পরাগ মাঝি
মূল্যবান ধাতুর খোঁজে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়ান জিম বেইলি। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের রোড আইল্যান্ডের একটি ফলের বাগানে তিনি এমন এক পয়সা খুঁজে পান, যার মধ্যে লুকিয়ে ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ডাকাতির রহস্য। সোয়া তিন শ বছর আগে ১৬৯৫ সালে সেই ডাকাতি সংঘটিত হয়েছিল ভারত মহাসাগরে।
ডাকাতির শিকার জাহাজটিতে ছিলেন বেশ কিছু মুসলিম তীর্থযাত্রী, যারা সৌদি আরবের মক্কায় হজ পালন করে ভারতবর্ষে ফিরছিলেন। অসংখ্য হজ যাত্রীকে হত্যা করে জাহাজের সমস্ত সম্পদ লুট করেছিল ডাকাতেরা। যার নেতৃত্বে ওই নির্মম ডাকাতি সংঘটিত হয়, তিনি আর কেউ নন, খুনেচড়া এক ইংরেজ জলদস্যু হেনরি এভরি।
সেই ডাকাতির ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ও বহু বছরের পুরোনো একটি অমীমাংসিত মামলা। নির্মম এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সেই সময়ই পৃথিবীর মোস্ট ওয়ান্টেড খুনিতে পরিণত হন এভরি। ডাকাতির পর সঙ্গী–সাথিসহ বেমালুম হাওয়া হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
মোস্ট ওয়ান্টেড খুনি
ইতিহাসে আছে—১৬৯৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ‘ফেন্সি’ নামে একটি জাহাজ নিয়ে গভীর সমুদ্রে ওত পেতেছিলেন ক্যাপ্টেন হেনরি এভরি। আর এ পথেই ভারতবর্ষে ফিরছিল গাঞ্জ–ই–স্বোয়ামি নামের একটি রাজকীয় জাহাজ। জাহাজটির মালিক ছিলেন স্বয়ং মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব। সেই আমলে শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী শাসক বলা হতো তাঁকে। হজযাত্রী ছাড়াও ওই জাহাজে ছিল বিপুল পরিমাণ সোনা আর রুপা। সেই সময়ের হিসাবেই ওই সম্পদের মূল্যমান ছিল ১ কোটি ডলারেরও বেশি! হেনরি এভরির নেতৃত্বে এই জাহাজেই সংঘটিত হয় পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বকালের সেরা লাভজনক, একই সঙ্গে জঘন্যতম ডাকাতির ঘটনাটি।
ইতিহাসবিদদের কারও কারও মতে, জলদস্যুরা সেদিন জাহাজে থাকা সব পুরুষকে হত্যা করেছিল এবং নারীদের ধর্ষণ করে বাহামা দ্বীপপুঞ্জের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই আমলে বাহামা দ্বীপপুঞ্জ ছিল জলদস্যুদের স্বর্গরাজ্য।
আলোচিত ওই ডাকাতির ঘটনা রাতারাতি দিগ্বিদিক ছড়িয়ে যায়। ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন তখন তৃতীয় উইলিয়াম। ডাকাতির মূল হোতাকে ধরে দিতে তাঁর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে ভারতবর্ষের অধিপতি সম্রাট আওরঙ্গজেব ও ট্রেডিং জায়ান্ট ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতদের মাথার জন্য বিপুল অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করেন তৃতীয় উইলিয়াম।
গুগলে যদি ‘ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডওয়াইড ম্যানহান্ট’ (পৃথিবীজুড়ে প্রথম মানুষ অনুসন্ধান) দিয়ে সার্চ দেওয়া হয় তবে সবার আগেই আসবে হেনরি এভরির নাম। বলা যায়, পৃথিবীর সব মানুষ তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল।
এখন পর্যন্ত ইতিহাসবিদেরা এটাই জানেন যে, বহু পথ ঘুরে ১৬৯৬ সালে হেনরি এভরি আয়ারল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেও তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছিল তাঁকে। কোথাও পাওয়া যায়নি দুর্ধর্ষ ওই খুনিকে।
জিম বেইলি দাবি করছেন—তিনি এবং তার সঙ্গীরা যে মুদ্রা খুঁজে পেয়েছিলেন, তার সূত্র ধরে বিস্তর অনুসন্ধানের পর এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, দুর্ধর্ষ ওই খুনি আয়ারল্যান্ড নয়, বরং আমেরিকার দিকেই পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমেরিকায় সে সময় ব্রিটিশ উপনিবেশ গড়ে উঠেছিল। আমেরিকার বিস্তীর্ণ ম্যাসাচুসেটস, কানেকটিকাট, রোড আইল্যান্ড ও নিউ হ্যাম্পশায়ার—এই এলাকাগুলোতে ব্রিটিশরা নিউ ইংল্যান্ড নামে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। লুকিয়ে থাকার জন্য এই অঞ্চলটিকেই বেছে নিয়েছিলেন হেনরি এভরি। আত্মগোপন করে থাকা অবস্থায় এই অঞ্চলে লুণ্ঠিত সম্পদ খরচ করেছিলেন এভরি ও তাঁর সঙ্গী জলদস্যুরা।
যেভাবে চলে বেইলির অনুসন্ধান
জানা গেছে, ২০১২ সালে রোড আইল্যান্ডের মিডলটাউনে একটি বেরি ফলের বাগানে জিম বেইলির খোঁড়াখুঁড়িতে অষ্টাদশ শতকে তৈরি একটি জুতার বকলেস ও কয়েকটি গাদাবন্দুক মাটির ওপরে উঠে এসেছিল। তার পর থেকে সেখানে আরও অনুসন্ধান চালানোর জন্য ব্যাকুল ছিলেন বেইলি। দুই বছর পর ২০১৪ সালে সেখানেই মাটির উপরিভাগ থেকে একটি মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে অনুসন্ধান চালালে সংকেত পান তিনি। পরে মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। খুঁড়তে খুঁড়তে রুপার তৈরি পুরোনো একটি পয়সা খুঁজে পান। ময়লা ও ক্ষয় হয়ে যাওয়া ওই পয়সাটিকে প্রথমে স্প্যানিশ মুদ্রা ভেবেছিলেন বেইলি। কিন্তু পয়সাটিকে আরও সূক্ষ্মভাবে দেখতে গিয়ে তিনি আবিষ্কার করেন—এর ওপরে আরবিতে কিছু লেখা আছে!
অনেক পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর জানা যায়—বিদেশি ওই মুদ্রা গলিয়ে পয়সায় রূপ দেওয়া হয়েছিল ১৬৯৩ সালে ইয়েমেনে। কিন্তু এই তথ্য বড় একটি প্রশ্নবোধক হয়ে দাঁড়ায় যখন বেইলি জানতে পারেন—এক শতাব্দী আগেও নিউ ইংল্যান্ডের সঙ্গে আরব বিশ্বের বাণিজ্য সম্পর্ক দূরে থাক, অন্য কোনো সম্পর্কও ছিল না।
২০১৪ সালের পর বিভিন্ন সময়ে খোঁড়াখুঁড়িতে সেই একই আমলের আরও অন্তত ১৫টি আরব্য মুদ্রার সন্ধান পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১০টি পাওয়া যায় ম্যাসাচুসেটসে, তিনটি রোড আইল্যান্ড, আর দুটি কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে। আরও একটি মুদ্রা পাওয়া যায় নর্থ ক্যারোলাইনায়। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, এই নর্থ ক্যারোলাইনার উপকূলে হেনরি এভরির সহযোগী কয়েক জলদস্যু একসময় গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন।
২০১৮ সাল থেকে বিরামহীন গবেষণার পর কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের প্রত্নতত্ত্ববিদ সারাহ স্পোর্টম্যান দাবি করেন, হেনরি এভরির সঙ্গীদের অনেকেই নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী বসবাস শুরু করেছিলেন। আর আমেরিকার মাটিতে পা রেখে ক্রীতদাস ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন এভরি। নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলে এই ব্যবসা তখন রমরমা হতে শুরু করেছিল। ক্রীতদাস ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশকে পাকাপোক্ত করতে আমেরিকায় যাওয়ার পথে ‘ফ্রেঞ্চ আইল্যান্ড অব রিইউনিয়ন’ থেকে কিছু কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকেও জাহাজে তুলে নিয়েছিলেন এভরি। আরও একটি কাজ করেছিলেন—যে জাহাজে করে ডাকাতি করেছিলেন, সেই ফেন্সি নামের জাহাজটি ত্যাগ করে সঙ্গী–সাথিসহ সি ফ্লাওয়ার নামে আরেকটি জাহাজে চড়ে বসেছিলেন। এই জাহাজে করেই অন্তত চার ডজন ক্রীতদাস নিয়ে ১৬৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রোড আইল্যান্ডের নিউ পোর্টে গিয়ে হাজির হন এভরি। অষ্টাদশ শতকে এই রোড আইল্যান্ড ক্রীতদাস ব্যবসার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ৩০০ বছরেরও বেশি সময় পর এভাবেই জট খুলেছে পৃথিবীর প্রথম মোস্ট ওয়ান্টেড খুনির অন্তর্ধান রহস্যের।
মূল্যবান ধাতুর খোঁজে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়ান জিম বেইলি। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের রোড আইল্যান্ডের একটি ফলের বাগানে তিনি এমন এক পয়সা খুঁজে পান, যার মধ্যে লুকিয়ে ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ডাকাতির রহস্য। সোয়া তিন শ বছর আগে ১৬৯৫ সালে সেই ডাকাতি সংঘটিত হয়েছিল ভারত মহাসাগরে।
ডাকাতির শিকার জাহাজটিতে ছিলেন বেশ কিছু মুসলিম তীর্থযাত্রী, যারা সৌদি আরবের মক্কায় হজ পালন করে ভারতবর্ষে ফিরছিলেন। অসংখ্য হজ যাত্রীকে হত্যা করে জাহাজের সমস্ত সম্পদ লুট করেছিল ডাকাতেরা। যার নেতৃত্বে ওই নির্মম ডাকাতি সংঘটিত হয়, তিনি আর কেউ নন, খুনেচড়া এক ইংরেজ জলদস্যু হেনরি এভরি।
সেই ডাকাতির ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ও বহু বছরের পুরোনো একটি অমীমাংসিত মামলা। নির্মম এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সেই সময়ই পৃথিবীর মোস্ট ওয়ান্টেড খুনিতে পরিণত হন এভরি। ডাকাতির পর সঙ্গী–সাথিসহ বেমালুম হাওয়া হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
মোস্ট ওয়ান্টেড খুনি
ইতিহাসে আছে—১৬৯৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ‘ফেন্সি’ নামে একটি জাহাজ নিয়ে গভীর সমুদ্রে ওত পেতেছিলেন ক্যাপ্টেন হেনরি এভরি। আর এ পথেই ভারতবর্ষে ফিরছিল গাঞ্জ–ই–স্বোয়ামি নামের একটি রাজকীয় জাহাজ। জাহাজটির মালিক ছিলেন স্বয়ং মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব। সেই আমলে শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী শাসক বলা হতো তাঁকে। হজযাত্রী ছাড়াও ওই জাহাজে ছিল বিপুল পরিমাণ সোনা আর রুপা। সেই সময়ের হিসাবেই ওই সম্পদের মূল্যমান ছিল ১ কোটি ডলারেরও বেশি! হেনরি এভরির নেতৃত্বে এই জাহাজেই সংঘটিত হয় পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বকালের সেরা লাভজনক, একই সঙ্গে জঘন্যতম ডাকাতির ঘটনাটি।
ইতিহাসবিদদের কারও কারও মতে, জলদস্যুরা সেদিন জাহাজে থাকা সব পুরুষকে হত্যা করেছিল এবং নারীদের ধর্ষণ করে বাহামা দ্বীপপুঞ্জের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই আমলে বাহামা দ্বীপপুঞ্জ ছিল জলদস্যুদের স্বর্গরাজ্য।
আলোচিত ওই ডাকাতির ঘটনা রাতারাতি দিগ্বিদিক ছড়িয়ে যায়। ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন তখন তৃতীয় উইলিয়াম। ডাকাতির মূল হোতাকে ধরে দিতে তাঁর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে ভারতবর্ষের অধিপতি সম্রাট আওরঙ্গজেব ও ট্রেডিং জায়ান্ট ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতদের মাথার জন্য বিপুল অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করেন তৃতীয় উইলিয়াম।
গুগলে যদি ‘ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডওয়াইড ম্যানহান্ট’ (পৃথিবীজুড়ে প্রথম মানুষ অনুসন্ধান) দিয়ে সার্চ দেওয়া হয় তবে সবার আগেই আসবে হেনরি এভরির নাম। বলা যায়, পৃথিবীর সব মানুষ তাঁকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল।
এখন পর্যন্ত ইতিহাসবিদেরা এটাই জানেন যে, বহু পথ ঘুরে ১৬৯৬ সালে হেনরি এভরি আয়ারল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেও তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছিল তাঁকে। কোথাও পাওয়া যায়নি দুর্ধর্ষ ওই খুনিকে।
জিম বেইলি দাবি করছেন—তিনি এবং তার সঙ্গীরা যে মুদ্রা খুঁজে পেয়েছিলেন, তার সূত্র ধরে বিস্তর অনুসন্ধানের পর এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, দুর্ধর্ষ ওই খুনি আয়ারল্যান্ড নয়, বরং আমেরিকার দিকেই পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমেরিকায় সে সময় ব্রিটিশ উপনিবেশ গড়ে উঠেছিল। আমেরিকার বিস্তীর্ণ ম্যাসাচুসেটস, কানেকটিকাট, রোড আইল্যান্ড ও নিউ হ্যাম্পশায়ার—এই এলাকাগুলোতে ব্রিটিশরা নিউ ইংল্যান্ড নামে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। লুকিয়ে থাকার জন্য এই অঞ্চলটিকেই বেছে নিয়েছিলেন হেনরি এভরি। আত্মগোপন করে থাকা অবস্থায় এই অঞ্চলে লুণ্ঠিত সম্পদ খরচ করেছিলেন এভরি ও তাঁর সঙ্গী জলদস্যুরা।
যেভাবে চলে বেইলির অনুসন্ধান
জানা গেছে, ২০১২ সালে রোড আইল্যান্ডের মিডলটাউনে একটি বেরি ফলের বাগানে জিম বেইলির খোঁড়াখুঁড়িতে অষ্টাদশ শতকে তৈরি একটি জুতার বকলেস ও কয়েকটি গাদাবন্দুক মাটির ওপরে উঠে এসেছিল। তার পর থেকে সেখানে আরও অনুসন্ধান চালানোর জন্য ব্যাকুল ছিলেন বেইলি। দুই বছর পর ২০১৪ সালে সেখানেই মাটির উপরিভাগ থেকে একটি মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে অনুসন্ধান চালালে সংকেত পান তিনি। পরে মাটি খুঁড়তে শুরু করেন। খুঁড়তে খুঁড়তে রুপার তৈরি পুরোনো একটি পয়সা খুঁজে পান। ময়লা ও ক্ষয় হয়ে যাওয়া ওই পয়সাটিকে প্রথমে স্প্যানিশ মুদ্রা ভেবেছিলেন বেইলি। কিন্তু পয়সাটিকে আরও সূক্ষ্মভাবে দেখতে গিয়ে তিনি আবিষ্কার করেন—এর ওপরে আরবিতে কিছু লেখা আছে!
অনেক পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর জানা যায়—বিদেশি ওই মুদ্রা গলিয়ে পয়সায় রূপ দেওয়া হয়েছিল ১৬৯৩ সালে ইয়েমেনে। কিন্তু এই তথ্য বড় একটি প্রশ্নবোধক হয়ে দাঁড়ায় যখন বেইলি জানতে পারেন—এক শতাব্দী আগেও নিউ ইংল্যান্ডের সঙ্গে আরব বিশ্বের বাণিজ্য সম্পর্ক দূরে থাক, অন্য কোনো সম্পর্কও ছিল না।
২০১৪ সালের পর বিভিন্ন সময়ে খোঁড়াখুঁড়িতে সেই একই আমলের আরও অন্তত ১৫টি আরব্য মুদ্রার সন্ধান পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১০টি পাওয়া যায় ম্যাসাচুসেটসে, তিনটি রোড আইল্যান্ড, আর দুটি কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে। আরও একটি মুদ্রা পাওয়া যায় নর্থ ক্যারোলাইনায়। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, এই নর্থ ক্যারোলাইনার উপকূলে হেনরি এভরির সহযোগী কয়েক জলদস্যু একসময় গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন।
২০১৮ সাল থেকে বিরামহীন গবেষণার পর কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের প্রত্নতত্ত্ববিদ সারাহ স্পোর্টম্যান দাবি করেন, হেনরি এভরির সঙ্গীদের অনেকেই নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী বসবাস শুরু করেছিলেন। আর আমেরিকার মাটিতে পা রেখে ক্রীতদাস ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন এভরি। নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলে এই ব্যবসা তখন রমরমা হতে শুরু করেছিল। ক্রীতদাস ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশকে পাকাপোক্ত করতে আমেরিকায় যাওয়ার পথে ‘ফ্রেঞ্চ আইল্যান্ড অব রিইউনিয়ন’ থেকে কিছু কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকেও জাহাজে তুলে নিয়েছিলেন এভরি। আরও একটি কাজ করেছিলেন—যে জাহাজে করে ডাকাতি করেছিলেন, সেই ফেন্সি নামের জাহাজটি ত্যাগ করে সঙ্গী–সাথিসহ সি ফ্লাওয়ার নামে আরেকটি জাহাজে চড়ে বসেছিলেন। এই জাহাজে করেই অন্তত চার ডজন ক্রীতদাস নিয়ে ১৬৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রোড আইল্যান্ডের নিউ পোর্টে গিয়ে হাজির হন এভরি। অষ্টাদশ শতকে এই রোড আইল্যান্ড ক্রীতদাস ব্যবসার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ৩০০ বছরেরও বেশি সময় পর এভাবেই জট খুলেছে পৃথিবীর প্রথম মোস্ট ওয়ান্টেড খুনির অন্তর্ধান রহস্যের।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
৮ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
৮ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
৮ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১২ দিন আগে