসের অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শানা যায়। অপর একটিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর শীর্ষ ব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করতে উপাচার্যের টাকার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী।
এ ঘটনায় উপাচার্যের পিএসকে অপসারণ করে আগের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত বছরের ১৪ নভেম্বর ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য তিন সদস্যের বোর্ড বসে। বোর্ডে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ না থাকা, আবেদনকারীদের মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া একাধিক প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত অযোগ্যদের সুপারিশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল আবেদনকারীদের।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে উপাচার্যের ভাতিজা আজফার কামাল চৌধুরী শাওন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইলিয়াস সিদ্দিকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। যদিও এ ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা একটা চক্রান্ত। আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমরা ওই লোককে (আহমেদ হোসেন) জেলে দিয়েছি। রবীন (পিএস) তো নিজেই আগের জায়গায় চলে গেছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা খুব স্বচ্ছভাবে নিয়েছি। কিন্তু যাঁরা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরা এসব করেছেন। আমরা শক্ত হাতে এসব দমন করছি।’
পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা এটা (নিয়োগ) রেফার ব্যাক করব। কোনো অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দিব না। কর্মচারী হোক আর যাই হোক, আমরা কাউকে ছাড় দিব না। আমি সৎভাবে কাজ করে বিতর্কিত হব কেন?’
তবে তদন্ত কমিটিতে কে কে আছেন জানতে চাইলে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে চাননি উপাচার্য।
এ দিকে ফোনালাপে নাম উঠে আসা কর্মচারী আহমদ হোসেনকে উপাচার্য জেলে দিয়েছেন দাবি করলেও তাঁকে দিব্যি ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এমনকি ফোনালাপের বিষয়ে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আহমদ হোসেন বলেন, ‘আমার মোবাইল ফোনটা হারিয়ে গেছে। আমি এসবের কিছুই জানি না।’ ফোন হারানোর জিডি করেছেন কি না জানতে চাইলে নেতিবাচক জবাব দেন তিনি।
অন্যদিকে চাকরিপ্রার্থী ওয়াক্কাসকে কল দিলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। আর উপাচার্যের পিএস রবীনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি।
প্রথম ফোনালাপ: উপাচার্যের সহকারী খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীন ও নিয়োগপ্রার্থীর মধ্যে কথোপকথন—
রবীন: ম্যাডামের (উপাচার্য) সঙ্গে দেখা হলে তোমার কথা বলব। ম্যাডাম যেভাবে বলে সেভাবে হবে।
নিয়োগপ্রার্থী: ঠিক আছে, আপনি একটু দয়া করে আমার বিষয়টা দেখবেন আরকি।
রবীন: ঠিক আছে, ইনশাআল্লাহ। চট্টগ্রামের দেখেই তো আমি টান দিলাম (তোমাকে)। কিন্তু প্রেক্ষাপট বা বাস্তবতা হলো এগুলোই হচ্ছে সব জায়গায়। আমি তোমার ভাবির (রবীনের স্ত্রী) জন্যও চেষ্টা করেছি। কিন্তু গতবার আমি শুধু এটা (টাকা) দেইনি বলেই হয় নাই। আমি এখানেই আছি, অথচ আমার স্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে। বর্তমানে সে সাদার্ন ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আছে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করি নাই বলেই হয়নি এটা। অন্যথায় এত দিনে হয়ে যেত। সোজা কথা এটাই।
নিয়োগপ্রার্থী: আপনি যে কারণে ভিকটিম হয়েছিলেন। আপনি যেহেতু এখন ম্যাডামের সঙ্গে আছেন, অন্য কেউ যেন এমন ভিকটিম না হয়, আমি আপনার কাছে এটা আশা করব আরকি।
রবীন: আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। তবে বাস্তবতা যেটা, সেটা আমি তোমাকে ইঙ্গিত করলাম।
নিয়োগপ্রার্থী: বুঝতে পেরেছি। আপনি যদি ম্যাডামের (উপাচার্য) সঙ্গে আমার সাক্ষাতের বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে আমি বিষয়টা দেখব ইনশাআল্লাহ।
রবীন: ঠিক আছে।
দ্বিতীয় ফোনালাপ:
চবি কর্মচারী: আপনি কি এখানে (চবিতে) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন করেছেন?
নিয়োগপ্রার্থী: আমি আবেদন করেছি।
কর্মচারী: কোনো লবিং করেছেন কি?
নিয়োগপ্রার্থী: আপনি কে বলছেন, আপনার পরিচয়টা দিলে সুবিধা হয়।
কর্মচারী: আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস থেকে বলছি। ১৪ তারিখ (১৪ নভেম্বর, ২০২১) আপনাদের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পড়েছে। এখানে আপনার নাম দেখে ফোন করেছি, লবিং করছেন কি না, সেটা জানার জন্য।
নিয়োগপ্রার্থী: লবিং বলতে আমাদের চট্টগ্রাম আনোয়ারা থানার একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে একটা ডিও লেটার নিয়েছিলাম। যাইহোক আপনার নাম কী? বাড়ি কোথায় আপনার?
কর্মচারী: আমার নাম আহমদ হোসেন। বাড়ি এখানেই, হাটহাজারী।
নিয়োগপ্রার্থী: এখন কীভাবে কী করা যায়, আমাকে পরামর্শ দিন।
কর্মচারী: এখন তো আসলে লবিং ছাড়া কিছুই হবে না, এটা সবাই জানে।
নিয়োগপ্রার্থী: আমি আরবি বিভাগের এক ভাই এবং আমাদের চবির এক স্যারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। ওনারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। এখন বাস্তবতা কী, সেটা তো জানি না।
কর্মচারী: ঠিক আছে, এখানে চট্টগ্রামের দুইজন আছে ক্যান্ডিডেট, এর মধ্যে আপনি একজন। যাইহোক, যদি প্রয়োজন মনে করেন অ্যাডভান্স দিতে পারবেন, ফোন দিবেন আরকি। আর যেহেতু আপনার পরিচিত মানুষ আছে, দেখেন কী করা যায়।
তৃতীয় ফোনালাপ:
নিয়োগপ্রার্থী: আমাকে পদ্ধতিটা শিখিয়ে দিন, কার মাধ্যমে কী করতে হবে?
কর্মচারী: একটা জিনিস আপনিও বুঝেন, আমিও বুঝি, সবাই বুঝে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লেনদেন ছাড়া কোনো কিছুই হয় না। এ জন্য মন্ত্রীর সুপারিশ বলেন বা যার সুপারিশই বলেন, কোনো কিছুই কার্যকরী হবে না। কারণ সব জায়গায় টাকা লাগে। এখন কথা হলো, আপনাকে যদি ম্যাডামের (উপাচার্য) সঙ্গে বসিয়ে দিই, আর ম্যাডাম যদি রাজি হন, তাহলে আপনাকে অর্ধেক পেমেন্ট আগে দিয়ে ফেলতে হবে। আর বাকি অর্ধেক আপনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাওয়ার পর দিবেন।
নিয়োগপ্রার্থী: কাকে দিতে হবে পেমেন্ট? ম্যাডাম কে?
কর্মচারী: ম্যাডামকে না, ম্যাডাম কি সরাসরি (টাকা) নিবে নাকি? তা ছাড়া ম্যাডাম আবার মন্ত্রণালয়ে লাইন ঘাট সব ম্যানেজ করবেন। যাইহোক, এটা আমি জানি বলেই আপনাকে জানালাম। এখন আপনার যদি সম্মতি থাকে তাহলে আমি আলাপ করে দেখতে পারি। ম্যাডাম যদি রাজি হন, তাহলে আপনি অর্ধেক পেমেন্ট করবেন এবং পেমেন্ট যে করছেন সেটার একটা চেক অথবা ডকুমেন্ট দিতে হবে। কিন্তু ম্যাডাম যদি ‘না’ বলেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীও যদি ব্যক্তিগতভাবে সুপারিশ করেন কোনো কাজ হবে না। এটাই শেষ কথা। কারণ ম্যাডাম নিজেও তো আসছেন অনেক টাকা খরচ করে। তবে এ সমস্ত কথা কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। তাহলে আপনারও বিপদ, আমারও বিপদ। এখন আপনার যদি সম্মতি থাকে এবং ম্যাডাম যদি রাজি হন, তাহলে একটা কন্ট্রাক্ট করা যায়।
নিয়োগপ্রার্থী: বুঝতে পারলাম, অ্যামাউন্ট কত?
কর্মচারী: অ্যামাউন্ট হলো ১৬ (লাখ)।
নিয়োগপ্রার্থী: তাহলে তো কঠিন অবস্থা।
কর্মচারী: তৃতীয় শ্রেণির একটা চাকরির জন্য এখন ১০-১২ লাখ টাকা লাগে। চতুর্থ শ্রেণির, যেমন— মালি, প্রহরীর এসব চাকরির জন্য লাগে ৮ লাখ টাকা। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হলো সর্বোচ্চ সম্মানী পদ। কাজেই এখানে ১৬ লাখের কম দিলে হবে না।
নিয়োগপ্রার্থী: কার মারফতে (মাধ্যমে) দিতে হবে টাকা?
কর্মচারী: সেটা পরে জানাব। আগে আপনার যদি সম্মতি থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। যেভাবেই হোক আমি সেটা নেওয়ার ব্যবস্থা করব।
নিয়োগপ্রার্থী: ঠিক আছে।
কর্মচারী: যেহেতু চট্টগ্রামের বাহিরের মানুষ বেশি (নিয়োগপ্রার্থীদের মধ্যে)। চট্টগ্রামের মধ্যে আছেন আপনারা দুইজন। আর আমিও চাই যে চট্টগ্রামের একজনের হোক। চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে চট্টগ্রামের যারা তাদের পক্ষে থাকাটাই তো স্বাভাবিক। এ জন্য চট্টগ্রামের দুই জনকেই বলছি আমি এ বিষয়ে।
নিয়োগপ্রার্থী: চট্টগ্রামের মধ্যে তো চার-পাঁচ জন আবেদন করছে। রেজাল্ট ভালো দুইজনের আরকি।
কর্মচারী: ওরকম হলে তো আমরা জানতাম। শুধু আবেদন করলেই তো হবে না। রেজাল্ট ওতো ভালো হতে হবে।
নিয়োগপ্রার্থী: ঠিক আছে। আমি দেখি, যদিও আমার জন্য এ টাকা ম্যানেজ করা কষ্টকর হয়ে যাবে। আমি গরিবের ছেলে। পড়াশোনা করেছি কষ্ট করে।
কর্মচারী: যাইহোক, চিন্তাভাবনা করে জানাবেন। আর রেজাল্টও লাগবে। যার কারণে দুইটাই (রেজাল্ট এবং টাকা) প্রয়োজন। এখন এটা আপনার সম্মতির ওপর। এটা চাইলে বাইরের কাওকেও বলতে পারতাম।
নিয়োগপ্রার্থী: জ্বি, পারলে দিব, না পারলে সাধারণভাবে গিয়ে পরীক্ষা দিব আরকি। যদিও এত টাকা সংগ্রহ করা আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।
কর্মচারী: ঠিক আছে আপনি চিন্তাভাবনা করে দেখেন।
চতুর্থ ফোনালাপ: ঢাবি ও চবির ফারসি বিভাগের দুই ছাত্রের কথোপকথন—
চবি ছাত্র: আব্দুল করিম (ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি) স্যারের রুমে ঢোকার আগে ওয়াক্কাসকে (আরও এক নিয়োগপ্রার্থী) বলে দিয়েছি যে, তোমাকে ভাইবাতে কী কী জিজ্ঞেস করেছে এটা বলবে না এবং ভিসি ম্যাডাম কী কী বলেছে, সেটাও বলবে না। কারণ সে পলিটিকস বোঝে না। এ ছাড়া আমি আপনাকে ভাইবার সময় নিচে (প্রশাসনিক ভাবনের) জানিয়েছিলাম না যে, কথাবার্তা বলছেন কি না? এটা কেন বলছি জানেন?
ঢাবি ছাত্র: কেন বলছেন?
চবি ছাত্র: কারণ ভিসি ম্যাডামের ভাতিজা (আফজার কামাল চৌধুরী শাওন) মান্নান ভাইকে (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের ল্যাব সহকারী) বলছে, চট্টগ্রামের যে ছেলেগুলো আছে, তারা লবিং করেছে কি না উনি জানেন না। মান্নান ভাইয়ের সঙ্গে আমার ২০ বছরের সম্পর্ক। উনি আমাকে বলেছে, চট্টগ্রামের কেউ আছে কি না? থাকলে ম্যানেজ করে দিতে পারতাম। তো আমি বলছি, চট্টগ্রামের একজন আছে আমাদের। আমি যোগাযোগ করে দেখি। সে জন্য আপনি কতটুকু লবিং করতে পারছেন বা পারেন নাই, সেটা তো আমি জানি না। ওই নিউজটা আপনাকে দিলাম।
ঢাবি ছাত্র: জ্বি, বুঝতে পেরেছি।
পঞ্চম ফোনালাপ:
চবি ছাত্র: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিদ্দিকী ওয়াক্কাসকে (মুহাম্মদ ওয়াক্কাস-ভাইবা বোর্ডের সুপারিশ পাওয়া নিয়োগপ্রার্থীদের একজন) ফোন দিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে ওয়াক্কাস আমাকে কল দিয়ে বিষয়টি জানায়। আমি বললাম, সিদ্দিকী স্যার তো আমাদের কাছের মানুষ, কী বলেছে স্যার? সে বলল, স্যার একটা মোবাইল নম্বর দিয়েছে তাকে। নম্বরটা ওর কাছ থেকে নিয়ে দেখলাম যে, এটা রবীন স্যারের (ডেপুটি রেজিস্ট্রার খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন) নম্বর। পরে আমি ওয়াক্কাসকে রবীন স্যারের কাছে তাড়াতাড়ি যেতে বললাম। তা ছাড়া রবীন স্যার ভিসি ম্যামের কাছের মানুষ।
ঢাবি ছাত্র: আচ্ছা, তারপর?
চবি ছাত্র: ওয়াক্কাসকে আমি আগেই বলেছি, এখানে টাকা পয়সার যেহেতু একটা বিষয় আছে, টাকার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তুই যতটুকু দিতে পারবি, সেটা বলবি। রবীন স্যার কনফার্ম করে দিবে। পরে রবীন স্যার ওয়াক্কাসকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলেছে। আমি বিষয়টা ডিপার্টমেন্টের কোনো শিক্ষককেও বলতে নিষেধ করেছি। আপনিও এটা কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
ঢাবি ছাত্র: এখন ওয়াক্কাস কি ৫ লাখ টাকা দিতে পারবে?
চবি ছাত্র: না, ও বোধহয় ৫ লাখ দিতে পারবে না।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
৮ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
৮ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
৮ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১২ দিন আগে